বেরি মাই হার্ট অ্যাট উনডেড নি

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
বেরি মাই হার্ট অ্যাট উ্যনডেড নি
লেখকডি ব্রাউন
দেশযুক্তরাষ্ট্র
ভাষাইংরেজি
বিষয়মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস, রেড ইন্ডিয়ান
প্রকাশকনিউ ইয়র্ক: হল্ট, রাইনহার্ট অ্যান্ড উইন্সটন
প্রকাশনার তারিখ
১৯৭০
পৃষ্ঠাসংখ্যা৪৮৭
আইএসবিএন০-০৩-০৮৫৩২২-২
ওসিএলসি১১০২১০
970.5

বেরি মাই হার্ট অ্যাট উ্যনডেড নি (ইংরেজি: Bury My Heart at Wounded Knee), পুরো নাম বেরি মাই হার্ট অ্যাট উ্যনডেড নি: অ্যান ইন্ডিয়ান হিস্ট্রি অফ দ্যা আমেরিকান ওয়েস্ট মার্কিন লেখক ডি ব্রাউন রচিত একটি ইতিহাসগ্রন্থ। গ্রন্থটির মূল উপজীব্য হচ্ছে উনিশ শতকের শেষ ভাগে, বিশেষত ১৮৬০ থেকে ১৮৯০ পর্যন্ত রেড ইন্ডিয়ানদের (যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিতে আদি বসবাসকারী আদিবাসী) উপর তৎকালীন যুক্তরাষ্ট্র সরকারের অত্যাচার, নিপীড়ন, হত্যাযজ্ঞ, ইন্ডিয়ানদের পৈতৃক আবাস থেকে চিরতরে উৎখাত প্রক্রিয়া এবং তাদের বিরুদ্ধে সরকারের গৃহীত বিভিন্ন কৌশল-পত্র, নীতিমালা ও সামরিক অভিযানের বিরুদ্ধে বিভিন্ন রেড ইন্ডিয়ান গোত্রের মরণপণ প্রতিরোধ।[১]

নামকরণ[সম্পাদনা]

গ্রন্থের নামকরণ করা হয়েছে মার্কিন ঔপন্যাসিক ও কবি স্টিফেন ভিনসেন্ট বেনেটের একটি কবিতা "আমেরিকান নেইমস্" ("American Names") এর শেষ দুই চরণ থেকে। যদিও কবিতাটিতে রেড ইন্ডিয়ানদের অবিচারের বিষয়ে কিছু বলা হয় নি, তবু লেখক ডি ব্রাউন নামটি বেছে নিয়েছেন উ্যনডেড নী হত্যাযজ্ঞ-এর কথা স্মরণ করে। উ্যনডেড নি ছিল যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ডাকোটায় অবস্থিত লাকোটা ইন্ডিয়ানদের একটি গ্রাম। ১৮৯০ সালের ২৯ ডিসেম্বর এই গ্রামে মার্কিন সরকারের বিরুদ্ধে রেড ইন্ডিয়াদের সর্বশেষ উল্লেখযোগ্য প্রতিরোধ ব্যর্থ হয়। প্রায় ১৫০ জন সিউ নারী, পুরুষ ও শিশু, যাদের অধিকাংশই নিরস্ত্র ছিল, এই হত্যাযজ্ঞে মৃত্যুবরণ করে। কবিতাটির শেষ দু'টি চরণ:

বাংলা অনুবাদ:

গ্রন্থ সংক্ষেপ[সম্পাদনা]

বেরি মাই হার্ট অ্যাট উ্যনডেড নি তৎকালীন রেড ইন্ডিয়ান সংগ্রামের একটি প্রামাণ্য দলিল হিসেবে চিন্হিত। বিভিন্ন প্রামাণিক তথ্য, সরকারি নথিপত্র, আত্মজীবনীমূলক গ্রন্থ, গোত্রপ্রধান ও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গের সাক্ষাৎকার থেকে সেসময়ে রেড ইন্ডিয়ানদের নিজস্ব অঞ্চল, সমগ্র উত্তর আমেরিকার পশ্চিম ভূ-ভাগ দখলের বহুবিধ ঘটনা ডি ব্রাউন গ্রন্থটিতে তুলে ধরেছেন।

ক্রিস্টোফার কলম্বাসের আমেরিকায় পদার্পণের পর থেকে নানা জাতের ইউরোপীয় জাতিগোষ্ঠীর মানুষজন দলে দলে পাড়ি জমাতে থাকে নব্য আবিষ্কৃত ভূভাগে। শুরু হয় কলোনাইজেশন তথা বসতিস্থাপন, জবরদখল, হত্যা, লুণ্ঠন নির্বিচারে। সেখানকার আদি বাসিন্দা রেড ইন্ডিয়ানদের সবংশে উৎখাত ও নিধনে রাষ্ট্রীয়ভাবে পরিচালিত হতে থাকে সুপরিকল্পিত ধ্বংসযজ্ঞ। উত্তর আমেরিকার পূর্ব পাড় ছাড়িয়ে মিসিসিপি-মিসৌরি নদী পেরিয়ে, দিগন্তবিস্তৃত প্রেইরি পাড়ি দিয়ে, রকি পর্বতমালা ডিঙিয়ে দলে দলে ইউরোপীয় শ্বেতাঙ্গরা দখল করে নিতে থাকে বনাঞ্চল, পার্বত্যাঞ্চল, চারণভূমি, চাষযোগ্য ভূমি অর্থাৎ সমগ্র ভূ-ভাগ। ধ্বংস হয়ে যাওয়ার সেই সময়ে ব্যর্থ হয়ে যায় ইন্ডিয়ানদের আত্মরক্ষা আর প্রতিরোধের যাবতীয় প্রচেষ্টা। সৃষ্টি হয় অসামান্য সব উপাখ্যান। আবির্ভাব হয় লিটল ক্রো, রেড ক্লাউড, ডানহোগাওয়া, স্ট্যান্ডিং বিয়ার, ক্রেজি হর্স, জেরোনিমো, ম্যান-অ্যাফ্রেড-অফ-হিজ-হর্সেস, গ্যলসিটিং বুলের মত ইন্ডিয়ান গোত্রাধিপতিদের। কিন্তু এইসব নেতাদের চূড়ান্ত পরাজয় ঘটে সরকারের বার বার বিশ্বাসঘাতকতা, চুক্তিভঙ্গ আর সীমাহীন লোভের কাছে। অবশেষে উ্যনডেড নি নামের এক পার্বত্য খাঁড়ির বাঁকে ইন্ডিয়ান জাতিরাষ্ট্রের স্বপ্ন বিলীন হয়ে যায় ১৮৯০ সালের ২৯ ডিসেম্বর।

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. দাউদ হোসেন (অনু), আমারে কবর দিও হাঁটুভাঙার বাঁকে [আমেরিকার দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলীয় রেড ইন্ডিয়ান ইতিহাস] (ঢাকা: সংঘ প্রকাশন, ১৯৯৭)
  2. American Names By Stephen Vincent Benét, Poetry Foundation.