ভাগ্যকুল জমিদার বাড়ি

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
ভাগ্যকুল জমিদার বাড়ি
সাধারণ তথ্য
ধরনবাসস্থান
অবস্থানশ্রীনগর উপজেলা
ঠিকানাভাগ্যকুল
শহরশ্রীনগর উপজেলা, মুন্সীগঞ্জ জেলা
দেশবাংলাদেশ
খোলা হয়েছে১৯০০
স্বত্বাধিকারীযদুনাথ রায়
কারিগরী বিবরণ
উপাদানইট, সুরকি ও রড
তলার সংখ্যাদ্বিতল

ভাগ্যকুল জমিদার বাড়ি বাংলাদেশ এর মুন্সীগঞ্জ জেলার শ্রীনগর উপজেলার ভাগ্যকুল গ্রামে অবস্থিত এক ঐতিহাসিক জমিদার বাড়ি[১]

ইতিহাস[সম্পাদনা]

আনুমানিক ১৯০০ শতকে জমিদার যদুনাথ রায় এই জমিদার বাড়ি প্রতিষ্ঠা করেন। যদুনাথ রায় ছিলেন মূলত একজন ব্যবসায়ী। তিনি বরিশাল থেকে সুপারি, লবণ ও শাড়ি আমদানি করে কলকাতার মুর্শিদাবাদে রপ্তানি করতেন। জমিদার যদুনাথ রায় ছিলেন পাঁচ সন্তানের জনক। তাই তাদের জন্য আলাদা আলাদাভাবে আরো চারটি বাড়ি তৈরি করেন। যেগুলো বর্তমানে কোকিলপেয়ারি জমিদার বাড়ি, জজ বাড়ি ও উকিল বাড়ি নামে পরিচিত। আর মূল বাড়িটি ছোট ছেলে নবকুমারকে দিয়ে দেন। এই জমিদার বংশধররা ব্রিটিশ আমলে কয়েকজন বাঙালী ধনীদের মধ্যে একটি ধনী পরিবার ছিল। জমিদারদের মধ্যে হরলাল রায়, রাজা শ্রীনাথ রায় ও প্রিয়নাথ রায়ের নাম উল্লেখযোগ্য। তারা তাদের কর্মযজ্ঞের ফলে ব্রিটিশদের কাছ থেকে রাজা উপাধি লাভ করেন। তখনকার সময় এই জমিদার বংশধররা সকলেই ছিলেন উচ্চ শিক্ষিত। জমিদার বংশধরদের অধিকাংশ এখন ভারতের মুর্শিদাবাদে বসবাস করতেছেন। তবে এই বংশধরের অনেকে এখনো এখানে বসবাস করতেছেন। ভাগ্যকুল জমিদারদের The East Bengal River Steamer নামে একটি স্টিমার কোম্পানি ছিলো যা ১৯০৭ সালে নৌ ব্যবসায় যুক্ত হয়। (ঘাটের কথা : গোয়ালন্দ by হোসাইন মোহাম্মদ জাকি, পৃষ্ঠা: ১৮)

অবকাঠামো[সম্পাদনা]

প্রথমে একটি বাড়ি নির্মাণ করা হয়। পরে আরো চারটি বাড়ি নির্মাণ করা হয়। সবগুলো বাড়িই গ্রীক স্থাপত্যের আদলে তৈরি করা হয়। এছাড়াও এখানে কয়েকটি মন্দির ও বাড়ির সৌন্দর্যের জন্য পুকুরসহ অনেক কিছু নির্মাণ করা হয়।

বর্তমান অবস্থা[সম্পাদনা]

পদ্মা নদীর ভাঙ্গনে এবং অযত্ন ও অবহেলার কারণে বর্তমানে এই জমিদার বাড়ির অনেক কিছু এখন প্রায় ধ্বংস হয়ে গেছে। শুধু প্রধান বাড়িটি এখনো মোটামুটি ভালো অবস্থায় আছে।

