বিষয়বস্তুতে চলুন

মানচিত্র

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
মানচিত্র,২০১৬

মানচিত্র ভূমির সাংকেতিক প্রতিচ্ছবি। দেশের সার্ভে বিভাগ কর্তৃক অনুমোদিত নির্ধারিত রং এর ব্যবহারে কোন এলাকার ভূমির উল্লেখ যোগ্য প্রাকৃতিক ও কৃত্তিম বস্তু সমূহকে নির্দিষ্ট সাংকেতিক চিহ্নের মাধ্যমে কাগজ বা কাপড়ের উপর ক্ষুদ্রাকারে মাপনী অনুযায়ী অঙ্কন করাকে ম্যাপ বা মানচিত্র বলে।

কোন স্থানে অবস্থিত বস্তু সমূহের অবস্থান এবং সম্পর্কের দৃষ্টিগ্রাহ্য সাধারণ প্রকাশ হচ্ছে মানচিত্র

অনেক মানচিত্র স্থির, ত্রি-মাত্রিক স্থানের দ্বি-মাত্রিক প্রতিরূপ; আবার কিছু মানচিত্র পরিবর্তনশীল, এমনকি ত্রিমাত্রিকও হতে পারে। মানচিত্র বলতে সাধারণত ভৌগোলিক মানচিত্রকেই বোঝানো হয়, তবে মানচিত্র হতে পারে কোন স্থানের - বাস্তব বা কাল্পনিক, এতে স্কেল বা অন্যান্য অনুষঙ্গের প্রয়োজনীয়তা নাও থাকতে পারে; যেমন, ব্রেন মানচিত্রকরণ, ডিএনএ মানচিত্রকরণ এবং মহাকাশের মানচিত্রকরণ।

ইতিহাস

[সম্পাদনা]
মুহাম্মাদ আল-ইদ্রিসি এর টাবুলা রগেরিয়ানা ( ১৫৫৪ খ্রিষ্টাব্দ), আগের দিনের একটি অত্যাধুনিক ম্যাপ।

ভৌগোলিক মানচিত্র

[সম্পাদনা]
কার্টোগ্রাফার Frederik de Wit এর ১৭শ শতকের নাক্ষত্রিক মানচিত্র

কার্টোগ্রাফি বা মানচিত্র প্রণয়ন হলো পৃথিবীর পৃষ্ঠকে সমতল পৃষ্ঠে উপস্থাপন করে গবেষণা এবং অনুশীলন করা। [] মানচিত্র প্রণয়নকারীকে কার্টোগ্রাফার বলা হয়। বর্তমান যুগের সবচেয়ে বেশি ব্যবহার করা হয়সড়ক মানচিত্র। এটি নেভিগেশন মানচিত্রের একটি অংশ,বিমান মানচিত্র, জাহাজ মানচিত্র,রেলপথ মানচিত্র এবং হাইকিং ও সাইক্লিং মানচিত্রও এই মানচিত্রে অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।অন্য সকল মানচিত্রের তুলনায় স্থানীয় জরিপ থেকে তৈরি মানচিত্রের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। এই জরিপগুলো সাধারণত পৌরসভা, ইউটিলিটি প্রতিষ্ঠান, কর মূল্যায়ন বিভাগ, জরুরি সেবা প্রদানকারী এবং অন্যান্য স্থানীয় সংস্থাগুলোর মাধ্যমে পরিচালিত হয়ে থাকে। অনেক সময় জাতীয় জরিপ প্রকল্প সামরিক বাহিনীর তত্ত্বাবধানেও পরিচালিত হয়ে থাকে। উদাহরণস্বরূপ, ব্রিটিশ অর্ডন্যান্স সার্ভে এটি একটি বেসামরিক সরকারি সংস্থা। এই সংস্থা তাদের বিস্তৃত এবং বিস্তারিত কাজের জন্য আন্তর্জাতিকভাবে পরিচিত। মানচিত্রে প্রদর্শিত অবস্থানের তথ্যের মধ্যে কন্টুর লাইন অন্তর্ভুক্ত থাকতে পারে, যা উচ্চতা, তাপমাত্রা, বৃষ্টিপাত ইত্যাদির ধ্রুবমান নির্দেশ করে।

প্রদর্শিত নির্দেশনা

[সম্পাদনা]
Hereford Mappa Mundi, Hereford Cathedral, ইংল্যান্ড, আনু. 1300, একটি ঐতিহ্যবাহী "T-O" মানচিত্রর কেন্দ্রবিন্দু জেরুজালেম। মানচিত্রের উপরে পূর্ব, বামে পাশের নিচে ইউরোপ এবং ডানদিকে আফ্রিকা।

মধ্যযুগে অনেক মানচিত্র, বিশেষ করে T এবং O মানচিত্রগুলো পূর্বদিক হচ্ছে মানচিত্রের উপরের দিকে (অর্থাৎ মানচিত্রে "উপরে" দিকটি কম্পাসের পূর্বের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ) আকা হতো। বর্তমানে সবচেয়ে প্রচলিত নিয়ম হচ্ছে মানচিত্রে উত্তরের অবস্থান উপরে থাকে।

উট্রেখট, নেদারল্যান্ডস-এর মানচিত্র (১৬৯৫)।

উত্তর উপরে না থাকা মানচিত্রসমূহ:


  • সমুদ্রতীরবর্তী শহরের মানচিত্র প্রায়ই ঐতিহ্যগতভাবে সমুদ্রকে উপরে রেখে আকা হতো। রাস্তা ও নৌপথের মানচিত্র সাধারণত তাদের বর্ণিত রাস্তা বা জলের পথের দিককে ভিত্তি করে আকা হতো। মেরু অঞ্চলের মানচিত্র যেমন আর্কটিক বা অ্যান্টার্কটিকার মানচিত্রগুলি সাধারণত মেরুকে কেন্দ্র করে অঙ্কিত হয়। যেখানে উত্তর দিকটি কেন্দ্রের দিকে বা বাইরে নির্দেশ করে। আর্কটিক-এর সাধারণ মানচিত্রে ০° দ্রাঘিমা নিচের দিকে নির্দেশ করে অ্যান্টার্কটিকার মানচিত্রে ০° দ্রাঘিমা উপরের দিকে নির্দেশ করে।




  • নিরক্ষরেখাকে প্রান্ত ধরে ব্যবহার করে, গট, ভান্ডারবেয় এবং গোল্ডবার্গের মানচিত্র দুটি ডিস্ক আকারে সাজানো হয়, এটি মূলত ত্রুটি কমানোর জন্য ডিজাইন করা হয়ে থাকে ।[] এগুলি সহজে শিক্ষামূলক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করার জন্য একটি দুই-পার্শ্বযুক্ত সমতল বস্তু হিসেবে ছাপানোর উপযোগী।
  1. "Map"education.nationalgeographic.org (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০৫-১০ 
  2. "The orientation of the world in the African thought"। ১ জুলাই ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৬ জানুয়ারি ২০১৯ 
  3. Watson, Clare, 'Radically Different': This Could Be The Most Accurate Flat World Map Ever Made, Science Alert, March 8, 2022