রস উইলিয়াম উলব্রিখ

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে

রস উইলিয়াম উলব্রিখ (জন্ম ২৭ মার্চ ১৯৮৪) একজন দন্ডপ্রাপ্ত আমেরিকান ডার্কনেট মার্কেট অপারেটর এবং মাদক পাচারকারী ,যিনি ২০১১ থেকে ২০১৩ সালে গ্রেপ্তার হওয়া পর্যন্ত সিল্করোড নামক ওয়েবসাইটের প্রতিষ্ঠা এবং পরিচালনার জন্য সুপরিচিত ছিলেন। তিনি ড্রেড পাইরেট রবার্টস্ ছদ্মনামে তার কার্যক্রম পরিচালনা করতেন।ড্রেড পাইরেট রবার্টস্ হচ্ছে 'দ্যা প্রিন্সেস ব্রাইড' (১৯৭৩) নামক উপন্যাসের একটি কাল্পনিক চরিত্র।

রস উইলিয়াম উলব্রিখ
জন্ম (1984-03-27) মার্চ ২৭, ১৯৮৪ (বয়স ৪০)
অন্যান্য নামড্রেড পাইরেট রবার্টস্, ফ্রস্টি,অ্যালটয়েড
নাগরিকত্বআমেরিকান
মাতৃশিক্ষায়তনইউনিভার্সিটি অব টেক্সাস,ডালাস (স্নাতক ২০০৬)
পেনসেলভিয়া স্টেট ইউনিভার্সিটি (স্নাতকোত্তর ২০০৯)
কর্মজীবনফেব্রুয়ারি ২০১১ - অক্টোবর ২০১৩
পরিচিতির কারণসিল্করোডের প্রতিষ্ঠাতা
অপরাধীর অবস্থাকারগার
দণ্ডাদেশের কারণঅর্থ পাচার
কম্পিউটার হ্যাকিং
মাদক দ্রব্যের চোরাচালান(৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ )
ফৌজদারি দণ্ডযাবজ্জীবন কারাদন্ড এবং প্যারোলে মুক্তি ছাড়া ৪০ বছরের কারাদণ্ড (২৯ মে ২০১৫)
উদ্দিষ্ট তারিখ১লা অক্টোবর ২০১৩
কারারুদ্ধমার্কিন সংশোধনাগার,টাসকন

২০১৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে তার বিরুদ্ধে অর্থ পাচার,কম্পিউটার হ্যাকিং,পরিচয়পত্র জালিয়াতি এবং ইন্টারনেটের মাধ্যমে মাদক পাচারের ষড়যন্ত্রের অভিযোগ আনা হয়।তিনি বর্তমানে দুইটি অভিযোগের একটির জন্য যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং অন্যটির জন্য বিনা প্যারোলে ৪০ বছরের কারাদন্ড ভোগ করছেন।২০১৭ সালের মে মাসে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একটি আদালত তার আপিলে সাড়া না দিয়ে একই রায় বহাল রাখে।মার্কিন সুপ্রিম কোর্ট ২০১৮ সালের জুন মাসে তার তার আরেকটি আপিল নামঞ্জুর করে দেয়।

প্রারম্ভিক জীবন ও শিক্ষা[সম্পাদনা]

উলব্রিখের বেড়ে ওঠা অস্টিন মেট্রোপলিটন এলাকাতে। বাল্যকালে তিনি বয়েজ স্কাউটের একজন সদস্য ছিলেন এবং সম্মানসূচক ঈগল পদক অর্জন করেন। তিনি অস্টিনের কাছাকাছি ওয়েস্ট রিজ মিডল স্কুল ও ওয়েস্টলেক হাই স্কুল থেকে পড়ালেখা করতেন। ২০০২ সালে তিনি হাইস্কুল পর্যায় সম্পন্ন করেন।

তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ডালাসের ইউনিভার্সিটি অব টেক্সাসে পূর্ণ একাডেমিক বৃত্তি নিয়ে স্নাতকে ভর্তি হন এবং ২০০৬ সালে পদার্থবিজ্ঞানে গ্রাজুয়েশন সম্পন্ন করেন। এরপর তিনি স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করার জন্য পেনসেলভিয়া স্টেট ইউনিভার্সিটিতে উপকরণবিজ্ঞান ও প্রকৌশন বিভাগে ভর্তি হন এবং ক্রিস্টালোগ্রাফি নিয়ে পড়াশোনা করেন। এরমধ্যেই তার মধ্যে অর্থনৈতিক উদারবাদী তত্ত্ব নিয়ে আগ্রহ জন্ম নেয়।তিনি লুডভিগ ভন মিসসের রাজনৈতিক দর্শন এবং তার অর্থনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে আলোচনা করতে কলেজ বিতর্কে অংশগ্রহণ করতেন।