বিক্রমপুরের রয়েছে হাজার বছরের ইতিহাস। প্রাচীন পূর্ববঙ্গ বা সমতটের রাজধানী হিসেবে বিক্রমপুরের খ্যাতি কমপক্ষে ১২০০-১৫০০ বছরের। বিক্রমপুরের মাটি খুঁড়ে পাওয়া গেছে হাজার বছর আগের নৌকা, কাঠের ভাস্কর্য, পাথরের ভাস্কর্য, টেরাকোটাসহ অসংখ্য অমূল্য প্রত্নবস্তু। এ ছাড়াও বিক্রমপুরের মাটিতে জন্মগ্রহণ করেছেন অনেক মনীষী। বিক্রমপুরের এইসব অতীত ইতিহাস, ঐতিহ্য, লোকজীবন, শিক্ষা-সংস্কৃতি ও প্রত্ন নিদর্শনাদি সংরক্ষণ করা সর্বোপরি প্রদর্শনের জন্য 'অগ্রসর বিক্রমপুর ফাউন্ডেশন' মুন্সীগঞ্জ জেলার শ্রীনগর উপজেলার রাড়িখাল ইউনিয়ন এর উত্তর বালাসুর গ্রামের জমিদার যদুনাথ রায়ের ১৯৬৫ সাল থেকে পরিত্যক্ত বাড়িতে “বিক্রমপুর জাদুঘর” (Bikrampur Museum) প্রতিষ্ঠা করে। সরকারকে বছরে প্রায় আড়াই লাখ টাকা লিজের অর্থ পরিশোধ করে (বাড়ির জমি, দিঘি, মন্দির সহ সমস্ত কিছুর জন্য) জাদুঘরটি পরিচালনা করে আসছে।

২০১০ সালের ২৯ মে জাদুঘর ভবনটির ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেন স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম এম.পি।

২০১৩ সালের ২৮ মে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা 'বিক্রমপুর জাদুঘর'-এর শুভ উদ্বোধন করেন।

২০১৪ সালের ২০ জুন সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর এমপি জাদুঘরটির দ্বারোদঘাটন করেন। পাশাপাশি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার ইচ্ছে অনুযায়ী বাংলাদেশে একমাত্র "নৌকা জাদুঘর" ( Boat Museum) উদ্বোধন করেন।

প্রায় সাড়ে ১৩ একর জায়গা জুড়ে অগ্রসর বিক্রমপুর ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে ও সরকারি অর্থায়নে এবং পৃষ্ঠপোষকতায় ২০১৪ সালে নির্মাণ করা হয়েছে জাদুঘর এবং গেস্ট হাউজ বা পান্থশালা।


১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে ঐতিহাসিক বেতিয়ারায় সম্মুখে যুদ্ধে গেরিলা বাহিনীর ৯ জন তৎকালীন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়র মেধাবী শিক্ষার্থী বীর মুক্তিযোদ্ধা পাক হানাদার বাহিনীর অতর্কিত হামলায় শহীদ হন। শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে তমধ্যে অত্র এলাকার কৃতি সন্তান ছাত্রনেতা নিজাম উদ্দিন আজাদ এবং  সিরাজুম মুনির ছিলেন। তাঁহাদের প্রতি শ্রদ্ধা ও সম্মান নিবেদন করে ২০২২ সালে "শহীদ মুনীর-আজাদ' পাঠাগার স্থাপন করা হয়েছে।

১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে ঐতিহাসিক বেতিয়ারায় সম্মুখে যুদ্ধে গেরিলা বাহিনীর ৯ জন তৎকালীন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়র মেধাবী শিক্ষার্থী বীর মুক্তিযোদ্ধা পাক হানাদার বাহিনীর অতর্কিত হামলায় শহীদ হন। শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে তমধ্যে অত্র এলাকার কৃতি সন্তান ছাত্রনেতা নিজাম উদ্দিন আজাদ এবং  সিরাজুম মুনির ছিলেন। তাঁহাদের প্রতি শ্রদ্ধা ও সম্মান নিবেদন করে ২০২২ সালে "শহীদ মুনীর-আজাদ' পাঠাগার স্থাপন করা হয়েছে।

সবমিলিয়ে এই উন্মুক্ত আঞ্চলিক জাদুঘরটি আদ্যিকালের বিক্রমপুরের ইতিহাস ও ঐতিহ্যের সংগ্রহশালা যা এককথায় একটি ছাদের নিচে পুরো বিক্রমপুর।

