ব্যবহারকারী আলাপ:অনাময় সরকার

পাতাটির বিষয়বস্তু অন্যান্য ভাষায় নেই।
উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে

বাংলা উইকিপিডিয়ায় স্বাগতম[সম্পাদনা]

https://bengali.pratilipi.com/story/%E0%A6%95%E0%A7%8D%E0%A6%B7%E0%A6%A3%E0%A6%BF%E0%A6%95%E0%A7%87%E0%A6%B0-%E0%A6%9B%E0%A7%8B%E0%A6%81%E0%A7%9F%E0%A6%BE-fn943p09tntu== ক্ষণিকের ছোঁয়া ==

ক্ষণিকের ছোঁয়া


অনাময় সরকার ___________________________

কিছু প্রথা মেনে গভীর অনুভূতি। মধ্যমণি আকুতি মিনতির চাক্ষুষ মোর , প্রকাশমান দুটি প্রদক্ষিণরত কলেবর। ভরপুর জ্যোতি ছড়িয়ে বিরাজমান মনুষ্য বনের মনস্তাত্ত্বিক যুদ্ধ। তীক্ষ্ণ আক্রমণাত্মক চাহুনি , প্রবল ভাব বেষ্টনী সর্ব অঙ্গে প্রবাহিতা। মুহূর্তকাল ক্ষণিকেই বদল আলগোছে বসা আমি সোজা দণ্ডায়মান , ওই সোনা গেলো যে রেলের স্থান ও কাল ! হতাস সময় আমার , প্রাণ কুটিরে দাঁড়িয়েছিল যে সে এক কোণ কুটিরে , পেরিয়ে এলাম তার দোয়ার সাক্ষী ছিলো ওই প্রহর। পেছন ফিরে দিক চাহন অপর প্রান্তেও ঠিক একি রকম , ছোঁয়া ছিল আলতো বড়ই আমার প্রাণ ঘেঁসেছে জগৎ সমই।

_________________\\m//________________

মানুষের হারানো ইতিহাস: দানিকেন প্রসঙ্গ[সম্পাদনা]

