বিষয়বস্তুতে চলুন

রাধারানী (রাধু)

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
রাধারানী (রাধু)
জন্ম
রাধারানী মুখোপাধ্যায়

(১৯০০-০১-২৬)২৬ জানুয়ারি ১৯০০
মৃত্যু২৩ নভেম্বর ১৯৪০(1940-11-23) (বয়স ৪০)
দাম্পত্য সঙ্গীমন্মথনাথ চট্টোপাধ্যায়
সন্তাননির্মলা দেবী (কন্যা)
পিতা-মাতাঅভয়চরণ মুখোপাধ্যায় (পিতা)
সুরবালা দেবী (মাতা)

রাধারানী (রাধু) (২৬ জানুয়ারি ১৯০০ – ২৩ নভেম্বর ১৯৪০) ছিলেন শ্রীসারদা মায়ের ভ্রাতুস্পুত্রী ও পালিতা কন্যা,[১] যার সম্পর্কে শ্রীরামকৃষ্ণ স্বয়ং শ্রীশ্রীমাকে বলেছিলেন রাধারানী যোগমায়া[২]

জীবনী

[সম্পাদনা]

রাধারানী বা রাধু'-র জন্ম ১৯০০ খ্রিস্টাব্দে ২৬ জানুয়ারি ব্রিটিশ ভারতের বাঁকুড়া জেলাজয়রামবাটিতে। পিতা শ্রীশ্রীসারদা মায়ের কনিষ্ঠ ভ্রাতা অভয়চরণ মুখোপাধ্যায়। মাতা সুরবালা দেবী। অভয়চরণ মেডিক্যাল স্কুলের শেষ পরীক্ষা দেওয়ার পর, কর্মজীবন আরম্ভের পূর্বেই কলেরায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেলে শ্রীশ্রী সারদা মা বিধবা ভাতৃজায়া সুরবালার ও কন্যা রাধারানীর প্রতিপালনের ভার নেন। বস্তুত, রাধুর জন্মের আগে ও পরেও শ্রীরামকৃষ্ণ সারদা দেবীকে ইঙ্গিতে জানিয়েছেন যে, রাধারানীই যোগমায়া, পার্থিব জগতে নিরন্তর উচ্চমার্গের চিন্তাভাবনার জন্য রাধুই তার বন্ধন। তাকে আশ্রয় করে শ্রীরামকৃষ্ণের আদেশে শ্রীমায়ের জীবনধারণের বহু বৎসর অতিবাহিত হয়।।[৩] রাধারাণী জন্ম থেকেই ছিলেন অসুস্থ, রুগ্ন। অন্যদিকে একগুঁয়ে এবং মানসিক বিকারগ্রস্থ। তাকে নিয়ে দুশ্চিন্তার অন্ত ছিল না সারদা দেবীর। রাধুর কাছে তিনিই ছিলেন মা, নিজের মাকে ডাকতেন 'নেড়ী মা' বলে। আর মায়ের মতোই ধৈর্য সহকারে তার দেখভাল করতেন তিনি। রাধুর বিবাহ নিয়ে বিশেষ চিন্তিত ছিলেন। শেষে শরৎ মহারাজের প্রচেষ্টায় তাজপুরের জমিদারবংশীয় মন্মথনাথ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে ১৯১১ খ্রিস্টাব্দের ১০ জুন রাধুর বিবাহ হয়। রাধু স্বামীসহ সারদা মায়ের কাছে মন্ত্রদীক্ষা নেন। বিবাহের পর নানা কারণে রাধুর মানসিক অস্থিরতার লক্ষণ দেখা দিলে সারদা মা তার নতুন ঘরে রাধুকে নিয়ে বাস করতে থাকেন। তিনি সারদা মায়ের তীর্থযাত্রায় সঙ্গী হয়েছিলেন।[৪] শ্রীশ্রী মায়ের জীবনলীলার শেষ পর্বের কুড়িটি বছর (১৯০০-১৯২০ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত) রাধু নিবিড়ভাবে যুক্ত ছিলেন। শ্রীশ্রীমা বলতেন, "রাধি কাছে না শুলে, আমার ঘুম হয় না।" সারদা মায়ের দেহাবসানের কয়েকমাস আগে ১৯১৯ খ্রিস্টাব্দে (১৩২৬ বঙ্গাব্দের ২৪ বৈশাখ) রাধুর এক পুত্র সন্তান জন্মে ( সারদা দেবী তার নাম রেখেছিলেন বনু বা বনবিহারী।[১] ১৯২০ খ্রিস্টাব্দের ২০ জুলাই শ্রীশ্রীমায়ের প্রয়াণের পর মন্মথনাথ রাধুকে গ্রহণ করতে অস্বীকার করে এবং দ্বিতীয় বিবাহ করেন, যদিও তিনি মাঝে মধ্যে জয়রামবাটিতে রাধারানীর সঙ্গে দেখা করতে আসতেন এবং অর্থের জন্য চাপ দিতেন। এ সময়ে তাদের এক কন্যা নির্মলার জন্ম হয়। পুত্রটি অবশ্য তার আগেই মারা যায়।

শেষের দিকে রাধু যক্ষ্মা রোগে আক্রান্ত হলে তাকে চিকিৎসার জন্য কাশীতে পাঠানো হয়। পরে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে জয়রামবাটিতে ফেরত আনা হয় এবং ১৯৪০ খ্রিস্টাব্দের ২৩ নভেম্বর চল্লিশ বৎসর বয়সে দেহত্যাগ করেন।

আরো পড়ুন

[সম্পাদনা]
  • চৌধুরী, ড. সংঘমিত্রা (২০২৪)। শ্রীশ্রীমায়ের যোগমায়া রাধারানী। উদ্বোধন কার্যালয়, কলকাতা। পৃষ্ঠা ১১২। আইএসবিএন 978-81-9492-048-9 

তথ্যসূত্র

[সম্পাদনা]
  1. চট্টোপাধ্যায়, দুর্গাপদ (১৯৭৯)। শ্রীশ্রীরামকৃষ্ণ-সারদার কামারপুকুর-জয়রামবাটি। শ্রীশ্রীরামকৃষ্ণ-সারদা গবেষণা কেন্দ্র, বেঙ্গাই, হুগলী। পৃষ্ঠা ১২২,১২৩। 
  2. "শ্রীশ্রীমায়ের যোগমায়া রাধারানী"। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০৭-১৮ 
  3. "Radharani Devi (Radhu) - VivekaVani"। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০৭-১৮ 
  4. Gangopadhyay, Sri Bipul Kumar (২০১১-০৪-১৫)। অলৌকিক লীলায় শ্রীরামকৃষ্ণ, মা সারদা, স্বামীজী (দ্বিতীয় খন্ড)। Jaytara Publishers।