মুম্বাইয়ের ঐতিহ্যবাহী স্থাপনা

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
রাতে ছত্রপতি শিবাজী মহারাজ টার্মিনাস

পটভূমি[সম্পাদনা]

আরব সাগরের উপকূলে সাতটি দ্বীপ নিয়ে মুম্বাই গঠিত, দ্বীপগুলি সেতু এবং ভূমি ভরাট দ্বারা সংযুক্ত। এটি ভারতের মহারাষ্ট্র রাজ্যের রাজধানী এবং সেইসঙ্গে এটি ভারতের ব্যবসাগত ও আর্থিক রাজধানী।[১] ১৬৬১ সালে বিবাহ উপলক্ষে ব্রিটেনের চার্লস দ্বিতীয়কে দেওয়া পর্তুগালের ব্র্যাগানজার ক্যাথরিনের যৌতুকের অংশ হিসেবে মুম্বাই পর্তুগিজ থেকে ব্রিটিশ শাসনের হাতে আসে। তুলা ব্যবসায়িক বাজারে এর নেতৃস্থানীয় অবস্থান এবং জাহাজযোগে প্রেরণের বন্দর হওয়ার ফলে এই শহর ভারতের বৃহত্তম শহর হয়ে উঠেছে।

ঐতিহ্যবাহী কাঠামো[সম্পাদনা]

মুম্বাইয়ে অনেক ঐতিহ্যবাহী কাঠামো এবং ঐতিহাসিক এলাকা আছে। এগুলির বেশিরভাগই মুম্বাইয়ের দক্ষিণে অবস্থিত, কারণ ঐতিহাসিকভাবে, শহরে প্রবেশাধিকার ছিল শুধুমাত্র বন্দর দিয়ে। শহরের দক্ষিণ প্রান্তে আছে ফোর্ট প্রিসিন্ক্ট, এটি ঔপনিবেশিক আমলে মুম্বাইয়ের নগর কেন্দ্র ছিল এবং একসময় দুর্গ প্রাচীর দ্বারা ঘেরা ছিল। ২০১২ সালের হিসাব অনুযায়ী মুম্বাইতে ৫৯১টি ঐতিহ্যবাহী কাঠামো নিবন্ধিত হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে ভবন, প্রত্নতাত্ত্বিক স্থল, ঔপনিবেশিক, শিল্প, গার্হস্থ্য স্থাপত্য স্থান এবং সর্বসাধারণের জায়গা। "দ্য মুম্বাই হেরিটেজ কনজারভেশন কমিটি" নামে একটি পরামর্শক কমিটি এই প্রক্রিয়াটি পরিচালনা করে। ঐতিহ্যবাহী কাঠামো সম্পর্কিত সমস্ত কাজের জন্য এই কমিটির অনুমোদন প্রয়োজন। ঐতিহ্যবাহী কাঠামোগুলিকে শ্রেণী ১, শ্রেণী ২ক, শ্রেণী ২খ বা শ্রেণী ৩ হিসাবে শ্রেণীবদ্ধ করা হয়েছে। অধিকাংশ স্থাপনা ব্রিটিশ আমলে নির্মিত। এগুলি ভিক্টোরিয়ান নিও গথিক স্থাপত্য শৈলী, ইন্দো-সারাসেনিক রিভাইভাল (মুলজি জেঠা ফাউন্টেন) বা নিওক্লাসিক্যাল শৈলীতে তৈরি।

এলিফ্যান্টা গুহা, ছত্রপতি শিবাজি মহারাজ টার্মিনাস এবং মুম্বইয়ের ভিক্টোরীয় গথিক ও দেকো শিল্প স্থাপত্য-সমাহার ইউনেস্কো বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান হিসেবে স্বীকৃত।

মুম্বাইতে বিপুল সংখ্যক আর দেকো কাঠামো দেখা যায়, সেখানে মিয়ামির পরে এই শৈলীর ভবনের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। এই ভবনগুলির মধ্যে অনেকগুলি হলো সিনেমা হল, যেমন ইরোস সিনেমা এবং রিগাল সিনেমা। সারি সারি আর দেকো অ্যাপার্টমেন্ট ভবন শহরের সমুদ্র সংলগ্ন বিহারস্থান, মেরিন ড্রাইভ, জুড়ে রয়েছে।

পুরস্কার[সম্পাদনা]

মুম্বাইয়ের কিছু ঐতিহ্যবাহী স্থাপনা ইউনেস্কো পুরস্কার পেয়েছে। ২০১৩ ইউনেস্কো এশিয়া-প্যাসিফিক হেরিটেজ অ্যাওয়ার্ড সম্মানে লাল চিমনি কম্পাউণ্ড একটি পুরস্কার পেয়েছে এবং ২০১৩ ইউনেস্কো এশিয়া-প্যাসিফিক হেরিটেজ অ্যাওয়ার্ডে রয়্যাল বোম্বে ইয়ট ক্লাব রেসিডেন্সিয়াল চেম্বার্স একটি মেরিট পুরস্কার জিতেছে।[২]

মুম্বাই ঐতিহ্য ভ্রমণ[সম্পাদনা]

হেঁটে ভ্রমণ করে অনেক বাসিন্দা এবং পরিদর্শক ঐতিহ্যবাহী কাঠামোর সাথে পরিচিত হতে পারেন। ১৯৯৯ সালে প্রতিষ্ঠিত মুম্বাই হেরিটেজ ওয়াক গোষ্ঠী এই ভ্রমণগুলি অর্থায়ন করে। এই গোষ্ঠীটি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন শহরের দুই স্থপতি আভা বহল এবং বৃন্দা গাইতোণ্ডে। তাঁদের উদ্দেশ্য হল "শহরের স্থাপত্য এবং ঐতিহ্যের স্মৃতিস্তম্ভ সম্পর্কে মুম্বাইয়ের জনগণ এবং ভ্রমণার্থীদের সচেতনতা বৃদ্ধি করা। ব্যক্তিগতকৃত, শিক্ষামূলক এবং কল্পনাপ্রসূত হাঁটা সফরগুলি বিশাল পরিসরের স্থাপত্য শৈলী, পরিকল্পনার উপাদান এবং শোভাময় বিবরণকে তুলে ধরে, শহরের সামাজিক এবং সাংস্কৃতিক ইতিহাস চিহ্নিত করে।"[৩]

আরও দেখুন[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "Welcome to the Municipal Corporation of Greater Mumbai"। ২৯ অক্টোবর ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৮ অক্টোবর ২০১৩ 
  2. "UNESCO Asia-Pacific Awards for Cultural Heritage Conservation"। ১৭ অক্টোবর ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৭ অক্টোবর ২০১৩ 
  3. "The Bombay Heritage Walks"। ২২ অক্টোবর ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৭ অক্টোবর ২০১৩ 

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]