মালতী বেদেকর

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
মালতী বিশ্রাম বেদেকর
চিত্র:MalatiBedekarPic.jpg
জন্ম(১৯০৫-০৩-১৮)১৮ মার্চ ১৯০৫
মৃত্যু৭ মে ২০০১(2001-05-07) (বয়স ৯৬)
জাতীয়তাভারতীয়
অন্যান্য নামবিভাবরী শিরুরকর, বালুতাই খারে
দাম্পত্য সঙ্গীবিশ্রাম বেদেকর
সন্তানশ্রীকান্ত বেদেকর

মালতী বিশ্রাম বেদেকর (১৮ই মার্চ ১৯০৫[১] – ৭ই মে ২০০১) ছিলেন ভারতের মহারাষ্ট্রের একজন মারাঠি লেখক। তিনি মারাঠি সাহিত্যে প্রথম বিশিষ্ট নারীবাদী লেখক। তিনি বিভাবরী শিরুরকর ছদ্মনাম ব্যবহার করেও লিখেছিলেন।[২]

জীবনী[সম্পাদনা]

মালতী বেদেকরের প্রথম নাম ছিল বালুতাই খারে।[৩] তিনি ছিলেন অনন্তরাও এবং ইন্দিরাবাই খারের কন্যা।

তাঁর বাবা অনন্তরাও ছিলেন একজন প্রগতিশীল চিন্তাবিদ ও শিক্ষাবিদ এবং মা ইন্দিরাবাই ছিলেন একজন দক্ষ মহিলা যিনি ২৫ বছর ধরে সফলভাবে দুগ্ধ ব্যবসা পরিচালনা করেছিলেন।[৪] বালুতাই পরে তাঁর বাবার ওপর খরেমাস্তর শিরোনামে একটি আধা-জীবনীমূলক উপন্যাস লেখেন।[৪]

কিশোর বয়সে, বালুতাইয়ের বাবা-মা তাঁকে একটি মেয়েদের জন্য স্কুলের ছাত্রাবাসে থাকতে পাঠিয়েছিলেন, মহর্ষি ধন্দ কেশব কর্বে কয়েক বছর আগে হিঙ্গানে এবং তারপর পুনের উপকণ্ঠে এই স্কুল সহ ছাত্রাবাস শুরু করেছিলেন। সেই স্কুলে নিজের শিক্ষা শেষ করার পর, তিনি ২০ বছর বয়সের আগে বোম্বের এসএনডিটি বিশ্ববিদ্যালয় মহিলা কলেজ থেকে স্নাতক হন।[৪] এই কলেজটিও কর্বে শুরু করেছিলেন। এই দুটি প্রতিষ্ঠানেই, কর্বের প্রগতিশীল ধারণা এবং তাঁর শিক্ষক সহকর্মী বামন মালহার জোশীর মতো মানুষেরা বালুতাইয়ের চিন্তাভাবনাকে অত্যন্ত প্রভাবিত করেছিলেন।

কলেজ শিক্ষা শেষ করার পর, বালুতাই পুনের কন্যা শালায় শিক্ষকতার কাজে যোগদান করেন, এটিও কর্বের নির্দেশনায় পরিচালিত একটি বালিকা বিদ্যালয় ছিল। ১৯৩৬ সালে, প্রধান শিক্ষিকার পদে সেই উচ্চ বিদ্যালয়টিতে থাকার সময় তিনি বিদ্যালয় ত্যাগ করেন এবং একটি সরকারী চাকরি গ্রহণ করেন। সেই সময়ে ভারতে শাসনকারী ব্রিটিশ সরকার কর্তৃক "অপরাধী" উপজাতি হিসাবে চিহ্নিত কিছু উপজাতির জন্য একটি "বন্দোবস্ত" প্রশাসক হিসাবে তিনি সেই চাকরিতে যোগ দিয়েছিলেন।

১৯৩৮ সালে বিশ্রাম বেদেকরের সাথে তাঁর দেখা হয় এবং তাঁরা বিয়ে করেন। এরপর নাম পরিবর্তন করে তিনি নিজের নাম রাখেন মালতী বিশ্রাম বেদেকর।[১]

তিনি ১৯৮০ সালের দিকে অনুষ্ঠিত একটি "সমান্তরাল" সাহিত্য সম্মেলন (মারাঠি: साहित्य सम्मेलन) -এর সভাপতিত্ব করেছিলেন, যেটি হয়েছিল প্রধান মারাঠি সাহিত্য সম্মেলনে (মারাঠি: मराठी साहित्य सम्मेलन) অত্যধিক সরকারী হস্তক্ষেপের প্রতিবাদে।

সাহিত্য কর্ম[সম্পাদনা]

