গ্রাম-নেগেটিভ ব্যাকটেরিয়া

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
গ্রাম-নেগেটিভ (গোলাপি-লাল রঙের) সিউডোমোনাস এরুজিনোসা ব্যাকটেরিয়ার অণুবীক্ষণিক চিত্র

যেসব ব্যাকটেরিয়া, "ব্যাকটেরিয়া পৃথকীকরণ"এর গ্রাম স্টেইনিং পদ্ধতিতে ব্যবহৃত ক্রিস্টাল ভায়োলেট রঞ্জক ধরে রাখে না, তাদেরকে গ্রাম-নেগেটিভ ব্যাকটেরিয়া বলে।[১] এরা তাদের কোষ এনভেলপ (cell envelope) দ্বারা চিহ্নিত হয়, যা একত্রে একটি অন্তঃস্থ সাইটোপ্লাজমিক কোষ ঝিল্লি এবং একটি বহিঃস্থ ঝিল্লির মাঝে স্যান্ডউইচকৃত অবস্থায় থাকা পাতলা পেপটিডোগ্লাইকানের কোষ প্রাচীর নিয়ে গঠিত।

কার্যত পৃথিবীর যে সমস্ত পরিবেশে জীবন ধারণ করা সম্ভব, সেরকম সব জায়গাতেই গ্রাম-নেগেটিভ ব্যাকটেরিয়া পাওয়া যায়। গ্রাম-নেগেটিভ ব্যাকটেরিয়াতে মডেল জীব এশেরিকিয়া কোলাই (Escherichia coli)-এর পাশাপাশি সিউডোমোনাস এরুজিনোসা (Pseudomonas aeruginosa), ক্ল্যামাইডিয়া ট্র্যাকোমেটিস (Chlamydia trachomatis), এবংইয়ারসিনিয়া পেস্টিস (Yersinia pestis)-এর মতো অনেক রোগ সৃষ্টিকারী (pathogenic) ব্যাকটেরিয়া অন্তর্ভুক্ত। চিকিৎসা ক্ষেত্রে এসব ব্যাকটেরিয়া একটি বড় রকমের প্রতিবন্ধকতা, কারণ তাদের বহিঃস্থ ঝিল্লি তাদেরকে অনেক কিছু থেকে রক্ষা করে; যেমন- পেনিসিলিন সহ বহুসংখ্যক অ্যান্টিবায়োটিক ; বিভিন্ন পরিষ্কারক (Detergent) যেগুলো সাধারণত অন্তঃস্থ কোষ ঝিল্লির পেপটিডোগ্লাইকান স্তরের ক্ষতি করে ; এবং লাইসোজাইম, একটি জীবাণু নিরোধক উৎসেচক (Antimicrobial enzyme), যা প্রাণীদেহের সহজাত প্রতিরক্ষা (Innate immunity) গঠনে অংশ নেয়। এছাড়াও, এই ঝিল্লির বহিঃস্থ পত্রটিতে (outer leaflet) একটি জটিল লিপোপলিস্যাকারাইড (এলপিএস; ইংরেজিতে Lipopolysaccharide, LPS) থাকে, প্রতিরক্ষা কোষ ব্যাকটেরিয়াকে বিদীর্ণ (lysed) করে ফেললে যার লিপিড এ (Lipid A) উপাদান মুক্ত হয়ে একটি বিষাক্ত প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করতে পারে। এই বিষাক্ত প্রতিক্রিয়ার ফলে হতে পারে জ্বর, বর্ধিত শ্বাস প্রশ্বাসের হার এবং নিম্ন রক্তচাপ ; যা সেপটিক শক নামক একটি জীবন-নাশকারী অবস্থা হিসেবে পরিচিত।[২]

