বিসিজি ২০ মিটার-শ্রেণীর রেসকিউ বোট

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
শ্রেণি'র সারাংশ
নাম: বিসিজি ২০ মিটার-শ্রেণীর রেসকিউ বোট
নির্মাতা: জেএমইউ ইয়োকোহামা শিপইয়ার্ড, জাপান
ব্যবহারকারী:  বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড
নির্মিত: ২০১৯-২০২১
পরিষেবাতে: ২০২১-বর্তমান
অনুমোদন লাভ: ২০২১-বর্তমান
সম্পন্ন: ৪টি
সক্রিয়: ৪টি
সাধারণ বৈশিষ্ট্য
প্রকার ও শ্রেণী: বিসিজি ২০ মিটার-শ্রেণীর রেসকিউ বোট
ওজন: ৪০ টন
দৈর্ঘ্য: ২০ মিটার (৬৬ ফু)
প্রস্থ: ৪.৫০ মিটার (১৪.৮ ফু)
গভীরতা: ১.৫০ মিটার (৪.৯ ফু)
প্রচালনশক্তি:
  • ২ × ৯৬৫ অশ্বশক্তি (৭২০ কিওয়াট) বিশিষ্ট মেরিন ডিজেল ইঞ্জিন (জাপান);
  • ২ × ২১ অশ্বশক্তি (১৬ কিওয়াট) (১,৫০০ আরপিএম) বিশিষ্ট কোহলার ১৭ ইএফওজেডডি জেনারেটর (মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র);
  • ২ × জেডএফ ৩১১এ গিয়ার বক্স (জার্মানি);
  • ২ × ৪ পাখাযুক্ত ফিক্সড পিটচ প্রোপেলার;
  • ২ × শ্যাফট
গতিবেগ: ২৫ নট (৪৬ কিমি/ঘ; ২৯ মা/ঘ)
সীমা: ৩০০ নটিক্যাল মাইল (৫৬০ কিমি; ৩৫০ মা)
সহনশীলতা: ৭ দিন
লোকবল: ৬ জন
সেন্সর এবং
কার্যপদ্ধতি:
  • ১ × ফুরুনো ডিআরএস৪ডব্লিউ র‍্যাডার (জাপান);
  • ১ × ডিজিপিএস রিসিভার (মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র);
  • ১ × সাউন্ড ভেলোসিটি প্রোফাইলার (যুক্তরাজ্য);
  • ১ × ডাইকো টি-১৩০এসএল; স্টেইনার নেভিগেটর প্রো ৭×৫০ চৌম্বকীয় কম্পাস (জাপান);
  • ১ × ফুরুনো জিপি-১৭০ জিপিএস রিসিভার;
  • ১ × ইকো সাউন্ডার (কোডেন সিভিএস-১২৬);
  • ১ × রাডার অ্যাঙ্গেল ইন্ডিকেটর;
  • ১ × আইকম আইসি-এম৫০৬ ভিএইচএফ সেট;
  • ১ × আইকম আইসি-এম২৫ পোর্টেবল ভিএইচএফ;
  • ৩ × ভিএইচএফ ওয়াকিটকি সেট (আইকম/মটোরোলা)
টীকা: সামুদ্রিক দূষণ নিয়ন্ত্রণ সরঞ্জাম (তেল নিঃসরণ প্রতিরোধী যন্ত্রপাতি, তেল পুনরুদ্ধার, তেল শোষক এবং ধারক)

বিসিজি ২০ মিটার-শ্রেণীর রেসকিউ বোট হলো জাপানে নির্মিত উদ্ধারকারী নৌযানের শ্রেণী যা বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড কর্তৃক ব্যবহৃত হয়। উক্ত নৌযানসমূহ জেএমইউ ইয়োকোহামা শিপইয়ার্ড, জাপান দ্বারা নির্মিত হয়। প্রতিটি নৌযান সামুদ্রিক এবং উপকূলীয় অঞ্চলে টহল প্রদান, উদ্ধার ও অনুসন্ধান কার্যক্রম, অবৈধ অনুপ্রবেশ ও চোরাচালান রোধ, জলদস্যূতা দমন, মৎস্য ও প্রাকৃতিক সম্পদ রক্ষায় কার্যকরী ভূমিকা রাখতে সক্ষম। এছাড়াও নৌযানসমূহ সামুদ্রিক দূষণ নিয়ন্ত্রণ সরঞ্জাম (তেল নিঃসরণ প্রতিরোধী যন্ত্রপাতি, তেল পুনরুদ্ধার, তেল শোষক এবং ধারক) দ্বারা সুসজ্জিত।[১][২][৩][৪][৫][৬][৭][৮][৯][১০][১১][১২][১৩][১৪]