অনেকেই এখন এই ব্যাপারটা সম্বন্ধে জানেন না, সম্যক ধারণা লাভের আগেই বিভিন্ন টিপ্পনী খেয়ে আর অযাচিত টিটকিরি বেশি মাত্রায় হজম করে নিরুৎসাহী হয়ে পড়েন। কিন্তু জানতেন, ৬০এর দশকে সতেরো থেকে সাতাশি— সকলে জানতেন, অনেকে রীতিমতো পড়াশোনাও করতেন নিজের গরজে, কফি হাউজে চায়ের পেয়ালায় তুফান উঠতে তখন যতো দ্যাখা যেতো তেমন আর কখনও দ্যাখা যায়নি! সেই সময় কলকাতা থেকে ক্যালিফোর্নিয়া আবালবৃদ্ধবনিতা দানিকেন জ্বরে ভুগতো যাকে বলা হতো— "দানিকেনাইটিস"! এমনিতেই সেই দশক ছিলো সর্বার্থেই আবেগতাড়িত। একদিকে এই দশকের গোড়ায়, ১৯৬০এ আমেরিকার সবচেয়ে প্রিয় রাষ্ট্রপতি কেনেডির নির্বাচনী জয়, অন্যদিকে ভিয়েতনামে সমাজতান্ত্রিক সশস্ত্রবাহিনীর অভ্যূত্থান, আমেরিকার হস্তক্ষেপ ও রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে তার শোচনীয় পরিণতি; ১৯৬০, সে-বছরই ডিসেম্বরে আমেরিকার বাজারে এলো এক নতুন 'পিল'— contraceptive pill! আর তরুণ হৃদয়ের সংকোচ ঘুচে গেলো, প্রেম রাতের বিছানা থেকে দুপুরের সোফায় এসে পড়লো, জীবন হলো মনোরম! ৬১তে কিউবা থেকে ফিদেল কাস্ত্রো-কে উৎখাত করতে ব্যর্থ CIA, সে-বছর Bob Dylan প্রথম জনতার মাঝে লাইভ পার্ফরম্যান্স দিলেন; সে-বছরই সোভিয়েত রাশিয়ার পরীক্ষামূলক hydrogen bomb বিস্ফোরণে গোটা দুনিয়ার ভীতিসঞ্চার, 'কোল্ড ওয়ার' কানাঘুষো। আর এই ৬১র নভেম্বরে মলয় রায়চৌধুরীর নেতৃত্বে শুরু হলো প্রবল বিতর্কিত— ‘Hungry generation’ বা 'Hungryalist’ আন্দোলন, যা বাংলা-ভাষাসাহিত্যকে দুমড়েমুচড়ে এক ঝটকায় প্রাপ্তমনস্ক ও বিশ্বজয়ী করে দিলো! পরের বছরই, ৬২র সেই উৎকণ্ঠায় অতিষ্ঠ "কিউবান মিসাইল ক্রাইসিস"! ৬২র অগাস্টে রহস্যময় ভাবে মারা গেলেন আপামর মানুষের স্বপ্নচারিণী মহীয়সী নায়িকা মেরিলিন মনরো! এ বছর শেষের দিকে ভারত-চীন যুদ্ধ! আবার ৬৩তেই অজানা আততায়ীর গুলিতে কেনেডি খুন হলেন (যে রহস্যের আজও কিনারা হয়নি!); আর নারীবাদী গ্লোরিয়া স্টাইনেম ছদ্মবেশী সাংবাদিক হিসেবে লিখলেন গরগরে 'Playboy Bunny Article'! ৬৪তে ভিয়েতনাম যুদ্ধে উত্তপ্ত সারা বিশ্ব, মার্টিন লুথার কিং-এর যুদ্ধবিরোধী বক্তব্য ঘোষণা, গোটা বিশ্বের প্রতিবাদ; এদিকে "হিপ্পি" কালচারের উদ্ভব হয়েছে, ধীরে ধীরে তা ঝলমলে যুবক-যুবতীদের মাতিয়ে তুলছে, অনেকের বাবা-মায়েরাও চাইছেন তাদের সন্তান বরং নতুন মুক্ত-প্রেমের এই পথে যাক, অনৈতিক যুদ্ধে অংশগ্রহণের চেয়ে আনমনা বেলেল্লা জীবন অনেক ভালো। আর কোথা থেকে জানি The Beatles নামের এক ছটফটে ব্যান্ড টিভির পর্দায় আবির্ভূত হলো সেই বছর, লোকে ঘরে বসে দেখে বেশ ফুর্তি পেলো! ৬৫ সালে আমেরিকায় গুপ্তঘাতকের হাতে ভাষণরত অবস্থায় মারা গেলেন "The Nation of Islam"-এর প্রতাপশালী কৃষ্ণাঙ্গ নেতা Malcolm X; অন্যদিকে, আমাদের দেশ থেকে কলকাতার এক শিক্ষিত বাঙালি অভয়চরণ দে সন্যাস গ্রহণ করে হয়ে উঠলেন "ভক্তিবেদান্ত স্বামী প্রভুপাদ" এবং গৌড়ীয় বৈষ্ণব শাস্ত্রের মহান ভাষ্যকার রূপে ১৯৬৬ সালে প্রতিষ্ঠা করলেন ISKCON —যা "হরে কৃষ্ণ আন্দোলন" আগুনের মতো ছড়িয়ে দিলো ইউরোপীয় সভ্যতার অন্দরে, এবং আমেরিকায় প্রভূত অনুগামী জুটিয়ে ফেললো! সে-বছর Star Trek নামের টিভি সিরিয়াল শুরু হলো (যা তিন বছর টানা চলবে)। ৬৭ সালে Rolling Stone পত্রিকার ১ম সংখ্যা প্রকাশ পেলো। এই ৬৭র মে নাগাদ Naxalite বা নকশাল আন্দোলনের খবর দাবানলের মতো ছড়িয়ে পড়লো দেশান্তরে! ৬৮র মার্চে ভিয়েতনামে ন্যক্কারজনক My Lai Massacre, যা দেখে তাবৎ শুভবুদ্ধিসম্পন্ন মানুষ ও প্রতিক্রিয়াশীল বুদ্ধিজীবী রাগে-দুঃখে প্রতিবাদী মিছিলে সামিল হলেন; এ-বছরই যাচ্ছেতাই লোক নিক্সন রাষ্ট্রপতি পদে জিতে গেলেন! কিন্তু এই বছরে এতো ডামাডোলের মধ্যেও দুটি ভালো ঘটনাও ঘটেছিলো! ১৯৬৮ সালেই প্রভুপাদ প্রকাশ করলেন তাঁর বহুচর্চিত বই— 'Bhagavad Gita as it is' যা নতুন যুগের উপযোগী প্রাচীন শাস্ত্রের অবিকৃত নবপাঠ! একই সঙ্গে সুইজারল্যান্ডের কে একজন, নাম তাঁর Erich von Däniken— প্রকাশ করলেন একটি বই, জার্মান ভাষায়: 'Erinnerungen an die Zukunft'; যার আক্ষরিক অর্থ: "ভবিষ্যতের স্মৃতি"!!! এই বইটি প্রকাশিত হলো বললে কম বলা হবে, একটা পরমাণু বোমাই যেনো ফাটলো! ডারউইনের বিবর্তনবাদ নিমেষে বালখিল্য বিচারে নস্যাৎ হয়ে যাওয়ার উপক্রম। বাজারে রমরমিয়ে বিক্রি হচ্ছে এই আশ্চর্য বই। এতে লেখা কথাগুলো সকলের কাছে আনকোরা নতুন। কিন্তু লেখক যে পুঙ্খানুপুঙ্খ তথ্য সহযোগে নিপুণ বিবরণ দিয়েছেন তাতে মাথা ঘুরে যায়। অবিলম্বে আমেরিকা থেকে প্রকাশকেরা বেজায় ব্যস্ত হয়ে উঠলেন, এ বই ছাপাতেই হবে! ইংরেজি অনুবাদে ফের প্রকাশ পেলো, নাম— ‘Chariots of the Gods?’ লেখা ও ছবি দুইয়ে মিলে কেল্লা ফতে! এমন নির্ভিক থিওরি, অথচ দানিকেন সাহেব কী বিনীত স্বরে ধৈর্য্য ধরে ছোট ছোট অধ্যায়ে এই বিরাট বিষয়টি উপস্থাপন করেছেন! নিজের হাইপোথিসিস-এর স্বপক্ষে প্রমাণ জোগাড় করতে পৃথিবীর এমুড়ো থেকে সেমুড়ো ছুটে বেরিয়েছেন রাতদিন। লক্ষ লক্ষ মাইল অতিক্রম করেছেন। দুর্গম অ্যাডভেঞ্চারে জড়িয়ে পড়েছেন নিজের জীবন বিপন্ন করে। চাক্ষুষ করেছেন অদ্ভুত সব সামগ্রী।