অ্যামিনোপেনিসিলিনস্‌ (Aminopenicillins), ইউরিডোপেনিসিলিনস্ (Ureidopenicillins)‌, সেফালোস্পোরিনস্‌ (Cephalosporins), বিটা-ল্যাকটাম-বিটাল্যাকটামেজ নিরোধকের সংমিশ্রণসমূহ (Betalactam-betalactamase combinations যেমন- পিপারাসিলিন-ট্যাজোব্যাকটাম / Piperacillin-Tazobactam), ফোলেট নিরোধক (Folate antagonists), কুইনোলোনস্‌ (Quinolones) এবং কার্বাপেনেমস্‌ (Carbapenems) সহ গ্রাম-নেগেটিভ ব্যাকটেরিয়া লক্ষ্য করে আরও বেশ কয়েকটি শ্রেণীর অ্যান্টিবায়োটিকসমূহ (Classes of antibiotics) উদ্ভাবন করা হয়েছে। এর মধ্যে অনেকগুলো অ্যান্টিবায়োটিক গ্রাম পজিটিভ অণুজীবগুলোকেও লক্ষ্য করে কাজ করে। যেসব ওষুধ বিশেষভাবে গ্রাম-নেগেটিভ অণুজীবদের লক্ষ্য করে সেগুলো হচ্ছে- অ্যামিনোগ্লাইকোসাইডস্‌ (Aminoglycosides), মোনোব্যাকটামস্‌ (Monobactams e.g. Aztreonam) এবং সিপ্রোফ্লক্সাসিন

বৈশিষ্ট্য[সম্পাদনা]

গ্রাম-নেগেটিভ কোষ প্রাচীরের গঠন
গ্রাম পজিটিভ এবং -নেগেটিভ ব্যাকটেরিয়াদের প্রধানত তাদের কোষ প্রাচীরের গঠন দ্বারা পৃথক করা হয়

সাধারণভাবে, নিম্নলিখিত বৈশিষ্ট্যগুলো গ্রাম-নেগেটিভ ব্যাকটেরিয়াতে উপস্থিত রয়েছে:

  1. একটি অন্তঃস্থ কোষ ঝিল্লি রয়েছে (সাইটোপ্লাজমিক)
  2. একটি পাতলা পেপটিডোগ্লাইকান স্তর রয়েছে (এটি গ্রাম পজিটিভ ব্যাকটেরি‍য়াতে আরও বেশি পুরু থাকে)
  3. একটি বহিঃস্থ ঝিল্লি আছে, যার বাইরের পত্রটি লিপোপলিস্যাকারাইড (এলপিএস) (লিপিড এ, কেন্দ্রীয় পলিস্যাকারাইড এবং ও অ্যান্টিজেন নিয়ে গঠিত) এবং ভেতরের পত্রটি (leaflet) ফসফোলিপিড দ্বারা গঠিত।
  4. পোরিনগুলো (Porins) বহিঃস্থ ঝিল্লিতে বিদ্যমান থাকে, যারা নির্দিষ্ট অণুর জন্য ছিদ্রপথ হিসেবে কাজ করে
  5. বহিঃস্থ ঝিল্লি এবং সাইটোপ্লাজমিক ঝিল্লির মাঝখানে ঘন জেল-জাতীয় পদার্থে ভরা একটি জায়গা আছে, যা পেরিপ্লাজম নামে পরিচিত
  6. এস-স্তরটি (S-layer) পেপটিডোগ্লাইকানের পরিবর্তে বহিঃস্থ ঝিল্লির সাথে সরাসরি সংযুক্ত থাকে
  7. যদি উপস্থিত থাকে, তবে ফ্ল্যাজেলা দুটির পরিবর্তে চারটি রিং অবলম্বন করে থাকে (আসলে গ্রাম-পজিটিভ ব্যাকটেরিয়াতে দুটি রিং থাকে)
  8. টিকোয়িক এসিড (Teichoic acid) বা লিপোটিকোয়িক এসিড (Lipoteichoic acid) থাকে না
  9. লিপোপ্রোটিনগুলো পলিস্যাকারাইড কাঠামোর সাথে সংযুক্ত থাকে
  10. কিছু কিছুতে ব্রাউনের লিপোপ্রোটিন থাকে, যা সমযোজী বন্ধনের মাধ্যমে বহিঃস্থ ঝিল্লি ও পেপটিডোগ্লাইকান শৃঙ্খলের মাঝে একটি সংযোগ স্থাপন করে
  11. খুবই অল্পকিছু ব্যাতীক্রম ছাড়া বেশিরভরাই স্পোর গঠন করে না।

