বিসিজিএস ডাইভিং বোট-১

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
খুলনা শিপইয়ার্ড লিমিটেড এ নির্মাণাধীন বিসিজিএস ডাইভিং বোট-১
ইতিহাস
বাংলাদেশ
নাম: বিসিজিএস ডাইভিং বোট-১
নির্মাণাদেশ: ২৩ এপ্রিল, ২০১৯
নির্মাতা: খুলনা শিপইয়ার্ড লিমিটেড
নির্মাণের সময়: ২০ জুন, ২০১৯
অভিষেক: ২৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২২
কমিশন লাভ: ২১ জুন, ২০২৩
শনাক্তকরণ: ডিবি-১
অবস্থা: সক্রিয়
সাধারণ বৈশিষ্ট্য
প্রকার ও শ্রেণী: বিসিজি হাইস্পিড ডাইভিং অ্যান্ড ফেরি বোট
প্রকার: ডাইভিং বোট
ওজন: ৫১.১১ টন
দৈর্ঘ্য: ২০.৫০ মিটার (৬৭.৩ ফু)
প্রস্থ: ৬ মিটার (২০ ফু)
ড্রাফট: ১.২০ মিটার (৩.৯ ফু)
গভীরতা: ২.৩০ মিটার (৭.৫ ফু)
প্রচালনশক্তি:
  • ২ × ৪৭৮ অশ্বশক্তি (৩৫৬ কিওয়াট) ইয়ানমার ডিজেল ইঞ্জিন (জাপান);
  • ২ × ৩৬৮ অশ্বশক্তি (২৭৪ কিওয়াট) ইয়ানমার জেনারেটর (জাপান)
গতিবেগ: ১৮ নট (৩৩ কিমি/ঘ; ২১ মা/ঘ)
সীমা: ৩৫০ নটিক্যাল মাইল (৬৫০ কিমি; ৪০০ মা)
যান্ত্রিক যুদ্ধাস্ত্র
ও ফাঁদ:
  • ১ × ফুরুনো ডিআরএস৪ডব্লিউ র‍্যাডার (জাপান);
  • ১ × হাল মাউনন্টেড মাল্টি-বিম ইকো সাউন্ডার (মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র);
  • ১ × হাল মাউনন্টেড সিঙ্গেল-বিম ইকো সাউন্ডার (মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র);
  • ১ × ডিজিপিএস রিসিভার (মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র);
  • ১ × সাউন্ড ভেলোসিটি প্রোফাইলার (যুক্তরাজ্য);
  • ১ × মাল্টিরোল ডিসপ্লে সহ নেভিগেশন র‍্যাডার (জাপান);
  • ১ × চৌম্বকীয় কম্পাস (জাপান);
  • ১ × জিপিএস রিসিভার (ফুরুনো);
  • ১ × ইকো সাউন্ডার (কোডেন);
  • ১ × রাডার অ্যাঙ্গেল ইন্ডিকেটর;
  • ১ × ভিএইচএফ সেট (আইকম);
  • ৩ × ভিএইচএফ ওয়াকিটকি সেট (আইকম/মটোরোলা)
টীকা:
  • ডাইভার লঞ্চিং এবং রিকভারি সিস্টেম (এলআরএস);
  • আন্ডারওয়াটার মেটাল ডিটেক্টর;
  • আন্ডারওয়াটার ডাইভার ট্র্যাকিং সিস্টেম;
  • আন্ডারওয়াটার ডিজিটাল ভিডিও ক্যামেরা, তারযুক্ত মনিটর;

বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড জাহাজ (শিপ) (সংক্ষেপেঃ বিসিজিএস) ডাইভিং বোট-১ বাংলাদেশ কোস্ট গার্ডের বিসিজি হাইস্পিড ডাইভিং অ্যান্ড ফেরি বোট-শ্রেণীর একটি ডুবুরি সহায়ক নৌযান। এটি দেশীয় প্রযুক্তিতে খুলনা শিপইয়ার্ডে নির্মাণ করা হয়। উক্ত নৌযানটি সামুদ্রিক এবং উপকূলীয় অঞ্চলে ডুবুরিদের অপারেশন্স এবং প্রশিক্ষণে সহায়তা করা ছাড়াও ডাইভিং ট্রিটমেন্ট ইত্যাদি নানাবিধ কার্যক্রমসহ কোস্ট গার্ডের সার্বিক অপারেশনাল কাজে সহযোগিতা করতে সক্ষম। এছাড়াও জাহাজগুলি দুর্যোগ কালীন সময়ে উদ্ধার অভিযান পরিচালনা ও দুর্যোগ পরবর্তী ত্রাণ তৎপরতা কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করে।[১][২][৩][৪][৫][৬][৭][৮][৯]

