ব্যবহারকারী:Shah Abu Taleb (M.Z.A)/হযরত শাহ্‌ নূরী (রাঃ)

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে

হযরত শাহ্ নূরী (রাঃ) বাংলার বিখ্যাত সূফী সাধক এবং ধর্ম প্রচারকদের মধ্যে অন্যতম ,যে সকল সূফীগনের বেলায়েতের নুরানী আলোতে ভারতীয় উপমহাদেশে ইসলামের সুমহান বাণী প্রচারিত হয়েছিল তিনি তাদের মধ্যে একজন। হযরতের অনুপম চরিত্রে মুগ্ধ হয়ে শত শত মানুষ ইসলাম ধর্মে দীক্ষা গ্রহন করেন।

জন্ম[সম্পাদনা]

ভারতীয় উপমহাদেশে মারফতের মধ্যমনি ,আরেফ কূলের শিরোমনি ,তরিকতের প্রখ্যাত মুর্শিদ সুলতানুল আরেফিন ,বুরহানুল আশেকিন হযরত মাওলানা শাহ্‌ নূরী (রাঃ) প্রায় ১০৭৮ হিজরিতে বাংলার জমিনে সর্ব প্রথম নক্‌শেবন্দিয়া মুজাদ্দেদীয়া তরিকার প্রবর্তক এবং হযরত মুজাদ্দেদ আলফেসানি (রাঃ) এর সুযোগ্য খলিফা হযরত শায়েখ গোলাম মুহাম্মাদ মুজাদ্দিদ (রাঃ) এর সাহেবজাদা হযরত শায়েখ আব্দুল্লাহ আল মুজাদ্দিদ(রাঃ) এর ঘরকে আলোকিত করে ধরাধমে শুভাগমন করেন।[১][২]

A great Sufi saint in Indian subcontinent
হযরত শাহ্ নূরী(কুঃসিঃআঃ)
ব্যক্তিগত তথ্য
জন্ম১০৭৮ হিজরি
মৃত্যু১১৮৮ (বয়স ১০৯–১১০) হিজরি
ধর্মইসলাম
আখ্যাসুফী
মুসলিম নেতা
ভিত্তিকঢাকা
পূর্বসূরীপিতা – হযরত আব্দুল্লাহ মুজাদ্দেদি (রাঃ) *মুর্শিদ – হযরত শাহ্‌ খালিকুর রাহমান বাঘু দেওয়ান (রাঃ)
উত্তরসূরী৭ম বংশধর , হযরত শাহ্‌ আবু তালেব সোহরাওয়ার্দী (মাঃজিঃআঃ) ৮ম বংশধর, হযরত শাহ্‌ আবু তাহমিদ (মাঃজিঃআঃ)
পদSufi saint and mystic

পরিচিতি[সম্পাদনা]

হযরত শাহ্ নূরী (রাঃ) মগবাজারের খানকার প্রতিষ্ঠাতা। তাঁর পৈতৃক নিবাস ঢাকার বাবুপুরা/ নীলক্ষেত এলাকায় অবস্থিত । তাঁর দাদাজান হযরত মাওলানা শায়েখ গোলাম মোহাম্মদ মুজাদ্দেদি (কুঃসিঃআঃ) এবং তাঁর আব্বাজান হযরত মাওলানা শায়েখ আব্দুল্লাহ মুজাদ্দেদি (রাঃ) বাবুপুরার আস্তানাতে বসবাস করতেন। তাঁরা উভয়েই উঁচু মাপের সাধক ছিলেন। তাঁরা উভয়েই মুরিদগনকে প্রচলিত ধর্মীয় শিক্ষা দিতেন। যোগ্য মুরিদদের আধ্যাতিক সাধনার পদ্ধতি শিখাতেন। হযরত শাহ্ নূরী(রাঃ) এর দাদা এবং বাবা নকশেবন্দিয়া মুজাদ্দেদ্দিয়া তরিকার প্রচারক ছিলেন। তাঁর দাদা হু্যুর হযরত মাওলানা গোলাম মোহম্মাদ মোজাদ্দেদি (কুঃসিঃআঃ) খুব বড় জ্ঞানী ও অগাধ গুন সম্পন্ন ব্যক্তি ছিলেন। তিনি হযরত মুজাদ্দেদ আলফেসানী ইমামে রাব্বানী শায়েখ আহমেদ ফারুকী সারহেন্দী (কুঃসিঃআঃ) এর মুরিদ ও খলিফা ছিলেন। তিনি আধ্যাতিক সম্পর্ক সূত্রের অধিকারী ছিলেন। তিনি সর্বদা ইছমে জাত বা আল্লাহর খাস নামের জিকির করতেন। শেষ বয়সে তিনি “মাজ্জুবে” পরিনত হন। তিনি দিন রাত বন জংগলে ধ্যান ও জিকিরে নিমগ্ন থাকতেন।[১][৩]

প্রাথমিক শিক্ষা[সম্পাদনা]

হযরত শাহ্‌ নূরী (রাঃ) ছোটবেলায় পাখরতলী কাঠরায় শায়েস্তা খাঁর মাদ্রাসায় পড়তেন। অতঃপর মুর্শিদাবাদের মতিঝিল মাদ্রাসার শিক্ষা গ্রহনের জন্য সেখানে ভর্তি হন। সেখানে হযরত শাহ্‌ বাঘু দেওয়ান নামে প্রসিদ্ধ খালিকুর রাহমান আল কাদেরী আস-সাত্তারী (কুঃসিঃআঃ)এর খ্যাতি শুনে তাঁর হাতে বাইয়্যাত হতে নিজ ইচ্ছা পোষন করেন। হযরত বাঘু দেওয়ান (কুঃসিঃআঃ) উনাকে শিক্ষা শেষ করার পর মুরিদ হওয়ার পরামর্ষ দেন । তদানুসারে শিক্ষা শেষে হযরত বাঘু দেওয়ান (কুঃসিঃআঃ ) এর নিকট বাইয়্যাত হন । বহুদিন সেখানে অবস্থান করে আধ্যাতিকতার সনদ লাভ করেন এবং ঢাকায় নিজ বাসস্থানে ফিরে আসেন।[১][৩]

