মুঈনুদ্দীন আহমদ খান
মুঈনুদ্দীন আহমদ খান | |
---|---|
জন্ম | |
মৃত্যু | ২৮ মার্চ, ২০২১ |
জাতীয়তা | বাংলাদেশী |
মাতৃশিক্ষায়তন | ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, ম্যাকগিল বিশ্ববিদ্যালয় |
পেশা | অধ্যাপক, লেখক ও পণ্ডিত |
উল্লেখযোগ্য কর্ম | ওরিজিন এন্ড ডেভেলপমেন্ট অব এক্সপেরিমেন্টাল সাইন্স: এনকাউন্টার উইথ দ্য মডার্ন ওয়েস্ট (পরীক্ষণমূলক বিজ্ঞানের উৎপত্তি ও বিকাশ: আধুনিক পাশ্চাত্য ব্যবস্থার মুখোমুখি) |
মুঈনুদ্দীন আহমদ খান (১৮ এপ্রিল, ১৯২৬ - ২৮ মার্চ, ২০২১) ছিলেন একজন বাংলাদেশী ইতিহাসবিদ এবং চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতির অধ্যাপক। তিনি সাউদার্ন ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা উপাচার্য এবং ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশের প্রথম মহাপরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।[১] [২] [৩][৪]
জীবনী
[সম্পাদনা]প্রাথমিক জীবন ও শিক্ষা
[সম্পাদনা]মুঈনুদ্দীন আহমদ খান ১৯২৬ সালের ১৮ এপ্রিল চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলার চুনতি গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৪৫ সালে তিনি মাদ্রাসা ও ১৯৪৭ সালে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করেন। এরপর তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগে ভর্তি হন এবং ১৯৫০ সালে স্নাতক ও ১৯৫১ সালে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেন।[৫] পরবর্তীতে তিনি ফুলব্রাইট স্কলারশিপ নিয়ে কানাডার ম্যাকগিল বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশুনা করতে যান এবং ইসলামের ইতিহাসে মাস্টার্স ডিগ্রি অর্জন করেন। উপমহাদেশের প্রখ্যাত প্রত্নতাত্ত্বিক আহমদ হাসান দানির তত্ত্বাবধানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগ থেকে তিনি ‘বাংলার সামাজিক আন্দোলন’ বিষয়ে পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেন। পোস্ট গ্রাজুয়েট ফেলোশিপ প্রাপ্ত হয়ে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের বার্কলি শাখায় ইনস্টিটিউট অব সাউথ এশিয়ান স্টাডিজে রাজনীতি বিজ্ঞান বিষয়ে ‘সেমিনার ইন ফিল্ড ওয়ার্ক কোর্স’ সম্পন্ন করেন। ম্যাকগিল বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নকালে পাশ্চাত্যের খ্যাতনামা প্রাচ্যবিদ ও কানাডার ম্যাকগিল বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজ ইনস্টিটিউটের প্রতিষ্ঠাতা উইনফ্রেড ক্যান্টওয়েল স্মিথের (১৯১৬-২০০০) সঙ্গে তার পরিচয় হয় এবং তার সান্নিধ্যে থেকে বহুবিধ বিষয়ে জ্ঞান অর্জন করেন।[৩][৪]
কর্মজীবন
[সম্পাদনা]খান ১৯৬১ সালে করাচি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামের ইতিহাস বিষয়ে প্রভাষক হিসেবে নিয়োগপ্রাপ্ত হন। ১৯৬৬ সালে তিনি সেখান থেকে সহযোগী অধ্যাপক হিসেবে ইসলামাবাদে ইসলামিক রিসার্চ ইনস্টিটিউটে স্থানান্তরিত হন। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশ স্বাধীন হবার পরে তিনি দেশে ফিরে আসেন এবং ১৯৭২ সালে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগে সহযোগী অধ্যাপক পদে যোগ দেন। ১৯৭৩ সালে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে তিনি ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগ প্রতিষ্ঠা করেন এবং প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান হিসেবে ওই বিভাগে যোগদান করেন। ১৯৭৪ সালে তিনি একই বিভাগে প্রফেসর পদে পদোন্নতি পান। তিনি ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশের প্রথম মহাপরিচালক হিসেবে দায়িত্ত্ব পালন করেন। ২০০২ সালে চট্টগ্রামে সাউদার্ন ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠিত হলে তিনি এর প্রতিষ্ঠাতা ভিসি হিসেবে নিয়োগ লাভ করেন। তিনি আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় চট্টগ্রামের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ও সিন্ডিকেট মেম্বার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।[৩][৪]
