ব্যবহারকারী:Mayeenul Islam/বাংলাদেশে বৈশ্বিক উষ্ণায়ন

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে

বিশ্বব্যাপী সার্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধির যে চিত্র পাওয়া যায়, দক্ষিণ এশিয়ার দেশ বাংলাদেশেও তার ব্যাতয় ঘটেনি। বাংলাদেশে একদিকে এই বৈশ্বিক উষ্ণায়নকে ত্বরান্বিত করতে চলছে অনিয়ন্ত্রীত কার্যকলাপ, অন্যদিকে বৈশ্বিক উষ্ণায়ন প্রশমনে নেয়া হচ্ছে উত্তরণমূলক পদক্ষেপ। উল্লেখ্য, UNFCCC বৈশ্বিক উষ্ণায়নকে মানুষের কারণে সৃষ্ট, আর জলবায়ুর বিভিন্নতাকে অন্য কারণে সৃষ্ট জলবায়ুর পরিবর্তন বোঝাতে ব্যবহার করে। কিছু কিছু সংগঠন মানুষের কারণে পরিবর্তনসমূহকে মনুষ্যসৃষ্ট (anthropogenic) জলবায়ুর পরিবর্তন বলে। তবে একথা অনস্বীকার্য যে, বিশ্বব্যাপি জলবায়ুর পরিবর্তন শুধুমাত্র প্রাকৃতিক কারণেই নয়, এর মধ্যে মানবসৃষ্ট কারণও সামিল। এই নিবন্ধে "বৈশ্বিক উষ্ণায়ন" বলতে শ্রেফ মানবসৃষ্ট কারণকে বোঝানো হচ্ছে। সুতরাং, "বাংলাদেশে বৈশ্বিক উষ্ণায়ন" বলতে বাংলাদেশ ও তৎসংলগ্ন ভূখন্ড ও জলখন্ডে বৈশ্বিক উষ্ণায়ন ত্বরান্বিতকরণ ও প্রশমিতকরণ সংক্রান্ত যাবতীয় কার্যক্রম আলোচিত হয়েছে।

বৈশ্বিক উষ্ণায়নে পরিবেশের বিপর্যয়ের এই ঘটনাকে বাংলাদেশ সরকারের বন ও পরিবেশ মন্ত্রণালয় কর্তৃক নব্বইয়ের দশকে প্রণীত ন্যাশনাল এনভায়রনমেন্ট ম্যানেজমেন্ট এ্যাকশন প্ল্যান (NEMAP)-এ চারভাগে ভাগ করে চিহ্নিত করা হয়েছে।

ক. সেক্টরাল সমস্যা: বন, ভূমি, পানি, বায়ু, জীববৈচিত্র্য, কৃষি, শিল্পদূষণ, জ্বালানি, মৎস্য সম্পদ, প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও পরিবেশ সচেতনতা, জনসংখ্যা, দারিদ্য এবং স্বাস্থ্য সমস্যা।
খ. স্থানীয় সমস্যা: লবণাক্ততা ও চিংড়ি চাষ, জলাভূমি, সামুদ্রিক উপকূল, বরেন্দ্রভূমি, মধুপুর, চর এলাকা ও পাহাড় কর্তন।
গ. দীর্ঘমেয়াদি সমস্যা: আঞ্চলিক নদীসমূহের পানিবন্টন, নগরায়ন, জলবায়ু পরিবর্তন।
ঘ. প্রাতিষ্ঠানিক সমস্যা: প্রতিষ্ঠানসমূহের মধ্যে সমন্বয়ের অভাব, জনগণের অংশগ্রহণের অভাব এবং সময়োপযোগী আইন প্রণয়ন ও এর যথাযথ প্রয়োগের অভাব।

উল্লেখিত সমস্যাগুলো নিয়ে এ নিবন্ধে বিস্তারিত আলোচনা করা হলেও জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব বিষয়ে কোনো আলোচনা এই নিবন্ধে করা হয়নি।[১]

বৈশ্বিক উষ্ণায়ন ত্বরান্বিতকরণ[সম্পাদনা]