আধ্যাতিক শিক্ষাগুরু[সম্পাদনা]

  • ১)হযরত শায়েখ গোলাম মোহাম্মাদ মুজাদ্দেদী (রাঃ)
  • ২)হযরত শায়েখ আব্দুল্লাহ আল মুজাদ্দেদী(রাঃ)
  • ৩)হযরত শাহ্‌ খালিকুর রহমান উরফে বাঘু দেওয়ান কাদেরী সাত্তারী (রা:)[৩]

হযরত শাহ্‌ নূরী (রাঃ)এর লিখিত গ্রন্থ[সম্পাদনা]

ধারনা করা হয় , হযরত কেবলা বেশ কয়েকটি ইসলামিক গ্রন্থ রচনা করেছেন তবে কালের বিবর্তনে এ সকল গ্রন্থ আজ সংরক্ষিত নেই। তবে ফারসি ভাষায় রচিত হযরত কেবলার কেবরিতে আহমর নামক গ্রন্থটি আজও ভক্তকূলের অন্তরের খোরাক হিসেবে চিরস্মরনীয় হয়ে আছে ।

হযরত কেবলার ভাষা জ্ঞান[সম্পাদনা]

হযরত শাহ্‌ নূরী (রাঃ) আরবি এবং ফারসি ভাষায় বিশেষজ্ঞ ছিলেন। ফারসিতে অত্যন্ত মাধুর্যপূর্ন ভাষাশৈলি ব্যবহার করে হযরত কেবলার রচিত কেবরিতে আহমর নামক গ্রন্থটি এর উজ্জল দৃষ্টান্ত।[১]

ঢাকার মগবাজারে আগমন[সম্পাদনা]

হযরত শাহ্‌ নূরী (রাঃ) তাঁর বাবার নির্দেশে বাবুপুরা ত্যাগ করে মগবাজারের জুমআ (শুক্‌কুর) মসজিদে আস্তানা স্থাপন করেন-বর্তমানে যেটি রমনা থানা জামে মসজিদ। সেখানে তিনি কিছু দিন অবস্থান করেন তারপর মগবাজারের নয়াটোলায় ,বর্তমানে যেটি শাহ্‌ সাহেব বাড়ি নামে পরিচিত সেখানে তিনি খানকা এবং মসজিদ স্থাপন করেন। তখন মগবাজার এলাকা একটি বিশাল জংগল ছিল। তাঁর আগমনের ফলে সেই অনাবাদি এলাকাটি জনমুখর ও লোকের যিয়ারতগাহে পরিণত হয় এবং এ এলাকায় ইসলামের আলো জ্বলে। সেখানে তিনি আধ্যাতিক সাধনায় লিপ্ত হন এবং কাদেরীয়া তরিকার প্রচার করতে থাকেন। তাঁর লিখিত বই পড়ে জানা যায় তিনি যাবতীয় সিলসিলা সমূহের সমবায় স্বরূপ ছিলেন । হযরত শাহ্‌ নূরী (রাঃ) খুব উঁচু মাপের জ্ঞানী ও সাধক ছিলেন এবং তাঁর যুগের শীর্ষ স্থানীয় আউলিয়াদের মধ্যে অন্যতম অলি ছিলেন।[১]
Mazar Sharif of Hazrat Shah Noori (R.A), Mogbazar-Dhaka


হযরতের চেহারা মোবারক[সম্পাদনা]

তাঁর বিস্মৃত ললাট ঘন দীর্ঘ দাড়ি ,তেজদীপ্ত সৌম্যভাব ছিল।[১]

হযরত শাহ্‌ নূরী (রাঃ) এবং হযরত কেবলার সাহেবজাদাগনের কারামত[সম্পাদনা]

