মেহরাঙ্গিজ মানুচেহরিয়ান

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
মেহরাঙ্গিজ মানুচেহরিয়ান
ইরানের সেনেট সদস্য
কাজের মেয়াদ
১৯৬৩ – ১৯৭২
উত্তরসূরীফরাজোল্লাহ রাসাই
সংসদীয় এলাকাতেহরান
ব্যক্তিগত বিবরণ
জন্ম১৯০৬
মাশহাদ, ইরান
মৃত্যু৫ জুলাই ২০০০(2000-07-05) (বয়স ৯৪)
তেহরান, ইরান
সমাধিস্থলবেহেস্ত-ই জাহরা
রাজনৈতিক দলস্বতন্ত্র রাজনীতিবিদ
প্রাক্তন শিক্ষার্থীতেহরান বিশ্ববিদ্যালয়
পেশাআইনজীবি

মেহরাঙ্গিজ মানুচেহরিয়ান (জন্ম ১৯০৬ – মৃত্যু ৫ জুলাই ২০০০ খ্রিস্টাব্দ) ইরানি আইনজীবী, সঙ্গীতজ্ঞ, নারীবাদী এবং সিনেটর ছিলেন।[১] তিনি ইরানের নারী সংগঠনের সাথে জড়িত ছিলেন। তিনি বিবাহের ক্ষেত্রে নারীর অধিকার বিস্তৃত আইনগুলির মধ্যে “পারিবারিক সুরক্ষা আইনের” খসড়া তৈরিতে জড়িত ছিলেন।[২]

উত্তরাধিকার[সম্পাদনা]

ইরানে নারীর অধিকার উন্নয়নে মানুচেহরিয়ানের অবদান স্বীকৃত। তার জীবন সম্পর্কে একটি বই "সেনেটর: দ্য ওয়ার্ক অব সিনেটর মেহরঙ্গিজ মানুচেহরিয়ান ইন দ্য স্ট্রাগল ফর লিগ্যাল রাইটস ফর উইমেন" ২০০৪ সালে লতিফে ইয়ারশেটার বুক অ্যাওয়ার্ড পায়।[৩]

কর্মজীবন[সম্পাদনা]

মানুচেহরিয়ান ইরানের প্রথম মহিলা আইনজীবী ও ইরানের প্রথম মহিলা সিনেটর ছিলেন। তিনি একজন সিনেটর হিসেবে নারীর অধিকার প্রসারে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রাখেন। একজন আইনজীবী হিসাবে অভিজ্ঞতা ব্যবহার করে, তিনি পারিবারিক সুরক্ষা আইন প্রণয়ন করেন, যা মহিলাদের পারিবারিক অধিকার প্রদান করে। প্রস্তাবিত আইনের বেশ কয়েকটি ধারা বাছাই করে সমালোচকরা ব্যাপকভাবে আলোচনা করে। এর ফলে আইনটি গণমাধ্যমে ব্যাপক বিতর্ক এবং আলোচনার বিষয় হয়ে ওঠে। দেশটির আলেমদের কিছু সদস্য দাবি করেন, এই আইনটি ইসলামের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়, নৈতিক মানদণ্ড শিথিল করেছে। তারা প্রকাশ্যে মনুচেহরিয়ানকে একজন বিধর্মী হিসেবে অভিহিত করে। মানুচেহরিয়ান নিরাপত্তার ভয়ে কিছু সময়ের জন্য তেহরান থেকে পালিয়ে যায়।[৪] এ আইনে বিয়ের নুন্যতম বয়স ১৮ বছর করা হয়, তালাক চাওয়ার অনুমতি দেয়া হয়, প্রথম স্ত্রীর অনুমতি ছাড়া দ্বিতীয় স্ত্রী গ্রহনে শাস্তির বিধান রাখা হয় এবং প্রথম স্ত্রী চাইলে তালাকও দিতে পারে-এমন বিধান রাখা হয়। ১৯৭৯ সালের ইসলামী বিপ্লবের পর আইনটি বাতিল করা হয়। প্রধানমন্ত্রী জাফর শরীফ-ইমামির সাথে বিরোধের পর মানুচেহরিয়ান সিনেট থেকে তার আসন ছেড়ে দেন। সংসদীয় বিতর্কে শরীফ-ইমামি তাকে অভদ্রভাবে সম্বোধন করে। শরীফ-ইমামি তার বাড়িতে গিয়ে ব্যক্তিগতভাবে ক্ষমা চেয়েছিলেন।[৫] মানুচেহরিয়ান বলেছিলেন তার কাছে ক্ষমা নয়, বরং জনসাধারণের কাছে তাকে ক্ষমা চাইতে হবে। এরপর মানুচেহরিয়ান পদত্যাগ করেন।[৬] ১৯৬৮ সালে নারীর অধিকার উন্নয়নে মানবাধিকার ক্ষেত্রে জাতিসংঘ কর্তৃক পুরস্কারে ভূষিত হন। মানুচেহরিয়ানকে ইরানের মহিলা সংগঠনের কেন্দ্রীয় কাউন্সিলের সদস্যও নিযুক্ত করা হয়েছিল। তিনি আইনজীবি হিসাবে আইনগত উপকরণের অসাধারণ আদেশ দিয়েছিলেন; একজন নারীবাদী হিসাবে বৈষম্যের বিরুদ্ধে নিরলসভাবে লড়াই করেছেন; এবং সিনেটে সহকর্মীদের দ্বারা অত্যন্ত সম্মানিত হয়েছিলেন।

আরো দেখুন[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. Firoozeh Kashani-Sabet (২০১১)। Conceiving Citizens: Women and the Politics of Motherhood in Iran। Oxford University Press। পৃষ্ঠা 180। আইএসবিএন 978-0-19-530886-0 
  2. ""Women's Rights in Iran" a thesis by A DE LA CAMARA of the University of Central Florida, Orlando" (পিডিএফ)। ৫ জুলাই ২০২১ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২১ 
  3. Book award goes to "Senator: the Work of Senator Mehrangiz Manouchehrian in the Struggle for Legal Rights for Women" and "Reading Lolita in Tehran" ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ২১ সেপ্টেম্বর ২০২১ তারিখে, Payvand.com, Retrieved 10 August 2016
  4. "The Women's Organization of Iran: Evolutionary Politics and Revolutionary Change | Mahnaz Afkhami"www.mahnazafkhami.net। ২০১৭-০৩-০৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৭-০৩-০৭ 
  5. "Reform and Regression: The Fate of the Family Protection Law | Foundation for Iranian Studies"fis-iran.org (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০১৭-০৩-০৭ 
  6. "The Feminist School"feministschool.com (ইংরেজি ভাষায়)। ২০১৬-০৩-০৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৭-০৩-০৭