শ্রেণিবিন্যাস[সম্পাদনা]

কোষের আকারের পাশাপাশি, দ্রুত সময়ের মধ্যে ব্যাকটেরিয়ার প্রজাতিসমূহের ভেতর পার্থক্য নির্ণয় করতে, একসময় গ্রাম স্টেইনিং পদ্ধতি ব্যবহৃত হত। ঐতিহাসিকভাবে, গ্রাম স্টেইনিং পদ্ধতির উপর ভিত্তি করে মনেরা রাজ্যকে (Kingdom Monera) প্রধানত চার ভাগে বিভক্ত করা হতঃ ফিরমিকিউটস (Firmicutes; স্টেইনিং পদ্ধতিতে পজিটিভ), গ্র্যাসিলিকিউটস (Gracilicutes; স্টেইনিং পদ্ধতিতে নেগেটিভ), মলিকিউটস (Mollicutes; স্টেইনিং পদ্ধতিতে নিরপেক্ষ) এবং মেন্ডোকিউটস (Mendocutes; স্টেইনিং পদ্ধতিতে পরিবর্তনশীল)।[৩] ১৯৮৭ সাল থেকে, ফাইলোজেনেটিক্সের আণবিক গবেষণার (Molecular studies) মাধ্যমে গ্রাম-নেগেটিভ ব্যাকটেরিয়ার "মোনোফাইলি" (Monophyly)-কে অপ্রমাণিত বলে গণ্য করা হয়।[৪] তবে কিছু লেখক, যেমন ক্যাভালিয়ার-স্মিথ (Cavalier-Smith) এখনও তাদেরকে মোনোফাইলেটিক ট্যাক্সন হিসাবে বিবেচনা করেন (যদিও কোন ক্ল্যাড/Clade নয়; তাঁর মোনোফাইলির সংজ্ঞাটিতে একটি "একক সাধারণ পূর্বপুরুষ"/single common ancestor-এর প্রয়োজন হয়; তবে হলোফাইলির অর্থাৎ যে বৈশিষ্ট্য দিয়ে সমস্ত বংশধরদের ট্যাক্সনে আবদ্ধ করা যায়, তার প্রয়োজন পড়ে না) এবং গ্রুপটিকে একটি উপরাজ্য "নেজিব্যাকটেরিয়া" (Subkingdom "Negibacteria") হিসেবে উল্লেখ করেন।[৫]

উদাহরণ প্রজাতি[সম্পাদনা]

গ্রাম-নেগেটিভ ব্যাকটেরিয়ার একটি প্রধান পর্ব হল প্রোটিওব্যাকটেরিয়া (Proteobacteria) , এছাড়াও রয়েছে এশেরিকিয়া কোলাই (E. coli), সালমোনেলা (Salmonella), শিগেলা (Shigella) এবং অন্যান্য এন্টেরোব্যাকটেরিয়াসি (Enterobacteriaceae), সিউডোমোনাস (Pseudomonas), Moraxella, Helicobacter, Stenotrophomonas, Bdellovibrio, Legionella ইত্যাদি। গ্রাম-নেগেটিভ ব্যাকটেরিয়ার অন্যান্য উল্লেখযোগ্য গ্রুপের মধ্যে রয়েছে সায়ানোব্যাকটেরিয়া (Cyanobacteria), স্পাইরোকিটস্‌ (Spirochaetes) সবুজ সালফার (green sulfur) এবং সবুজ অ-সালফার (green non-sulfur) ব্যাকটেরিয়া।