হযরত শাহ্‌ নূরী (রাঃ), তাঁর সাহেবজাদাগন ও তাঁর বংশের গদীনশীনগন সম্পর্কে বহু অলৌকিক কাহিনী তথা তাদের কারামত লোকমুখে প্রচলিত আছে। হযরত শাহ্‌ নূরী (রাঃ) এর সাহেবজাদাগনের মধ্যে প্রথম দুইজন সাহেবজাদা জমজ ছিলেন। তাঁরা বাল্যকাল থেকেই অলৌকিক শক্তির অধিকারী হন। একবার জমজ সাহেবজাদাগন বাহিরে খেলা করছিলেন এমন সময় হযরত শাহ্‌ নূরী (রাঃ) এর জন্য কিছু পাকা কলা নিয়ে তাঁর একজন ভক্ত আসছিলেন । পথি মধ্যে জমজ সাহেবজাদাগন ভক্তকে জিজ্ঞাসা করলেন যে কাপড় ঢাকা দিয়ে কি নিয়ে যাচ্ছো ? ভক্ত জবাব দিলেন সামান্য কিছু কলা হুজুরের জন্য নিয়ে যাচ্ছি । কথা শুনে সাহেবজাদাগন বললেন আমাদের দিয়ে যাও। তখন ভক্ত বললেন কলাগুলো কাঁচা । তখন সাহেবজাদাগন বললেন আচ্ছা এগুলো তবে কাঁচাই হবে। ভক্ত যখন কলা গুলো নিয়ে হুজুরের কাছে নামিয়ে কাপড়ের ঢাকনা খুললেন অবাক বিস্ময়ে দেখলেন সত্য-সত্যই কলাগুলো কাঁচা হয়ে গেছে। আরেক দিনের ঘটনা,বাগানের আনার গাছে একটি আনার বেশ পুষ্ট হয়েছে কিছুদিনের মধ্যেই সেটি পেকে যাবে।হযরত শাহ্‌ নূরী (রাঃ) সেটিকে দেখে রাখার জন্য তাঁর একজন মুরিদকে বলে রেখেছেন। মুর্শিদের আদেশ অনুযায়ী মুরিদ সেটিকে খুব যত্ন সহকারে রক্ষণাবেক্ষন করে। কিন্তু মুরিদের অগোচরে সাহেবজাদাগন একদিন আনারটিকে ছিঁড়ে খেয়ে ফেললেন মুরিদ যখন দেখলেন গাছে আনার নেই, তখন হুজুরের নিকট সে তা জানাতে জানাতে কান্নাকাটি শুরু করে দিলেন যে তাঁর অবহেলায় সে আদেশ সঠিক ভাবে পালন করতে ব্যর্থ হয়েছে ,মুরীদের এই অবস্থা দেখে সাহেবজাদাগন আনারের খোসাগুলি গাছের দিকে ছুঁড়ে মারতেই আনারটি আগের মতই গাছে ঝুলতে লাগলো ।কিশোর সাহেবজাদাগনের এসব কারামত শাহ্‌ সাহেবের কাছে প্রকাশ করলে তিনি মহা চিন্তিত হয়ে পড়েন। আরেক দিন সাহেবজাদাগন বাগানের মালির কথা অমান্য করে কয়েকটি শসা খেয়ে ফেলেন । মালি শসা খাওয়ার কথা তাদের বাবার হযরত শাহ্‌ নুরী (রাঃ) কাছে জানাবেন বলে ভয় দেখালে তাঁরা শসার খোসাগুলি গাছের দিকে ছুঁড়ে মারে। খোদার হুকুমে চোখের পলকে দেখা গেল শসাগুলো গাছে যথা স্থানে পূর্বের ন্যায় ঝুলছে , এ অবস্থা দেখে মালি অবাক হয়ে গেলেন এবং ঘটনা খুলে হযরত শাহ্‌ নূরী(রাঃ) কে জানালেন। এ সমস্ত কারামত প্রকাশ দেখে হযরত শাহ্‌ নূরী (রাঃ) চিন্তিত হয়ে পড়লেন এবং ভাবলেন যারা বাল্য বয়সে এত অলৌকিক ক্ষমতার অধিকারী তাঁরা বড় হয়ে না জানি কত শক্তিধর হয়ে উঠবে । আর ঘন ঘন কারামত দেখানোর জন্য তিনি তাঁদের চিরতরে স্তব্ধ করে দেয়ার মনস্ত করলেন। একদিন হুজুর শাহ্‌ নূরী (রাঃ) দুই সাহেবজাদাকে গোসল করে আসতে বললেন। বাবার কথামত তাঁরা যথারীতি গোসল করে এলেন। শাহ্‌ সাহেব সাহেবজাদা দু’জনকে নিজ হাতে উত্তম রূপে আহার করালেন। তারপর তাঁদেরকে মসজিদে শুয়ে থাকতে আদেশ করলেন। বাবার আদেশ মত সাহেবজাদাগন হযরত শাহ্‌ নূরী জামে মসজিদে শোয়ার পর হযরত কেবলা সাহেবজাদাগনের জানাজার নামাজ আদায় করেন এবং সাথে সাথেই সাহেবজাদাগন চির নিদ্রিত হয়ে পড়েন। এ দু’ভাইয়ের মাজার হযরত শাহ্‌ নূরী (রাঃ) এর মাজার শরীফে তাঁর পায়ের দিকে রয়েছে। তাঁরা তাঁদের কারামতের কারনে কাঁচা কলা ,পাকা কলা নামে পরিচিত।[১][৩]

হযরত কেবলার অনুসরনকৃত তরীকা[সম্পাদনা]

    *১)তরীকায়ে কাদেরীয়া
    *২)তরীকায়ে সাত্তারীয়া[২] 

হযরত কেবলার এজাজতপ্রাপ্ত সিলসিলা[সম্পাদনা]

    *১)তরীকায়ে কাদেরীয়া
    *২)তরীকায়ে চিশতীয়া
    *৩)তরীকায়ে সাত্তারীয়া
    *৪)তরীকায়ে নক্শেবন্দিয়া মুজাদ্দেদীয়া
    *৫)তরীকায়ে সোহরাওয়ার্দীয়া
    *৬)তরীকায়ে ফেরদৌসিয়া
    *৭)তরীকায়ে আত-তাবাকাতীয়া

হযরত কেবলার কাদেরীয়া তরীকার আধ্যাতিক পূর্বসূরী ও উত্তরসূরীগণ[সম্পাদনা]

