যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবিতে আন্দোলনসমূহ

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবিতে আন্দোলন : ১৯৭২ হতে বর্তমান
যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবিতে আন্দোলন : ১৯৭২ হতে বর্তমান
অবস্থান
বাংলাদেশ
কারণ
  • ১৯৭১ সালের বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধকালে যুদ্ধাপরাধের সাথে জড়িত সকলের সর্ব্বোচ্চ সাজা প্রদানের দাবীতে।
  • জামায়াতে ইসলামীর রাজনীতি নিষিদ্ধ করা[১][২]
  • জামায়াত-শিবির সংশ্লিষ্ট সকল প্রতিষ্ঠান বয়কট করা [৩]
প্রক্রিয়াসমূহ
  • নাগরিক প্রতিরোধ
  • বিক্ষোভ
  • অনলাইন কার্যক্রম

যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবিতে আন্দোলন: ১৯৭২ হতে বর্তমান এই প্রবন্ধ-টিতে ১৯৭২ হতে বর্তমান সময় পর্যন্ত যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবিতে আন্দোলনের পর্যায়ক্রমিক ইতিহাস তুলে ধরা হয়েছে।

১৯৭২[সম্পাদনা]

১৯৭২ সালে শহীদ বুদ্ধিজীবীদের নেতৃত্বে আন্দোলন শুরু হয়। বিশেষ করে জহির রায়হানের মা অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন। [৪]

১৯৭৯[সম্পাদনা]

১৯৭৯ সালে মুক্তিযোদ্ধা সংসদের নেতৃত্বে আন্দোলন শুরু হয়।[৫]

১৯৮৮[সম্পাদনা]

ডা. এম এ হাসানের নেতৃত্বে শহীদ লেফটেন্যান্ট সেলিম মঞ্চ হতে আন্দোলন শুরু হয়।[৬]

১৯৯২[সম্পাদনা]

১৯৯১ সালের ২৯শে ডিসেম্বর গোলাম আযমকে জামায়াতে ইসলামী তাদের দলের আমীর ঘোষণা করলে বাংলাদেশে জনবিক্ষোভের সূত্রপাত হয়। বিক্ষোভের অংশ হিসাবে ১৯৯২ সালের ১৯শে জানুয়ারি ১০১ জন সদস্য বিশিষ্ট একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি গঠিত হয় জাহানারা ইমামের নেতৃত্বে। তিনি হন এর আহ্বায়ক। এর পাশাপাশি মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধী প্রতিরোধ মঞ্চ, ১৪টি ছাত্র সংগঠন, প্রধান প্রধান রাজনৈতিক জোট, শ্রমিক-কৃষক-নারী এবং সাংস্কৃতিক জোটসহ ৭০টি সংগঠনের সমন্বয়ে পরবর্তীতে ১১ই ফেব্রুয়ারি, ১৯৯২ সালে ‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়ন ও একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল জাতীয় সমন্বয় কমিটি’ গঠিত হয়। সর্বসম্মতিক্রমে এর আহ্বায়ক নির্বাচিত হন জাহানারা ইমাম। এই কমিটি ১৯৯২ সালে ২৬শে মার্চ ’গণআদালত’ এর মাধ্যমে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে একাত্তরের নরঘাতক গোলাম আযমের ঐতিহাসিক বিচার অনুষ্ঠান করে। গণআদালাতে গোলাম আযমের বিরুদ্ধে দশটি সুনির্দিষ্ট অভিযোগ উত্থাপিত হয়। ১২ জন বিচারক সমন্বয়ে গঠিত গণআদালতের চেয়ারম্যান জাহানারা ইমাম গোলাম আযমের ১০টি অপরাধ মৃত্যুদণ্ডযোগ্য বলে ঘোষণা করেন।

২০০৬[সম্পাদনা]

২০০৬ এ আন্দোলনের ডাক দেন সেক্টর কমান্ডার্স ফোরাম।

২০০৭[সম্পাদনা]

সরকারি বাঙলা কলেজের ছাত্র-ছাত্রীদের মানববন্ধন

২০০৭ - এ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় জরুরি অবস্থার হুমকির মধ্যেও সরকারি বাঙলা কলেজ -এর শিক্ষার্থীবৃন্দ যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবিতে ও বাঙলা কলেজ বধ্যভূমিতে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি সংরক্ষণের দাবিতে আন্দোলনের সূচনা করে এবং পর্যায়ক্রমে মানববন্ধন, প্রতীকী অনশন, সমাবেশ, পথসভা, মিছিল, নিরবতা পালন, প্রতীকী বেদিতে পুষ্প অর্পণ ইত্যাদি শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালন করে। [৭][৮][৯][১০][১১] সাধারণ ছাত্র-ছাত্রীদের উদ্যোগে, নেতৃত্বে ও সমন্বয়ে শুরু হওয়া চলমান এই আন্দোলনে কলেজের জাতীয় অঙ্গনের মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক সংগঠন, সাংস্কৃতিক সংগঠন, বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ, বিভিন্ন রাজনৈতিক-অরাজনৈতিক সংগঠন সুদৃঢ় সমর্থন ব্যক্ত করে। [১২][১৩][১৪][১৫][১৬] ২০০৭ হতে ২০১০ পর্যন্ত রাজপথে সক্রিয় ভূমিকা পালনের পাশাপাশি ছাত্র-ছাত্রীরা ইন্টারনেটের মাধ্যমে ডিজিটাল আন্দোলন সবসময়ই অব্যাহত রাখে। [১৭][১৮][১৯][২০][২১]

