রাইজোবিয়াম বাংলাদেশেন্স

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে

রাইজোবিয়াম বাংলাদেশেন্স
বৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস সম্পাদনা করুন
মহাজগত: ব্যাকটেরিয়া (Bacteria)
পর্ব: সেডোমোনাডোটা (Pseudomonadota)
শ্রেণি: আলফাপ্রোটিওব্যাকটেরিয়া (Alphaproteobacteria)
বর্গ: Hyphomicrobiales
পরিবার: Rhizobiaceae
গণ: রাইজোবিয়াম (Rhizobium)
Harun-or Rashid et al. 2015
প্রজাতি: R. bangladeshense
দ্বিপদী নাম
Rhizobium bangladeshense
Harun-or Rashid et al. 2015

রাইজোবিয়াম বাংলাদেশেন্স একটি উদ্ভিদের মূলে বাসকারী গ্রাম-নেগেটিভ ব্যাকটেরিয়া। ব্যাকটেরিয়াটি বাংলাদেশে মসুর ডালের মূলজ অর্বুদ থেকে আবিষ্কৃত হয়েছে।[১][২][৩]

বর্ণনা[সম্পাদনা]

রাইজোবিয়াম বাংলাদেশেন্স হলো রড-আকৃতির ব্যাকটেরিয়া যা মাটিতে, বিশেষ করে উদ্ভিদের মূলে বসবাস করে। ব্যাকটেরিয়াটির অক্সিজেন প্রয়োজন এবং এটি স্পোর গঠন করে না।[১]

রাইজোবিয়াম বাংলাদেশেন্স আগার প্লেটে জন্মানোর সময় উপনিবেশ তৈরি করে যা ইয়েমা মাধ্যমে বৃত্তাকার, উত্তল এবং ক্রিমি সাদা হয়। ব্যাকটেরিয়াটি ৫.৫ থেকে ১০ এর মধ্যে পিএইচ মান সহ্য করতে পারে। অধ্যয়ন করা ব্যাকটেরিয়াগুলো অ্যাম্পিসিলিনের প্রতি সংবেদনশীল, কানামাইসিন এবং নালিডিক্সিক অ্যাসিড প্রতিরোধী। এগুলো ০.৫% এনএসিএলযুক্ত ওয়াইইএমএ মাধ্যমে ভালো বৃদ্ধি পায়। ব্যাকটেরিয়াটি টেট্রাসাইক্লিন সহ্য করে না এবং এলবি মিডিয়ামে বৃদ্ধি পায় না।

রাইজোবিয়াম বাংলাদেশেন্স বৃদ্ধির জন্য ডি-মাল্টোজ, ডি-ট্রেহালোজ, ডি-সেলোবায়োজ, জেন্টিওবায়োজ, সুক্রোজ, ডি-রাফিনোজ, আলফা-ডি-গ্লুকোজ, ডি-টুরানোজ, আলফা-ডি ল্যাকটোজ, ডি-ফ্রুক্টোজ, বিটা-মিথাইল-ডি-গ্লুকোসাইড, স্যালিসিন, এন-এসিটাইল-ডি-গ্যালাকটোসামাইন, ডি-সরবিটল, ডি-ম্যানিটল, ডি-ম্যানিটল, ডি-আরবিটল, গ্লিসারল, ডি-গ্লুকোজ-৬-ফসফেট, ডি-গ্লুকোনিক অ্যাসিড, কুইনিক অ্যাসিড, ডি-স্যাকারিক অ্যাসিড, ডি-স্যাকারিক অ্যাসিড, ডি-ল্যাকটিক অ্যাসিড মিথাইল এস্টার, ল্যাকটিক অ্যাসিড, আলফা-কিটো-গ্লুটারিক অ্যাসিড এবং টুইন ৪০ সহ বিভিন্ন ধরনের পুষ্টি উপাদান ব্যবহার করতে পারে। যে ব্যাকটেরিয়াগুলো নিয়ে অধ্যয়ন করা হয়েছে সেগুলি ডেক্সট্রিন, ডি-অ্যাস্পারটিক অ্যাসিড, গ্লাইসিল-এল-প্রোলিন, এল-অ্যালানাইন, এল-আর্গিনিন, এল-গ্লুটামিক অ্যাসিড, এল-হিস্টিডিন, এল-সেরিন, মিউসিক অ্যাসিড, পি-হাইড্রোক্সি-ফেনাইলেসেটিক অ্যাসিড, মিথাইল পাইরুভেট, সাইট্রিক অ্যাসিড, ডি-ম্যালিক অ্যাসিড, এল-ম্যালিক অ্যাসিড, প্রোপিওনিক অ্যাসিড বা ফর্মিক অ্যাসিড ব্যবহার করতে ব্যর্থ হয়েছে। লিংকোমাইসিন এবং পটাসিয়াম টেলুরাইটের উপস্থিতিতে রাইজোবিয়াম বাংলাদেশেন্স বৃদ্ধি পেতে পারে, তবে ১% সোডিয়াম ল্যাকটেট, ট্রোলিয়ানডোমাইসিন, টেট্রাজোলিয়াম ভায়োলেট, টেট্রাজোলিয়াম ব্লু, ন্যালিডিক্সিক অ্যাসিড, লিথিয়াম ক্লোরাইড এবং সোডিয়াম বিউটাইরেটের থাকলে বৃদ্ধি পায় না।[১][২]