ইতিহাস[সম্পাদনা]

বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড-এর জন্য "দি প্রজেক্ট ফর দি ইমপ্রুভমেন্ট অফ রেসকিউ ক্যাপাসিটিস ইন দি কোস্টাল অ্যান্ড ইনল্যান্ড ওয়াটার্স" শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় জাপান সরকারের জাইকা অনুদান হিসেবে ৪টি ২০ মিটার উদ্ধারকারী নৌযান প্রদানের পরিকল্পনা অনুমোদিত হয়। এরই ধারাবাহিকতায় ২৭ আগস্ট, ২০১৮ সালে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার এবং জাপান আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সংস্থা-জাইকা এর মধ্যকার উক্ত নৌযান সরবরাহ সংক্রান্ত চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। পরবর্তীতে জেএমইউ ইয়োকোহামা শিপইয়ার্ড, জাপান-এ নৌযানসমূহ নির্মিত হয়। নির্মাণকাজ শেষে ৬ ডিসেম্বর, ২০২১ সালে চট্টগ্রামে বাংলাদেশ কোস্টগার্ড ঘাঁটিতে জাপানি অনুদান সহায়তার অধীনে রেসকিউ বোট (উদ্ধারকারী নৌযান) হস্তান্তর অনুষ্ঠান সংঘটিত হয়। উক্ত অনুষ্ঠানে বাংলাদেশে অবস্থিত জাপান দূতাবাস এর রাষ্ট্রদূত জনাব ইতো নাওকি, বাংলাদেশ কোস্টগার্ড এর মহাপরিচালক রিয়ার এডমিরাল জনাব আশরাফুল হক চৌধুরী এবং জাইকা বাংলাদেশের প্রধান প্রতিনিধি জনাব হায়াকাওয়া ইউহো উপস্থিত ছিলেন। এই সহায়তার আওতায় (প্রায় ২৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার) দুর্যোগজনিত ত্রাণ ও উদ্ধার অভিযান ব্যবস্থা জোরদার করতে বাংলাদেশ কোস্টগার্ডকে চারটি ২০ মিটার এবং ২০টি ১০ মিটার শ্রেণীর রেসকিউ বোট (উদ্ধারকারী নৌযান) প্রদান করা হয়েছে। রাষ্ট্রদূত জনাব ইতো নাওকি বলেন, “জাপান সরকার আঞ্চলিক শান্তি, স্থিতিশীলতা এবং সমৃদ্ধির জন্য "ফ্রি অ্যান্ড ওপেন ইন্দো-প্যাসিফিক স্ট্র্যাটেজি (এফওআইপি)" এর লক্ষ্য প্রচার ও প্রসারে কাজ করছে। সামুদ্রিক সুরক্ষা এবং নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণের প্রেক্ষাপট থেকে বাংলাদেশকে এই রেসকিউ বোট সরবরাহ করা হল এফওআইপি অন্তর্ভূক্ত একটি বাস্তবিক সহযোগিতা। এই লক্ষ্য বাস্তবায়নের অংশীদার হিসেবে জাপান বাংলাদেশের প্রতি এ ধরনের বাস্তবিক সহযোগিতা অব্যাহত রেখে চলেছে”।

সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বাংলাদেশ ঘূর্ণিঝড় ও বন্যার মতো মারাত্মক প্রাকৃতিক দুর্যোগের শিকার হয়েছে। বাংলাদেশের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত বড় এবং ছোট নদীগুলি ব্যবহার করে বাংলাদেশের একটি উন্নত জল পরিবহন ব্যবস্থা রয়েছে। তাছাড়াও সমুদ্র ও অভ্যন্তরীণ জলভাগে সক্রিয়ভাবে মৎস্য চাষ করা হয়ে থাকে। বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ জলভাগ এবং সামুদ্রিক অঞ্চলগুলিতে বড় প্রাকৃতিক দুর্যোগ এবং জাহাজ দুর্ঘটনার ঘটনা ঘটেছে, যার ফলে উল্লেখযোগ্যভাবে সাধারণ মানুষ, জেলে এবং নাবিকরা দুর্ভোগের শিকার হয়েছে।