মৃত্যু
[সম্পাদনা]খান ২০২১ সালের ২৮ মার্চ বার্ধক্যজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেন।
গ্রন্থপঞ্জি
[সম্পাদনা]- বাংলায়
- ইসলামে দর্শন চিন্তার পটভূমি
- যুক্তি তত্ত্বের স্বরূপ সন্ধানে: প্রাচ্য বনাম প্রতিচ্য
- তাওহীদ ও বিজ্ঞান: ইসলামী বিজ্ঞানের ইতিহাস ও দর্শন (সম্পাদক), [মূলঃ ওসমান বকর (১৯৯১) তাওহীদ এন্ড সাইন্স]
- ইংরেজিতে
- সিলেকশন্স ফ্রম দ্য বেঙ্গল গভর্নমেন্ট রেকর্ডস অন ওয়াহাবি ট্রাইয়ালস (ওয়াহাবি বিচার-কার্যক্রমের উপর বাংলা সরকারের নথিপত্র)[৬]
- ওরিজিন এন্ড ডেভেলপমেন্ট অব এক্সপেরিমেন্টাল সাইন্সঃ এনকাউন্টার উইথ দ্য মডার্ন ওয়েস্ট (পরীক্ষণমূলক বিজ্ঞানের উৎপত্তি ও বিকাশ: আধুনিক পাশ্চাত্য ব্যবস্থার মুখোমুখি)
- ইসলামিক রিভাইভালিজম ডিউরিং এইটিয়েদ, নাইনটিন্থ এন্ড টুয়েনটিয়েদ সেন্সুরি ইন নর্থ আফ্রিকা, সাউদি এরাবিয়া, পাকিস্তান, ইন্ডিয়া এন্ড বাংলাদেশ (উত্তর আফ্রিকা, সৌদি আরব, পাকিস্তান, ভারত এবং বাংলাদেশে আঠারো, ঊনিশ ও বিশ শতকে ইসলামী পুনরুজ্জীবন)
- হিস্ট্রি অব ফরায়েজি মুভমেন্ট ইন বেঙ্গল (বাংলায় ফরায়েজি আন্দোলনের ইতিহাস)
- এ বিবলিয়োগ্রাফিক্যাল ইন্ট্রোডাকশন টু মডার্ন ইসলামিক ডেভেলপমেন্ট ইন ইন্ডিয়া এন্ড পাকিস্তান (ভারত ও পাকিস্তানে আধুনিক ইসলামী চিন্তাধারার বিকাশ প্রসঙ্গে একটি গ্রন্থপঞ্জি ভূমিকা)
- তিতুমীর এন্ড হিজ ফলোয়ারস ইন ব্রিটিশ ইন্ডিয়ান রেকর্ডস (ব্রিটিশ ভারতীয় রেকর্ডে তিতুমীর ও তার অনুসারীরা)
- মুসলিম স্ট্রাগল ফর ফ্রিডম ইন বেঙ্গল (বাংলায় মুসলমানদের স্বাধীনতার সংগ্রাম: পলাশী থেকে পাকিস্তান)[৭]
তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ "মৃত্যুঞ্জয়ী ড. মইনুদ্দীন আহমদ খান"। দৈনিক পূর্বদেশ। ২০২১। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৯-০৭।[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
- ↑ "প্রখ্যাত ইতিহাসবিদ ড. মুঈনুদ্দীন আহমদ খানের ইন্তেকাল"। Barta24। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৯-০৭।
- ↑ ক খ গ "স্মৃতিতে ও অনুভবে ইতিহাসবিদ মইনুদ্দীন আহমদ খান"। নয়া দিগন্ত। ২০২১। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৯-০৭।
- ↑ ক খ গ রূপান্তর, দেশ (২০২১-০৩-২৮)। "ড. মুঈন উদ-দীন আহমদ খান মারা গেছেন"। দেশ রূপান্তর। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৯-০৭।
- ↑ হাসান, মেহেদী। "ড. মুঈনুদ্দীন আহমদ খান : বহুদর্শী ইসলামিক ইতিহাসবেত্তা"। Shampratik Deshkal। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৯-১১।
- ↑ সিলেকশন্স ফ্রম দ্য বেঙ্গল গভর্নমেন্ট রেকর্ডস অন ওয়াহাবি ট্রাইয়ালস (১৮৬৩-১৮৭০)-এর পর্যালোচনা:
- Hardy, P. (১৯৬৪)। "Muin-Ud-Din Ahmad Khan (ed.): Selections from Bengal Government records on Wahhabi trials (1863–1870)"। বুলেটিন অফ দ্য স্কুল অফ ওরিয়েন্টাল অ্যান্ড আফ্রিকান স্টাডিজ (ইংরেজি ভাষায়)। কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় প্রেস। ২৭ (১): ১৯৫। আইএসএসএন 0041-977X। ডিওআই:10.1017/s0041977x00100679।
- ইসলাম, রিয়াজুল; খান, মুঈনুদ্দীন আহমদ (১৯৬৪)। "Selections from Bengal Government Records on Wahhabi Trials (1863-1870)"। জার্নাল অফ দা আমেরিকান ওরিয়েন্টাল সোসাইটি (ইংরেজি ভাষায়)। JSTOR। ৮৪ (৩): ২৯৬। আইএসএসএন 0003-0279। ডিওআই:10.2307/596575।
- ↑ Muin-Ud-Din Ahmed Khan (২০১৭-০৫-২৪)। Muslim Struggle For Freedom Bengal ( 1747 to 1947)।