বেদেকর ১৯৩৩ সালে একটি ছোটগল্পের সংকলন—হিন্দোল্যাওয়ার (মারাঠি: हिंदोळ्यावर) এবং একটি উপন্যাস কল্যাণচে নিশ্বাস (মারাঠি: कळ्यांचे निःश्वास) লিখেছিলেন, দুটিই বিভাবরী শিরুরকর (মারাঠি: विभावरी शिरूरकर) ছদ্মনামে।[৪] দুটি লেখার মধ্যে, তিনি বিবাহবহির্ভূত সহবাস, একজন মহিলার একা নিজের সংসার স্থাপনের অধিকার এবং যৌতুকের মতো বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছেন। ১৯৩০-এর দশকে তাঁর এই লেখাগুলি সেই সময়ের ভারতীয় সমাজের সামনে অনেক বেশি সাহসী ছিল এবং তাদের প্রকাশের পরে, তাদের সম্পর্কে ক্ষোভের ঝড় উঠেছিল, তারসঙ্গে সেগুলি আবার ছদ্মনামে একজন অজানা লেখক দ্বারা লেখা হয়েছিল। (কয়েক বছর পরে, নিজের বিয়ের আগে, বেদেকর একটি জনসভার ভাষণে প্রকাশ করেছিলেন যে "'বিভাবরী শিরুরকার' আমি -- বালুতাই খারে।")

স্বাধীনতা পূর্ব ভারতে, ব্রিটিশ সরকারের কাঁটাতার দিয়ে ঘেরা "বসতি" এলাকায় বসবাস করা তথাকথিত "অপরাধী" উপজাতিদের অত্যন্ত কঠোর দৈনন্দিন জীবন সম্পর্কে তিন বছর ধরে নিজের পর্যবেক্ষণের ভিত্তিতে বেদেকর ১৯৫০ সালে তাঁর ফলপ্রসূ উপন্যাস বলি (মারাঠি: बळी) (দ্য ভিকটিম) লিখেছিলেন। (বলি প্রকাশিত হওয়ার সময়, স্বাধীন ভারতের সরকার একই বছর, ১৯৫০ সালে, "অপরাধী' উপজাতিদের জন্য কাঁটাতারের পিছনে "বসতি" এলাকার ধারণাটি বাতিল করে দেয়।)[৫]

তাঁর বিরলেলে স্বপ্ন (মারাঠি: विरलेले स्वप्न) উপন্যাসে দেখা গেছে দুই প্রেমিকের কাল্পনিক ডায়েরির পৃষ্ঠার থেকে একটি সংকলন এবং তাঁর উপন্যাস শবরী (মারাঠি: शबरी) একটি শ্বাসরুদ্ধকর বিবাহে আটকে পড়া একজন মহিলার গল্প।

রচনা[সম্পাদনা]

  • কল্যানচে নিশ্বআস (মারাঠি: कळ्यांचे निःश्वास) (১৯৩৩)
  • হিন্দোল্যাওয়ার (মারাঠি: हिंदोळ्यावरহিন্দোলওয়ার) (১৯৩৩)
  • বলি (মারাঠি: बळीবালি) (১৯৫০)
  • বিরলেলে স্বপ্ন (মারাঠি: विरलेले स्वप्न)
  • খরেমাস্তর (মারাঠি: खरेमास्तर) (১৯৫৩)।
  • শবরী (মারাঠি: शबरी) (১৯৫৬)
  • পারধ (মারাঠি: पारध) (একটি নাটক)
  • বহিন আলী (মারাঠি: वहिनी आली) (একটি নাটক)
  • ঘরালা মুকলেল্যা স্ত্রিয়া (মারাঠি: घराला मुकलेले स्त्रिया)
  • অলঙ্কার মঞ্জুষা (মারাঠি: अलंकार-मंजूषा)
  • হিন্দু ব্যবহার ধর্মশাস্ত্র (মারাঠি: हिंदुव्यवहार धर्मशास्त्र) (কে এন কেলকারের সাথে সহ-রচনা করেছেন)
  • সাখরপুড়া (মারাঠি: साखरपुडा) চলচ্চিত্রের চিত্রনাট্য

খরেমাস্তরের (মারাঠি: खरेमास्तर) একটি অনুবাদ পরে ইংরেজিতে প্রকাশিত হয়।

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "Malati Bedekar"veethi.com। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০২-০৮ 
  2. Women Writing in India: 600 B.C. to the early twentieth century। Feminist Press at CUNY। ১৯৯১। আইএসবিএন 9781558610279 
  3. "Malati Bedekar, The First Feminist Author of Modern Marathi Literature"Frontlist। সংগ্রহের তারিখ ৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ 
  4. "Malati Bedekar: Contemporary Marathi Literature's First"Feminism in India। সংগ্রহের তারিখ ৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ 
  5. Madhuvanti Sapre (৩ অক্টোবর ২০১৫)। "कालातीत लेखिका"। Loksatta। সংগ্রহের তারিখ ২ সেপ্টেম্বর ২০১৬