ব্যবহারকারী আলাপ:মোঃ ইসমাইল হোসেন

পাতাটির বিষয়বস্তু অন্যান্য ভাষায় নেই।
উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে

বাংলা উইকিপিডিয়ায় স্বাগতম[সম্পাদনা]

কোসেম সুলতান[সম্পাদনা]

তুরস্কের অটোম্যান সাম্রাজ্যের ইতিহাস, ঐতিহ্য এবং জীবনযাপন ছিল সেই সময়ে এক কথায় অনবদ্য। তবে অটোমান রাজ বংশে ছিল এক কঠিন আইন। যে আইনে সিংহাসনের জন্য ভাই, ভাইকে খুন করতে পারবে এবং সেটা বৈধ। অপর দিকে একজন অটোমান সুলতানের একাধিক খাস দাসী থাকত যারা সুলতানের সাথে থাকতেন এবং সন্তান জন্ম দিতেন। সেই কারণে প্রত্যেক মা চাইতেন তার নিজের সন্তানকে সিংহাসনে দেখতে। কিন্তু সবাই সেটা পারতেন না। সুলতানের উপর এবং প্রাসাদে যে সুলতানার প্রভাব থাকত বেশী সেই একমাত্র পারত। কিন্তু অটোমান সাম্রাজ্যে একজন মাত্র নারী সুলতানের থেকেও বেশী ক্ষমতাধর হয়ে ছিলেন। তার ইশারায় সুলতান পরিবর্তন হতো, এত টাই ক্ষমতাধর নারী ছিলেন সেই নারী কোসেম। তিনি সুলতান প্রথম আহমেদের বিবাহিত স্ত্রী এবং সুলতান চতুর্থ মুরাদ এবং সুলতান ইব্রাহিমের মাতা।

কোসেম সুলতান জীবিত কালে অটোমান সাম্রাজ্যে ছয় জন সুলতান সিংহাসনে বসেন। কিন্তু তার ক্ষমতা ছিল সুলতানের আয়ত্তের বাইরে। প্রাথমিক জীবন আনুমানিক ১৫৮৯ সালে তিনোস দ্বীপে কোসেম সুলতান জন্মগ্রহণ করেন।

কিছু ঐতিহাসিক মনে করেন যে, কোসেম ছিল গ্রিক বংশোদ্ভূত তিনোস দ্বীপের (পূর্ব নাম আনাসতাসিয়া) একজন ধর্মযাজকের মেয়ে। কিন্তু এই সূত্রটিকে বিশ্বাসযোগ্য মনে করেন না অনেক ঐতিহাসিক।

কাভিদ বাইসুন নামক এক ঐতিহাসিক বলেন যে, মাত্র পনের বছর বয়সে তাকে বসনিয়ার কর্তৃপক্ষ দাসী হিসবে ইস্তাম্বুলে এনে সুলতান প্রথম আহমেদের হারেম এ পাঠান। পরবর্তীতে মুসলিম হওয়ার পর তার নাম পরিবর্তন করে রাখা হয় মাহপেয়কার যার অর্থ চাঁদের মত মুখ যার এবং তার পরে সুলতান প্রথম আহমেদ তার নাম রাখেন কোসেম।

কোসেম থেকে হাসেকি সুলতান অটোমান সুলতানদের হারেম পরিচালনার দায়িত্ব থাকত সুলতানাদের কাছে এবং হারেম পরিচালনার দায়িত্ব বংশানুক্রমে পরিবর্তিত হতো। কোসেম সুলতান আহমেদের খাসবাদী হওয়ার পর থেকে তার জীবন রাতারাতি বদলে যেতে থাকে। কোসেম খাসবাদী থাকার সময় হারেম এর কর্তৃত্ব ছিল সুলতানের দাদী সাফিয়ে সুলতানের হাতে। কিন্তু সাফিয়ে সুলতান ১৬০৪ সালে তার কর্তৃত্ব হারান এবং তিনি তার বাকি জীবন অন্য একটি প্রাসাদে কাটান। একই বছর সুলতান আহমেদের মা এবং ভ্যালিদে হান্দান সুলতান এর মৃত্যুর পর কোসেম সুলতানের নিকট সুযোগ আসে হারেম এর কর্তৃত্ব পাওয়ার।

সুলতান আহমেদ তাকে বিবাহ করলে তিনি হাসেকি সুলতান হিসেবে আখ্যা পান। কোসেম সুলতান অনেক গুলো সন্তান জন্ম দেন এবং হারেমের কর্তৃত্বও ছিল তার হাতে।

ইস্কি সারাহ প্রাসাদে নির্বাসন সুলতান প্রথম আহমেদ মাত্র ২৭ বছর বয়সে মারা যাওয়ার কারণে কোসেম সুলতান তোপকাপি প্রাসাদে তার অবস্থান হারিয়ে ফেলেন এবং তাকে তোপকাপি প্রাসাদ হতে ইস্কি সারাহ প্রাসাদে থাকতে দেওয়া হয়। সুলতান প্রথম আহমেদ মারা যাওয়ার পর সিংহাসনে প্রথমবারের মত সুলতানের ছেলে না বসে তার ভাই প্রথম মুস্তফা বসেন যিনি ছিলেন একজন পাগল প্রকৃতির মানুষ। খুব দ্রুত মুস্তফাকে সরিয়ে সুলতান বানানো হয় কোসেম সুলতানের সৎ ছেলে দ্বিতীয় ওসমানকে। যেহেতু কোসেম সুলতানের ছেলে সিংহাসনে বসতে পারেন নাই তাই অটোমান রাজ বংশের রীতি অনুযায়ী তাকে অন্য কোন জৌলুসহীন প্রাসাদে থাকতে হবে। কিন্তু কোসেম সুলতানকে খুব বেশী দিন পুরাতন বা ইস্কি প্রাসাদে থাকতে হয় নি। তার ছেলে চতুর্থ মুরাদ সিংহাসনে আরোহণ করার পর তিনি পুনরায় হাসেকি সুলতান পদবী ব্যবহার করতেন এবং তার মৃত্যুর পূর্ব পর্যন্ত তাকে ১০০০ আর্চে করে খরচ দেয়া হতো। কোসেম সুলতানের মৃত্যুর পর হাসেকি সুলতান পদবীটি বিলুপ্ত হয়ে যায়।

ভ্যালিদে সুলতান অটোমান সাম্রাজ্যে যেসব সুলতানার সন্তান সিংহাসনে আরোহণ করত তাদেরকে ভ্যালিদে সুলতান বলা হতো। ভ্যালিদে সুলতানের অধীনে হারেম গুলো পরিচালিত হতো। কোসেম সুলতানের ভ্যালিদে সুলতান হিসবে ক্ষমতা প্রাপ্তি প্রয়োগ মোট তিনটি ধাপে ছিল। মোঃ ইসমাইল হোসেন (আলাপ) ১১:১৪, ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ (ইউটিসি)[উত্তর দিন]