বিষয়বস্তুতে চলুন

মারাইয়া কেরি

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
মারাইয়া কেরি
২০১৮-এ মারাইয়া কেরি
জন্ম(১৯৬৯-০৩-২৭)২৭ মার্চ ১৯৬৯ অথবা
(১৯৭০-০৩-২৭)২৭ মার্চ ১৯৭০
(বয়স ৫৪ অথবা ৫৫)
হানিংটন, নিউ ইয়র্ক, যুক্তরাষ্ট্র
পেশা
  • গায়ক
  • গীতিকার
  • অভিনেত্রী
  • রের্কড প্রযোজক
কর্মজীবন১৯৮৮-বর্তমান
দাম্পত্য সঙ্গী
সন্তান
সঙ্গীত কর্মজীবন
ধরন
বাদ্যযন্ত্রকন্ঠ
লেবেল
ওয়েবসাইটmariahcarey.com

মারাইয়া কেরি (জন্ম মার্চ ২৭, ১৯৬৯ বা ১৯৭০) [] একজন আমেরিকান গায়ক, গীতিকার, রেকর্ড প্রযোজক, এবং অভিনেত্রী। ১৯৯০ সালে তার এপোনিমাস অ্যালবামের "ভিশন অফ লাভ" গানটির আত্নপ্রকাশের মাধ্যমে ব্যাপক খ্যাতি অর্জন করেন। অ্যালবামটির চারটি গানই একক ভাবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সেরা তালিকায় ছিলো এবং অ্যালবামটি বাণিজ্যিক ভাবে ব্যাপক সফল হয়েছিলো যেটি তাকে কলাম্বিয়া রেকডর্সের সর্বোচ্চ বিক্রিত অ্যালবামের খেতাব এনে দেয়। কেরি এবং বয়েজ টু ম্যান এর অ্যালবাম ১৯৯৫-১৯৯৬ এর বিলবোর্ড হট ১০০ এ একটানা ১৬ সপ্তাহ অবস্থান করে এবং এটি ছিল যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে তালিকায় সবচেয়ে বেশি সময় ধরে অবস্থান করা একক সঙ্গীত। মারাইয়া কেরির স্বামী সনি মিউজিক ইন্টারটেইনমেন্ট এর প্রধান টমি মোটোলা এর সঙ্গে বিতর্কীতভাবে বিবাহ বিচ্ছেদ করে, ক্যারি নতুন রূপ ধারণ করে হিপ হপ সঙ্গীতের দিকে মনোযোগ দেন এবং ১৯৯৭-এ মুক্তি পায় তারঁ আরেকটি হিপ হপ গানের অ্যালবাম বাটারফ্লাই। ১৯৯৮ সালে ওয়ার্ল্ড মিউজিক এ্যাওয়ার্ডে বিশ্বের সেরা বিক্রিত রেকর্ডিং শিল্পী হিসেবে মারাইয়া কেরিকে সম্মানিত করা হয় এবং পরবর্তীতে ২০০০ সালে সহস্রাব্দের শ্রেষ্ঠ-বিক্রিত মহিলা শিল্পী নামে তাকে ভূষিত করা হয়।ক্যারি ২০০০ সালে কলাম্বিয়া থেকে পৃথক হয়ে যান এবং ভার্জিন রেকর্ডস আমেরিকার সঙ্গে একটি রেকর্ড ভাঙা $১০০ মিলিয়ন ডলারের রেকর্ডিং চুক্তি স্বাক্ষর করেন। তার গ্লিটার চলচ্চিত্র মুক্তির সপ্তােহ এবং ২০০১-এ তার সহগামী সাউন্ডট্র্যাক মুক্তির পূর্বে, তিনি শারীরিক ও মানসিক ভাবে ভেঙ্গে পড়েন এবং কঠোর অবসাদের জন্য ক্যারিকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ফলে তার কাজে দুর্বলতা চলে এসেছিল এবং গায়ক ক্যারির কর্মজীবনে একটি সাধারণ পতন ঘটেছিল। ক্যারির রেকর্ডিং চুক্তিটি ভার্জিন রেকর্ডিং দ্বারা $৫০ মিলিয়ন ডলারের বিনিময়ে কেনা হয়েছিল এবং তিনি একই বছরে আইল্যান্ড রেকর্ডস এর সঙ্গে একটি মাল্টি মিলিয়ন ডলারের চুক্তি স্বাক্ষর করেন। অপেক্ষাকৃত একটি অসফল সময়ের পরে তিনি ইমানসিপ্যাশন অফ মিমি ২০০৫ অ্যালবাম নিয়ে পুনরায় আত্নপ্রকাশ করেন এবং সঙ্গীতের চার্টের শীর্ষে ফিরে আসেন। অ্যালবামটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সে বছরের শ্রেষ্ঠ-বিক্রিত অ্যালবাম ও ২০০৫ সালে বিশ্বব্যাপী দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বিক্রিত অ্যালবাম ছিলো এবং ক্যারির গাওয়া একক সঙ্গীতউই বিলং টুগেদার হচ্ছে তার বিংশ শতকে গাওয়া সবচেয়ে সফল একক সঙ্গীত এবং পরে বিলবোর্ড দ্বারা নামকরণ করা হয় "দশকের সেরা গান"। ক্যারি আবার চলচ্চিত্রে আগমন করে প্রিসিয়াস (চলচ্চিত্র) এ সহযোগী ভূমিকায় অংগ্রহণ করেন, এবং পাম স্প্রিংস ইন্টারন্যাশনাল ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল এ তাকে "ব্রেকথ্রু পারফরমেন্স পুরস্কার" পুরস্কার প্রদান করা হয়। মারিয়া ক্যারির সঙ্গীত কর্মজীবনে বিশ্বব্যাপী ২০০ মিলিয়নের অধিক রেকর্ড বিক্রি হয়েছে এবং তিনি বিশ্বের সর্বকালের সেরা বিক্রিত-রেকর্ডিং শিল্পীদের মধ্য অন্যতম। RIAA এর মতে, ৬৩.৫ মিলিয়ন প্রত্যয়িত অ্যালবাম তিনি যুক্তরাষ্ট্রের তৃতীয় সেরা-বিক্রিত মহিলা শিল্পী। ২০০৮-এ তার ১৮ নম্বর একক সঙ্গীত "টার্চ মাই বডি" আত্নপ্রকাশ পায়,যা যুক্তরাষ্ট্রে যে কোন একক শিল্পীর সঙ্গীতের সংখ্যার চেয়ে বেশি। ২০১২ সালে, ক্যারি VH1 এর "সঙ্গীতের ১০০ সেরা নারী" এই তালিকায় দ্বিতীয় স্থান অর্জন করে। বাণিজ্যিক দিক ছাড়াও মারিয়া ক্যারি ৫ টি গ্র্যামি পুরস্কার, ১৯ টি বিশ্ব সঙ্গীত পুরস্কার, ১১টি আমেরিকান সঙ্গীত পুরস্কার, এবং ১৪ টি বিলবোর্ড মিউজিক অ্যাওয়ার্ড জিতেছেন এবং প্রজন্মের গায়ক নামে এরই ধারাবাহিকতায় তিনি প্রজন্মের গায়ক হিসেবে চিহ্নিত হয়েছেন। [] তিনি "গিনেস বিশ্ব রেকর্ড" কর্তৃক "শ্রেষ্ঠ গানের পাখি" নামে আখ্যায়িত হয়েছেন। তিনি বিখ্যাত তার পাঁচ অষ্টক কণ্ঠ্য পরিসীমা, ক্ষমতা, মেলিসমেটিক শৈলী এবং অসাধারন স্বাক্ষর ব্যবহারের জন্য।

