মঙ্গলপুর
মঙ্গলপুর | |
---|---|
গ্রাম | |
বাংলাদেশে মঙ্গলপুরের অবস্থান | |
স্থানাঙ্ক: ২৩°২২′৩৪.৯৮২″ উত্তর ৮৯°২′১৫.৮৩৯″ পূর্ব / ২৩.৩৭৬৩৮৩৮৯° উত্তর ৮৯.০৩৭৭৩৩০৬° পূর্ব | |
দেশ | বাংলাদেশ |
বিভাগ | খুলনা বিভাগ |
জেলা | ঝিনাইদহ জেলা |
উপজেলা | কোটচাঁদপুর উপজেলা |
ইউনিয়ন | এলাঙ্গী ইউনিয়ন |
সময় অঞ্চল | বিএসটি (ইউটিসি+৬) |
মঙ্গলপুর ঝিনাইদহ জেলার কোটচাঁদপুর উপজেলার একটি বহুল আলোচিত গ্রাম।[১] এটি ঝিনাইদহ জেলার একটি রহস্যে ঘেরা মানুষশূন্য গ্রাম।[২][৩][৪][৫]
অবস্থান
[সম্পাদনা]মঙ্গলপুর গ্রাম ঝিনাইদহ জেলার কোটচাঁদপুর উপজেলার এলাঙ্গী ইউনিয়নের একটি গ্রাম।
- পূর্ব দিকে ত্রিলোচনপুর গ্রাম
- পশ্চিম দিকে পাশপাতিলা গ্রাম
- উত্তর দিকে বলাবাড়িয়া গ্রাম
- দক্ষিণ দিকে স্বরূপপুর গ্রাম
ইতিহাস
[সম্পাদনা]১৯৫৫-১৯৬০ সালে মঙ্গলপুর গ্রামে জনবসতি ছিল বলে ধারণা করা হয়।[৩]
একসময় গ্রামটি মেতে থাকত মানুষের কোলাহলে। ছিল হিন্দু-মুসলমানের সহাবস্থান। উৎসব পালা-পার্বণ মাতিয়ে রাখত সারা বছর। জমজমাট সেই গ্রাম এখন জনমানবশূন্য। সম্প্রীতির মেলবন্ধন ঘটানো সেই গ্রামে উৎসব তো দূরের কথা, এখন কোনো ঘরবাড়ির বালাই নেই। খাঁখাঁ করে চারদিক। একসময়ের সমৃদ্ধ জনপদের চিহ্ন হিসেবে টিকে আছে পুরোনো আমলের ঘরবাড়ির ইটের টুকরা, উচুঁ ভিটা আর তিনটি পুকুর।[১]
মঙ্গলপুর গ্রামে ঠাকুর সম্প্রদায়-এর প্রভাব ছিল। হাওলা ঠাকুর, লেটো ঠাকুর-এর বংশধররা বসবাস করতেন। হঠাৎ গ্রামে অমঙ্গলের ঘটনা ঘটতে থাকে। এরপর একে একে সবাই গ্রাম ছেড়ে যান[১] স্থানীয় মানুষের বিশ্বাস যে মানুষ না থাকায় এখন মঙ্গলপুর জুড়ে জীন-পরীদের বসবাস।
স্থানীয় মানুষের বিশ্বাস
[সম্পাদনা]“ | বাপদাদার আমলে সেখানে মানুষ ছিল, এখন কেউ নেই। | ” |
— আকবর আলী, [১] |
“ | মঙ্গলপুরে একসময়ে অনেক মানুষ বাস করত। তবে আমরা যখন ছোট তখন মাত্র একজন টিকে ছিল পুরো গ্রামে। সে মুক্তিযুদ্ধের আগের কথা | ” |
— ইছাহাক মন্ডল, [১] |
“ | মঙ্গলপুর বিরাট বড় গ্রাম ছিল। বিভিন্ন ধর্ম-বর্ণের মানুষের বসত ছিল সেখানে। একবার গ্রামে কলেরা ছড়িয়ে পড়ায় প্রচুর মানুষ মারা যান। | ” |
— সবুর মোল্লা, [১] |
জনশূন্য হওয়ার কারণ
[সম্পাদনা]মঙ্গলপুর থেকে মানুষজন উধাও হয়ে যাওয়ার জন্য এখন পর্যন্ত দুটি কারণ পাওয়া গিয়েছে। কারণগুলো হলো-
- কলেরা মহামারী:
“ | এখন যেমন করোনা মহামারিতে সারা দেশে মানুষ মারা যাচ্ছেন, ২০০ বছর আগে এই মঙ্গলপুরেও তেমন এক মহামারি হয়েছিল। এতে বহু মানুষ মারা যান। | ” |
— আক্কাস আলী, [১] |
- অমঙ্গলের ছায়া: মঙ্গলগ্রামের মঙ্গলরা ছিলেন খুব রক্ষণশীল। মঙ্গল নারীদের চেহারাও কেউ দেখতে পেতেন না। সব সময় তারা ঘরের ভেতরে থাকতেন। কিন্তু একদিন একটি অঘটন ঘটে। মুসলিম এক যুবক পুকুরে গোসলরত অবস্থায় এক মঙ্গল নারীকে দেখে ফেলন। সে ঘটনা মঙ্গল সমাজে ব্যাপক আলোচিত হয়। এরপর রাতারাতি এলাকা ছেড়ে অজানা গন্তব্যে চলে যায় মঙ্গল পরিবারগুলো।
“ | এরপর একে একে অমঙ্গলের ঘটনা ঘটতে থাকে মঙ্গলপুর গ্রামে। কিছুকালের মধ্যেই গ্রামটি হয়ে পড়ে জনমানবশূন্য | ” |
— সাবিতা রানী, [১] |
তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ ক খ গ ঘ ঙ চ ছ জ বনি আমিন, গবেষণা ও অনুসন্ধান (২০২২-০৪-২৫)। "রহস্যে ঘেরা মানুষশূন্য মঙ্গলপুর গ্রাম"। নিউজ বাংলা ২৪। ২০২৪-০৪-৩০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০৪-৩০।
- ↑ আলমগীর খান, কোটচাঁদপুর (ঝিনাইদহ) (২০২০-০২-২৩)। "মঙ্গলপুর' গ্রাম কাগজে আছে, বাস্তবে নেই"। যায়যায়দিন। ২০২৪-০৪-৩০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০৪-৩০।
- ↑ ক খ প্রতিনিধি, ঝিনাইদহ (২০২৩-০৯-২১)। "কোন অমঙ্গলের ভয়ে জনশূন্য মঙ্গলপুর গ্রাম?"। সংবাদ প্রকাশ। ২০২৪-০৪-৩০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০৪-৩০।
- ↑ আজাদ রহমান, ঝিনাইদহ (২০১৪-০৯-১১)। "'অমঙ্গল' আতঙ্ক, মানুষশূন্য মঙ্গলপুর"। দৈনিক প্রথম আলো। ২০২৪-০৪-৩০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০৪-৩০।
- ↑ আহমেদ নাসির আনসারী, ঝিনাইদহ (২০২৩-০৫-২৮)। "ভুতুড়ে গ্রাম মঙ্গলপুর"। সাম্প্রতিক দেশকাল। ২০২৪-০৪-৩০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০৪-৩০।