ফ্রাঙ্ক ডাকওয়ার্থ
ফ্রাঙ্ক কার্টার ডাকওয়ার্থ | |
---|---|
জন্ম | |
পেশা | পরিসংখ্যানবিদ |
পরিচিতির কারণ | ডাকওয়ার্থ-লুইস পদ্ধতি, ঝুঁকি ধারণা |
ফ্রাঙ্ক কার্টার ডাকওয়ার্থ, এমবিই (ইংরেজি: Frank Carter Duckworth; (২৬ ডিসেম্বর ১৯৩৯-২১ জুন ২০২৪) [১]ইংল্যান্ডের ল্যাঙ্কাশায়ারের লিথাম সেন্ট অ্যানেজ এলাকায় জন্মগ্রহণকারী অবসরপ্রাপ্ত পরিসংখ্যানবিদ। তবে তিনি বৈশ্বিক পরিমণ্ডলে ফ্রাঙ্ক ডাকওয়ার্থ নামেই সবিশেষ পরিচিত। বিখ্যাত হয়ে আছেন আরেক ইংরেজ পরিসংখ্যানবিদ টনি লুইসকে নিয়ে যৌথভাবে প্রণীত ডাকওয়ার্থ-লুইস পদ্ধতি প্রবর্তনের মাধ্যমে। এরফলে বৃষ্টি, আলোকস্বল্পতা কিংবা অন্য কোন কারণে একদিনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেট অথবা টুয়েন্টি২০ ক্রিকেট খেলায় বিঘ্ন পরিবেশে সময়ের সাথে তাল মিলিয়ে নতুন করে জয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণের প্রচলিত পদ্ধতিগুলোকে আরো উন্নততর করার মাধ্যমে ফলাফল নির্ধারণ করা সম্ভবপর হয়েছে।[২][৩]
প্রারম্ভিক জীবন
[সম্পাদনা]২৬ ডিসেম্বর, ১৯৩৯ তারিখে ল্যাঙ্কাশায়ারের লিথ্যাম সেন্ট অ্যানেজ এলাকায় ফ্রাঙ্ক ডাকওয়ার্থ জন্মগ্রহণ করেন।[৪] তিনি ১৯৬১ সালে পদার্থবিজ্ঞানে স্নাতক সম্মান শ্রেণীতে অধ্যয়ন করেন। এরপর ১৯৬৫ সালে লিভারপুল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ধাতু বিদ্যায় পিএইচডি ডিগ্রী লাভ করেন।[৫] অবসরগ্রহণের পূর্বে তিনি ইংল্যান্ডের একটি পারমাণবিক শক্তি উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানে গণিতজ্ঞ হিসেবে কর্মজীবন অতিবাহিত করেন।[৬]
কর্মজীবন
[সম্পাদনা]ফ্রাঙ্ক ডাকওয়ার্থ আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিলের পরিসংখ্যানবিষয়ক পরামর্শকের দায়িত্ব পালন করেন।[৭][৮] এছাড়াও তিনি রয়্যাল স্ট্যাটিসটিক্যাল সোসাইটি থেকে প্রকাশিত সংবাদভিত্তিক পাক্ষিক আরএসএস নিউজের সম্পাদক।[৯] ২০১০ সালের পূর্ব-পর্যন্ত সিগনিফিক্যান্স সাময়িকীর সম্পাদকীয় পরিষদেরও দায়িত্বে ছিলেন। এছাড়া, তিনি ব্যক্তিগত ঝুঁকি ধারণা বিষয়ের মানোন্নয়নের জন্যেও পরিচিত হয়ে আছেন।[১০] এ বিষয়টি বর্তমানে 'ডাকওয়ার্থ স্কেল' নামে বৈশ্বিকভাবে পরিচিত।[১১]
ডাকওয়ার্থ-লুইস পদ্ধতি
[সম্পাদনা]১৯৮০-এর দশকে ফ্রাঙ্ক ডাকওয়ার্থ হিসাব-নিকাশের জটিল নিয়ম বিষয়ে প্রস্তাবনা করেছিলেন।[১২] ১৯৯২ সালের ক্রিকেট বিশ্বকাপ প্রতিযোগিতা শেষে ধারাভাষ্যকার ক্রিস্টোফার মার্টিন-জেনকিন্স অধিকতর ভালোমানের হিসাব-নিকাশ পদ্ধতির বিষয়ে আলোকপাত করেন।[১২] টনি লুইস ১৯৯২ সালে ‘ফেয়ার প্লে ইন ফাউল ওয়েদার’ শীর্ষক নিবন্ধটি পড়েন ও তারা একত্রে ডাকওয়ার্থ-লুইস পদ্ধতির উদ্ভাবন ঘটান।[১২] পরবর্তীতে, ২০১৪ সালে অস্ট্রেলীয় অধ্যাপক স্টিভেন স্টার্ন এ পদ্ধতিকে আরও সংস্কার করেন। ফলশ্রুতিতে, এর নবনামকরণ ডাকওয়ার্থ-লুইস-স্টার্ন পদ্ধতি রাখা হয়।[১২][১৩]
ডাকওয়ার্থ-লুইস পদ্ধতির প্রথম প্রয়োগ ঘটে ১৯৯৬-৯৭ মৌসুমে জিম্বাবুয়ে বনাম ইংল্যান্ডের মধ্যকার একদিনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেট সিরিজে। ঐ খেলায় জিম্বাবুয়ে ৭ রানে জয়ী (ডি/এল মেথড) হয়।[১৪] ২০০১ সালে ক্রিকেট খেলার নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থা হিসেবে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিল (আইসিসি) এ পদ্ধতিটিকে আনুষ্ঠানিকভাবে গ্রহণ করে। প্রধান মানদণ্ড হিসেবে বৃষ্টিবিঘ্নতাজনিত কারণে ও একদিনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলায় ফলাফলের লক্ষ্যমাত্রা ধার্য্যকরণের হিসাব-নিকাশে এ পদ্ধতির গুরুত্বকে বিশেষভাবে বিবেচনায় আনে আইসিসি।