*হযরত মুহাম্মাদ মুস্তফা সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
*হযরত মাওলা আলী শেরে খোদা(আঃ)
*হযরত ইমাম হাসান(আঃ)
*হযরত ইমাম হোসাইন(আঃ)
*হযরত ইমাম জাইনুল আবেদীন(আঃ)
*হযরত ইমাম মুহাম্মদ বাকের(আঃ)
*হযরত ইমাম জাফর সাদিক(আঃ)
*হযরত ইমাম মূসা মূসা কাজেম(আঃ)
*হযরত ইমাম আলী রাজা(আঃ)
*হযরত শায়েখ মারুফ খারকী(রাঃ)
*হযরত শায়েখ শারী সাকাতী (রাঃ)
*হযরত শায়েখ জুনায়েদ বাগদাদী(রাঃ)
*হযরত শায়েখ আবু বকর শিবলী(রাঃ)
*হযরত শায়েখ আব্দুল আজীজ বিন হারেস বিন আসাদ ইয়ামেনী(রাঃ)
*হযরত শায়েখ আবু আল ফাজার আব্দুল ওয়াহিদ ইয়ামানী(রাঃ)
*হযরত শায়েখ মুহাম্মদ ইউসুফ আবু আল ফারাহ তারতূশী(রাঃ)
*হযরত শায়েখ আবু আল হাসান ফারসী (রাঃ)
*হযরত শায়েখ আবু সাঈদ আবুল খায়ের মাখযুমী(রাঃ)
*হযরত শায়েখুস সাকালাইন গাউসুল আজম হযরত সাইয়্যিদ মহিউদ্দীন আব্দুল কাদের জিলানী(রাঃ)
*হযরত শায়েখ আব্দুর রাজ্জাক(রাঃ)
*হযরত শায়েখ আলী হোসাইন(রাঃ)
*হযরত শায়েখ মুহাম্মাদ কাদেরী(রাঃ)
*হযরত শায়েখ আব্দুল গাফফার সিদ্দিকী (রাঃ)
*হযরত শায়েখ মাহমুদ কাদেরী(রা:)
*হযরত শায়েখ আব্দুর রউফ কাদিরী(রাঃ)
*হযরত শায়েখ আব্দুল ওহাব কাদেরী(রাঃ)
*হযরত শায়েখ কাজেন আল আলা কাদেরী(রাঃ)
*হযরত শায়েখ আবুল ফাত্তাহ হিদায়াতুল্লাহ সারমাস্ত(রাঃ)
*হযরত শায়েখ জুহুর হাজী(রাঃ)
*হযরত শায়েখ সুলতান হাজী হামিদ মুহাম্মদ গাউস গুয়ালিয়োরী(রাঃ)
*হযরত শায়েখ শাহ ওয়াজী উদ্দীন বিন নাস্রুল্লাহ আলাভী গুজরাটি(রাঃ)
*হাজীউল হারামাইন হযরত মাওলানা শাহ্‌ সাইয়্যিদ ইয়াসিন সিওয়ানী(রা:)
*হযরত শাহ্ বাজ মুহাম্মাদ কাদেরী আস সাত্তারী (রাঃ)
*হযরত মাওলানা মীর সাইয়্যিদ রাজা (রাঃ)
*হযরত মীর সাইয়্যিদ বদিউদ্দীন (রাঃ)
*হযরত শায়েখ শাহ্ খালেকুর রহমান উরফে বাঘু দেওয়ান(রাঃ)
*সুলতানুল আরেফীন বুরহানুল আশেকীন হযরত মাওলানা শাহ্ নূরী(রাঃ)
*হযরত শাহ্ মুহাম্মাদী(রাঃ)
*হযরত শাহ্ আব্দুল হামিদ(রাঃ)
*হযরত শাহ্ শামস উদ্দীন(রাঃ)
*হযরত শাহ্ গোলাম নূরী(রাঃ)
*হযরত শাহ আবু আবদুল্লাহ (রাঃ)
*হযরত শাহ্ আবু তালিব (মাঃজিঃআঃ)[ সাজ্জাদানশীন পীর সাহেব,দরবারে শাহ্ নূরী(রহঃ)][২]


হযরত কেবলার সাত্তারীয়া তরিকার আধ্যাতিক পূর্বসূরী ও উত্তরসূরীগণ[সম্পাদনা]

*হযরত মুহাম্মাদ মুস্তফা সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
*হযরত মাওলা আলী শেরে খোদা(আঃ)
*হযরত হাসান বসরী(রাঃ)
*হযরত খাজা হাবীব আজমী(রাঃ)
*হযরত বায়েজিদ বুস্তামী(রাঃ)
*হযরত শায়েখ মুয়াজজাম খাজা মুহাম্মাদ মাগরিবী(রাঃ)
*হযরত খাজা  আরবী মাজীদ ইশকী (রাঃ)
*হযরত শায়েখ আবুল মুযাফ্ফর তারতূশী(রাঃ)
*হযরত শায়েখ আবুল হাসান খারকানী(রাঃ)
*হযরত মুয়াজজাম খোদাকুলী আল আত্তারী (রাঃ)
*হযরত মুহাম্মাদ আশিক বিন শায়েখ খোদাকুলী(রাঃ)
*হযরত মুহাম্মদ আরিফ(রাঃ)
*কুতুবুল হাকীকাহ হযরত শায়েখ আব্দুল্লাহ সাত্তারী(রাঃ)
*হযরত শায়েখ কাজেন আল আলা কাদেরী সাত্তারী(রাঃ) 
*হযরত শায়েখ আবুল ফাত্তাহ হিদায়াতুল্লাহ সারমাস্ত(রাঃ)
*হযরত শায়েখ জুহুর হাজী(রাঃ)
*হযরত শায়েখ সুলতান হাজী হামিদ মুহাম্মদ গাউস গুয়ালিয়োরী(রাঃ)
*হযরত শায়েখ শাহ্‌ ওয়াজী উদ্দীন বিন নাসরুল্লাহ আল আলাভী গুজরাটি (রাঃ) 
*হাজীউল হারামাঈন হযরত মাওলানা শাহ্‌ সাইয়্যি ইয়াসিন সিওরানী(রাঃ)
*হযরত শাহ্‌বাজ মুহাম্মাদ কাদেরী সাত্তারী(রাঃ)
*হযরত মাওলানা মীর সাইয়্যিদ রাজা(রাঃ)
*হযরত মীর  সাইয়্যিদ বদীউদ্দীন(রাঃ) 
*হযরত শায়েখ শাহ্ খালেকুর রহমান উরফে বাঘু দেওয়ান(রাঃ) 
*সুলতানুল আরেফীন বুরহানুল আশেকীন হযরত মাওলানা শাহ্‌ নূরী(রাঃ)
*হযরত শাহ্ মুহাম্মাদী (রাঃ)
*হযরত শাহ্ আব্দুল হামিদ(রাঃ)
*হযরত শাহ্ শামস উদ্দীন(রাঃ)
*হযরত শাহ্ গোলাম নূরী(রাঃ)
*হযরত শাহ আবু আবদুল্লাহ (রাঃ)
*হযরত শাহ্ আবু তালিব (মাঃজিঃআঃ) [ সাজ্জাদানশীন পীর সাহেব,দরবারে শাহ্ নূরী(রহঃ)][২]

হযরত কেবলার চিশতীয়া তরীকার পূর্বসূরী ও উত্তরসূরীগণ-[সম্পাদনা]

