ল্যাম্পপ্রপ্টের মেজেস

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে

গ্রীন ড্রাগনটেল
Green Dragontail
ডানা বন্ধ অবস্থায়
বৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস
জগৎ: Animalia
পর্ব: Arthropoda
শ্রেণী: Insecta
বর্গ: Lepidoptera
পরিবার: Papilionidae
গণ: Lamproptera
প্রজাতি: L. meges
দ্বিপদী নাম
Lamproptera meges

গ্রীন ড্রাগনটেল (বৈজ্ঞানিক নাম: Lamproptera meges(Zinken-Sommer)) এক প্রজাতির মাঝারী আকারের প্রজাপতি, যার শরীর ও ডানা মূখ্যত অনুজ্জ্বল কালচে বাদামী বর্নের। এই আশ্চর্যজনক প্রজাপতিটির আংশিক স্বচ্ছ ডানা এবং লম্বা লেজের কারণে প্রথম নজরে ফড়িং মতো দেখায়।[১] এরা ‘প্যাপিলিওনিডি’ পরিবারের এবং 'প্যাপিলিওনিনি' উপগোত্রের সদস্য।[২]

আকার[সম্পাদনা]

গ্রীন ড্রাগনটেল এর প্রসারিত অবস্থায় ডানার আকার ৪০-৫৫ মিলিমিটার দৈর্ঘ্যের হয়।[৩]

উপপ্রজাতি[সম্পাদনা]

গ্রীন ড্রাগনটেল এর উপপ্রজাতিগুলো হলো:[২]

  • Lamproptera meges meges
  • Lamproptera meges ennius
  • Lamproptera meges akirai
  • Lamproptera meges virescens
  • Lamproptera meges annamiticus
  • Lamproptera meges pallidus
  • Lamproptera meges niasicus
  • Lamproptera meges decius
  • Lamproptera meges pessimus
  • Lamproptera meges amplifascia

ভারতে প্রাপ্ত গ্রীন ড্রাগনটেল এর উপপ্রজাতি[সম্পাদনা]

ভারতে প্রাপ্ত গ্রীন ড্রাগনটেল এর উপপ্রজাতি হল- [৪]

  • Lamproptera meges indistincta Tytler, 1912 – Indistinct Green Dragontail

বিস্তার[সম্পাদনা]

এই প্রজাপতিটি উত্তর-পূর্ব ভারতের আসাম,[৫] অরুণাচল প্রদেশ, মণিপুর এবং নাগাল্যান্ড রাজ্যে পাওয়া যায়।[৬] এছাড়া মায়ানমার, থাইল্যান্ড, লাওস, ভিয়েতনাম, দক্ষিণ চীন (হাইনান সহ), কম্বোডিয়া এবং পূর্ব মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়ান দ্বীপপুঞ্জ, ব্রুনাই এবং ফিলিপাইন এর বিভিন্ন অঞ্চলে এদের দেখা যায়।[৩]

বর্ণনা[সম্পাদনা]

প্রজাপতির দেহাংশের পরিচয় বিষদ জানার জন্য প্রজাপতির দেহ এবং ডানার অংশের নির্দেশিকা দেখুন:-

সামনে ডানা সামনের ডানায় বাইরের দিকে তেরচাভাবে বাঁকানো একটি চওড়া তীর্যক ফ্যাকাশে সবুজ বন্ধনী দেখা যায় যা কোস্টা থেকে ডর্সাম পর্যন্ত বিস্তৃত। এই বন্ধনিটির ঠিক পাশের কালো বন্ধনীটি আগাগোড়া সমান প্রস্থ বিশিষ্ট, যা ল্যামপ্রপ্টের কিউরিয়াস এর ক্ষেত্রে উপরিভাগ বেশী চওড়া, তলায় ক্রমশ সরু হয়েছে। উক্ত বন্ধনীর পাশে ডানার বাইরের অর্দ্ধে কালচে বাদামী চওড়া সীমানা দ্বারা ঘেরা একটি ত্রিভুজাকৃতি স্বচ্ছ অংশ বর্তমান। উক্ত ত্রিভুজাকৃতি স্বচ্ছ অংশটি কালো শিরাসমূহ দ্বারা সুস্পশট ভাবে বিভক্ত। প্বার্শরোয়া কালো।[৭]

পিছনের ডানা পিছনের ডানা সংকীর্ণ লম্বাটে, টার্মেন ঢেউ খেলানো এবং ৪নং শিরায় উৎপন্ন একটি খুব লম্বা লেজযুক্ত (২৫-৪০ মিলিমিটার)। সামনের ডানার ফ্যাকাশে সবুজ বন্ধনীটি পিছনের ডানাতেও বিস্তৃত হয়েছে। উক্ত লেজটির গোড়ার দিকের চওড়া অংশ সাদা অথবা ধূসর ছিটাযুক্ত। প্রান্তরোয়া উপরের দিকে কালো। নিচের দিকে সাদা। ডানার নিম্নতলের দাগ-ছোপ বন্ধনী উপরিতলেরই অনুরূপ। উভয় ডানার গোড়া জুড়ে ধূসর সাদা বর্নের চওড়া দাগ বর্তমান। দাগটি সামনের ডানার কোস্টা থেকে পিছনের ডানার ডর্সাম এর নিকট অবধি বিস্তৃত।[৭]

