ল্যামপ্রপ্টের কিউরিয়াস

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে

হোয়াইট ড্রাগনটেল
White Dragontail
ডানা বন্ধ অবস্থায়
ডানা খোলা অবস্থায়
বৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস
জগৎ: Animalia
পর্ব: Arthropoda
শ্রেণী: Insecta
বর্গ: Lepidoptera
পরিবার: Papilionidae
গণ: Lamproptera
প্রজাতি: L. curius
দ্বিপদী নাম
Lamproptera curius
প্রতিশব্দ

Leptocircus curius

হোয়াইট ড্রাগনটেল (বৈজ্ঞানিক নাম: Lamproptera curius(Fabricius)) এক প্রজাতির মাঝারী আকারের প্রজাপতি, যার শরীর ও ডানা মূখ্যত অনুজ্জ্বল কালচে বাদামী বর্নের। এরা ‘প্যাপিলিওনিডি’ পরিবারের এবং 'প্যাপিলিওনিনি' উপগোত্রের সদস্য।[১]

আকার[সম্পাদনা]

হোয়াইট ড্রাগনটেল এর প্রসারিত অবস্থায় ডানার আকার ৪০-৫০ মিলিমিটার দৈর্ঘ্যের হয়।[১]

উপপ্রজাতি[সম্পাদনা]

ভারতে প্রাপ্ত হোয়াইট ড্রাগনটেল এর উপপ্রজাতি হল- [২]

  • Lamproptera curius curius (Fabricius, 1787) – Thai White Dragontail

বিস্তার[সম্পাদনা]

এই প্রজাপতি ভারতের[৩] আসাম[৪] থেকে বার্মা পর্যন্ত পাওয়া যায়।[৫] এটি থাইল্যান্ড, লাওস, ভিয়েতনাম, দক্ষিণ চীন, কম্বোডিয়া, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া এবং ফিলিপাইন এর বিভিন্ন অঞ্চলে এদের দেখা যায়।[১]

বর্ণনা[সম্পাদনা]

প্রজাপতির দেহাংশের পরিচয় বিষদ জানার জন্য প্রজাপতির দেহ এবং ডানার অংশের নির্দেশিকা দেখুন:-

সামনে ডানা সামনের ডানায় বাইরের দিকে তেরচা ভাবে বাঁকা একটি চওড়া তীর্যক সাদা বন্ধনী দেখা যায় যেটি কোস্টা থেকে ডরসাম অবধি বিস্তৃত। উক্ত বন্ধনীর বাইরের প্রাপ্ত কাঁচের মত স্বচ্ছ যার সামান্য পরেই ডানার বাইরের অর্দ্ধ কালচে বাদামী চওড়া সীমানা দ্বারা ঘেরা একটি ত্রিভুজাকৃতি বর্নহীন স্বচ্ছ অংশ বর্তমান। উক্ত ত্রিভুজাকৃতি স্বচ্ছ অংশটি কালো শিরাসমূহ দ্বারা সুস্পষ্ট ভাবে বিভক্ত। পার্শ্ব রোঁয়া কালো বর্নের।[৬]

পিছনের ডানা পিছনের ডানা সংকীর্ন, লম্বাটে, টার্মেন ঢেউ খেলানো এবং ৪নং শিরায় উৎপন্ন একটি খুব লম্বা লেজযুক্ত (২৫-৪০ মিলিমিটার)। সামনের ডানার উপরিতলের সাদা তীর্যক বন্ধনীটি পিছনের ডানাতেও আড়াআড়ি ভাবে বিস্তৃত হয়েছে ৩ নং শিরার বাইরের অর্দ্ধ পর্যন্ত। তবে সামনের ডানার মত পিছনের ডানার উক্ত তীর্যক সাদা বন্ধনীটির বাইরের প্রাপ্ত স্বচ্ছ নয়। উক্ত লেজটির গোড়ার দিকের চওড়া অংশ ঘনভাবে সাদা অথবা ধূসর ছিটাযুক্ত। প্রান্তরোয়া ৫ নং শিরার উপর পর্যন্ত কালো, নিচে থেকে সাদা। ডানার নিম্নতল উপরিতলেরই অনুরূপ, তবে মূল বর্ন ঘন কালচে বাদামী। উভয় ডানার গোড়া জুড়ে মেটে অথবা ধূসর সাদা বর্নের চওড়া দাগ বর্তমান যা সামনের ডানার কোস্টা থেকে পিছনের ডানার ডরসাম এর নিকট অবধি বিস্তৃত।[৬]