  *হযরত মুহাম্মাদ মুস্তফা সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
  *হযরত মাওলা আলী শেরে খোদা (আঃ)
  *হযরত হাসান বসরী(রাঃ)
  *হযরত আব্দুল ওয়াহেদ বিন যায়দ (রাঃ)
  *হযরত শায়েখ ফুজাইল বিন আয়াজ(রাঃ)
  *হযরত শায়েখ ইব্রাহীম বিন আধাম(রাঃ)
  *হযরত খাজা শাদীদ উদ্দীন(রাঃ)
  *হযরত শায়েখ আমীন উদ্দীন বাসরী (রাঃ)
  *হযরত শায়েখ মুমশাদ আলী দাইনূরী(রাঃ)
  *হযরত শায়েখ আবু ইসহাক চিশতী (রাঃ)
  *হযরত শায়েখ নাসিরুদ্দীন আবু ইউসুফ চিশতী(রাঃ)
  *হযরত শায়েখ কুতুব উদ্দীন মাওদুদ চিশতী (রাঃ)
  *হযরত শায়েখ খাজা হাজী শরীফ উদ্দীন চিশতী(রাঃ)
  *হযরত শায়েখ খাজা উসমান হারুনী(রাঃ)
  *হযরত খাজা মঈন উদ্দীন চিশতী আজমেরী সাঞ্জেরী(রাঃ)
  *হযরত খাজা কুতুব উদ্দীন বাখতীয়ার কাকী(রাঃ)
  *হযরত খাজা ফারীদ গাঞ্জে শাকার(রাঃ)
  *হযরত খাজা নিজাম উদ্দীন আউলিয়া(রাঃ)
  *হযরত খাজা সিরাজ উদ্দীন উসমান আওদহী (রাঃ)
  *হযরত খাজা আলাউল হক লাহোরী (রাঃ)
  *হযরত খাজা নূর কুতুবে আলম(রাঃ)
  *হযরত খাজা হুসামুদ্দীন মানিকপুরী (রাঃ)
  *হযরত খাজা মইনুল ইসলাম মানিকপুরী (রাঃ)
  *হযরত খাজা মুহাম্মদ আব্বাস (রাঃ)
  *হযরত শায়েখ জুহুর হাজী(রাঃ)
  *হযরত শায়েখ সুলতান হাজী হামিদ মুহাম্মদ গাউস গুয়ালিয়োরী(রাঃ)
  *হযরত শায়েখ শাহ্‌  ওয়াজী  উদ্দীন বিন নাসরুল্লাহ আল আলাভী গুজরাটি(রাঃ)
  *হাজীউল হারামাঈন হযরত মাওলানা শাহ্‌ সাইয়্যিদ ইয়াসিন সিওরানী(রাঃ)
  *হযরত শাহ্‌ বাজ মুহাম্মাদ কাদেরী আস সাত্তারী(রাঃ)
  *হযরত মাওলানা মীর সাইয়্যিদ রাজা(রাঃ)
  *হযরত মীর  সাইয়্যিদ বদীউদ্দীন (রাঃ) 
  *হযরত শায়েখ শাহ্ খালেকুর রহমান উরফে বাঘু দেওয়ান (রাঃ) 
  *সুলতানুল আরেফীন বুরহানুল আশেকীন হযরত মাওলানা শাহ্‌ নূরী(রাঃ)
  *হযরত শাহ্ মুহাম্মাদী (রাঃ)
  *হযরত শাহ্ আব্দুল হামিদ(রাঃ)
  *হযরত শাহ্ শামস উদ্দীন(রাঃ)
  *হযরত শাহ্ গোলাম নূরী(রাঃ)
  *হযরত শাহ আবু আবদুল্লাহ (রাঃ)
  *হযরত শাহ্ আবু তালিব(মাঃজিঃআঃ) [ সাজ্জাদানশীন পীর সাহেব,দরবারে শাহ্ নূরী(রহঃ)][২]

হযরত কেবলার নকশেবন্দীয়া মুজাদ্দেদীয়া তরীকার পূর্বসূরী ও উত্তর সূরীগণ[সম্পাদনা]

*হযরত মুহাম্মাদ মুস্তফা সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লা্ম
* হযরত আবু বকর সিদ্দীক (রাঃ)
*হযরত সালমান ফারসী(রাঃ)
*হযরত কাসীম বিন মুহাম্মাদ বিন আবু বকর (রাঃ)
*হযরত ইমাম জাফর সাদেক(আঃ)
*হযরত বায়েজিদ(রাঃ)
*হযরত আবুল হাসান আলী আল খেরকানী(রাঃ)
*হযরত আবু আলী আল ফারমাদী (রাঃ)
*হযরত আবু ইয়াকুব ইউসূফ আল হামদানী(রাঃ)
*হযরত আবুল আব্বাস আল খাজা খিজির (রাঃ)
*হযরত আবুল খালেক আল গুজদাওয়ানী(রাঃ)
*হযরত আরাফ আল রিগওয়ানী(রাঃ)
*হযরত খাজা মাহমুদ আল আনজীর আল ফাগনাওয়ী(রাঃ)
*হযরত আলী আল রামাতানী(রাঃ)
*হযরত মুহাম্মাদ বাবা আস সাম্মাসী(রাঃ)
*হযরত সাইয়্যিদ আমীর কুল্লাল (রাঃ)
*হযরত বাহাউদ্দীন শাহ্ নাকশেবান্দ(রাঃ)
*হযরত আলাউদ্দীন মুহাম্মদ আল আত্তারী(রাঃ)
*হযরত ইয়াকুব আল চারখী(রাঃ)
*হযরত উবাইদ উল্লাহ আল আহরার আস-সামারকান্দী(রাঃ)
*হযরত মুহাম্মাদ আজ জাহিদ(রাঃ)
*হযরত দারবেশ মুহাম্মদ আল বুখারী (রাঃ)
*হযরত মুহাম্মদ খাজা আল আমকানাকী (রাঃ)
*হযরত খাজা মুহাম্মদ বাকী বিল্লাহ্(রাঃ)
*হযরত মুজাদ্দিদ আলফ সানী ইমামে রাব্বানী আহমাদ ফারুকী(রাঃ)
*হযরত শায়েখ গোলাম মুহাম্মাদ মুজাদ্দিদ (রাঃ)
*হযরত শায়েখ আব্দুল্লাহ আল মুজাদ্দিদ(রাঃ)                  
*সুলতানুল আরেফীন বুরহানুল আশেকীন হযরত মাওলানা শাহ্‌ নূরী(রাঃ)
*হযরত শাহ্ মুহাম্মাদী (রাঃ)
*হযরত শাহ্ আব্দুল হামিদ(রাঃ)
*হযরত শাহ্ শামস উদ্দীন(রাঃ)
*হযরত শাহ্ গোলাম নূরী(রাঃ)
*হযরত শাহ আবু আব্দুল্লাহ (রাঃ)
*হযরত শাহ্ আবু তালিব(মাঃজিঃআঃ)  [ সাজ্জাদানশীন পীর সাহেব,দরবারে শাহ্ নূরী(রহঃ)][২]