এই ধারাবাহিকতায়, প্রকল্পটি দুর্যোগজনিত ত্রাণ ও উদ্ধার অভিযান ব্যবস্থা গড়ে তোলার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করবে। ১৯৯৪ সালে বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড প্রতিষ্ঠার পূর্বে, জাপান সরকার অনুদান সহায়তার মাধ্যমে বাংলাদেশকে ৪৯টি বোট প্রদান করেছিল, তবে এই প্রথমবারের মতো জাপান বাংলাদেশ কোস্ট গার্ডকে সহায়তা দিয়েছে। বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চলে জলদস্যুতা ও মানব পাচারের বিরুদ্ধে লড়াই, এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় উপকূলীয় এলাকায় জরুরি অভিযান ও উদ্ধার অভিযান পরিচালনা করার মতো বাংলাদেশ কোস্ট গার্ডের ব্যাপক পরিসরের দায়িত্ব রয়েছে। এসব কাজে সহায়তার জন্য রেসকিউ বোট (উদ্ধারকারী নৌযান) গুলো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে বলে আশা ব্যক্ত করা হয়।

বৈশিষ্ট্য ও যান্ত্রিক কাঠামো[সম্পাদনা]

বিসিজি ২০ মিটার-শ্রেণীর রেসকিউ বোটের দৈর্ঘ্য ২০ মিটার (৬৬ ফু), প্রস্হ ৪.৫০ মিটার (১৪.৮ ফু), গভীরতা ১.৫০ মিটার (৪.৯ ফু) এবং ওজন ৪০ টন।

নৌযানে প্রচালনশক্তি হিসেবে রয়েছে:

  • ২টি ৯৬৫ অশ্বশক্তি (৭২০ কিওয়াট) বিশিষ্ট মেরিন ডিজেল ইঞ্জিন (জাপান);
  • ২টি ২১ অশ্বশক্তি (১৬ কিওয়াট) (১,৫০০ আরপিএম) বিশিষ্ট কোহলার ১৭ ইএফওজেডডি জেনারেটর (মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র);
  • ২টি জেডএফ ৩১১এ গিয়ার বক্স (জার্মানি);
  • ২টি ৪ পাখাযুক্ত ফিক্সড পিটচ প্রোপেলার;
  • ২টি শ্যাফট।

নৌযানের সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘন্টায় ২৫ নট (৪৬ কিমি/ঘ; ২৯ মা/ঘ)। এছাড়াও নৌযানসমূহ ৬ জন সদস্য নিয়ে একনাগাড়ে ৭ দিন সি স্টেট-৪ মাত্রায় ৩০০ নটিক্যাল মাইল (৫৬০ কিমি; ৩৫০ মা) বিস্তীর্ণ সমুদ্র এলাকা জুড়ে অভিযান পরিচালনা করতে পারে এবং সি স্টেট-৬ মাত্রা অবধি টিকে থাকতে সক্ষম। বিশেষ প্রয়োজনে নৌযানটি অতিরিক্ত ৩০ জন আরোহী পরিবহনে সক্ষম। সেন্সর এবং কার্যপদ্ধতি হিসেবে রয়েছে:

  • ১টি ফুরুনো ডিআরএস৪ডব্লিউ র‍্যাডার (জাপান);
  • ১টি ডিজিপিএস রিসিভার (মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র);
  • ১টি সাউন্ড ভেলোসিটি প্রোফাইলার (যুক্তরাজ্য);
  • ১টি চৌম্বকীয় কম্পাস (জাপান);
  • ১টি জিপিএস রিসিভার (ফুরুনো);
  • ১টি ইকো সাউন্ডার (কোডেন);
  • ১টি রাডার অ্যাঙ্গেল ইন্ডিকেটর;
  • ১টি ভিএইচএফ সেট (আইকম);
  • ৩টি ভিএইচএফ ওয়াকিটকি সেট (আইকম/মটোরোলা)।

জাহাজের কর্মকর্তা এবং নাবিকদের জন্য রয়েছে:

  • ১টি কেবিন (কর্মকর্তার জন্য);
  • ১টি কেবিন (নাবিকদের জন্য- ৪টি বেডসহ);
  • ১টি কেবিন (অতিথিদের জন্য)।