  • এই বইটি বাংলায় অনুবাদ করলেন অজিত দত্ত। নাম দিলেন— “দেবতা কি গ্রহান্তরের মানুষ?” অসামান্য স্বাদু গদ্যে ধরে রাখলেন এক বিতর্কিত কালজয়ী কীর্তি। এখনও অব্দি এটির প্রকাশক: লোকায়ত।

দানিকেন সাকুল্যে দুই বার ভারতে এসেছিলেন, আর অবশ্যই কলকাতায়! টাউন হলে একটা সংবর্ধনা দেওয়া হয়। উনি প্রোজেক্টর খাটিয়ে ভাষণ দিয়েছিলেন। অগণিত পাঠকের সঙ্গে মুখোমুখি আলোচনা! আর অজিতবাবুর সঙ্গে দীর্ঘ আড্ডা। তাঁর ভারতে আসবার একটি প্রধান কারণ ছিলো কাশ্মীরের মার্তন্ড মন্দির দর্শন। কারণ বাইবেল অনুযায়ী ইজেকিয়েলের দ্যাখা প্রকান্ড চক্রধর যানটি হিসেব মতো ওখানেই অবতরণ করেছিলো! তাই কৌতুহলবশত একবার পর্যটন। তবে তল্পিতল্পায় 'গাইগার-কাউন্টার’ যন্ত্রটিও ছিলো তেজষ্ক্রিয় বিকিরণ (radioactive radiation) মাপার জন্য। পৃথিবীতে আগত মহাজাগতিক যে-কোনও বস্তু ঐরকম বিকিরণ করে।

  1. দানিকেন এক তীক্ষ্ণ ব্যাঙ্গাত্মক পর্যবেক্ষক! তিনি খেয়াল করেছেন, মূলধারার প্রত্নতাত্ত্বিকরা অনেক গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নের লাগসই জবাব দিতে না-পারলেও বিশেষ উতলা হন না, অনেকে আবার ওপরচালাকি ক’রে যেমন খুশি গোঁজামিল ব্যাখ্যা দিয়ে দেন!