হযরত কেবলার মুর্শিদ পরিচিতি[সম্পাদনা]

হযরত কেবলার মুর্শিদ ছিলেন গাউছে জামান, হযরত শাহ্ খালিকুর রহমান উরফে বাঘু দেওয়ান(রাঃ)। তিনি মিয়া বাঘু হিসেবে প্রসিদ্ধ।এ নামে প্রসিদ্ধ হওয়ার কারন ছিল তাঁর জন্মের সময় আশেপাশের লোকেরা হঠাৎ’ বাঘের আওয়াজ শুনতে পায়-তাই তাঁরা মিয়া বাঘু বলে ডাকত । শুধু তাই নয়,হযরত কেবলার জীবদ্দশায় ও হযরতের দরবারে বাঘের আসা যাওয়া ছিল । তিনি ছিলেন বংশগত দিক দিয়ে কুরাইশি, মাজহাবে হানাফী,জন্মভূমির দিক থেকে বাঙ্গালী, তরীকার দিক থেকে কাদেরী,আর তরীকার শাজরার দিক থেকে সাত্তারী।[৪]

হযরত কেবলার মুর্শিদ শাহ্ বাঘু দেওয়ান (রাঃ) এর চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য[সম্পাদনা]

হযরতের পীর ছিলেন আলেম,আবেদ,যাহেদ,পরহিজগার,শরীয়তের পাবন্দ আল্লাহ্র উপর এমন নির্ভরশীল কারো প্রতি মোহতাজ ছিলেন না।কোনো মাখলুকের উপর নির্ভরশীলতা বাদ দিয়ে আল্লাহমুখী হয়েছিলেন,তিনি ছিলেন মুজাহিদ ,কঠোর পরিশ্রমী,সাধক,গবেষক,মোহসিন,পরোপকারি,দয়াবান,দানশীল,রাসূলের চরিত্রে চরিত্রবান, আল্লাহ্র সন্তুষ্টির জন্য সবকিছু ত্যাগকারী,মহান প্রভূর অস্তিত্বে নিজেকে বিলীনকারী, এবং নিরংকুশ অস্তিত্বে অক্ষয় ।অব্যয় হিসেবে অবস্থানকারী।হযরতের অন্যতম বৈশিষ্টের মধ্যে রয়েছে তিনি সেলাই করা লুঙ্গি পরিধান করতেন তাঁর কোনো পাজামা ছিলনা। বেশিরভাগ সময় তুর্কী টুপি পরিধান করতেন। তবে পাগড়ী বাধতেন না,কখনো কখনো জামা, কাদেরীয়া তরিকার খেরকাও পরতেন। শীতকালে বেশিরভাগ সময় পুরানো তুলার তৈরী জুব্বা পরিধান করতেন,সে জুব্বায় একটা বেল্ট ও থাকতো । হযরতের নিয়ম ছিল এশরাক নামাজের পর থেকে আসর পর্যন্ত হরিণের চামড়ার উপর বসতেন ,আসরের পর থেকে এশা’র নামাজ পর্যন্ত চাটাইয়ের উপর বসতেন ,ঘুমের সময় পুরানো একটি বালিশ মাথায় দিতেন। [৪]

হযরত কেবলার মুর্শিদ শাহ্ বাঘু দেওয়ান(রাঃ) আধ্যাতিক শক্তি[সম্পাদনা]

  • ১)সালেকগনের নেতা আরেফগনের দিশারী মিয়া মুহাম্মদী সাল্লামাহুল্লাহু তায়ালা বর্ননা করেন,হযরত কেবলা ছাত্র অবস্থায়ই রুহের রহস্য উদ্‌ঘাটন করতে সক্ষম হন। যার ফলে শরীরের কোনো খবরই ছিলনা। এক রাতে সবক আদায় করছিলেন তাঁর পাগড়ীতে হঠাৎ আগুন লেগে যায়,সম্পূর্ন পাগড়ী পুড়ে যায়,কিতাবের মধ্যে এমনই ডুবে যান যে আগুনে উত্তাপের খবরই তাঁর ছিলনা।পাগড়ী পুড়ে মাথার চুল গুলো ছাই হয়ে যায়।
  • ২)বর্নিত আছে একলোক হযরতের কেবলার কাছে সন্তান হওয়ার জন্য দোয়া চায়,হযরত আধ্যাতিক হালের মধ্যে ঐ ব্যক্তির বক্ষে হাত দিয়ে কি যেন বের করে আনেন,এরপর আল্লাহ তাকে সন্তান দান করেন।
  • ৩)হযরত তার সাধনার প্রথম দিকে মাওলানা দানেশমান্দ (রহঃ)আস্তানার পাশে মসজিদে একটি চিল্লা দেন। প্রথম চিল্লার পর তার কাশফ দিল্লী শহর পুর্যন্ত বিস্মৃত হয়।
  • ৪)তিনি নিজের পবিত্র জবানে বলেছেন এক বছর লাইলাতুল কদরের রাতে তিনি রাসুলে কারিম(সঃ) কে দেখে ধন্য হয়েছেন।[৪]

প্রানপ্রিয় মুর্শিদের সান্নিধ্যে হযরত শাহ্ নূরী(রাঃ)এর অতিক্রান্ত কয়েক বছর[সম্পাদনা]