বিক্রমপুর ফাউন্ডেশনের অনেকগুলো সামাজিক ও সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানের মধ্যে এই অঞ্চলিক জাদুঘরটি অন্যতম। কিউরেটর অবৈতনিক হলেও বাকি ৬জন কর্মকর্তা কর্মচারী নিয়ে প্রতিমাসে প্রায় ৮০ থেকে ৮৫ হাজার টাকা পরিশোধ করে জাদুঘরটি ১০ বছর যাবত বিনা প্রবেশ মূল্য ছাড়া বা বিনা টিকিটে পরিচালনা করে আসছে। তবে ব্যায় সংকুলান ও জাদুঘরটি আরো সমৃদ্ধ সংগ্রহশালা হিসেবে গড়ে তোলার জন্য জানুয়ারি ২০২৪ থেকে ২০ টাকা মূল্যের এন্টি ফি বা প্রবেশ মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে।

রাজধানীর খুব কাছেই বঙ্গবন্ধু এক্সপ্রেস ওয়েতে (ঢাকা-মাওয়া হাইওয়েতে) মাত্র ৫০ মিনিটে পৌঁছে যাবেন ভাগ্যকূলের সাবেক জমিদার বাড়ি " বিক্রমপুর জাদুঘর"। বালাসুর চৌরাস্তা থেকে ডানে ঢুকে যাবেন ড.হুমায়ুন আজাদের ভাষায় "বিলের ধারে প্যারিস শহর" সাবেক জমিদার যদুনাথ রায়ের পরিত্যক্ত বাড়িতে উন্মুক্ত বিক্রমপুর জাদুঘরে।

তিনতলা ভবনের এ জাদুঘরে প্রবেশ করতেই দু’পাশে দুটি বড় মাটির পাতিল বা মটকা দেখতে পাবেন।

মোট ৭টি গ্যালারিতে রাখা হয়েছে গুরুত্বপূর্ণ সব নির্দশন।

নিচতলার বাম পাশের গ্যালারি 'যদুনাথ রায়ের' নামে। এ গ্যালারিতে বিক্রমপুরের প্রাচীন মানচিত্র, বিক্রমপুরের বিভিন্ন এলাকা থেকে পাওয়া মাটিরপাত্র, পোড়া মাটির খেলনাসহ প্রত্নতাত্ত্বিক বিভিন্ন নিদর্শন আছে।

নিচতলার ডান পাশের গ্যালারিটি স্যার জগদীশ চন্দ্র বসুর নামে। এ গ্যালারিতে আছে ব্যাসাল্ট পাথরের বাটি, গামলা, পাথরের থালা, পোড়া মাটির ইট, টালি ইত্যাদি এছাড়া বিক্রমপুরের নানা প্রত্নতাত্ত্বিক স্থাপনার ছবিসহ বিভিন্ন নিদর্শন।

দ্বিতীয় তলার বাম পাশের মুক্তিযুদ্ধ গ্যালারিতে আছে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের ছবি, ইতিহাস, দলিল, বই ও বিভিন্ন নমুনা। আর  ডান পাশের গ্যালারিতে আছে বিক্রমপুরে জন্ম নেয়া মনীষীদের জীবন ও কর্মের বৃত্তান্ত। আরও আছে কাগজ আবিষ্কারের আগে প্রাচীন আমলে যে ভূর্জ গাছের বাকলে লেখা হতো সেই ভূর্জ গাছের বাকল।

তৃতীয় তলায় এখানে পরিদর্শন করা হয়েছে বিভিন্ন সময়ের বিভিন্ন দেশ ও সাম্রাজ্যের কয়েন, নোট, পরিবারের ব্যবহারের তালিকা থেকে বিলুপ্ত হয়ে যাওয়া জিনিসপত্র আদ্যিকালে পরিবারের কাজে বিভিন্ন সময়ে ব্যবহৃত হুঁকা, হারিকেন, কুপি, কলের গান, টেলিফোন সেট, রেডিও,কলম,দোয়াত, টাইপরাইটার, ক্যামেরা, টেপ রেকর্ডার,ব্যাটারী চালিত টেলিভিশন, জাঁতা, খড়ম, পয়টা, পান বাটা, কাঁসার বাসনপত্র, মাটির জিনিসপত্র, কৃষি যন্ত্রপাতি, হাতে বুননের তাঁত শিল্পের যন্ত্রপাতি, মসলিন শাড়ি,তালপাতায় লেখা পুঁথি, পুরাতন খাট পালং, চেয়ার, টেবিল, আলমারী,কাঠের সিন্দুক, পোড়া মাটির মূর্তি, সিরামিকের থালাসহ প্রাচীন আমলে স্থানীয় মানুষদের ব্যবহার্য বিভিন্ন নিদর্শন। এবং স্বদেশী আন্দোলনের সাক্ষী সুতা কাঁটা চড়কা।

