সতীকান্ত গুহ
সতীকান্ত গুহ | |
---|---|
জন্ম | সুনামগঞ্জ সিলেট, ব্রিটিশ ভারত (বর্তমানে বাংলাদেশ) | ১ জুন ১৯১০
মৃত্যু | ৮ জানুয়ারি ১৯৯১ কলকাতা পশ্চিমবঙ্গ | (বয়স ৮০)
ভাষা | বাংলা |
জাতীয়তা | ভারতীয় |
শিক্ষা প্রতিষ্ঠান | প্রেসিডেন্সি কলেজ, কলকাতা কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় |
উল্লেখযোগ্য রচনাবলি | নাট্যকার |
উল্লেখযোগ্য পুরস্কার | রবীন্দ্র পুরস্কার (১৯৭৬) |
দাম্পত্যসঙ্গী | প্রীতিলতা গুহ |
সন্তান | ইন্দ্রনাথ গুহ |
সতীকান্ত গুহ (১ জুন ১৯১০ – ৮ জানুয়ারি ১৯৯১) ছিলেন একজন ভারতীয় বাঙালি সাহিত্যিক, কবি ও শিক্ষাবিদ।
জন্ম ও প্রারম্ভিক জীবন
[সম্পাদনা]সতীকান্ত গুহ'র জন্ম ব্রিটিশ ভারতের অধুনা বাংলাদেশের তৎকালীন সিলেট জেলার সুনামগঞ্জে। তার বিদ্যালয়ের পাঠ শুরু হয় প্রথমে ঢাকা কলেজিয়েট স্কুল ও পরে কলকাতার হেয়ার স্কুলে। স্নাতক হন কলকাতার প্রেসিডেন্সি কলেজ থেকে। পরে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের এল এলবি পরীক্ষায় প্রথম স্থান লাভ করেন।
ছোটবেলা থেকেই তার সাহিত্যের প্রতি আগ্রহ ছিল। পনের বছর বয়স থেকে, তিনি শিশুদের জন্য বেণু এবং চিত্রা' নামে দুটি পত্রিকা সম্পাদনা শুরু করেন। এছাড়াও তিনি প্রেমেন্দ্র মিত্র সম্পাদিত রঙমশাল পত্রিকার নিয়মিত লেখক ছিলেন। প্রায় প্রতিটি সংখ্যায় প্রকাশিত হয়েছে তার কবিতা। ১৯৩৯ খ্রিস্টাব্দে ধারাবাহিক ভাবে প্রকাশিত হয়ছে উপন্যাস- অমরলতা। তিনি নিজেও কিছুদিন পত্রিকাটি সম্পাদনাও করেছেন।[১] তিনি কলকাতায় প্রকাশনা সংস্থা প্রতিষ্ঠা করেন। সেই প্রকাশনা সংস্থা হতে তিনি অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুরের রাজকাহিনী এবং দক্ষিণারঞ্জনের ফার্স্ট বয় এবং লাস্ট বয় এবং শিবরাম চক্রবর্তীর বাড়ি থেকে পালিয়ে গ্রন্থ প্রকাশ করেন।[২] কিশোরদের জন্যও তিনি কয়েকটি উপন্যাস রচনা করেছেন। উল্লেখযোগ্য উপন্যাস দুটি হল—চৌধুরী ক্যাসল্ (১৯৫৩) এবং ইতিহাসে নেই (১৯৬৪)।
তার অন্যান্য রচনা গুলি হল-
- কবিতা—
- আলোর পাহাড়
- লালকমল নীলকমল
- গল্প—
- ছয় ঋতু
- খেয়ার মাঝি লক্ষ্মীনাথ
- অপরূপ কথা
- দুরন্ত কাহিনী
- উপন্যাস—
- বেনামী নিশান
- মহাপ্রস্থান
- নাটক—
- নূতন দিনের রূপকথা
- নাট্যকার[৩]