প্রেমিকের সান্নিধ্য এ যেন প্রেমিকার হৃদয়ের আরাধ্য,হযরত শাহ্ নূরী (রাঃ) মুর্শিদ প্রেমে ফানা হয়ে মর্শিদের সান্নিধ্য লাভের প্রত্যাশায় বার বার ছুটে যেতেন মুর্শিদের দরবারে, হযরত ছিলেন মুর্শিদের অত্যন্ত আদরের,নিত্য দিনের চলাফেরায় মুর্শিদের অসংখ্য স্মৃতি বিজরিত ছিল হযরতের জীবনে, এমনি কিছু স্মৃতির কথা হযরত শাহ্ নূরী(রাঃ) তাহার স্বীয় লিখিত “ কেবরিতে আহমর” নামক গ্রন্থে পরম ভাবাবেগে ব্যক্ত করেছেন।

  • হযরত বলেন আমার মুর্শিদ হযরত বাঘু দেওয়ান(রাঃ) একদিন আমার সেন্ডলটি ব্যবহার করেন,আমি ফকিরের জন্য এটা ছিল পবিত্র ফুলের মতো ।
  • দীর্ঘ দুই বছর মুর্শীদের সান্নিধ্যে থাকার পর মুর্শিদের জন্য নেয়া একটি ঢিলা হযরত শাহ্ নূরী(রাঃ) এর হাতে আসে ,এ মাটির চাকাটি হযরত শাহ্ নূরী (রাঃ) এর প্রিয় পাত্রে পরিনত হয়ে যায়।[৪]

মুর্শীদের দরবার থেকে বিদায় গ্রহন[সম্পাদনা]

অনবরত সাধনার ফলে হযরত শাহ্ নূরী (রাঃ) যখন আধ্যাতিক জগতের মহাপুরুষে পরিনত হন, তখন হযরতের মুর্শিদ রূহানী শক্তির মাধ্যমে তাহা বুঝতে পারেন এবং ধর্ম প্রচারের নিমিত্তে হযরতকে বিদায় দেয়ার মনস্থ করেন। বিদায় বেলা হযরত শাহ্ নূরী(রাঃ) মুর্শিদের কাছে কিছু চেয়েছিলেন,তখন হযরতের মুর্শিদ নিজের বেগম সাহেবাকে উদ্দেশ্য করে বলেন হযরত শাহ্ নূরী (রাঃ) তো কিছু চাইতেছে, ঐ মুহূর্তে হযরতের (মুর্শিদের) বেগম সাহেবা ঘর ঝাড়ু দিতেছিলেন,ঘর ঝাড়ু দেয়ার পর অবশিষ্ট কিছু ধুলি হযরত শাহ্ নূরী (রাঃ) কে তওফা হিসেবে প্রদান করেন এবং এই ধুলি গুলিকে মুর্শিদ প্রদত্ত আর্শিবাদ মনে করে ,হযরত শাহ্ নূরী (রাঃ) মুর্শিদের দরবার থেকে বিদায় গ্রহন করেন। আজও প্রায় ৩০০ বছর পর ঐ ধূলিগুলি হযরত শাহ্ নূরী (রাঃ) দরবার শরীফে একটি কৌটায় সংরক্ষিত রয়েছে ,প্রতিবছর অসংখ্য ভক্তকূল মুর্শিদ প্রেমের অনিবদ্য নিদর্শন ধূলি সংরক্ষিত ঐ কৌটা জিয়ারতের জন্য হযরত শাহ্ নূরী(রাঃ) এর মাজার শরীফে ভিড় জমায় ,এই ইতিহাস যেন মুর্শিদ প্রেমের এক জীবন্ত কিংবদন্তি ।


শাহ্ নূরী ধন গো বাবা শাহ্ নূরী ধন

তরীকতের বাদশাহ্ তুমি মারেফতের গুলবদন

মারেফতের জালওয়া তুমি যদি পেতে চাও

নিজ খোদায়ে করে ফানা বেখুদীতে মিশে যাও[১][২]

হযরত সূফী দায়েম উল্লাহ্ (রহঃ) এর সাথে হযরত শাহ্ নূরী(রাঃ) এর আধ্যাতিক সম্পর্ক বিনিময় এবং বেলায়েতের এলাকা হস্তান্তর[সম্পাদনা]

ভারতীয় উপমহাদেশের বিশাল অঞ্চল জুড়ে হযরত শাহ্ নূরী(রাঃ) এর বেলায়েতের এলাকা ছিল,হযরত কেবলা যখন  ঢাকার মগবাজারে খানকা স্থাপন করেন এবং ধর্ম প্রচারের উদ্দেশ্যে কঠোর ভাবে আত্মনিয়োগ করেন ,ঐ সময় ঢাকার আজিমপুর  এলাকায় সূফী দায়েম উল্লাহ্ (রহঃ)নামে একজন সূফী সাধকের আগমন ঘটে,হযরত শাহ্ নূরী(রাঃ) রূহানী ভাবে এই খবর জানতে পারেন এবং তিনি তাঁর একজন ভক্তকে  একটি পানপাত্রে কিছু পানি দিয়ে সূফী দায়েম উল্লাহ্ (রহঃ)  এর কাছে পাঠিয়ে দেন,  সূফী দায়েম উল্লাহ্(রহঃ) ও আধ্যাতিক জগতের শক্তিশালী পুরুষ ছিলেন তিনিও উক্ত ঘটনার কারন বুঝতে পারেন ,এবং ঐ পান পাত্রে একটি ছোট্র শিউলি ফুল ভাসিয়ে দেন, এবং পাত্রটিকে [হযরত শাহ্ নূরী(রাঃ)]] এর কাছে পুনরায় পৌছে দিতে বলেন। এই রহস্যময় ঘটনার অর্থ হলো হযরত শাহ্ নূরী (রাঃ) বেলায়েতের এক বিশাল সমুদ্র ,সূফী দায়েম উল্লাহ্ (রহঃ) হযরত শাহ্ নূরী(রাঃ) এর  বেলায়েতের এলাকায় পা রেখেছেন ,হযরতের বেলায়েতের সমুদ্র সূফী দায়েম উল্লাহ্ (রহঃ) কে গ্রাস করে ফেলবে, সূফী দায়েম উল্লাহ্(রহঃ) পানপাত্রে একটি শিউলি ফুল ভাসিয়ে দিয়ে বুঝাতে চেয়েছেন, তিনি হুজুর শাহ্ নূরী (রাঃ) এর বেলায়েতের সমুদ্রে ছোট্র একটি ফুল হয়ে ভেসে থাকতে চান, সূফী দায়েম উল্লাহ্ (রহঃ) এর এমন উত্তরে খুশি হয়ে হযরত শাহ্ নূরী (রাঃ) সূফী দায়েম উল্লাহ্ (রহঃ) কে আজিমপুর এলাকার দায়িত্ব হস্তান্তর করে দেন।