চিকিৎসা ক্ষেত্রের সাথে সংশ্লিষ্ট যে চার ধরনের গোলাকার গ্রাম-নেগেটিভ ব্যাকটেরিয়া (কক্কাই বা cocci) রয়েছে , তাদের ভেতর একটি যৌনবাহিত রোগ (Neisseria gonorrhoeae)), একটি মেনিনজাইটিস (Neisseria meningitidis), এবং বাকিরা শ্বাস প্রশ্বাসের লক্ষণসমূহ (Moraxella catarrhalis, Haemophilus influenzae) ঘটায়।

গ্রাম-নেগেটিভ ব্যাসিলাই (bacilli বা দণ্ডাকৃতির ব্যাকটেরিয়া)-র প্রচুর প্রজাতি চিকিৎসা ক্ষেত্রের সাথে সম্পর্কিত। তাদের মধ্যে কারো কারো কারণে প্রধানত শ্বাসযন্ত্রের সমস্যা হয়,যেমন- ক্লেবসিয়েলা নিউমোনিয়া (Klebsiella pneumoniae), Legionella pneumophila, সিউডোমোনাস এরুজিনোসা (Pseudomonas aeruginosa)। কারো কারো কারণে হয় প্রস্রাবের সমস্যা, যেমন- এশেরিকিয়া কোলাই, প্রোটিয়াস মিরাবিলিস (Proteus mirabilis), Enterobacter cloacae, Serratia marcescens। আর কেউ কেউ ঘটায় খাদ্যনালীর সমস্যা, যেমন- হেলিকোব্যাক্টার পাইলোরি, Salmonella enteritidis, সালমোনেলা টাইফি

হাসপাতাল-লব্ধ সংক্রমণের (Hospital-acquired infection) সাথে সম্পর্কিত গ্রাম-নেগেটিভ ব্যাকটেরিয়াগুলোর মধ্যে রয়েছে অ্যাসিনেটোব্যাকটার বোমানী (Acinetobacter baumannii), যা হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (Intensive-care units or ICU) রক্তের সংক্রমণ (ব্যাকটেরেমিয়া বা Bacteremia), গৌণ মেনিনজাইটিস এবং ভেন্টিলেটর-সংক্রান্ত নিউমোনিয়া (ventilator-associated pneumonia) সৃষ্টি করে।

ব্যাকটেরিয়ার রূপান্তর[সম্পাদনা]

"অনুভূমিক জিন স্থানান্তর" (Horizontal gene transfer)-এর জন্যে দরকারি তিনটি প্রক্রিয়ার মধ্যে রূপান্তর(Transformation) অন্যতম। রূপান্তরের মাধ্যমে এক্সোজেনাস জেনেটিক উপাদান একটি দাতা ব্যাকটেরিয়াম থেকে একটি গ্রহীতা ব্যাকটেরিয়ামে যায়। অপর দুটি প্রক্রিয়া হচ্ছে কনজুগেশন (দুটি ব্যাকটেরিয়া কোষের ভেতর সরাসরি সংযোগের মাধ্যমে জিনগত উপাদানের স্থানান্তর প্রক্রিয়া) এবং ট্রান্সডাকশন (একটি ব্যাকটেরিওফাজ ভাইরাস, একটি দাতা ব্যাকটেরিয়ামের DNA একটি গ্রহীতা পোষক ব্যাকটেরিয়ামের ভেতর ঢুকিয়ে দেয়)।  রূপান্তর প্রক্রিয়ায়, জেনেটিক উপাদান মধ্যবর্তী মাধ্যমের ভিতর দিয়ে যায় এবং এর গ্রহণ সম্পূর্ণরূপে গ্রহীতা ব্যাকটেরিয়ামের উপর নির্ভর করে।[৬]

