ব্রায়ান কিবল

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
ব্রায়ান পিটার কিবল
জন্ম(১৯৩৮-০৮-১০)১০ আগস্ট ১৯৩৮
লেটকম্ব রেজিস, বার্কশায়ার, ইংল্যান্ড (অক্সফোর্ডশায়ার, ১৯৭৪ পর্যন্ত)
মৃত্যু২৮ এপ্রিল ২০১৬(2016-04-28) (বয়স ৭৭)
জাতীয়তাবৃটিশ
শিক্ষাএবিংডন স্কুল, জেসাস কলেজ, অক্সফোর্ড
পেশাপদার্থবিদ
নিয়োগকারীজাতীয় পদার্থবিদ্যা গবেষণাগার, যুক্তরাজ্য

ব্রায়ান পিটার কিবল (১০ আগস্ট ১৯৩৮-২৮ এপ্রিল ২০১৬) একজন ব্রিটিশ পদার্থবিজ্ঞানী ও পরিমাপবিদ ছিলেন। তিনি কিবল পরিমাপক যন্ত্র উদ্ভাবন করেন, যেটি বৈদ্যুতিক পরিমাপক যন্ত্রের উন্নততর সংস্করণ। ভরের এস.আই. একক কিলোগ্রাম পরিমাপের কাজে কিবল পরিমাপক যন্ত্র ব্যবহৃত হয়।

প্রারম্ভিক জীবন ও পরিবার[সম্পাদনা]

কিবল ইংল্যান্ডের লেটকম্বে রেজিস গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন (পূর্বে এটি বার্কশায়ারের অংশ ছিল, এখন অক্সফোর্ডশায়ারের অংশ)। তাঁর বাবার নাম হার্বার্ট কিবল ও মার নাম এলেন কিবল। তাঁর বাবা একজন পুলিশ সার্জেন্ট ছিলেন। ছোটবেলা থেকেই তিনি বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতি ও সাধারণ কলকব্জা সারাই করতে ভালোবাসতেন। ১৯৫০-১৯৫৭ সালে কিবল আবিংডন স্কুলে লেখাপড়া করেন। সেখানে তিনি যেরকম শ্রেণিনেতা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন, তেমনি তাৎপর্যপূর্ণ শিক্ষাগত সাফল্য অর্জনেও সক্ষম হন। তিনি পদার্থবিজ্ঞান, গণিত ও বিজ্ঞানের অন্যান্য শাখায় অবদানের কৃতিত্বস্বরূপ অনেকগুলো পুরস্কার লাভ করেন। পরবর্তীতে তিনি বেনেট শিক্ষাবৃত্তি লাভ করেন। তিনি বিতর্ক সংঘের সভাপতি ছিলেন। এগুলোর পাশাপাশি কিবল বিদ্যালয়ের হকি ও রাগবি দলের খেলোয়াড় ছিলেন। [১]

অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনস্থ জেসাস কলেজে অধ্যয়নের জন্য কিবল বৃত্তি লাভ করেন। সেখানেই কিবলের সাথে তার ভবিষ্যৎ জীবনসঙ্গিনী অ্যান গ্রিনফিল্ডের দেখা হয়। ১৯৬৪ সালে তাঁরা বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। ঐ বছর কিবল পারমাণবিক বর্ণালিমিতির উপর ডিফিল ডিগ্রি লাভ করেন। তাঁদের দুই সন্তান রয়েছে- স্টিফেন ও নিকোলা। [২][৩]

কর্মজীবন[সম্পাদনা]

ডি.ফিল ডিগ্রি লাভের পর কিবল কানাডার অন্টারিও প্রদেশের উইন্ডসর বিশ্ববিদ্যালয়ে ডক্টরেটোত্তর ফেলো হিসেবে যোগদান করেন। দুই বছর পর তিনি ইংল্যান্ড ফিরে আসেন। পরবর্তী ত্রিশ বছর টেডিংটনে অবস্থিত জাতীয় পদার্থবিজ্ঞান বিজ্ঞানাগারে জ্যেষ্ঠ গবেষণা ফেলো হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।

