মেরি ল্যাস্কার

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
মেরি ল্যাস্কার
woman in business suit standing in front of painting of Washington, D.c.
জন্ম
মেরি উডার্ড

(১৯০০-১১-৩০)৩০ নভেম্বর ১৯০০
মৃত্যু২১ ফেব্রুয়ারি ১৯৯৪(1994-02-21) (বয়স ৯৩)
শিক্ষাইউনিভার্সিটি অব উইসকনসিন ম্যাডিসন
র‍্যাডক্লিফ কলেজ (B.A.)
অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়
পেশাসমাজকর্মী মানবসেবী তদবিরকারী শিল্পকর্ম বিক্রেতা
প্রতিষ্ঠানlist
রাজনৈতিক দলডেমোক্রেটিক
দাম্পত্য সঙ্গীপল রেইনহার্ড (১৯২৬–৩৪; বিচ্ছেদ)
অ্যালবার্ট ল্যাস্কার (১৯৪০-৫২; অ্যালবার্ট মৃত্যুবরণ করেন)
পিতা-মাতাফ্র্যাঙ্ক এলভিন উডার্ড
সারা জনসন উডার্ড
পুরস্কারপ্রেসিডেন্সিয়াল মেডেল অব ফ্রিডম (১৯৬৯)
ফোর ফ্রিডমস অ্যাওয়ার্ড (১৯৮৭)
কংগ্রেসনাল গোল্ড মেডেল (১৯৮৯)
আলবার্ট শেতজেনার মানবতাবাদী পদক (১৯৯২)

মেরি উডার্ড ল্যাস্কার (৩০ নভেম্বর ১৯০০-২১ ফেব্রুয়ারি ১৯৯৪) একজন আমেরিকান স্বাস্থ্যকর্মী ও মানবসেবী ছিলেন। তিনি চিকিৎসাবিষয়ক গবেষণার জন্য অর্থ উত্তোলন করেন এবং ল্যাস্কার ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠা করেন।

প্রারম্ভিক জীবন[সম্পাদনা]

মেরি ল্যাস্কার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের উইসকনসিন অঙ্গরাজ্যের ওয়াটারটাউনে জন্মগ্রহণ করেন। তার মাতার নাম সারা জনসন উডার্ড ও পিতার নাম ফ্র্যাঙ্ক এলউইন উডার্ড। ল্যাস্কার উইসকনসিন ম্যাডিসন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ালেখা করেন। র‍্যাডক্লিফ কলেজ হতে শিল্পের ইতিহাস বিষয়কে মুখ্য বিষয় হিসেবে নিয়ে তিনি স্নাতক হন। [১] ল্যাস্কার যখন বেড়ে উঠছিলেন,তখন তার নাগরিককর্মী মা তার মনে নগরের সৌন্দর্যায়ণের গুরুত্ব উপলব্ধি করার মত মূল্যবোধ অনুপ্রবিষ্ট করান। [২]

ল্যাস্কার নিউ ইয়র্ক সিটির রেইনহার্ড চিত্রশালায় শিল্পকর্ম বিক্রেতা হিসেবে কর্মজীবন গড়ে তুলেন। তিনি রেইনহার্ড চিত্রশালার মালিক পল রেইনহার্ডের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। বিবাহবিচ্ছেদের পর তিনি হলিউড প্যাটার্নস নামক একটি ফেব্রিক কোম্পানি প্রতিষ্ঠা করেন। [৩]

স্বাস্থ্যকর্মী[সম্পাদনা]

মেরি ল্যাস্কার ১৯৩৮ সালে আমেরিকার জন্ম নিয়ন্ত্রণ ফেডারেশনের সভাপতিত্ব লাভ করেন। এটি পরিকল্পিত অভিভাবকত্ব (প্ল্যানড প্যারেন্টহুড) ফাউন্ডেশনের পূর্বসূরি। [৪]

তিনি লর্ড অ্যান্ড টমাসের বিজ্ঞাপনী নির্বাহী অ্যালবার্ট ল্যাস্কারের সঙ্গে দ্বিতীয়বার বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। ১৯৫২ সালে অ্যালবার্ট কোলন ক্যান্সারে পরলোকগমন করেন।[৫][৬] অত্যন্ত পরিহাসের বিষয় এই যে, অ্যালবার্ট ল্যাস্কারের বিজ্ঞাপনী সংস্থা তামাক সেবনে উৎসাহিত করতে বিজ্ঞাপন প্রচার করত। যেহেতু নারীরা সেকালে পুরুষদের তুলনায় তুলনামূলকভাবে কম ধূমপান করত, তাই ঐসকল বিজ্ঞাপনের উদ্দেশ্য ছিল নারীদের ধূমপানে উদ্বুদ্ধ করা।

মেরি ল্যাস্কার রাষ্ট্রপতি হ্যারি এস ট্রুম্যানের সার্বজনীন স্বাস্থ্যবীমা প্রস্তাব সমর্থন করেছিলেন। কিন্তু প্রস্তাবটি ব্যর্থ হলে ল্যাস্কার গবেষণাকার্যে অর্থায়ন শুরু করেন।