জিনতত্ত্ব[সম্পাদনা]

রাইজোবিয়াম বাংলাদেশেন্সের জীনতত্ত্ব বিশ্লেষণে দেখা গেছে যে এটি রাইজোবিয়াম এটলি এবং রাইজোবিয়াম ফেজোলির সাথে সবচেয়ে ঘনিষ্ঠভাবে সম্পর্কিত। টাইপ স্ট্রেনের ৬১% ডিএনএ-এর জি+সি উপাদান রয়েছে।[১][৩]

রাইজোবিয়াম বাংলাদেশেন্সের বংশাণুসমগ্র অনুক্রম করা হয়েছে। অনুক্রমটি এনসিবিআইয়ের পাশাপাশি ইউরোপীয় নিউক্লিওটাইড আর্কাইভ থেকে পাওয়া যাবে।[১]

ব্যবহার[সম্পাদনা]

এই প্রজাতির বিভিন্ন স্ট্রেন কার্যকর নোডিউল তৈরি করতে পারে এবং মসুর ডাল, মটর এবং ল্যাথাইরাসের বৃদ্ধি বাড়াতে পারে। এছাড়াও এটি জৈব সার উৎপাদনের জন্য প্রয়োজনীয়।[১]

ইতিহাস[সম্পাদনা]

রাইজোবিয়াম বাংলাদেশেন্স ২০১৫ সালে এম. হারুন-অর রশীদ এবং অন্যান্যরা বাংলাদেশের খুলনায়[১] মসুর ডালের মূলজ অর্বুদ থেকে বিচ্ছিন্ন করেছিলেন। স্ট্রেনটির নামকরণ করা হয়েছে "বাংলাদেশ" বিশেষণ থেকে, সম্পূর্ণ নামটির অর্থ "বাংলাদেশ থেকে"।[১][২]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. রশিদ, মোহাম্মদ হারুন-অর; ক্লারক্স, পিয়া; এভেরাল, ইসোবেল; উইনক, মাইকেল; উইলিয়ামস, এন; ইয়ং, জে. পিটার ডাব্লিউ.; সন্তোষ বরুণ, মার্কাস (২০১৫)। "Average nucleotide identity of genome sequences supports the description of Rhizobium lentis sp. nov., Rhizobium bangladeshense sp. nov. And Rhizobium binae sp. nov. From lentil (Lens culinaris) nodules" ইংরেজিInternational Journal of Systematic and Evolutionary Microbiology৬৫ (৯): ৩০৩৭–৪৫। hdl:1854/LU-7061135অবাধে প্রবেশযোগ্যডিওআই:10.1099/ijs.0.000373অবাধে প্রবেশযোগ্যপিএমআইডি 26060217lay summary (পিডিএফ) 
  2. Rashid, M.H., Gonzalez, H., Young, J.P.W., and Wink, M. (2014) Rhizobium leguminosarum is the symbiont of lentil in the Middle East and Europe but not in Bangladesh. FEMS Microbiology Ecology, 87: 64 -77.
  3. Rashid, M.H., Schafer, H., Gonzalez, H, and Wink, M. (2012) Genetic diversity of rhizobia nodulating lentil (Lens culinaris) in Bangladesh. Systematic and Applied Microbiology, 35: 98-109.

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]