আবু হোসেন সরকার: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
WikitanvirBot (আলোচনা | অবদান)
বট বানান ঠিক করছে, কোনো সমস্যায় তানভিরের আলাপ পাতায় বার্তা রাখুন
NahidSultanBot (আলোচনা | অবদান)
বট নিবন্ধ পরিষ্কার করেছে
৩১ নং লাইন: ৩১ নং লাইন:


==জন্ম ও শিক্ষা ==
==জন্ম ও শিক্ষা ==
আবু হোসেন সরকার ১৮৯৪ সালে রংপুরে জন্মগ্রহণ করেন।কৈশোরে স্বদেশী আন্দোলনে সক্রিয় অংশগ্রহণের ফলে তাঁর পড়াশোনা ব্যাহত হয় এবং আন্দোলনকালে তিনি গ্রেফতার হন (১৯১১)। ১৯১৫ সালে তিনি প্রবেশিকা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। স্নাতক ও বি.এল ডিগ্রি লাভের পর তিনি রংপুর জেলা কোর্টে আইন ব্যবসা শুরু করেন।<ref>http://bn.banglapedia.org/index.php?title=সরকার,_আবু_হোসেন&oldid=19247</ref>
আবু হোসেন সরকার ১৮৯৪ সালে রংপুরে জন্মগ্রহণ করেন।কৈশোরে স্বদেশী আন্দোলনে সক্রিয় অংশগ্রহণের ফলে তাঁর পড়াশোনা ব্যাহত হয় এবং আন্দোলনকালে তিনি গ্রেফতার হন (১৯১১)। ১৯১৫ সালে তিনি প্রবেশিকা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। স্নাতক ও বি.এল ডিগ্রি লাভের পর তিনি রংপুর জেলা কোর্টে আইন ব্যবসা শুরু করেন।<ref name="bn.banglapedia.org">http://bn.banglapedia.org/index.php?title=সরকার,_আবু_হোসেন&oldid=19247</ref>


==রাজনৈতিক জীবন==
==রাজনৈতিক জীবন==
৩৭ নং লাইন: ৩৭ নং লাইন:
একজন কংগ্রেস কর্মী হিসেবে আবু হোসেন সরকার জাতিয় আন্দোলনে সক্রিয় অংশগ্রহণ করেন এবং কয়েকবার কারাবরণ করেন। কংগ্রেস নেতাদের সংগে কিছু মতবিরোধের কারণে তিনি কংগ্রেসের রাজনীতি ত্যাগ করে ১৯৩৫ সালে এ.কে ফজলুল হক-এর কৃষক-প্রজা পার্টিতে যোগ দেন। কৃষক-প্রজা পার্টির প্রার্থী হিসেবে তিনি ১৯৩৭ সালে বঙ্গীয় আইনসভার সদস্য নির্বাচিত হন। এ.কে ফজলুল হকের নেতৃত্বে ১৯৫৩ সালে কৃষক শ্রমিক পার্টি গঠনে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। আবু হোসেন সরকার যুক্তফ্রন্টের প্রার্থী হিসেবে ১৯৫৪ সালে পূর্ব বাংলা প্রাদেশিক পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন। তিনি ১৯৫৫ সালে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী চৌধুরীর কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় স্বাস্থ্যমন্ত্রী ছিলেন।
একজন কংগ্রেস কর্মী হিসেবে আবু হোসেন সরকার জাতিয় আন্দোলনে সক্রিয় অংশগ্রহণ করেন এবং কয়েকবার কারাবরণ করেন। কংগ্রেস নেতাদের সংগে কিছু মতবিরোধের কারণে তিনি কংগ্রেসের রাজনীতি ত্যাগ করে ১৯৩৫ সালে এ.কে ফজলুল হক-এর কৃষক-প্রজা পার্টিতে যোগ দেন। কৃষক-প্রজা পার্টির প্রার্থী হিসেবে তিনি ১৯৩৭ সালে বঙ্গীয় আইনসভার সদস্য নির্বাচিত হন। এ.কে ফজলুল হকের নেতৃত্বে ১৯৫৩ সালে কৃষক শ্রমিক পার্টি গঠনে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। আবু হোসেন সরকার যুক্তফ্রন্টের প্রার্থী হিসেবে ১৯৫৪ সালে পূর্ব বাংলা প্রাদেশিক পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন। তিনি ১৯৫৫ সালে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী চৌধুরীর কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় স্বাস্থ্যমন্ত্রী ছিলেন।