প্রারম্ভের জীবন

[সম্পাদনা]

মারাইয়া কেরি হানিংটন, নিউ ইয়র্কে জন্মগ্রহণ করেন।[] তার পিতা আলফ্রেড রয় ক্যারি ছিলেন একজন আফ্রিকান আমেরিকান এবং আফ্রো-ভেনেজুয়েলিয়ান বংশদ্ভোদ, যখন কিনা তার মা পেট্রিসিয়া একজন আইরিশ বংশোদ্ভদ নাগরিক। শেষ নাম ক্যারি এটি রেখেছিল মারিয়া ক্যারির ভেনেজুয়েলিয়ান দাদা ফ্রান্সসিসকো ন্যুরেজ,নিউ ইয়র্কে ইমিগ্রেশন হবার পর।[] ১৯৬০-এ আলফ্রেডের সঙ্গে সাক্ষাতের পূর্বে পেট্রিসিয়া ছিলেন একজন মৌসুমী অপেরা শিল্পী এবং কন্ঠ প্রশিক্ষক।[] অরোনটিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে জীবিকা অর্জন শুরু করলে সে বছরের শেষের দিকে তারা নিউ ইয়র্কে চলে যায়।[] তাদের গোপনে পলায়নের পর, পেট্রেসিয়ার পরিবার তার থেকে সম্পর্ক ছিন্ন করে একজন কৃষ্ণাঙ্গকে বিয়ে করার কারনে। ক্যারি পরে বর্ণনা করেছেন তার বেড়ে ওঠার সময়ে তার মায়ের পরিবার দ্বারা তিনি উপেক্ষিত হতেন,যা তাকে ব্যাপকভাবে প্রভাবিত করেছিল।[] ক্যারি এবং তার বড় বোন এল্যিসন জন্মের বছরগুলোতে তার পরিববার ব্যাপক সংগ্রাম করেছিল তাদের পরিবারের জাতের কারনে।[] ক্যারির নামটি মূলত রাখা হয়েছিল দে কলড দি ওয়াইন্ড মারিয়া ১৯৫১ সালের গানটি থেকে অনুপ্রানিত হয়ে।[][] যখন ক্যারি সেখানে ছিল, তখন তার পিতা-মাতার বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটে।[]