বাংলাদেশে, বৈশ্বিক উষ্ণায়ন ত্বরান্বিতকরণে যেসকল কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে, বা বাংলাদেশের যেসব ঘটনা বৈশ্বিক উষ্ণায়নে প্রভাব ফেলছে, সেগুলো এই অংশে আলোচিত হলো।

জনসংখ্যা[সম্পাদনা]

ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ পপুলেশন রিসার্চ এ্যান্ড ট্রেইনিং-এর দেয়া তথ্যমতে, বাংলাদেশে প্রতি ১১ সেকেন্ডে একটি শিশুর জন্ম হচ্ছে বাংলাদেশে। ২০০৭ খ্রিষ্টাব্দের ১ জানুয়ারি থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত সময়ে ২৯,৮৬,০০০ শিশু জন্ম নিয়েছে।[২]

ক্ষতিকারক বৃক্ষায়ন[সম্পাদনা]

পরিবেশ বাঁচাতে বৃক্ষায়নের বিকল্প নেই। কিন্তু বৃক্ষায়নের নামে ক্ষতিকারক বৃক্ষাদি রোপন করে আদৌ পরিবেশকে আর রক্ষা করা হচ্ছে না, উপরন্তু পরিবেশকে বিপর্যয়ের দিকে ঠেলে দেয়া হচ্ছে।

বৈশ্বিক উষ্ণায়ন প্রশমন[সম্পাদনা]

বৈশ্বিক উষ্ণায়ন প্রশমন ও রোধকল্পে বাংলাদেশে নেয়া হচ্ছে বিস্তর পদক্ষেপ।

বর্জ পূণর্চক্রায়ণ[সম্পাদনা]

ছাই দিয়ে তৈরি বাড়ি[সম্পাদনা]

টাঙ্গাইলের মধুপুরে "মনোনাইট সেন্ট্রাল কমিটি" (MCC) নামের একটি বেসরকারি সংস্থার গবেষকগণ ফেলনা ছাই দিয়ে ঘর তৈরি করে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। এই সংস্থার ফাইবার রিসার্চ সেন্টারের ঘরগুলো তৈরি করা হয়েছে তুষের ছাইয়ের [সাথে সামান্য রাসায়নিক উপাদানমিশ্রিত] ফাঁকা ব্লক ও টিন দিয়ে। এজাতীয় ভবন তৈরিতে খরচ কম এবং সময়ও কম লাগে। ঘরের ভিতর থাকে ঠান্ডা এবং ঘর হয় শব্দ-নিরোধক। প্রচলিত ইট, বালি, টিনের কোনোটিই লাগে না এতে। মূলত এমসিসি'র কান্ট্রি ডিরেক্টর মার্কিন নাগরিক লেবি ফিশার এই ঘর নির্মাণের পরিকল্পনা করেন। ঐ বিশেষজ্ঞ এবং এমসিসি'র রসায়নবিদ মাসুদ রানা সফল গবেষণা চালিয়ে ধানের তুষ থেকে ফাঁকা ব্লক ও [সামান্য পাটের আঁশ মিশিয়ে] টিন তৈরিতে সক্ষম হোন। এই প্রযুক্তির সফল ব্যবহারে ভবন নির্মাণের প্রয়োজনে ইট বানাতে মাটি খননের প্রয়োজন পড়বে না। ফলে পরিবেশ হবে আরো সুন্দর।[৩]

অনবায়নযোগ্য শক্তির ব্যবহার হ্রাস[সম্পাদনা]

সিএনজি অটোরিকশার প্রচলন[সম্পাদনা]

সিএনজি যদিও অনাবয়নযোগ্য জ্বালানি, তবে অতিক্ষতিকারক জ্বালানী তেলের চেয়ে তা কিছুটা হলেও কম ক্ষতিকারক। তাই বাংলাদেশে তেলচালিত যানবাহন কমিয়ে সিএনজিচালিত যানবাহনের প্রচলন করে বাংলাদেশ সরকার পরিবেশ দূষণ কিছুটা হলেও কমানোর প্রাথমিক প্রয়াস নেয়।