মাটি খুঁড়ে পাওয়া ১০০০ বছর আগের বিক্রমপুরের হারিয়ে যাওয়া ইতিহাস

বিক্রমপুরের হাজার বছরের প্রাচীন সভ্যতা মাটির নিচে চাপা পড়ে ছিল এতদিন। তা এখন অগ্রসর বিক্রমপুর ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে প্রায় দেড় হাজার বছর আগের বৌদ্ধনগরী সহ বেশ কিছু প্রত্ননিদর্শন সন্ধান পায় মাটি খুঁড়ে বিভিন্ন পর্যায়ে এক হাজার থেকে এক হাজার ৫০০ বছরের মধ্যে বিভিন্ন সভ্যতা গড়ে উঠেছে তার প্রমান করে মাটির নিচে প্রাচীন নগরসভ্যতার আবিষ্কার। ২০১২ সালে রামপালের রঘুরামপুরে বৌদ্ধবিহার আবিষ্কার, টঙ্গিবাড়ীর নাটেশ্বরে একটি বৌদ্ধনগরী আবিষ্কার করা হয়েছে।

মাটি খুঁড়ে পাওয়া বিক্রমপুরের হারিয়ে যাওয়া ইতিহাস ঐতিহ্যর নিদর্শন নিয়ে একটি গ্যালারীতে নতুন মাত্রায় যোগ হয়েছে। রঘুরামপুর ও নাটেশ্বর থেকে প্রাপ্ত কিছু মহামূল্যবান নির্দশন এই গ্যালারিতে স্হান পেয়েছে। এসব নির্দশন বিক্রমপুরের অতীত ইতিহাস ও ঐতিহ্য বহন করছে।

প্রতিদিন শত শত দর্শক আসছে জাদুঘর পরির্দশন করতে। এছাড়া বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষা সফর, সামাজিক সংগঠন, কর্পোরেট অফিসের উদ্যোগে জাদুঘর প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠানমালার আয়োজন হয়ে থাকে।

বৃহস্পতিবার সাপ্তাহিক ছুটির দিন বাদে সপ্তাহের বাকি ৬ দিন জাদুঘরটি সকাল ১০টা থেকে ৬টা পর্যন্ত সর্বসাধারণের জন্যে উন্মুক্ত থাকে।