প্রতিটি কেবিন রান্না, খাবার এবং বিনোদনের জন্য উপযুক্ত আসবাবপত্র এবং জিনিসপত্র সহ সজ্জিত।

জাহাজসমূহ[সম্পাদনা]

 বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড
 পরিচিতি সংখ্যা   নাম   নির্মাতা   নির্মাণ শুরু   হস্তান্তর   সংযোজন   অবস্থা 
সক্রিয় (৪টি)
আরবি২০০১ বিসিজিএস রেসকিউ বোট-১ জেএমইউ ইয়োকোহামা শিপইয়ার্ড, জাপান - ৬ ডিসেম্বর, ২০২১ - সক্রিয়
আরবি২০০২ বিসিজিএস রেসকিউ বোট-২
আরবি২০০৩ বিসিজিএস রেসকিউ বোট-৩
আরবি২০০৪ বিসিজিএস রেসকিউ বোট-৪

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "ALL BOATS - BANGLADESH COAST GUARD" (পিডিএফ)coastguard.gov.bd (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০৩-১৮ 
  2. "বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড সাফল্য" (পিডিএফ)coastguard.portal.gov.bd। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০৩-১৮ 
  3. "Signing Grant Agreement on "the Project for Improvement of Rescue Capacities in the Coastal and Inland Waters"!/無償資金協力「 沿岸及び内陸水域における救助能力強化計画」締結!"www.JICA Bangladesh facebook.com। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০৩-২৩ 
  4. "On 6th December, the handing over ceremony of rescue boats on Japanese Grant Aid was held at the Bangladesh Coast Guard base in Chattogram."www.JICA Bangladesh facebook.com। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০৩-২৩ 
  5. "24 JICA boats were handed over for the rescue operations of the Bangladesh Coast Guard. This is part of Japan's practical cooperation to realize the vision of a Free and Open Indo-Pacific. チッタゴンで、バングラデシュ沿岸警備隊に対する24隻の救命艇の引渡し式に出席しました。日本の無償資金協力です。"www.facebook.com। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০৩-২৩ 
  6. "Japan provides rescue boats to Bangladesh Coast Guard / জাপান সরকার এর পক্ষ থেকে বাংলাদেশ কোস্টগার্ডকে রেসকিউ বোট প্রদান"www.Embassy of Japan in Bangladesh facebook.com। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০৩-২৩ 
  7. "PREPARATORY SURVEY REPORT ON OF RESCUE CAPACITIES THE PROJECT FOR IMPROVEMENT AT THE COASTAL AND INLAND WATERS IN THE PEOPLE'S REPUBLIC OF BANGLADESH, February 2018" (পিডিএফ)openjicareport.jica.go.jp (ইংরেজি ভাষায়)। 
  8. "বাংলাদেশ কোস্টগার্ডকে জাপানের উপহার | Chittagong News | Bangladesh Coast Guard | Somoy TV" 
  9. "চট্টগ্রামে কোস্ট গার্ডকে ১৪টি বোট উপহার হিসেবে দিচ্ছে জাইকা | JICA Gift | Chattogram Coast Guard" 
  10. "バングラデシュ沿岸警備隊向け 救助艇の海上公試 Bangladesh Coast Guard Rescue Boat" 
  11. "World's Fastest Coastal RESCUE BOAT In Action | RB2002 Fast Rescue Craft | Bangladesh Coast Guard" 
  12. "বাংলাদেশ কোস্টগার্ড এর রেস্কিউ বোট RB 2002 ও পেট্রোল বোট P 114 এর ছুটে চলা" 
  13. "বরিশালের কীর্তনখোলা নদী দিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ কোস্ট গার্ডের ভেসেল| ✅ বরিশালের কীর্তনখোলা নদী দিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ কোস্ট গার্ডের ভেসেল| By Travel with Launch - লঞ্চ ভ্রমণFacebook"। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০৩-২৭ 
  14. "বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড-এর মহাপরিচালক রিয়ার এডমিরাল আশরাফুল হক চৌধুরী, এনডিইউ, এএফডব্লিউসি, পিএসসি পশুর নদীতে কোস্ট গার্ডের আধুনিকায়নে নতুনভাবে সংযোজিত Oil... | By Khulna TimesFacebook"