"এটি ছিল আমার জন্য অনেকটা কঠিন সময়, চারপাশে অনেক ঘোরাঘুরি, নিজের দ্বারা বেড়ে ওঠতে হচ্ছে... আমার পিতা-মাতার বিবাহ বিচ্ছেদ হয়ে যাচ্ছে এবং প্রত্যহ চারপাশের অন্যদের থেকে নিজেকে ভিন্ন ভাবতাম। জাতিগত ভাবেও অন্যদের থেকে ভিন্ন ছিলাম এবং কিছু সময় এটি সমস্যা ও হতে পারে। যদি তুমি অন্যভাবে দেখ সব 'সাদা মেয়েরা' যাচ্ছে এবং আমি ও যেতে চাই, 'না, এটা সেটা নয় যা আমি।'"

—ক্যারি তার ছোটকালে[১০]

তাদের পৃথকের পরে, এ্যলিসন তার পিতার সাথে চলে যায়, অন্য দুই সস্তান মারাইয়া ও তার ভাই তাদের মায়ের সঙ্গে থেকে যায়।Carey would grow apart from her father, and would later stop seeing him altogether.[][১১] ৪ ববছর বয়সে,By the age of four, Carey recalled that she had begun to sneak the radio under her covers at night, and just sing and try to find peace within the music.[১১] প্রাইমারী স্কুল থাকাকালীন সময়ে সঙ্গীত,চিত্রসাহিত্য এসব উপভোগ করতেন কিন্তু অন্য গুলোতে আগ্রহ খুজে পাননি। আর্থিক ভাবে সংগ্রামের কিছু বছর পর প্রেট্রিসিয়া পরিবারের জন্য পর্যাপ্ত পরিমান অর্থ উপার্জন করতে পেরেছিলেন ফলে পরিবারে স্থবিরতা আনেন এবং নিউ ইয়র্কের আরেকটু সমৃদ্ধ জায়গায় স্থানান্তরিত হন।[১২] ক্যারি কবিতা লেখা শুরু করেন এবং সেগুলোতে ছন্দ দিতেন, তিনি গান লিখতেন এবং সেগুলো গাইতেন যখন তিনি নিউ ইয়র্কের হার্বারফিল্ডস হাই স্কুল এ পড়তেন।[১৩] সেখান থেকে তিনি ১৯৮৭ সালে উর্ত্তীন হন।[১৪] কেরি তার সঙ্গীতে এবং বাঁশি ব্যবহারে পারদর্শীতা দেখিয়েছে, যদিও শুধুমাত্র শিক্ষক এবং তার মা তাকে প্রশিক্ষন দেওয়াতো। শাস্ত্রীয় অপেরা তাকে পরিচয় করালেও প্যাট্রিসিয়া কখনোই তাকে এটি নিয়ে কর্মজীবন শুরু করার জন্য চাপ দিতো নাহ, যদিও ক্যারির এতে কোন আগ্রহই ছিলো নাহ। ক্যারি তার গায়ক, গীতিকারের কাজটি গোপনেই করতো এবং ব্যাখ্যা করেছেন প্যাট্রিসিয়া কখনই আত্মসাম্মুখ্যপূর্ণ মা ছিলো নাহ। তিনি কখনই বলেননি যে এসব কাজ ছেড়ে দাও। " আমি পাগলের মত অপেরা সম্মান করি, কিন্তু এটা আমাকে প্রভাবিত করেনি। " [১৩][১৫]