শুঙ্গ, মাথা এবং বক্ষদেশ কালো, উদরদেশ ঘন কালচে বাদামী। নিম্নতলে পালপি, বক্ষদেশ এবং উদর ধূসর বর্নের। স্ত্রী এবং পুরুষ প্রকার অনুরূপ, তবে পুরুষ প্রকারে সামনের ডানার উপরিতলে ডর্সাল ভাজ (fold)এ সাদা scent organ বর্তমান।[৬]

আচরণ[সম্পাদনা]

এই প্রজাতির উড়ান অতি দ্রুত এবং উড়ার সময় ডানা ক্রমাগত কাঁপতে থাকে, অনেকটা ফড়িং এর মতন। ঝলমলে রৌদ্রজ্জ্বল দিনে এদের প্রায়শই রোদ পোহাতে এবং মাড-পাডল করতে দেখা দেখা যায়।[৭]বাতাসে ভাসমান অবস্থায় উড়তে উড়তে এরা ফুলের মধু পান করে। এছাড়া কাদামাটি, ভিজে ছোপে এদের অবস্থান করতে লক্ষ্য করা যায়। হোয়াইট ড্রাগনটেল প্রজাতি উন্মুক্ত জঙ্গলে বসবাস করে যেখানে জঙ্গলের ফাঁকা জায়গায় ও জঙ্গলে পথে এদের বিচরন চোখে পড়ে। এচাড়াও জঙ্গলকে বেড় দিয়ে অবস্থিত নদী অথবা ঝর্নার ধারে, জঙ্গলের পথের ধারে তিরতির করে বয়ে চলা সরু জলধারা অথবা জঙ্গলের ভিতর যেখানে মানুষের বসবাস আছে সেখানে নলকূপ থেকে ফোঁটায় ফোঁটায় জল ঝড়ে পড়ছে, এমন জায়গায় এদের দর্শন মেলে।[১] ল্যাম্পপ্রপ্টের মেজেস এর চাইতে কম উচ্চতায় (১৫০০মিটার এর কম উচ্চতা) আগস্ট থেকে নভেম্বর মাস পর্যন্ত এদের বিচরন লক্ষ্য করা যায়।

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. Isaac, Kehimkar (২০০৮)। The book of Indian Butterflies (1st সংস্করণ)। New Delhi: Oxford University Press। পৃষ্ঠা 117। আইএসবিএন 978 019569620 2 
  2. "Lamproptera curius (Fabricius, 1787) - White Dragontail"Butterflies of India। সংগ্রহের তারিখ ১৫ জুলাই ২০২২ 
  3. Gogoi,, M.J। "Butterflies (Lepidoptera) of Dibang Valley, Mishmi Hills, Arunachal Pradesh, India"Journal of Threatened Taxa। পৃষ্ঠা 3137–3160। ১৫ জুলাই ২০২২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৫ জুলাই ২০২১ 
  4. Singh, A.P., L. Gogoi & J. Sebastain (2015). The seasonality of butterflies in a semi-evergreen forest: Gibbon Wildlife Sanctuary, Assam, northeastern India. Journal of Threatened Taxa 7(1): 6774–6787; http://dx.doi.org/10.11609/JoTT.o3742.6774-87
  5. Irungbam,, J.S. et,al.। "AN INVENTORY OF THE BUTTERFLIES OF MANIPUR, INDIA (INSECTA: LEPIDOPTERA)" (পিডিএফ)Zootaxa। পৃষ্ঠা 1-91। সংগ্রহের তারিখ ১৫ জুলাই ২০২১ 
  6. Wynter-Blyth, Mark Alexander (১৯৫৭)। Butterflies of the Indian Region। Bombay, India: Bombay Natural History Society। পৃষ্ঠা 407। আইএসবিএন 978-8170192329 
  7. Kunte, Krushnamegh (২০১৩)। Butterflies of The Garo Hills। Dehradun: Samrakshan Trust, Titli Trust and Indian Foundation of Butterflies। পৃষ্ঠা 136। 

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]