হযরত শাহ্ নূরী (রাঃ) এর কতিপয় বাণী-[সম্পাদনা]

  • ১)پیر رہ کبریت احمر آمدہ است ، سینہ اوبحرا اخضر آمد است (অনুবাদ: পীর তো পথের লাল গন্ধক এসে গেছেন , সবুজ সকালের বক্ষ বেয়ে যিনি এসেছেন । )
  • ২) نقض میثاق و عہود از احمقیست، حفظ ایمان و فاکار نقیست (অনুবাদ: প্রতিশ্রুতি ও ওয়াদা ভঙ্গ করা আহমকের কাজ ,ঈমান ও প্রতিশ্রুতি রক্ষা করা বুদ্ধিমানের কাজ।)
  • ৩)اولیا اطفال حق آمد اے پسر، از حضور و غیب آگہ نا خبر، چونکہ دوری از حضور اولیا، در حقیقت گشتئہ دور از خدا (অনুবাদ: হে বৎস ,আল্লাহর ওলীগন মহান আল্লাহর আদরের , হে বৎস তাঁরা গায়েব ও হাজের সব কিছুর খবর রাখেন, আল্লাহর ওলীগনের কাছ থেকে দূরে থাকা বাস্তবে আল্লাহর নৈকট্য থেকে দূরে থাকা ।)
  • ৪)گرورلی زھری خورد نوشی بود، در خورد طالب سیہ بیہوشی بود، اواگر زھری خورد شہدے بود، تو اگر شہدے خوری زھری بود( অনুবাদ: আল্লাহর ওলীগন যদি বিষপান করেন তাহলে পানীয়,যদি দুনিয়া প্রত্যাশী খায় তাহলে বেহুঁশ হয়ে যায়,তিনি যদি খান বিষ মধু হয়ে যায়,তুমি যদি খাও মধু বিষ হয়ে যায়।)
  • ৫)اولیا را ھست قدرت از الہ، تیر جستہ باز آرندش زراہ (অনুবাদ: ওলীগনের আল্লাহ্‌ প্রদত্ত ক্ষমতা এমনই নিক্ষিপ্ত তীরও তার গন্তব্যে পৌছার আগে ফিরিয়ে আনতে পারেন।)
  • ৬)برخانہ دل ایجان آن کیست کہ ایستادہ، بر تخت شہ کہ باشد جزشاہ و شاھزادہ (অনুবাদ: হে জীবন অন্তরের ঘরে কে স্থান নিয়েছে , শাহের সিংহাসনে শাহ্‌ বা শাহ্‌জাদা ছাড়া কে বসিতে পারে।)

হযরত কেবলার ওয়াফাত[সম্পাদনা]

তরিকতের দিশারী, বেলায়েতের উজ্জল নক্ষত্র হযরত শাহ্‌ নূরী (রাঃ) ইশকে এলাহিতে মাতোয়ারা হয়ে পরমের সান্নিধ্য লাভে ১১৮৮ হিজরিতে ২৭শে রবিউল আউয়্যাল বাদ যোহর ইহধাম ত্যাগ করেন। যাহার ওয়াফাত সম্পর্কে হাতেফ হতে গায়েবি আওয়াজ এসেছে-

“ শত অনুতাপ শাহ্‌ নুরী এই নশ্বর জগত ছেড়ে গেছেন প্রভূ হে , তাঁর মাজারকে রহমতের বারি সদা করো বর্ষন তাঁর মৃত্যু সম্পর্কে হাতেফ গায়েবী আওয়াজে বলেছেন তাঁর রূহ বিশ্রামাগারে গমন করেছেন”[১][৩]

ওরশ মোবারক[সম্পাদনা]

প্রতি বছর রবিউল আউয়্যাল মাসের ২৫,২৬ এবং ২৭ তারিখ ধর্মিয় ভাব-গাম্ভীর্যতার সাথে ভক্তকুলের সমারোহে হযরতের পবিত্র ওরশ মোবারক পালিত হয়।[১]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. বাংলাদেশে ফারসী সাহিত্য উনবিংশ শতাব্দী,প্রকাশকঃমুহাম্মদ আব্দুল্লাহ,প্রকাশনায়ঃইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ,পৃষ্টাঃ৪২
  2. শাজরায়ে তায়্যিবাহ সিলসিলায়ে নুরীয়া,প্রকাশকঃ শাহ্‌ আবু তাহমিদ,প্রকাশনাঃ গাউসুল আজম প্রকাশনা,পৃষ্টাঃ৮-১৩,প্রকাশকালঃ২০১৬
  3. আসুদেগান-এ-ঢাকা,প্রকাশকঃহাবিবুর রহমান,প্রকাশকালঃ১৯৪৬,পৃষ্টাঃ১১৬
  4. কেবরিতে আহমর,প্রকাশকঃ সাইয়্যেদ আব্দুল মালেক,প্রকাশনাঃ ফাহমি প্রকাশনা,পৃষ্টাঃ৩০-৬০,প্রকাশকালঃ১লা জানুয়ারী,২০০০ খ্রিঃ