২০১৩[সম্পাদনা]

২০১৩ সালের শাহবাগ আন্দোলন বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার শাহবাগে ফেব্রুয়ারির ৫ই তারিখ শুরু হয়। এই দিন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় সংঘটিত যুদ্ধাপরাধ এবং মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের অভিযোগে অভিযুক্ত আসামী আব্দুল কাদের মোল্লার বিচারের রায় ঘোষণা করে। কবি মেহেরুন্নেসাকে হত্যা, আলুব্দি গ্রামে ৩৪৪ জন মানুষ হত্যা সহ মোট ৬টি অপরাধের ৫টি প্রমাণিত হওয়ায় আদালত তাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড প্রদান করে। কিন্তু এতোগুলো হত্যা, ধর্ষণ, সর্বোপরী গণহত্যা ও মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের শাস্তি হিসেবে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডকে বাংলাদেশের আপামর জনসাধারণ মেনে নিতে পারেনি। রায়ের প্রতিক্রিয়া হিসেবে বিপুল সংখ্যক মানুষ ঢাকার শাহবাগে জড়ো হতে শুরু করে এবং এর অনুসরণে একসময় দেশটির অনেক স্থানেই সাধারণ মানুষের বিক্ষোভ সমাবেশ শুরু হয় ও এই আন্দোলনের মুখপাত্র ও নেতা হলেন ডা. ইমরান এইচ সরকার। এটি স্বাধীন বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় সহিংস গণ-আন্দোলন।।[২২][২৩]

২০১৮[সম্পাদনা]

আরও দেখুন[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "Shahbagh grand rally demands ban on Jamaat"The Daily Star। ৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৩। সংগ্রহের তারিখ ৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৩ 
  2. "Cry for Jamaat ban"Bdnews24.com। ৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৩। সংগ্রহের তারিখ ৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৩ 
  3. "Vow to boycott Jamaat institutions"। ৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৩। সংগ্রহের তারিখ ৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৩ 
  4. দৈনিক দেশ পত্রিকা, ২৬ ফেব্রুয়ারি ১৯৭২
  5. মুনতাসীর মামুন সম্পাদিত “মুক্তিযুদ্ধ কোষ”, তৃতীয় খণ্ড
  6. ডাঃ এম.এ. হাসানের “যুদ্ধাপরাধ, গণহত্যা ও বিচারের অন্বেষণ”
  7. দৈনিক খবর, ২ মার্চ ২০০৮
  8. দৈনিক ভোরের কাগজ, ২ মার্চ ২০০৮
  9. দৈনিক যায় যায় দিন, ২ মার্চ ২০০৮
  10. দৈনিক সমকাল, ২ মার্চ ২০০৮
  11. Daily STAR, 2 March 2008
  12. দৈনিক সমকাল, ১ ডিসেম্বর ২০০৭
  13. "Daily STAR, 12 December 2007"। ১৩ অক্টোবর ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১ জুলাই ২০১৩ 
  14. দৈনিক ভোরের কাগজ, ১৩ ডিসেম্বর ২০০৭
  15. দৈনিক সমকাল, ১৪ ডিসেম্বর ২০০৭
  16. দৈনিক সমকাল, ১ ফেব্রুয়ারি ২০০৮
  17. দৈনিক ডেস্টিনি, ১ ফেব্রুয়ারি ২০০৯
  18. দৈনিক যুগান্তর, ১ ফেব্রুয়ারি ২০০৯
  19. দৈনিক যুগান্তর, ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০০৯
  20. "Daily STAR, 26 March 2008"। ১৩ অক্টোবর ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১ জুলাই ২০১৩ 
  21. দৈনিক কালের কণ্ঠ, ১০ জুলাই ২০১০
  22. "Protesters demand death for Bangladesh war crimes Islamist"রয়টার্স। ফেব্রুয়ারি ৬, ২০১৩। ফেব্রুয়ারি ৮, ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ফেব্রুয়ারি ৮, ২০১৩ 
  23. "Thousands in Bangladesh war crimes protest"Aljazeera। ফেব্রুয়ারি ৮, ২০১৩। সংগ্রহের তারিখ ফেব্রুয়ারি ৮, ২০১৩