• ২টি বিশাল বিশাল দিঘি

• ৪টি শান বাঁধানো পুকুর ঘাট

• জমিদারীর কাচারী ঘর

•  ইউরোপিয়ানদের জন্য গেস্ট হাউস

• ভাগ্যকূলের জমিদার যদুনাথ রায়ের মুখিমুখি ২টি ভবন এবং অন্যান্য স্হাপনা

• তিন তলা বিশিষ্ট বিক্রমপুর জাদুঘর

• নৌকা জাদুঘর

• উন্মুক্ত জাদুঘর

• শহীদ "শহীদ মুনীর-আজাদ স্মৃতি পাঠাগার"।

• নানা প্রজাতির দূর্লভ সব ফুল ও ফলজ গাছ গাছালি।

রাজা সীতানাথ রায়ের দুই পুত্র যদুনাথ রায় এবং প্রিয়নাথ রায়। জমিদার সীতানাথ রায়ের পুত্র যদুনাথ রায় এই ভবনটি নির্মাণ করেন।সীতানাথ রায়ের মূল জমিদারি যদিও পদ্মার বুকে বিলীন হয়ে যায়, তখন পদ্মার ভাঙ্গন থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য আড়িয়ল বিলের কিনারে মনোরম ডুয়েল প্রাসাদ গড়ে তুলেছিলেন। যদুনাথ রায়ের বর্তমানের রাঢ়িখাল ইউনিয়নের উত্তর বালাশুরে (সে সময় ভাগ্যকুল নামে পরিচিত ছিল) হুবহু একই ধরণের দুটি ত্রিতল ভবন নির্মাণ করেন। সেই সাম্রাজ্যের মধ্যে টিকে আছে শুধু এই আড়িয়াল বিলের ধারের প্রাসাদ দুইটি।বিশালাকৃতির দিঘি খনন করেন,দূর্গামন্দির ও নাটমন্দির (থিয়েটার; নাট্যশালা) স্থাপন করেন। স্থানীয় মানুষের কাছে এই বাড়িটি 'বাবু বাড়ি' নামেও পরিচিত।ভাগ্যকুলের এই জমিদার তারা তাদের কর্মযজ্ঞের ফলে ব্রিটিশদের কাছ থেকে রাজা উপাধি লাভ করেন। তখনকার সময় এই জমিদার বংশধররা সকলেই ছিলেন উচ্চ শিক্ষিত।ভাগ্যকুল জমিদারদের The East Bengal River Steamer নামে একটি স্টিমার কোম্পানি ছিলো যা ১৯০৭ সালে নৌ ব্যবসায় যুক্ত হয়। এই বাড়ির বংশধরদের বর্তমানে কোলকাতায় বসবাস। তাদের সাথে অগ্রসর বিক্রমপুর ফাউন্ডেশনের সাথে যোগাযোগ আছে। উভয়ের মধ্যে সুসম্পর্ক রয়েছে। বিক্রমপুর জাদুঘর এর কিউরেটর কোলকাতায় তাদের বাড়িতে বেড়াতে গিয়েছিলেন এবং খুব শীঘ্রই তাদের পরিবার পরিজন নিয়ে বেড়াতে আসবেন বলে জানা যায়। উল্লেখ্য এই বংশধরের এখানে বা বাংলাদেশে কেউ নেই।

এই বাড়িতে তারা বিদ্যুৎ উৎপাদন করেছিলেন, ছিল সোয়ারেজ ব্যবস্হা , বিশালাকৃতির তিনটি দিঘি ছিল, বাড়ি জুড়ে ছিল বহুরকমের ফুল ও ফলের গাছ। খাপড়াওয়ার্ড খ্যাত লেখক আব্দুস শহীদ তার ‘কারাস্মৃতি’ গ্রন্থে ফুল বাগানের বর্ণনা দিয়েছেন। এখনো বাহারী নাগলিঙ্গম, বিশালাকৃতির কাঠবাদাম, বোম্বে লিচু, সুমিষ্ট আম গাছ রয়েছে। অশোক গাছটিতে এখনো ফুল ফুটলে মনে হয় ভোরে সূর্য উকি দিয়েছে। পুকুর ছিল মাছে পরিপূর্ণ, আলাদাভাবে কূপে ছিল রঙিন মাছ।

ড. হুমায়ুন আজাদ এই বাড়িটিকে নিয়ে তার ফুলের গন্ধে ঘুম আসে না গ্রন্থে লিখেছেন- "বিলের ধারে প্যারিস শহর"।

জাদুঘরটি আরো সমৃদ্ধ করার জন্য জাদুঘরের পক্ষ থেকে কিউরেটপ্রাচীন তৈজসপত্র, পাথর বা অন্যান্য ধাতু/চীনা মাটি ও মাটির নির্মিত থালা, বাসন, অতীত যুগের ব্যবহার্য সামগ্রী, কৃষি যন্ত্রপাতি, পুরাতন খাট পালং, চেয়ার, টেবিল, আলমারি, পুঁথি-পত্র, বই তালপাতায় বা হাতে বানানো কাগজে হাতে লেখা প্রাচীন গ্রন্থ, নৌকা, মৃৎশিল্প, পোড়ামাটির নিদর্শন, মূর্তি, কয়েন, অলংকার, হাতির দাঁতের শিল্পকর্ম, প্রাকৃতিক সম্পদ, ধাতব শিল্পকর্ম, পুতুল, বাদ্যযন্ত্র, পোশাক, নকশিকাঁথা, কাঠের শিল্পকর্ম,পাণ্ডুলিপি ইত্যাদি। বীর মুক্তিযোদ্ধাদের স্মৃতি বিজড়িত বস্তুগুলো নিয়ে গড়ে তোলা হয়েছে (প্রদর্শিত হচ্ছে) মুক্তিযুদ্ধ গ্যালারি।এই মুক্তিযুদ্ধ গ্যালারির জন্য মুক্তিযোদ্ধাদের ছবি, শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের ব্যবহার্য জামা-কাপড়, বই-পত্র অন্যান্য সামগ্রী এবং নৌ জাদুঘরের জন্য নৌকা দান করলে জাদুঘরটি সমৃদ্ধ হবে।

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]