মাটি খুঁড়ে অস্বাভাবিক নতুন কোনও artifact পেলে বা প্রাচীন কোনও সভ্যতার নতুন নিদর্শন উৎখনন ক’রে তুললে— বিভ্রান্তিকর প্রশ্ন সাধারণত এড়িয়ে যান! বুঝতে পারেন সব তবে নিজেদের মগজ খেলাতে সংকোচ বোধ করেন, ভাবেন অতি কল্পনাপ্রবণ হিসেবে এই বুঝি পদচ্যুত হলেন! বা এই হয়তো তাঁকে নিয়ে আড়ালে হেয় করা হচ্ছে, বোধহয় তাঁর সম্মান বলতে আর কিছু বাকি নেই! এই একটা কারণে প্রায় সকলেই নীরব নির্লিপ্ত ও নির্বিকার ভাব করে থাকেন। বোঝেন না যে মানুষের ইতিহাসে অস্বাভাবিক অতিমানবিক সমস্ত ঘটনাবলি রয়েছে, এখন স্বাভাবিক যুক্তি দেখিয়ে জানা-বিজ্ঞান কাজে লাগিয়ে কি আর সেসবের সমাধান পাওয়া যাবে?!? তাই, হয় বলতে হবে (সে কথায় আবার চাকরি খোয়ানোর ভয়!) নয় বোবা সাজতে হবে (এটা সবদিক থেকেই নিরাপদ!)— তাঁরা দ্বিতীয় পন্থাই বেছে নিলেন। এতোদিন এমনই হয়ে এসেছে; এইবার বলার কাজটি স্বেচ্ছায় নিলেন দানিকেন। এবং কারও পরোয়া করলেন না! আমি তো আগেও বলেছি, এখনও বলছি— কিছু কিছু হুজুকপ্রবণ মানুষ, pop culture-মাতোয়ারা পাবলিক —বেশিরভাগই আমেরিকান— তাদের আজগুবি দাবি, অদ্ভুত থিয়োরির জন্য আজ এই বিষয়টা ঘোলাটে হয়ে গেছে।

  • এঁদের মধ্যে এমন ফিচেল মানুষ আছে যারা ক্যামেরার সামনে নিখুঁত খেলনা UFO ঝুলিয়ে কায়দা মেরে ভিডিও তুলে prank করে! এদেরকে অবজ্ঞা করা বাধ্যতামূলক।

কিন্তু, আমাদেরকে সত্যিটা জানতে হবে! সেটা একটু পরিশ্রমসাধ্য। এমনিতেই এই দেশে বাস ক’রে তৃণমূলের কেলেঙ্কারি বা গেরুয়াবাহিনীর নিত্যনতুন কান্ডকারখানা জানা ও চটুল চর্চার মধ্যেই আমাদের মেধার দৌড় সীমাবদ্ধ! আমাদের পাঠ্যপুস্তকে অন্তর্ভুক্ত ও পরিচিত ইতিহাসে কিছু অসংলগ্নতা আছে, কিছু শূন্যস্থান রয়ে গেছে, যার যুক্তিযুক্ত ব্যাখ্যা পাওয়া যায়নি। একটা জিগস্য পাজ্লের কিছু টুকরো এখনও নিপাত্তা। রহস্য আরও ঘনীভূত হয় যখন দ্যাখা যায় তত্ত্বতালাশ চালানোর উপযোগী মালমশলাও লুপ্ত কিংবা বাজেয়াপ্ত (সরকারি confidential দস্তাবেজ— CIA secret archive, Rothschild পরিবারের সম্পত্তি, Vatican city-র দুর্ভেদ্য আন্ডারগ্রাউন্ড গ্রন্থাগার)! তখন মনে হয়, কিছু একটা প্রকান্ড সত্যি আছে! যা আমাদেরকে জানতে দেওয়া হচ্ছে না। আমি যা বলছি, nothing but facts!

