বৈদিক তারামণ্ডল মন্দির
বৈদিক তারামণ্ডল | |
---|---|
ধর্ম | |
অন্তর্ভুক্তি | হিন্দুধর্ম |
জেলা | নদীয়া জেলা |
ঈশ্বর | চৈতন্য মহাপ্রভু |
অবস্থান | |
অবস্থান | মায়াপুর |
রাজ্য | পশ্চিমবঙ্গ |
দেশ | ভারত |
স্থানাঙ্ক | ২৩°২৫′২৯″ উত্তর ৮৮°২৩′২০″ পূর্ব / ২৩.৪২৪৮৪৯৯° উত্তর ৮৮.৩৮৮৭৫০২° পূর্ব |
স্থাপত্য | |
সম্পূর্ণ হয় | ২০২০ (আংশিক) ২০২২ (সম্পূর্ণ) |
মন্দির | ১ |
ওয়েবসাইট | |
https://tovp.org/ |
বৈদিক তারামণ্ডল মন্দির বা বৈদিক প্ল্যানেটরিয়াম হল পশ্চিমবঙ্গের নদীয়া জেলার মায়াপুরে অবস্থিত একটি মন্দির। বর্তমানে মন্দিরটি নির্মাণাধীন রয়েছে। পুরোপুরি কাজ শেষ হলে এই মন্দিরই হবে বিশ্বের দ্বিতীয় উচ্চতম মন্দির[১] বা ধর্মস্থান এবং বৃহত্তম হিন্দু মন্দির।
ইতিহাস
[সম্পাদনা]উদ্বোধন
[সম্পাদনা]১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২০ সালে বৃহস্পতিবার বৈদিক তারামণ্ডল মন্দিরের পুজারির মেঝের উদ্বোধন করা হয়।[২] এই অনুষ্ঠান উপলক্ষে প্রায় ৮০টি দেশের প্রতিনিধি মায়াপুরে উপস্থিত ছিলেন। এই অনুষ্ঠানে পতাকা উত্তোলন ও প্রদীপ প্রজ্জ্বলন করেন বৈদিক প্ল্যানেটরিয়াম প্রজেক্টর চেয়ারম্যান হেনরি ফোর্ডের নাতি আলফ্রেড ফোর্ড (অম্বরিশ দাস)।[৩] হাতির পিঠে চড়িয়ে এক বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা সহকারে রাধাকৃষ্ণের বিগ্রহকে নিয়ে আসা হয় নতুন মন্দির বৈদিক তারামণ্ডলে। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশ্ববাসীর কল্যাণে হোমযজ্ঞ করা হয়। মন্দির উদক্তারা জানান- আধ্যাত্মিক পরিবেশে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের মানুষ যাতে এখানে এসে শান্তি পান, তার জন্য বৈদিক প্লানেটরিয়ামের নির্মাণ কাজ চলছে। ২০২২ সালের মধ্যে সম্পূর্ণ ভাবে এই প্লানেটরিয়ামের কাজ সম্পন্ন হবে।[৩]
বৈদিক প্লানেটরিয়ামের একটি অংশই হল পূজারি ফ্লোর। এই ফ্লোরে ৬২টি সুসজ্জিত ঘর রয়েছে।[৩] ইসকন মন্দির কর্তৃপক্ষের তথ্য মতে, প্রায় আড়াই একর জমির উপর তৈরি হচ্ছে এই মন্দির। ওই পূজারী ফ্লোর প্রতিদিন এক ঘণ্টার জন্য সর্বসাধারণের জন্য খোলা থাকে। আগামী দিনে এই বৈদিক প্লানেটরিয়াম বিশ্বের মানুষের কাছে অন্যতম দর্শনীয় স্থান হয়ে উঠবে বলে ইসকন কর্তৃপক্ষের দাবি।[৩]
স্থাপত্য
[সম্পাদনা]এই মন্দিরটি পূর্ব এবং পশ্চিমের স্থাপত্যের মিশ্রণ। মন্দিরে ব্যবহৃত মার্বেল ভিয়েতনাম থেকে আমদানি করা হয়েছে এবং ভারতের মার্বেলও ব্যবহার করা হয়েছে। এই মন্দিরের উচ্চতা ১১৩ মিটার বা ৩৭০ ফুট হবে বলে জানিয়েছেন উদ্যোক্তারা। পুরোপুরি কাজ শেষ হলে এই মন্দিরই হবে বিশ্বের দ্বিতীয় উচ্চতম মন্দির বা ধর্মস্থান। এখনও পর্যন্ত বিশ্বের উচ্চতম ধর্মস্থান হিসেবে নাম নথিভুক্ত রয়েছে ভ্যাটিকানের সেন্ট পিটার বেসিলিকা চার্চের, যার উচ্চতা ১৩৮ মিটার বা ৪৫২ ফুট।[২]
প্ল্যানেটারিয়ামটি মহাবিশ্বের একটি বৃহত সংস্করণ হিসাবে সমন্বিত করে এবং ভগবদ গীতার বিবরণ অনুসারে মহাবিশ্বের সৃষ্টি তত্বকে চিত্রিত করবে। সৃষ্টি তত্বটি ত্রিমাতৃক অডিও-ভিজ্যুয়াল মিডিয়ামে প্রদর্শন করা হবে।
পূজারি মেঝে
[সম্পাদনা]মন্দিরের পুজারি তল বা মেঝে ২.৫ একর এলাকা নিয়ে গঠিত এবং মন্দিরের তলের ব্যস ৬০ মিটার। মন্দিররে গম্বুজ থেকে ২০ মিটার লম্বা বৈদিক ঝাড়বাতি রয়েছে, যা পূজারি মেঝে থেকে দৃশ্যমান।
গম্বুজ
[সম্পাদনা]মন্দিরে ৩ টি গম্বুজ রয়েছে, এর মধ্যে মাঝের গম্বুজটি বড় এবং বড় গম্বুজের দুই পাশে রয়েছে ছোট গম্বুজ। প্ল্যানেটারিয়ামের বড় বা প্রধান গম্বুজটি বিশ্বের যে কোন ধর্মীয় কাঠামোর দীর্ঘতম এবং প্রশস্ত গম্বুজ।
চক্র
[সম্পাদনা]বৈদিক তারামণ্ডলের প্রধান গম্বুজের মাথায় রয়েছে দু’টি বিশাল সুদর্শন চক্র। সুদর্শন চক্রটি ২৪ ক্যারেট সোনার পাত দিয়ে মোড়া স্টেইনলেস স্টিল দিয়ে তৈরি।[২] বড় চক্রের ওজন ১.৫ টন আর ছোটটির ওজন ৫ কুইন্টাল। রাশিয়া থেকে আসা কারিগরের হাতে তৈরি সুদর্শন চক্র দু’টি তৈরির খরচ হয় প্রায় ১৫ কোটি টাকা। ২০১৯ সালে চক্রদুটি স্থাপন করা হয়।
তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ "প্রথম পাতা রাজ্য দিঘা-পুরী নয়! পর্যটকদের জন্য এখন লোভনীয় চমক মায়াপুরে"। এবেলা। ৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৮। সংগ্রহের তারিখ ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২০।
- ↑ ক খ গ "Iskcon to open largest pujari seva"। The Telegraph। ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২০। সংগ্রহের তারিখ ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২০।
- ↑ ক খ গ ঘ "ভক্তদের বিশ্বমানের সুবিধা দিতে তৎপর ইসকন, মায়াপুরে চালু পূজারি ফ্লোর"। সংবাদ প্রতিদিন। ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২০। সংগ্রহের তারিখ ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২০।