১৯৭০ খ্রিস্টাব্দে তিনি জি জে হান্টের সঙ্গে যৌথভাবে প্রোটনের গাইরোম্যাগনেটিক বা চক্রচৌম্বকীয় অনুপাত(কোনো বস্তুর চৌম্বকীয় মুহূর্ত ও কৌণিক ভরবেগের অনুপাত) বের করেন। এর ফলে পূর্বে কৃত ভুলগুলো সহজেই সংশোধন করা সম্ভব হয় এবং অ্যাম্পিয়ার এককের উন্নততর এস.আই সংজ্ঞা প্রদান সম্ভব হয়। বৈদ্যুতিক পরিমাপক যন্ত্রের সাহায্যে অ্যাম্পিয়ার এককটির সংজ্ঞা প্রদান করা হয়েছিল, কিন্তু এর সাহায্যে পরিমাপ অত্যন্ত দুরূহ ছিল।[৪][৫]

কিবল পরিমাপক যন্ত্র[সম্পাদনা]

কিবল গ্রেভিল রেনারের সঙ্গে পরস্পর অক্ষীয়ভাবে সহাবস্থানকারী এ.সি. (অল্টারনেটিং বা দিক পরিবর্তনকারী বিদ্যুৎপ্রবাহ) ও গণনাযোগ্য ধারকের উপর কাজ করেন, যার দরুন "ওহম" এককটি আবিষ্কৃত হয়। ১৯৮৪ খ্রিস্টাব্দে কিবল ও রেনার তাদের গবেষণার ফলাফল প্রকাশ করেন। বৈদ্যুতিক ব্যালেন্স বা পরিমাপক যন্ত্রের মান ও কার্যকারিতা নিয়ে কিবল উদ্বিগ্ন ছিলেন, যার ফলে সর্বদাই তিনি এর মানোন্নয়নের ব্যাপারে চিন্তা করতেন। যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় মানদণ্ড ও প্রযুক্তি সংস্থার প্রধান রবার্ট ডি কাটোস্কি একবার ইংল্যান্ড আগমন করে কিবলের সঙ্গে দেখা করেন। তাঁর দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়ে কিবল চলকুণ্ডলি ওয়াট-ব্যালেন্স আবিষ্কার করেন। ১৯৭৮ সালে ইয়ান রবিনসন ও রে স্মিথের সহযোগিতায় তিনি মার্ক-ওয়ান ওয়াট-ব্যালেন্স আবিষ্কার করেন। এর ফলে অ্যাম্পিয়ার একক সম্পর্কে আরো নিখুঁত ধারণা অর্জন করা সম্ভব হয়। ১৯৯০ সালে এর ফলে জোসেফসন ও ভন ক্লিৎজিগ এককের আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত মান নির্ণয় করা সম্ভব হয়। ইতোপূর্বে দেশগুলো নিজেদের ইচ্ছামত ধ্রুবকের মান নির্ণয় করত। এর ফলে বাণিজ্যে সুষ্ঠু প্রতিযোগিতাপূর্ণ পরিবেশ বাধার সম্মুখীন হয়। এ সকল বাধা কিবল আবিষ্কৃত বৈদ্যুতিক পরিমাপক যন্ত্রের ফলে অনেকটাই দূরীভূত হয়।

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. https://www.abingdon.org.uk/uploads/school/files/abingdonian/1958_January_V011_N004.pdf#page=39
  2. Kibble, Stephen (১১ আগস্ট ২০১৬)। "Bryan Kibble obituary" – www.theguardian.com-এর মাধ্যমে। 
  3. "News"NPLWebsite 
  4. "Bryan Peter Kibble - Instrumentation & Measurement Society"ieee-ims.org। ৩০ অক্টোবর ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৪ অক্টোবর ২০২০ 
  5. Kibble, B. P.; Hunt, G. J. (১ জানুয়ারি ১৯৭১)। "GYROMAGNETIC RATIO OF THE PROTON MEASURED IN A HIGH MAGNETIC FIELD."Nat. Bur. Stand. (U. S.), Spec. Publ. No. 343, 131-5(Aug 1971). – www.osti.gov-এর মাধ্যমে।