হাই স্কুলে পড়াকালীন, কেরি গ্যাবিন ক্রিস্টোফার এর সঙ্গে গান লেখা শুরু ককরেন।তাদের একজন সহযোগী দরকার ছিল যে কিবোর্ড বাজাতে পারবে।:-আমরা একজনকে খুজেছিলাম কিন্তু সে আসলো নাহ। কিন্তু দুর্ঘটনাবসত বেন মারগুলিস কে পেলাম। বেন স্টুডিও তে আসলো এবং সে ভালো ভাবে কিবোর্ড বাজাতে পারতো নাহ কিন্তু সে ভালো ড্রাম বাজাতে পারতো,ওইদিনের পরথেকে আমরা এই কাজে লেগে থাকলাম "[১৫] সিনিয়র ক্লাশে পড়াকালীন ক্যারি এবং ক্রিস্টোফার গান লেখা এবং কম্পোজ করা শুরু করলো ক্রিস্টোফারের পিতার স্টোর রুমে।তারা তাদের প্রথম গান হেয়ার উই গো" লেখা শেষ করলো করলো। পুরোপুরি অ্যালবাম সম্পূর্ণ করার জন্য চেস্টা চালিয়ে গেলেন।[১৬] ম্যানহ্যাটনের এক রুমের একটি ঘরে আরো ৪ জন ছাত্রীর সাথে তিনি তখন বাস করতেন।[১৭][১৮] ক্যারি তখন একটি রেস্তোরার ওয়েটার হিসেবে কাজ করতেন,কিন্তু দুই সপ্তাহ পর তিনি বরখাস্ত হলেন। ঘর ভাড়া পরিশোধের জন্য যখন কাজ খোজা শুরু করলো তখনও গানের প্রতি আগ্রহ তার বজায় থাকলো। রাতের বেলায় বেন মারগুলিসের সঙ্গে কাজ করতেন এই ভেবে যে একটি সম্পূর্ণ অ্যালবাম শেষ করবেন বলে।[১৯][১৯] চারটি গান লেখার পর অ্যালবামটি সম্পূর্ণ করলেন এবং অনেক সঙ্গীত প্রযোজক কোম্পানির কাছে গেলেন কিন্তু প্রত্যেকবার ব্যার্থ হলেন।[২০] কিছু সময় পর তিনি পপ সঙ্গীত শিল্পী ব্রেন্ডা কে. স্টার এর সঙ্গে পরিচিত হলেন।[২০][২১]

তথ্যসূত্র

[সম্পাদনা]
  1. Thompson, Ben (এপ্রিল ১৯, ২০১৩)। "Mariah Carey Criticized for Angolan President Performance"The Daily Telegraph। সংগ্রহের তারিখ মে ১০, ২০১১ 
  2. Sources differ. Those giving 1970 include: Those giving 1969 include:
  3. "Mariah Carey to Perform at 2015 Billboard Music Awards"Billboard। সংগ্রহের তারিখ মে ৯, ২০১৫ 
  4. Gamboa, Glenn (অক্টোবর ২২, ২০০৮)। "LI Music Hall of Fame recognizes local talent"NewsdayNew York City / Long Island। ২০১৩-১০-১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। Born in Huntington, raised in Greenlawn. 
  5. Nickson 1998, পৃ. 7
  6. Nickson 1998, পৃ. 8
  7. "Mariah Carey Biography"AllMovie.com (Rovi) via The New York Times। জানুয়ারি ১৮, ২০০৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ আগস্ট ১৪, ২০১১ 
  8. "Celebrity Central: Top 25 Celebrities: Mariah Carey"People। সংগ্রহের তারিখ আগস্ট ১৪, ২০১১ 
  9. Nickson 1998, পৃ. 9
  10. Nickson 1998, পৃ. 14
  11. Nickson 1998, পৃ. 10–11
  12. Nickson 1998, পৃ. 13
  13. Nickson 1998, পৃ. 16
  14. Dougherty, Steve (নভেম্বর ২২, ১৯৯৩)। "How Sweet It Is"People42 (21)। Time Inc.। মার্চ ৩, ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। 
  15. Nickson 1998, পৃ. 17
  16. Nickson 1998, পৃ. 18
  17. Nickson 1998, পৃ. 19
  18. Nickson 1998, পৃ. 20
  19. Nickson 1998, পৃ. 21
  20. Nickson 1998, পৃ. 22
  21. Nickson 1998, পৃ. 61