আবু হোসেন সরকার ১৯৫৫ সালের জুন থেকে ১৯৫৬ সালের আগস্ট মাস পর্যন্ত পূর্ব বাংলার মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন। তাঁর সরকারের বিভিন্ন কর্মকান্ডের মধ্যে সর্বাধিক উল্লেখযোগ্য ছিল একুশে ফেব্রুয়ারিকে শহীদ দিবস হিসেবে স্বীকৃতি দান ও সরকারি ছুটির দিন ঘোষণা, ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হোস্টেল প্রাঙ্গণে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের ভিত্তি স্থাপন এবং বাংলা একাডেমী প্রতিষ্ঠা। ১৯৫৬ সালের মাঝামাঝি সময়ে আকস্মিকভাবে খাদ্যদ্রব্যের মূল্য বৃদ্ধি পায় এবং বাজারে খাদ্যশস্যের ঘাটতি দেখা যায়। সরকার কর্তৃক খাদ্যশস্যের রেশনিং ব্যবস্থা রহিত করার ফলেই এই অবস্থার সৃষ্টি হয় বলে অনেকে অভিযোগ করেন। দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে আগস্ট মাসের শেষে ঢাকার রাজপথে এক বিশাল ভূখা মিছিল বের হলে সঙ্গে সঙ্গে তিনি মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করেন (৩০ আগস্ট ১৯৫৬)আবু হোসেন সরকার ১৯৫৬ থেকে ১৯৫৮ সাল পর্যন্ত পূর্ব পাকিস্তানের প্রাদেশিক পরিষদে বিরোধী সংসদীয় দলের নেতা এবং কৃষক-শ্রমিক পার্টির সভাপতি ছিলেন। আইয়ুব খানের সামরিক সরকার তাঁর উপর নির্বাচনী নিষেধাজ্ঞা (এবডো) আরোপ করে। হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর নেতৃত্বে ১৯৬২ সালে ন্যাশনাল ডেমোক্র্যাটিক ফ্রন্ট (এনডিএফ) গঠনে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন এবং দেশে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেন।<ref>http://bn.banglapedia.org/index.php?title=সরকার,_আবু_হোসেন&oldid=19247</ref>
আবু হোসেন সরকার ১৯৫৫ সালের জুন থেকে ১৯৫৬ সালের আগস্ট মাস পর্যন্ত পূর্ব বাংলার মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন। তাঁর সরকারের বিভিন্ন কর্মকান্ডের মধ্যে সর্বাধিক উল্লেখযোগ্য ছিল একুশে ফেব্রুয়ারিকে শহীদ দিবস হিসেবে স্বীকৃতি দান ও সরকারি ছুটির দিন ঘোষণা, ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হোস্টেল প্রাঙ্গণে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের ভিত্তি স্থাপন এবং বাংলা একাডেমী প্রতিষ্ঠা। ১৯৫৬ সালের মাঝামাঝি সময়ে আকস্মিকভাবে খাদ্যদ্রব্যের মূল্য বৃদ্ধি পায় এবং বাজারে খাদ্যশস্যের ঘাটতি দেখা যায়। সরকার কর্তৃক খাদ্যশস্যের রেশনিং ব্যবস্থা রহিত করার ফলেই এই অবস্থার সৃষ্টি হয় বলে অনেকে অভিযোগ করেন। দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে আগস্ট মাসের শেষে ঢাকার রাজপথে এক বিশাল ভূখা মিছিল বের হলে সঙ্গে সঙ্গে তিনি মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করেন (৩০ আগস্ট ১৯৫৬)আবু হোসেন সরকার ১৯৫৬ থেকে ১৯৫৮ সাল পর্যন্ত পূর্ব পাকিস্তানের প্রাদেশিক পরিষদে বিরোধী সংসদীয় দলের নেতা এবং কৃষক-শ্রমিক পার্টির সভাপতি ছিলেন। আইয়ুব খানের সামরিক সরকার তাঁর উপর নির্বাচনী নিষেধাজ্ঞা (এবডো) আরোপ করে। হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর নেতৃত্বে ১৯৬২ সালে ন্যাশনাল ডেমোক্র্যাটিক ফ্রন্ট (এনডিএফ) গঠনে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন এবং দেশে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেন।<ref name="bn.banglapedia.org"/>


==মৃত্যু==
==মৃত্যু==


আবু হোসেন সরকার ১৯৬৯ সালের ১৭ এপ্রিল ঢাকায় মৃত্যুবরণ করেন।<ref>http://bn.banglapedia.org/index.php?title=সরকার,_আবু_হোসেন&oldid=19247</ref>
আবু হোসেন সরকার ১৯৬৯ সালের ১৭ এপ্রিল ঢাকায় মৃত্যুবরণ করেন।<ref name="bn.banglapedia.org"/>


