বেঙ্গল ইমিউনিটি

বেঙ্গল ইমিউনিটি ১৯১৯ খ্রিস্টাব্দে ভারতে প্রতিষ্ঠিত শতাব্দী প্রাচীন ইমিউনোলজিক্যাল, কেমোথেরাপিউটিকস এবং ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানি। এই সংস্থাটি ডাঃ বিধান চন্দ্র রায়, ডাঃ নীলরতন সরকার, ডাঃ কৈলাসচন্দ্র বসু এবং ডাঃ চারুচন্দ্র বসুর হাত ধরে প্রতিষ্ঠিত হয়। ঘোড়ার আন্টিবডি ব্যবহার করে জলাতঙ্কের প্রতিষেধক এবং অন্যান্য সমস্ত প্রকারের সিরাম এবং ভ্যাকসিন তৈরির অগ্রগণ্য সংস্থা হিসেবে পরিচিত ছিল।[১] বেঙ্গল ইমিউনিটি গ্রীষ্মমণ্ডলীয় পরিস্থিতিতেও দক্ষতার সঙ্গে অ্যান্টি-টক্সিক ভ্যাকসিন উৎপাদন করে তৎকালীন সময়ের সমস্ত ইউরোপীয় কোম্পানিকে বিস্মিত করেছিল।[২]
ইতিহাস
[সম্পাদনা]১৯১৯ খ্রিস্টাব্দে ডাঃ নীলরতন সরকার সহ ডাঃ বিধান চন্দ্র রায়, ডাঃ কৈলাশচন্দ্র বসু এবং ডাঃ চারুচন্দ্র বসুর চেষ্টায় বেঙ্গল ইমিউনিটি নামে ওষুধ, সিরাম ও ভ্যাকসিন প্রস্তুতকারী সংস্থা গড়ে ওঠে।[৩] ক্যাপ্টেন নরেন্দ্রনাথ দত্ত সংস্থার ৩৪ হাজার টাকা ঋণ শোধ করে ১৯২৫ খ্রিস্টাব্দে সংস্থার সঙ্গে যুক্ত হন। এরপর থেকে তিনিই সংস্থার অধিকর্তা ছিলেন।[৪] বেঙ্গল ইমিউনিটি একটি লিমিটেড কোম্পানি রূপে ১৯৩৪ খ্রিস্টাব্দে ক্যাপ্টেন নরেন্দ্রনাথ দত্তের হাত ধরে আত্মপ্রকাশ করে এবং সেরা ও ম্যালেরিয়ার বিরুদ্ধে কার্যকর ভ্যাকসিন ও ড্রাগের উৎপাদনের ক্ষেত্রে অগ্রণী কাজ করে যা সমগ্র পূর্ব ভারতে ছড়িয়ে পড়েছিল।[৫]
গবেষণা
[সম্পাদনা]১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দে এই সংস্থার গবেষণা ও উন্নয়নের জন্য বেঙ্গল ইমিউনিটি রিসার্চ ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠা পায়,[৬] যার ডিরেক্টর ছিলেন উমা প্রসন্ন বসু। মেডিক্যাল রিসার্চ ও ডেভেলপমেন্টের ক্ষেত্রে বেঙ্গল ইমিউনিটি প্রথম সারির গুরুত্বপূর্ণ সংস্থা হিসেবে বিবেচিত হয়।[৭] কলকাতার প্রাইভেট কোম্পানি হিসেবে দেশীয় পদ্ধতিতে জলাতঙ্ক, ধনুষ্টঙ্কার, ডিপথেরিয়া, হুপিং কাশি, কলেরা, গুটিবসন্ত, টাইফয়েড ইত্যাদির ওষুধ, ভ্যাকসিন ও সিরাম এবং সাপে কাটার প্রতিষেধক তৈরি করার ক্ষেত্রে বেঙ্গল ইমিউনিটি অগ্রগণ্য ছিল।[৮] ১৯৪৯ খ্রিস্টাব্দে পশ্চিমবঙ্গের তৎকালীন রাজ্যপাল ডঃ কৈলাশ নাথ কাটজু বেঙ্গল ইমিউনিটি থেরাপিউটিক ব্লকের উদ্বোধন করেন।[৯]
তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ "Dr. Nilratan Sarkar : a legendary medical scientist"। indianculture.gov.in (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ১০ নভেম্বর ২০২০।
- ↑ ভট্টাচার্য, কৌস্তব। "The Forgotten Entrepreneurs Of Bengal"। swarajyamag.com (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ১০ নভেম্বর ২০২০।
- ↑ Joseph, Reji K. (২৪ জুলাই ২০১৫)। Pharmaceutical Industry and Public Policy in Post-reform India (ইংরেজি ভাষায়)। Routledge। আইএসবিএন ৯৭৮-১-৩১৭-৪০৮৮২-৬।
- ↑ "বন্ধ শতাব্দীপ্রাচীন বেঙ্গল ইমিউনিটি নিয়ে এখনও অনেকে আশায়"। দৈনিক আজকাল। সংগ্রহের তারিখ ১০ নভেম্বর ২০২০।[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
- ↑ "Medicine for Masses | Peoples Democracy"। peoplesdemocracy.in। সংগ্রহের তারিখ ১০ নভেম্বর ২০২০।
- ↑ W, Morehouse (১৯৭১)। Science In India (ইংরেজি ভাষায়)। পপুলার প্রকাশন। আইএসবিএন ৯৭৮-৮১-৭১৫৪-৫০১-৮।
- ↑ International Science Reports (ইংরেজি ভাষায়)। জাতীয় বিজ্ঞান ফাউন্ডেশন (ইউ.এস.)। ১৯৬২।
- ↑ রয়, হিমাংশু; সিং, এম. পি. (১৬ জানুয়ারি ২০১৮)। Indian Political System (ইংরেজি ভাষায়)। Pearson Education India। আইএসবিএন ৯৭৮-৯৩-৫২৮৬-৮৮৬-৫।
- ↑ রাধাগোবিন্দ কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের ১৯৮২-১৯৮৭ খৃষ্টাব্দে পাঠরত ছাত্রদের ওয়েবসাইট ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ১৩ জুলাই ২০১৪ তারিখে, রাধাগোবিন্দ কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের ইতিহাস