  1. আমেরিকার সর্বকালের সেরা জ্যোতির্বিজ্ঞানী ও জনপ্রিয় বিজ্ঞান প্রবক্তা কার্ল সেগান (Carl Sagan) অমর উক্তি রেখে গিয়েছেন—

"There are 400 billion stars in our Galaxy alone… It is inconceivable and arrogant to even consider that ours would be the only one hosting intelligent life, in all the universe.” এবং তাঁর লেখা অসাধারণ একটি বই— ‘Contact’! যাতে SETI নামের অভূতপূর্ব প্রোজেক্টের কথা উঠে এসেছে। (এই নামের ১৯৯৭ সালের অসামান্য সিনেমাটাও অবশ্য দ্রষ্টব্য!)

  • SETI = “Search for Extraterrestrial Intelligence” হলো বহির্বিশ্বে প্রাণের স্পন্দন খোঁজার এক প্রয়াস, শুরু হয়েছিল University of California, Berkeley-তে, ১৯৯৯ সালে, যার আরম্ভ আরও আগে!

এর আগেও এই ধরণের চেষ্টা চলেছে:

  • ১৯৬০ সালে কর্ণেল বিশ্ববিদ্যালয়ে Project Ozma-র সূচনা; ১৯৭১ সালে NASA ও Hewlett-Packard (HP) -এর মিলিত আয়োজন Project Cyclops; ১৯৭৭ সালে ওহিও স্টেট SETI প্রোগ্রাম খবরের শিরোনামে আসে “WOW Signal” পাওয়ার পর!

১৯৭৭ সালে কার্ল সেগানের উদ্যোগে Voyager spacecraft অচিন জগতের উদ্দেশ্যে মহাকাশে প্রেরণ করা হয়। দু'টি যান পাঠানো হয়— Voyager-1 এবং Voyager-2, এই দুটিতেই একটি সোনার চাকতি দেওয়া হয়েছিল, যাকে "ভয়েজার গোল্ডেন রেকর্ড" বলা হয়। এর উপরে সূক্ষ্ম হরফে খোদাই করা ছিলো— পরমাণুর গঠন, নারী-পুরুষের দেহগঠনের প্রতিরূপ, সৌরজগতের চিত্র, DNA-প্রতীক, খাদ্য, পোশাক, স্থাপত্য, শিল্পকলার নমুনা, নিসর্গদৃশ্য, অজস্র সাদাকালো ও রঙিন ছবি, ইত্যাদি; এতে দেওয়া ছিলো— বিভিন্ন শব্দ ও আওয়াজ (প্রকৃতিজাত শব্দ: বাতাসের শোঁশোঁ, সমুদ্রের গর্জন, বজ্রপাতের ধ্বনি; পাখির কুজন, মানুষের কোলাহল ও হাসি,...), ৫৫টি প্রাচীন ও আধুনিক ভাষায় সম্ভাষণ, পৃথিবীর বিভিন্ন সংস্কৃতি থেকে তুলে আনা নমুনা, আলাদা আলাদা যুগের ও দেশের জনপ্রিয় গান। (মোট ৩১টি গান দেওয়া হয়েছিল, তার মধ্যে আমাদের ভারত থেকে কেসরবাঈ-এর গাওয়া "ভৈরবী" নামের ধ্রুপদী সঙ্গীতটি!) কেনো? এটা এই গ্রহের তরফ থেকে উপহার, অজানা সভ্যজগতের জন্য, যাতে এটা খুঁজে পেয়ে তারা আমাদের সম্পর্কে জানতে পারে। আজ #স্টিফেন হকিং নিজেই বলেন যে পৃথিবীর বাইরেও প্রাণের সম্ভাবনা আছে! আজ উন্নত প্রযুক্তির দৌলতে ব্রহ্মান্ডের অনেক বেশি আমরা জানি। আমরা অনেক দূর অগ্রসর হয়ে গিয়েছি। আমি নিজে বিজ্ঞানের ছাত্র এবং আইনস্টাইন, টেসলা, সত্যেন্দ্রনাথ বসু, ফাইনম্যানের ভক্ত হয়েও এই ধরণের “বিজ্ঞান-বহির্ভূত হাবিজাবি” হাইপোথিসিসে বিশ্বাস করি কারণ পুরোটা জানলে আপনারাও বিশ্বাস করবেন! ছোটবেলা থেকে গেলানো টনিকে সন্তুষ্ট ও সুখী না-থেকে অনুসন্ধানে উন্মুখ হবেন। কিছু মানুষের নাম করবো—