তিনি ১৯৫৪ খ্রিস্টাব্দের ১ এপ্রিল তিনি বালিগঞ্জে কলকাতার অন্যতম বিখ্যাত সাউথ পয়েন্ট স্কুল প্রতিষ্ঠা করেন। স্কুলটি "সতীকান্ত গুহ - দ্য সাউথ পয়েন্ট এডুকেশন সোসাইটি' নামক একটি ট্রাস্ট দ্বারা পরিচালিত হত। তাঁর পুত্র, ইন্দ্রনাথ গুহ, এবং তাঁর স্ত্রী, প্রীতিলতা গুহ ওই ট্রাস্টের সদস্য ছিলেন। সাউথ পয়েন্ট স্কুল 'সতীকান্ত গুহ - দ্য সাউথ পয়েন্ট এডুকেশন সোসাইটি দ্বারা প্রতিষ্ঠিত ট্রাস্টের সদস্য ছিলেন। তাঁর মৃত্যুর পরেও বিদ্যালয়ের পরিচালনায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। সাউথ পয়েন্ট স্কুলের সম্পাদক ছিলেন প্রীতিলতা গুহ এবং অধ্যক্ষ ছিলেন ইন্দ্রনাথ গুহ।
১৯৯৫ খ্রিস্টাব্দের ৩ মে পর্যন্ত ইন্দ্রনাথ গুহ বিদ্যালয়টির অধ্যক্ষ-সচিব ছিলেন।
১৯৭৬ খ্রিস্টাব্দের ৪ মে সতীকান্ত গুহ'র পুত্রবধূ সুরূপার (ইন্দ্রনাথ গুহ'র স্ত্রী) রহস্যজনক মৃত্যু হয়। ফলে সতীকান্ত, প্রীতিলতা, ইন্দ্রনাথ, রমেন্দ্রনাথ লাহিড়ী এবং তাদের এক কর্মচারী ঝন্টুচরণ দত্তকে হত্যার অভিযোগে অভিযুক্ত করা হয়। সে সময় কলকাতায় বধূহত্যার মামলাটি আলোড়ন সৃষ্টি করে এবং দীর্ঘদিন চলেছিল। কলকাতায় দায়রা জজ কর্তৃক রমেন্দ্রনাথের বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ গঠন করা হয়নি এবং শেষপর্যন্ত কলকাতার উচ্চ আদালতে সকলেই ছাড়া পেয়ে যান।
সম্মাননা
[সম্পাদনা]সতীকান্ত গুহ সাহিত্যের জন্য অসংখ্য পুরস্কার পেয়েছিলেন, যেমন শিশু সাহিত্যের জন্য মৌচাক পুরস্কার। ১৯৭৬ খ্রিস্টাব্দে তিনি নাট্যকার উপন্যাসটির পশ্চিমবঙ্গ সরকারের রবীন্দ্র পুরস্কার লাভ করেন।
মৃত্যু ও উত্তরাধিকার
[সম্পাদনা]সতীকান্ত গুহ ১৯৯১ খ্রিস্টাব্দের ৮ জানুয়ারি কলকাতায় পরলোক গমন করেন। পিতার মৃত্যুর পর ওই বৎসরেই সেপ্টেম্বর মাসে ইন্দ্রনাথ পিতার নামে গড়েন- "সতীকান্ত গুহ ফাউন্ডেশন" যার দ্বারা বর্তমানে পরিচালিত হয় কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। সেগুলি হল-
- গার্ডেন হাই স্কুল,
- গার্ডেন হাই ইন্টারন্যাশনাল স্কুল
- গার্ডেন হাই স্কুল- IISER কলকাতা ক্যাম্পাস, মোহনপুর, কল্যাণীর
তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ South Point School Magazine 2013
- ↑ "Charitable Society | Kolkata | Satikanta Guha Foundation"। Satikanta Guha Foundation (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০১৭-০১-১৪।
- ↑ "চৌধুরী ক্যাসল্"। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-০৯-০৫।