== তথ্য সূত্র ==
== তথ্য সূত্র ==

১৮:৫০, ২৮ অক্টোবর ২০১৬ তারিখে সংশোধিত সংস্করণ

আবু হোসেন সরকার
জন্ম১৮৯৪
মৃত্যু২৭ এপ্রিল, ১৯৬৯
পেশারাজনীতি

আবু হোসেন সরকার (জন্ম: ১৮৯৪ ইং - মৃত্যু: ১৯৬৯ সালের ২৭ এপ্রিল) পূর্ব পাকিস্তানের সাবেক জাতিয় পরিষদের সদস্য ছিলেন।[১]

জন্ম ও শিক্ষা

আবু হোসেন সরকার ১৮৯৪ সালে রংপুরে জন্মগ্রহণ করেন।কৈশোরে স্বদেশী আন্দোলনে সক্রিয় অংশগ্রহণের ফলে তাঁর পড়াশোনা ব্যাহত হয় এবং আন্দোলনকালে তিনি গ্রেফতার হন (১৯১১)। ১৯১৫ সালে তিনি প্রবেশিকা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। স্নাতক ও বি.এল ডিগ্রি লাভের পর তিনি রংপুর জেলা কোর্টে আইন ব্যবসা শুরু করেন।[২]

রাজনৈতিক জীবন

একজন কংগ্রেস কর্মী হিসেবে আবু হোসেন সরকার জাতিয় আন্দোলনে সক্রিয় অংশগ্রহণ করেন এবং কয়েকবার কারাবরণ করেন। কংগ্রেস নেতাদের সংগে কিছু মতবিরোধের কারণে তিনি কংগ্রেসের রাজনীতি ত্যাগ করে ১৯৩৫ সালে এ.কে ফজলুল হক-এর কৃষক-প্রজা পার্টিতে যোগ দেন। কৃষক-প্রজা পার্টির প্রার্থী হিসেবে তিনি ১৯৩৭ সালে বঙ্গীয় আইনসভার সদস্য নির্বাচিত হন। এ.কে ফজলুল হকের নেতৃত্বে ১৯৫৩ সালে কৃষক শ্রমিক পার্টি গঠনে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। আবু হোসেন সরকার যুক্তফ্রন্টের প্রার্থী হিসেবে ১৯৫৪ সালে পূর্ব বাংলা প্রাদেশিক পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন। তিনি ১৯৫৫ সালে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী চৌধুরীর কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় স্বাস্থ্যমন্ত্রী ছিলেন।

আবু হোসেন সরকার ১৯৫৫ সালের জুন থেকে ১৯৫৬ সালের আগস্ট মাস পর্যন্ত পূর্ব বাংলার মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন। তাঁর সরকারের বিভিন্ন কর্মকান্ডের মধ্যে সর্বাধিক উল্লেখযোগ্য ছিল একুশে ফেব্রুয়ারিকে শহীদ দিবস হিসেবে স্বীকৃতি দান ও সরকারি ছুটির দিন ঘোষণা, ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হোস্টেল প্রাঙ্গণে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের ভিত্তি স্থাপন এবং বাংলা একাডেমী প্রতিষ্ঠা। ১৯৫৬ সালের মাঝামাঝি সময়ে আকস্মিকভাবে খাদ্যদ্রব্যের মূল্য বৃদ্ধি পায় এবং বাজারে খাদ্যশস্যের ঘাটতি দেখা যায়। সরকার কর্তৃক খাদ্যশস্যের রেশনিং ব্যবস্থা রহিত করার ফলেই এই অবস্থার সৃষ্টি হয় বলে অনেকে অভিযোগ করেন। দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে আগস্ট মাসের শেষে ঢাকার রাজপথে এক বিশাল ভূখা মিছিল বের হলে সঙ্গে সঙ্গে তিনি মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করেন (৩০ আগস্ট ১৯৫৬)আবু হোসেন সরকার ১৯৫৬ থেকে ১৯৫৮ সাল পর্যন্ত পূর্ব পাকিস্তানের প্রাদেশিক পরিষদে বিরোধী সংসদীয় দলের নেতা এবং কৃষক-শ্রমিক পার্টির সভাপতি ছিলেন। আইয়ুব খানের সামরিক সরকার তাঁর উপর নির্বাচনী নিষেধাজ্ঞা (এবডো) আরোপ করে। হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর নেতৃত্বে ১৯৬২ সালে ন্যাশনাল ডেমোক্র্যাটিক ফ্রন্ট (এনডিএফ) গঠনে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন এবং দেশে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেন।[২]

মৃত্যু

আবু হোসেন সরকার ১৯৬৯ সালের ১৭ এপ্রিল ঢাকায় মৃত্যুবরণ করেন।[২]

তথ্য সূত্র