  1. J Allen Hynek —এই নামেই প্রসিদ্ধ ছিলেন এই অধ্যাপক, পেশায় জ্যোতির্বিজ্ঞানী (astronomer) এবং আমেরিকা সরকার দ্বারা নিযুক্ত U.S. Air Force-এর UFO Studies বিভাগের উপদেষ্টা ছিলেন। তাঁর দীর্ঘদিনের পর্যবেক্ষণ-নির্ভর বিখ্যাত বই— ‘The Hynek UFO Report’ (প্রকাশিত 1977) আজও সরকারি মহলে সমান চর্চিত!
  2. Jacques Vallée —এই ফরাসি কম্পিউটার বিজ্ঞানী প্রথম NASA-র তরফ থেকে মঙ্গল গ্রহের ‘computerized mapping’ করেন। অন্যদিকে, internet যখন আবিষ্কার হয়নি, তার পূর্ব সংস্করণ বা আদিরূপ ARPANET সমৃদ্ধিকরণ গবেষণায় তিনি ছিলেন অন্যতম প্রধান কর্মী! তাঁর আর একটি বিশ্বখ্যাত পরিচয়— এক দুর্দান্ত ufologist তিনি!
  • প্রবাদপ্রতিম পরিচালক স্টিভেন স্পীলবার্গের ১৯৭৭ সালের কল্পবিজ্ঞান ক্লাসিক মাস্টারপীস— ‘Close Encounter of the Third Kind’ সিনেমার “বিজ্ঞানী লাকম্ব” চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন আর এক প্রাতঃস্মরণীয় নির্মাতা— ফ্রাঁসোয়া ত্রুফো! সেই চরিত্রটি আসলে ঐ জাক ভালে মহাশয়কে দেখে তৈরি করা হয়েছিলো!
  1. Dr Steven Greer —যিনি প্রতিষ্ঠা করেছেন CSEI (Center for the Study of Extraterrestrial Intelligence) এবং শুরু করেছেন এক জগতজোড়া আন্দোলন: 'Disclosure Project'! তিনি অকিঞ্চিৎকর কোনও মানুষদের নয় —একেবারে জাঁদরেল সব আমলা ও সরকারি আধিকারিকদের স্বীকারোক্তি রেকর্ড করেছেন! তাঁর বিখ্যাত ডকুমেন্টারি— SIRIUS (2013) দেখুন, অনেক চিন্তাভাবনা পাল্টে যাবে!
  2. Timothy Good —এই ব্যক্তি বিভিন্ন ইউনিভার্সিটিতে মূল্যবান লেকচার দেন, এবং একজন দুর্ধর্ষ লেখক! তাঁর বইগুলি মূলধারার বিশেষজ্ঞ ও NASA-র বিজ্ঞানীদেরও প্রশংসার বিষয়!
  • দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় থেকে আকাশে অদ্ভুত ব্যাপার লক্ষ্য করা যায়, ১৯৪৫-এ একজন নিরীহ বিমানচালক প্রথম আশ্চর্য চাকতি দ্যাখার রিপোর্ট দিয়েছিলেন।

বোমারু বিমানের পাইলটরাও নানারকম অজানা বস্তুকে তাদের ফাইটার প্লেনের সঙ্গেই ছুটে যেতে নজর করেন! কোনওটার রঙ মিশকালো, আবার কোনওটা রুপালি যেন অ্যালুমিনিয়ামের!

  • তখন এগুলোকে “Foo Fighter” নামে ডাকা হতো। পরে আমেরিকা, জার্মানি, ফ্রান্স, রাশিয়া ইত্যাদি দেশের সরকার অত্যন্ত উদ্বিগ্ন হয়ে নড়েচড়ে বসলে নাম দেওয়া হয়— “Unidentified Flying Object (UFO)” বা বাংলায়— “অজ্ঞাত উড়ন্ত বস্তু (অউব)”!
  • কিন্তু আশ্চর্যের ব্যাপার— বাইবেলের উপাখ্যানেও এই ধরণের বস্তু বর্ণিত হয়েছে, ছবি আঁকা হয়েছে! এমনকি হাজার হাজার বছরের প্রাচীন গুহাচিত্রেও এই আকাশে-ভেসে-থাকা আজব বস্তুগুলি দৃশ্যমান!
  1. দানিকেন মহাশয়ের গবেষণা এইখান থেকেই শুরু!