২০১৪ সাল পর্যন্ত প্রায় ৮০ প্রজাতির ব্যাকটেরিয়া রূপান্তর করতে সক্ষম বলে জানা গিয়েছিল, এক্ষেত্রে গ্রাম পজিটিভ এবং গ্রাম-নেগেটিভ ব্যাকটেরিয়ার সংখ্যা প্রায় সমান সমান ছিল; তবে এই সংখ্যা অতিরঞ্জিতও হতে পারে কারণ বেশীরভাগ রিপোর্টে সঠিকমাত্রায় তথ্যসংযোজন ছিল না।[৬] গ্রাম-নেগেটিভ ব্যাকটেরিয়ার মধ্যে রূপান্তর ঘটে চিকিৎসা ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ এমন প্রজাতির মধ্যে Helicobacter pylori, Legionella pneumophila, Neisseria meningitidis, Neisseria gonorrhoeae, Haemophilus influenzae and Vibrio cholerae নিয়ে বিস্তর অধ্যয়ন করা হয়েছে।[৭]

চিকিৎসা পদ্ধতি[সম্পাদনা]

গ্রাম-নেগেটিভ ব্যাকটেরিয়ার অনন্য বৈশিষ্ট্যগুলোর মধ্যে একটি হল ব্যাকটেরিয়ার বহিঃস্থ ঝিল্লির গঠন। এই ঝিল্লির বাইরের পত্রটিতে একটি জটিল লিপোপলিস্যাকারাইড (এলপিএস) রয়েছে যার লিপিড অংশটি এন্ডোটক্সিন হিসেবে কাজ করে। যদি গ্রাম-নেগেটিভ ব্যাকটেরিয়াসংবহনতন্ত্রে প্রবেশ করে, এলপিএস একটি বিষাক্ত প্রতিক্রিয়া (Toxic reaction) সৃষ্টি করতে পারে। এর ফলে জ্বর হয়, শ্বাস প্রশ্বাসের হার বৃদ্ধি পায় এবং নিম্ন রক্তচাপ হয়; যা প্রাণঘাতী সেপটিক শকে পরিণত হতে পারে।[২]

বহিঃস্থ ঝিল্লিটি বেশ কয়েকটি অ্যান্টিবায়োটিক, রঞ্জক পদার্থ (Dye) এবং পরিষ্কারক (Detergent) থেকে গ্রাম-নেগেটিভ ব্যাকটেরিয়াকে রক্ষা করে; যেগুলো সাধারণত অন্তঃস্থ ঝিল্লি বা পেপটিডোগ্লাইকান দিয়ে নির্মিত কোষপ্রাচীরের ক্ষতি করে। বহিঃস্থ ঝিল্লিটির কারণে এসব ব্যাকটেরিয়া লাইসোজাইম এবং পেনিসিলিনের প্রতি প্রতিরোধ্যতা অর্জন করে। পেরিপ্লাজমিক স্পেসেও (দুটি কোষ ঝিল্লির মধ্যবর্তী স্থান) অ্যান্টিবায়োটিক ভাঙার বা কিছুটা পরিবর্তন করার জন্য প্রয়োজনীয় এনজাইম রয়েছে। গ্রাম-নেগেটিভ সংক্রমণের চিকিৎসা করার জন্য সাধারণত যেসব ওষুধ ব্যবহৃত হয় সেগুলোর মধ্যে রয়েছে অ্যামিনো, কার্বোক্সি ও ইউরিডো পেনিসিলিনস্‌ (অ্যামপিসিলিন, অ্যামোক্সিসিলিন, পিপারাসিলিন, টিকারসিলিন)। এ ওষুধগুলো হজম করতে পারে পেরিপ্লাজমিক স্পেসের এমন এনজাইমের (বিটা-ল্যাকটামেজ নামে পরিচিত) উপস্থিতি মোকাবেলা করার জন্য বিটা-ল্যাকটামেজ নিরোধকের সাথে ওষুধগুলো সংমিশ্রিত করা হতে পারে। গ্রাম-নেগেটিভ ব্যাকটেরিয়া নিরোধী অন্যান্য ওষুধের ভেতর রয়েছে সেফালোস্পোরিনস্‌, মোনোব্যাকটামস্‌ (অ্যাজট্রিওনাম), অ্যামিনোগ্লাইকোসাইডস্‌, কুইনোলোনস্‌, ম্যাক্রোলাইডস্‌, ক্লোরামফেনিকল, ফোলেট নিরোধক এবং কার্বাপেনেমস্।[৮]