শুঙ্গ, মাথা এবং বক্ষদেশ কালো, উদরদেশ ঘন কালচে বাদামী। নিম্নতলে পালপি, বক্ষদেশ এবং উদর ধূসর বর্নের। স্ত্রী এবং পুরুষ প্রকার অনুরূপ,ল্যামপ্রপ্টের কিউরিয়াসএর মত পুরুষ প্রকারে scent organ থাকে না।[৭]

আচরণ[সম্পাদনা]

এই প্রজাতির উড়ান দ্রুত, ফড়িংএর মত দ্রুতবেগে চক্রাকারে পাক খেয়ে খেয়ে ওড়ে। এমনকি যখন এরা কোন জায়গায় বসে, তখনও এদের ডানা অতি দ্রুতবেগে কাঁপতে থাকে।[৮] এদের সাধারনত, জঙ্গলের উন্মুক্ত, রৌদ্রজ্জ্বল অংশে প্রবাহমান জলধারার আশেপাশে সক্রিয় দেখা যায়।[৯] এরা সাধারনত একাই থাকে, দলবদ্ধ ভাবে নয়। পার্বত্য জঙ্গলে ১৫২০ মিটার উচ্চতার আশেপাশে এদের দর্শন মেলে এপ্রিল-অক্টোবর পর্যন্ত। নাগা পাহাড়ে ৫০০০ফুট উচ্চতা পর্যন্ত এপ্রিল থেকে অক্টোবর মাস অবধি এদের বিচরন লক্ষ্য করা যায়।[৫]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. Murry, Wonchi; Murry, Mhayani (২০২০)। A Beginner's Guide to the Butterflies of the Himalayan Realm (1st সংস্করণ)। Nagaland: PenThrill Publication House। পৃষ্ঠা 66। আইএসবিএন 978 819449727 1 
  2. Collins, N. Mark; Morris, Michael G. (১৯৮৫)। "Lamproptera meges (Zinken-Sommer, 1831)"Threatened Swallowtail Butterflies of the World: The IUCN Red Data Book। Gland & Cambridge: International Union for Conservation of Nature। পৃষ্ঠা 52। আইএসবিএন 978-2-88032-603-6 – Biodiversity Heritage Library-এর মাধ্যমে। 
  3. Isaac, Kehimkar (২০০৮)। The book of Indian Butterflies (1st সংস্করণ)। New Delhi: Oxford University Press। পৃষ্ঠা 117। আইএসবিএন 978 019569620 2 
  4. "Lamproptera meges (Zincken, 1831) - Green Dragontail"Butterflies of India। সংগ্রহের তারিখ ২০ জুলাই ২০২২ 
  5. Smetacek, Peter (২০১৮)। A naturalist's guide to the Butterflies of India, Pakistan, Nepal, Butan, Bangladesh and Sri Lanka (1st সংস্করণ)। New Delhi: Prakash Books। পৃষ্ঠা 32। আইএসবিএন 978 817599406 5 
  6. Zeng Ai-ping, You Lan-shao (২০০৬)। "The Discovery of Lamproptera meges Zinkin-Sommer in Hunan"Journal of Hunan Agricultural University (Natural Sciences)2006 (4)। আইএসএসএন 1007-1032। ২০ জুলাই ২০২২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০ জুলাই ২০২২ 
  7. Wynter-Blyth, Mark Alexander (১৯৫৭)। Butterflies of the Indian Region। Bombay, India: Bombay Natural History Society। পৃষ্ঠা 407। আইএসবিএন 978-8170192329 
  8. Barua, Kamini Kusum; Kakati, D.; Kalita, J. (২০০৪)। "Present Status of Swallowtail Butterflies in Garbhanga Reserve Forest, Assam, India"। Zoos' Print Journal। Zoo Outreach Organisation। 19 (4): 3। ডিওআই:10.11609/JoTT.ZPJ.1000.1439-41অবাধে প্রবেশযোগ্য 
  9. Barua, Kamini Kusum; Slowik, Jolanta; Bobo, Kadiri Serge; Muehlenberg, Michael (২০১০)। "Correlations of Rainfall and Forest Type with Papilionid Assemblages in Assam in Northeast India" (পিডিএফ)Psyche। Hindawi Publishing Corporation। 2010 (Article ID 560396): 10। ডিওআই:10.1155/2010/560396অবাধে প্রবেশযোগ্য 

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]