তিনি লিখেছেন— বাইবেল পড়তে বসে হঠাৎ চোখ আটকে গেল একটা বাক্যে: এসো আমরা নিজেদের অবয়বে মানুষ তৈরি করি! এখানে “আমরা” কারা? হ্যাঁ, বাইবেল মতে তাঁরা অবশ্যই— “দেবতা”! কিন্তু সে আবার কেমন দেবতা? যারা নাকি মানুষ আবিষ্কার করলেন?!? আর, তবে কি আমরা ওঁদের মতোই দেখতে? ওঁরা গেলেন কোথায়? দানিকেন পৃথিবীর সব প্রান্তে বহু পথ চষে বেড়িয়ে অগাধ তথ্য সংগ্রহ করে দেখেছেন, যদিও সমস্ত প্রাচীন পুরাকীর্তি এখনও মাটি খুঁড়ে বের করা হয়নি, আরও যে কতো কী বেরবে তার ইয়ত্তা নেই, যা হাতে এসেছে, আর সঙ্গে অন্যান্য উপজাতি গোষ্ঠীর পুরাণ —সব জায়গায় লেখা আছে, তাঁরা নাকি ফিরবেন, কথা দিয়ে গিয়েছেন!

  1. পাড়ায় হয়তো আপনি পাত্তা পান না, কিন্তু ভাবুন তো, আজ ব্রাজিলের গহীন অরণ্যের আদিম 'টুপিনাম্বা' উপজাতি আপনার হাতে যদি পাখিমারা airgun দ্যাখে বা আপনার সাধের iPhone —তারা আপনাকে দেবতা মনে করবে না?!?
  2. চিন্তা করুন, আমাদের ইলোরার কৈলাশ মন্দির কি আজ আর তৈরি করা সম্ভব? পিরামিড তৈরির কৌশলটা ঠিক কী ছিলো? গিজার খুফুরাজার পিরামিড সমেত মোট তিনটি পিরামিড মহাকাশের Orion constellation-এর দিকে তাগ করা কেনো? ইংল্যান্ডের 'স্টোন হেঞ্জ’ কি প্রাগৈতিহাসিক অবজার্ভেটরি? শষ্যক্ষেতে ঐ অলৌকিক সুন্দর জটিল জ্যামিতিক নকশা— 'ক্রপ সার্কেল’ রাতারাতি তৈরি হয় কীভাবে? চিলির মাচুপিচু-র ধ্বংসস্তূপ যে পাঁচিল দিয়ে ঘেরা তা “ভূমিকম্প-রোধক” হলো কীভাবে? পেরুর Nazca lines-এর তাৎপর্য কী? সাকসাইহুআমানের মন্দিরগুলোতে কি লেজার দিয়ে কাটা পাথর ঐর’ম অসম্ভব সূক্ষ্ম মাপে বসানো? মেক্সিকোর তেওতিহুয়াকানের সুবিশাল সূর্যমন্দির প্রাঙ্গণের সঙ্গে আধুনিক integrated circuit-এর এতো মিল কেনো? Göbekli Tepe-কে কেনো মানবসভ্যতার উৎসস্থল বলা হচ্ছে? নান মাদোল-এর পোড়ো মন্দিরের অতিকায় পাথরগুলো আদিম শ্রমিকরা ওজন করলো কীভাবে? রাশিয়ার সাইবেরিয়া অঞ্চলে সেই ভয়ঙ্কর 'Tunguska বিস্ফোরণ' ঠিক কী কারণে ঘটেছিলো যেখানে এখনও ঘাস গজায় না? মেক্সিকোর Roswell শহরে এক খামারবাড়ির চত্বরে কী ভেঙে পড়েছিল— এক প্রত্যক্ষদর্শী কৃষকের দ্যাখা দেহাবশেষ সরকারের লোকজনেরা তড়িঘড়ি এসে কোথায় লোপাট করে দিলো? ঈস্টার দ্বীপের সমুদ্রের দিকে চেয়ে থাকা হাজার টনের মূক মূর্তিগুলো স্থাপন করা হলো কী করে যেখানে ঐ জাতের পাথর আশপাশে কোত্থাও নেই?

আর এই বিশেষ প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শনগুলো বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে থাকলেও আসলে গোটা পৃথিবী ব্যাপী একটা রেখায় অবস্থিত!!!