গ্রাম-নেগেটিভ ব্যাকটেরিয়ার রোগ সৃষ্টি করার (প্যাথোজেনিক) ক্ষমতা প্রায়ই তাদের বহিঃস্থ ঝিল্লিটির নির্দিষ্ট উপাদান, বিশেষত, এলপিএস-এর সাথে জড়িত থাকে।[১] মানুষের দেহে, এলপিএসের উপস্থিতি একটি সহজাত অনাক্রম্য প্রতিক্রিয়া , সক্রিয় প্রতিরক্ষাতন্ত্র এবং সাইটোকাইনস্‌ (হরমোনঘটিত নিয়ামক)-এর উৎপাদন সূচনা করে। সাইটোকাইন উৎপাদনের একটি সাধারণ প্রতিক্রিয়া হল প্রদাহ, যা পোষকে বিষক্রিয়া (Host toxicity) তৈরি করতে পারে। এলপিএসের প্রতি সহজাত অনাক্রম্য প্রতিক্রিয়া অবশ্য প্যাথোজেনিসিটি বা রোগ সৃষ্টির ক্ষমতার সাথে সমার্থক নয়।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন]

আরও দেখুন[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. Baron S, Salton MR, Kim KS (১৯৯৬)। "Structure"Baron's Medical Microbiology (4th সংস্করণ)। Univ of Texas Medical Branch। আইএসবিএন 978-0-9631172-1-2পিএমআইডি 21413343 
  2. Pellitier LL Jr, "Microbiology of the Circulatory System" "NCBI Bookshelf", April 18, 2017[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ] উদ্ধৃতি ত্রুটি: <ref> ট্যাগ বৈধ নয়; আলাদা বিষয়বস্তুর সঙ্গে "ww.ncbi.nlm.nih.gov" নামটি একাধিক বার সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে
  3. Gibbons, N. E.; Murray, R. G. E. (১৯৭৮)। "Proposals Concerning the Higher Taxa of Bacteria": 1–6। ডিওআই:10.1099/00207713-28-1-1অবাধে প্রবেশযোগ্য 
  4. Woese CR (জুন ১৯৮৭)। "Bacterial evolution": 221–71। ডিওআই:10.1128/MMBR.51.2.221-271.1987পিএমআইডি 2439888পিএমসি 373105অবাধে প্রবেশযোগ্য 
  5. Cavalier-Smith, T. (২০০৬)। "Rooting the tree of life by transition analyses": 19। ডিওআই:10.1186/1745-6150-1-19পিএমআইডি 16834776পিএমসি 1586193অবাধে প্রবেশযোগ্য 
  6. Johnston C, Martin B, Fichant G, Polard P, Claverys JP (২০১৪)। "Bacterial transformation: distribution, shared mechanisms and divergent control": 181–96। ডিওআই:10.1038/nrmicro3199পিএমআইডি 24509783 
  7. Seitz, Patrick; Blokesch, Melanie (২০১৩-০৫-০১)। "Cues and regulatory pathways involved in natural competence and transformation in pathogenic and environmental Gram-negative bacteria"FEMS Microbiology Reviews (ইংরেজি ভাষায়)। 37 (3): 336–363। আইএসএসএন 0168-6445ডিওআই:10.1111/j.1574-6976.2012.00353.x 
  8. "NEJM Journal Watch: Summaries of and commentary on original medical and scientific articles from key medical journals"www.jwatch.org 

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]