ইতিহাস[সম্পাদনা]

বাংলাদেশ কোস্ট গার্ডের জন্য গৃহীত দীর্ঘমেয়াদী আধুনিকায়ন পরিকল্পনার অংশ হিসেবে বাংলাদেশ সরকার দেশীয় উৎস থেকে সমরাস্ত্র সংগ্রহ বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। এনহ্যান্সমেন্ট অব অপারেশনাল ক্যাপাবিলিটি অব বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় ২টি হাইস্পিড ডাইভিং বোট ও ২টি হাইস্পিড ফেরি বোট নির্মাণের নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয়। এরই ধারাবাহিকতায় ২৩ এপ্রিল, ২০১৯ সালে বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড এবং খুলনা শিপইয়ার্ড লিমিটেড এর মধ্যকার জাহাজ নির্মাণ সংক্রান্ত চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। পরবর্তীতে দেশীয় প্রতিষ্ঠান এমআরজেড ইন্টারন্যাশনাল, ঢাকা এবং খুলনা শিপইয়ার্ড এর মধ্যে জাহাজ নির্মাণ প্রকল্পের নকশা ও সরঞ্জাম সরবরাহ ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। ২০ জুন, ২০১৯ সালে খুলনা শিপইয়ার্ড প্রাঙ্গনে এক অনুষ্ঠানে কিল লেয়িং এর মাধ্যমে নির্মাণ কাজের আনুষ্ঠানিক সূচনা করা হয়। উক্ত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জনাব মোস্তাফা কামাল উদ্দীন সচিব, জননিরাপত্তা বিভাগ, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং বিশেষ অতিথি রিয়ার এডমিরাল এম আশরাফুল হক এনইউপি, এনডিসি, এএফডব্লিউসি, পিএসসি মহাপরিচালক বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড বাহিনী। হাল নির্মাণ কার্যক্রম শেষে ২৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২২ সালে বিসিজিএস ডাইভিং বোট-১ এর লঞ্চিং সম্পন্ন করা হয়। অবশেষে ২১ জুন, ২০২৩ সালে নৌযানটি কোস্ট গার্ড বহরে কমিশন করা হয়। আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন ফ্রান্স ভিত্তিক ক্লাসিফিকেশন সোসাইটি ব্যুরো ভ্যারিটাস (বিভি) এর নীতিমালা অনুসরন করে নৌযানটি নির্মাণ করা হয়।

বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকাগুলো এ দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। জলদস্যুতা, চোরাচালান, মাদক চোরাচালান এবং সামুদ্রিক দূষণ রোধের মাধ্যমে দেশের উপকূলীয় অঞ্চলের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড রক্ষায় বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। নির্মিত এইচপিবি নৌযানটি এই ভূমিকাসমূহ সম্পাদন করতে কার্যকর হবে৷ নৌযানটির কার্যকরী সমুদ্র-রক্ষণ ক্ষমতা থাকার পাশাপাশি উপকূল এবং সৈকতের কাছাকাছি অগভীর জলে কাজ করার সক্ষমতা রয়েছে। এছাড়াও, নৌযানটি উপকূলীয় অঞ্চলে গুরুতর প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় ত্রাণ ও উদ্ধার অভিযান পরিচালনায় সহায়তা করতে সক্ষম।

বৈশিষ্ট্য ও যান্ত্রিক কাঠামো[সম্পাদনা]

বিসিজিএস ডাইভিং বোট-১ নৌযানটির দৈর্ঘ্য ২০.৫০ মিটার (৬৭.৩ ফু), প্রস্হ ৬ মিটার (২০ ফু), গভীরতা ২.৩০ মিটার (৭.৫ ফু) এবং ওজন ৫১.১১ টন।

নৌযানটিতে প্রচালনশক্তি হিসেবে রয়েছে:

  • ২টি ৪৭৮ অশ্বশক্তি (৩৫৬ কিওয়াট) বিশিষ্ট ইয়ানমার ডিজেল ইঞ্জিন (জাপান);
  • ২টি ৩৬৮ অশ্বশক্তি (২৭৪ কিওয়াট) বিশিষ্ট ইয়ানমার জেনারেটর (জাপান)।

নৌযানটির সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘন্টায় ১৮ নট (৩৩ কিমি/ঘ; ২১ মা/ঘ)। এছাড়াও নৌযানটি সি স্টেট-৪ মাত্রায় ৩৫০ নটিক্যাল মাইল (৬৫০ কিমি; ৪০০ মা) বিস্তীর্ণ সমুদ্র এলাকা জুড়ে অভিযান পরিচালনা করতে পারে এবং সি স্টেট-৬ মাত্রা অবধি টিকে থাকতে সক্ষম। সেন্সর এবং কার্যপদ্ধতি হিসেবে রয়েছে:

  • ১টি ফুরুনো ডিআরএস৪ডব্লিউ র‍্যাডার (জাপান);
  • ১টি হাল মাউনন্টেড মাল্টি-বিম ইকো সাউন্ডার (মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র);
  • ১টি হাল মাউনন্টেড সিঙ্গেল-বিম ইকো সাউন্ডার (মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র);
  • ১টি ডিজিপিএস রিসিভার (মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র);
  • ১টি সাউন্ড ভেলোসিটি প্রোফাইলার (যুক্তরাজ্য);
  • ১টি চৌম্বকীয় কম্পাস (জাপান);
  • ১টি জিপিএস রিসিভার (ফুরুনো);
  • ১টি ইকো সাউন্ডার (কোডেন);
  • ১টি রাডার অ্যাঙ্গেল ইন্ডিকেটর;
  • ১টি ভিএইচএফ সেট (আইকম);
  • ৩টি ভিএইচএফ ওয়াকিটকি সেট (আইকম/মটোরোলা)।

নৌযানের কর্মকর্তা এবং নাবিকদের জন্য রয়েছে:

  • ১টি কেবিন (কর্মকর্তার জন্য);
  • ১টি কেবিন (নাবিকদের জন্য- ৪টি বেডসহ);
  • ১টি কেবিন (অতিথিদের জন্য)।

প্রতিটি কেবিন রান্না, খাবার এবং বিনোদনের জন্য উপযুক্ত আসবাবপত্র এবং জিনিসপত্র সহ সজ্জিত।

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "02 x Diving Boat BCG – Khulna Shipyard Ltd" (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০৩-২২ 
  2. "বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড বাহিনীর ৩টি ইনসোর প্যাট্রোল ভেসেল এর হস্তান্তর এবং ৪টি হাইস্পিড ফেরি ও ডাইভিং-এর কিল লেয়িং" (পিডিএফ)khulnashipyard.com 
  3. "বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড বাহিনীর ৩টি ইনসোর প্যাট্রোল ভেসেল এর হস্তান্তর এবং ২টি হাইস্পিড বোট (ফেরি) ও ২টি হাইস্পিড বোট (ডাইভিং)- এর কিল লেয়িং অনুষ্ঠান"www.khulna shipyard ltd facebook.com। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০৩-২২ 
  4. "খুলনা শিপইয়ার্ড কর্তৃক নির্মিত বাংলাদেশ কোস্টগার্ডের ডাইভিং বোট লঞ্চিং অনুষ্ঠান"www.khulna shipyard ltd facebook.com। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০৩-২২ 
  5. "বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড সাফল্য" (পিডিএফ)coastguard.portal.gov.bd। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০৩-১৮ 
  6. "বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড-এর চলমান উন্নয়ন প্রকল্পের অগ্রগতি" (পিডিএফ)coastguard.portal.gov.bd। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০৩-১৮ 
  7. "ALL BOATS - BANGLADESH COAST GUARD" (পিডিএফ)বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০৩-১৮ 
  8. "কোস্ট গার্ড-এর জন্য আরো ৪টি বিশেষায়িত নৌযান নির্মাণের গৌরব অর্জন করল খুলনা শিপইয়ার্ড"দৈনিক ইনকিলাব। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০৩-২২ 
  9. Diganta, Probashir (২০১৯-০৬-২১)। "খুলনা কোস্ট গার্ডের কাছে শিপইয়ার্ডের ইনসোর প্যাট্রোল ভেসেল হস্তান্তর"প্রবাসীর দিগন্ত। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০৩-২২