১৯৪২ সালে মেরি ও তার স্বামী ল্যাস্কার ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠা করেন। [৭] আমেরিকার চিকিৎসা গবেষণা ক্ষেত্রে ল্যাস্কার পুরস্কার সবচেয়ে সম্মানজনক পুরস্কার বিবেচিত হয়। [৮] ২০১৫ সাল পর্যন্ত প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, ৮৭ জন ল্যাস্কার পুরস্কার বিজয়ী নোবেল পুরস্কার লাভ করেছেন। [৯]

আধুনিক বিজ্ঞাপনী রীতিনীতি ব্যবহার করে ল্যাস্কার দম্পতি ক্যান্সার প্রতিহতকরণের পদ্ধতি প্রচার করেন। তারা আমেরিকার কর্কটরোগ নিয়ন্ত্রণ সমিতিতে যোগদান করেন এবং নিয়ন্ত্রণ শব্দটি ছেঁটে দিয়ে এর নাম দেন "মার্কিন কর্কটরোগ সমিতি।" ল্যাস্কার দম্পতি সমিতির পরিচালকমণ্ডলীকে উৎখাত করে একে নতুনরূপে সাজানোর উদ্যোগ গ্রহণ করেন। ধূমপানবিরোধী বিজ্ঞাপন প্রচারের মাধ্যমে তারা ফুসফুসের ক্যান্সার নিয়ন্ত্রণে উদ্যোগ নেন। তারা এর মাধ্যমে টিভিতে ধূমপান উৎসাহিত করা বিজ্ঞাপনগুলোর প্রভাব মোকাবিলা করা সম্ভব হয়।[১০]

১৯৭০ সালে মার্কিন কংগ্রেস টেলিভিশনে ধূমপান সমর্থনকারী বিজ্ঞাপন প্রচার বন্ধ করে দেবার লক্ষ্যে আইন প্রণয়ন করে।

স্বামীর মৃত্যুর পর মেরি জাতীয় স্বাস্থ্য শিক্ষা কমিটি প্রতিষ্ঠা করেন।

আমেরিকার জাতীয় স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের সম্প্রসারণেও তিনি ভূমিকা রাখেন। তার উদ্যোগের ফলে এর বাজেট ২,০০০ গুণ বৃদ্ধি পায়। ১৯৪৫ সালে এর বাজেট ছিল ২.৪ মিলিয়ন ডলার এবং ১৯৮৫ সালে ৫.৫ বিলিয়ন ডলার।[১১]

১৯৬০ সালে লিন্ডন বি. জনসন যাতে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে ডেমোক্রেটিক পার্টির মনোনয়ন লাভ করেন, সেজন্য ইলিনর রুজভেল্টের সমর্থন আদায়ে ল্যাস্কার চেষ্টা করেন।[১২]লেডি বার্ড জনসন তার বই "এ হোয়াইট হাউস ডায়রি"-তে একাধিকবার ল্যাস্কারের কথা উল্লেখ করেন। তিনি মেরির বাসভবনকে "মনোরম, স্বর্ণের মত শোভাপ্রদ" উল্লেখ করেন। পোটোম্যাক নদীর ধারে ড্যাফোডিল ফুলের ঝাড় রোপণের জন্য লেডি বার্ড জনসন মেরিকে ধন্যবাদ জানান।

ল্যাস্কার ১৯৭১ সালে কর্কটরোগের বিরুদ্ধে যুদ্ধে মার্কিন সরকারের অর্থায়ন লাভেও ভূমিকা রাখেন।[১৩]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "Wisconsin woman to appear on stamp",Associated Press, 28 February 2009
  2. "Mary Woodard Lasker"। Archived from the original on ১৯ মে ২০১৫। সংগ্রহের তারিখ ১৫ নভেম্বর ২০২০ 
  3. https://profiles.nlm.nih.gov/ps/retrieve/Narrative/TL/p-nid/199
  4. "Mary Lasker"Profiles in Science 
  5. "The Lasker Foundation - Media Center"web.archive.org। 9 আগস্ট, 2011। Archived from the original on ৯ আগস্ট ২০১১। সংগ্রহের তারিখ ১৫ নভেম্বর ২০২০  এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |তারিখ= (সাহায্য)
  6. https://www.cbc.ca/radio/undertheinfluence/summer-series-the-most-interesting-adman-in-the-world-the-story-of-albert-lasker-1.4120833
  7. Pace, Eric (23 ফেব, 1994)। "Mary W. Lasker, Philanthropist For Medical Research, Dies at 93 (Published 1994)" – NYTimes.com-এর মাধ্যমে।  এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |তারিখ= (সাহায্য)
  8. "Publications - history - Office of NIH History and Stetten Museum"history.nih.gov। ৭ অক্টোবর ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৬ নভেম্বর ২০২০ 
  9. Foundation, Lasker। "Awards"The Lasker Foundation 
  10. https://www.youtube.com/watch?v=XmjRkpge-jk
  11. Joel L. Fleishman, et al. Casebook for the Foundation: A Great American Secret (2007) Page 50
  12. "Mary Woodard Lasker (1901-1994)"www2.gwu.edu 
  13. https://archive.org/details/emperorofallmala00mukh