২০০৯ সালে পেনসেলভিয়া স্টেট ইউনিভার্সিটি থেকে স্নাতকোত্তর শেষ করে তিনি আবার অস্টিনে ফিরে যান। এই সময়ে,উলব্রিখ তার চাকরি নিয়ে সন্তুষ্ট ছিল না। তিনি উদ্যোক্তা হতে চেয়েছিল কিন্তু প্রথম প্রচেষ্টাতেই নিজের ব্যবসা শুরু করতে ব্যর্থ হন।তিনি প্রথমে ডে ট্রেডিং করার চেষ্টা করেছিলেন এবং পরবর্তীতে ভিডিও গেইম কোম্পানি প্রতিষ্ঠা করেন।যদিও তার মা দাবী করেছিলেন যে তার ছেলের লিঙ্কডইন প্রোফাইল মতে সে একজন অনলাইন গেমার, কোনো ডার্কনেট মার্কেট পরিচালক না। উলব্রিখের প্রোফাইলে লেখা ছিল, “আমি এমন একটি অনলাইন মুক্তবাজার তৈরী করেছি যেখানে কারো নিয়মনীতির তোয়াক্কা করা ছাড়াই যে কেউ উদার অর্থনীতির স্বাদ নিতে পারবে।” সবশেষে তিনি তার বন্ধু ডনি পলমেরট্রি এর সাথে অনলাইনভিত্তিক ব্যবহৃত বই বিক্রিতে সাহায্য করার জন্য চুক্তিবদ্ধ হন।

সিল্করোড,গ্রেপ্তার এবং বিচার[সম্পাদনা]

উলব্রিখ সিল্করোডকে একটি মুক্তবাজার হিসেবে দাঁড় করানোর আগে ব্যবহারকারীর পরিচয় গোপন রাখার উপর জোর দেন। তিনি বিশ্বাস করতেন যে কাউকে আঘাত করার আগে পর্যন্ত সবারই যেকোনো পণ্য ক্রয়-বিক্রয়ের অধিকার থাকা উচিত। সিল্করোডকে তিনি টর এবং বিটকয়েন ব্যবহারোপযোগী করে তোলেন। টর হচ্ছে এমন একটি প্রটোকল যা সমস্ত ডাটাকে এনক্রিপ্ট করে রাখে এবং আইপি এড্রেস পরিবর্তন করে; যার মাধ্যমে ব্যবহারকারীর পরিচয়ের গোপনীয়তা নিশ্চিত হয়। যার ফলে টর সাইট হিসেবে আত্মপ্রকাশের আগে উলব্রিখ তার আইপি এড্রেস গোপন করতে পেরেছিল। বিটকয়েন হলো একধরনের ক্রিপ্টোকারেন্সি। সব বিটকয়েন লেনদেন একটি লগ এর মধ্যে রেকর্ড করা হয়; ব্লকচেইন ব্যবহারকারীরা তাদের অনলাইন ওয়ালেট ব্যবহার করে গোপনীয়তার সাথে লেনদেন সম্পন্ন করতে পারে।

উলব্রিখ সিল্করোডে তার ছদ্মনাম 'ড্রেড পাইরেট রবার্টস্' ব্যবহার করত। যদিও এই একাউন্টের একমাত্র ব্যবহারকারী শুধু তিনিই ছিলেন নাকি অন্য কেউ ও এটি ব্যবহার করতো তা নিয়ে বিতর্ক রয়েছে। ড্রেড পাইরেট রবার্টস্ সিল্করোড তৈরীর জন্য স্যামুয়েল এডওয়ার্ড কঙ্কিনের 'এলংসাইড নাইট' কে অনুপ্রেরণা হিসেবে দেখতেন।

দোষী প্রমাণিত হওয়ার পর[সম্পাদনা]

আরও দেখুন[সম্পাদনা]