নবায়নযোগ্য শক্তির ব্যবহার[সম্পাদনা]

প্রাকৃতিক উপাদান থেকেই পরিবেশের ন্যুনতম বা শূণ্য পরিমাণ ক্ষতি করে শক্তির যে রূপান্তরের মাধ্যমে বাংলাদেশ সচল হয়েছে, সেসব কার্যক্রমকেই নবায়নযোগ্য শক্তির আওতায় আলোচনা করা হলো:

সৌরশক্তির ব্যবহার[সম্পাদনা]

রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় স্থানীয় পর্যায়ে সৌরশক্তি ও ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার প্রচলন, ও এতে উদ্বুদ্ধ করছে সরকার।

বায়ুশক্তির ব্যবহার[সম্পাদনা]

বাংলাদেশের বগুড়ায় ব্যক্তিগত উদ্যোগে গবেষণা চলছে বায়ুশক্তি ব্যবহার করে বিদ্যুৎ উৎপাদন করার।[৪] সরকারি উদ্যোগে কক্সবাজারের কুতুবদিয়ায় ১২ কোটি টাকা ব্যয়ে স্থাপিত হয়েছে বায়ুবিদ্যুতের পরীক্ষামূলক প্রকল্প। এপ্রকল্পটি বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের অধীনে নির্মিত হয়েছিলো। এই প্রকল্পে ৫০মিটার উঁচু ৫০টি টারবাইন স্থাপিত হয়। প্রকল্পটি চালু হয় ২০০৮ খ্রিষ্টাব্দের ৩ মার্চ[৫]

আরো দেখুন[সম্পাদনা]

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. ড. মোঃ ময়নুল হক। ইসলাম: পরিবেশ সংরক্ষণ ও উন্নয়ন (প্রিন্ট) (জুন ২০০৩ সংস্করণ)। ঢাকা: গবেষণা বিভাগ, ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ। পৃষ্ঠা ৩৩২। আইএসবিএন 984-06-0775-8  অজানা প্যারামিটার |accessmonth= উপেক্ষা করা হয়েছে (|access-date= ব্যবহারের পরামর্শ দেয়া হচ্ছে) (সাহায্য); অজানা প্যারামিটার |accessyear= উপেক্ষা করা হয়েছে (|access-date= ব্যবহারের পরামর্শ দেয়া হচ্ছে) (সাহায্য); এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |সংগ্রহের-তারিখ= (সাহায্য);
  2. [পাওয়া যায়নি] (১৯ জুলাই ২০০৯)। "[পাওয়া যায়নি]"। দৈনিক প্রথম আলো (প্রিন্ট)। ঢাকা। পৃষ্ঠা ১।  একের অধিক |pages= এবং |page= উল্লেখ করা হয়েছে (সাহায্য);
  3. নিয়ামুল কবীর সজল (১৫ মার্চ ২০১০)। "ছাইয়ের বাড়ি!"। দৈনিক কালের কন্ঠ (প্রিন্ট)। ঢাকা। 
  4. মিলন রহমান ([তারিখ পাওয়া যায়নি])। "বগুড়ায় বায়ুচালিত স্বনির্ভর বিদ্যুৎ প্রকল্প"। বিজ্ঞান প্রজন্ম, দৈনিক প্রথম আলো (প্রিন্ট)। ঢাকা।  এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |তারিখ= (সাহায্য);
  5. তোফায়েল আহমদ (১ ফেব্রুয়ারি ২০১০)। "১২ কোটি টাকার 'মাকাল ফল'!"। দৈনিক কালের কন্ঠ (প্রিন্ট)। ঢাকা। পৃষ্ঠা ১৯।  একের অধিক |pages= এবং |page= উল্লেখ করা হয়েছে (সাহায্য);

[[বিষয়শ্রেণী:জলবায়ু পরিবর্তন]] [[বিষয়শ্রেণী:বৈশ্বিক উষ্ণায়ন]]