সম্মাননা
[সম্পাদনা]২০০৪ সালে তিনি রয়্যাল স্ট্যাটিসটিক্যাল সোসাইটি স্কুলে 'লাইজ এন্ড স্ট্যাটিসটিক্স' শিরোনামে নিবন্ধ পাঠ করেন।[১৫] ফ্রাঙ্ক ডাকওয়ার্থ ২০১০ সালে রাণীর জন্মদিনের সম্মানে মেম্বার অব দি অর্ডার অব দ্য ব্রিটিশ এম্পায়ার (এমবিই) মনোনীত হন।[১৬]
তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ অনলাইন, চ্যানেল আই (২০২৪-০৬-২৫)। "মারা গেছেন ক্রিকেট-বৃষ্টি আইনের ডাকওয়ার্থ"। চ্যানেল আই অনলাইন (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০৬-২৬।
- ↑ Longmore, Andrew (১৬ মে ১৯৯৯), "First Night: Duckworth–Lewis: The odd couple getting even with the weather", The Independent, London, সংগ্রহের তারিখ ২ মে ২০১০
- ↑ Richards, Huw (১৮ ফেব্রুয়ারি ২০০৩), "How two statisticians became stars", New York Times, সংগ্রহের তারিখ ২ মে ২০১০ একের অধিক
|work=
এবং|journal=
উল্লেখ করা হয়েছে (সাহায্য) - ↑ "Frank Duckworth — England"। ESPNcricinfo। ESPN। সংগ্রহের তারিখ ৩১ ডিসেম্বর ২০১১।
- ↑ University of Liverpool Alumni Newsletter:Queen's Birthday Honours list 2010, জুলাই ২০১০, ১১ আগস্ট ২০১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা, সংগ্রহের তারিখ ৮ মার্চ ২০১৩
- ↑ The D/L Method in One-day Cricket: Twelve years on ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ৯ জুলাই ২০০৯ তারিখে. Announcement for talk by Duckworth at the Australian National University, 20 February 2009
- ↑ Duckworth to review D/L method, slams Indian rival, MSN, ১৭ জুন ২০০৯, ১৯ জুন ২০০৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা, সংগ্রহের তারিখ ৮ মার্চ ২০১৩
- ↑ "Duckworth, Lewis to attend World Cup Forum in Antigua", Jamaica Observer, ৩ ডিসেম্বর ২০০৫, ৯ জুলাই ২০০৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা, সংগ্রহের তারিখ ৮ মার্চ ২০১৩ .
- ↑ RSS News Editorial Team ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ২৩ ডিসেম্বর ২০০৮ তারিখে, Royal Statistical Society.
- ↑ Ezard, John (১৬ জুলাই ১৯৯৯), "Riskometer measures life's ups and downs", The Guardian, London, সংগ্রহের তারিখ ২ মে ২০১০
- ↑ Belsky, Gary (৮ সেপ্টেম্বর ২০০৮), "Editor's blog", ESPN Magazine
- ↑ ক খ গ ঘ Miller, Andrew (২ এপ্রিল ২০২০)। "Tony Lewis, of Duckworth-Lewis rain-rules fame, dies aged 78"। ESPN Cricinfo। ESPN। সংগ্রহের তারিখ ২ এপ্রিল ২০২০।
- ↑ "Tony Lewis: Cricket statistician of the Duckworth-Lewis method dies aged 78"। BBC Sport। ২ এপ্রিল ২০২০। সংগ্রহের তারিখ ২ এপ্রিল ২০২০।
- ↑ Scorecard of the 2nd ODI between England and Zimbabwe, 1 January 1997, from Cricinfo.
- ↑ RSS Schools Lecture (Guy Lecture) ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ১২ জুলাই ২০০৯ তারিখে and Past RSS Schools Lectures ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ১২ জুলাই ২০০৯ তারিখে, Royal Statistical Society
- ↑ "নং. 59446"। দ্যা লন্ডন গেজেট (সম্পূরক) (ইংরেজি ভাষায়): 15। ১২ জুন ২০১০।