ফেডারেশন হল, কলকাতা

স্থানাঙ্ক: ২২°৩৪′৪৭″ উত্তর ৮৮°২২′২৬″ পূর্ব / ২২.৫৭৯৬১০° উত্তর ৮৮.৩৭৩৮৭৭° পূর্ব / 22.579610; 88.373877
উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
ফেডারেশন হল
Federation Hall
মিলন মন্দির
মানচিত্র
সাধারণ তথ্য
অবস্থাসচল
ঠিকানা২৯৪/২/১ আচার্য প্রফুল্লচন্দ্র রায় রোড, কলকাতা – ৭০০ ০০৯
শহরকলকাতা, পশ্চিমবঙ্গ
দেশভারত
স্থানাঙ্ক২২°৩৪′৪৭″ উত্তর ৮৮°২২′২৬″ পূর্ব / ২২.৫৭৯৬১০° উত্তর ৮৮.৩৭৩৮৭৭° পূর্ব / 22.579610; 88.373877
স্বত্বাধিকারীফেডারেশন হল সোসাইটি
ওয়েবসাইট
https://thefederationhall.org/

ফেডারেশন হল, কলকাতা, কলকাতা মহানগরের একটি আইকনিক ল্যান্ডমার্ক,[১] যা স্বদেশী আন্দোলনের সময় ছিল ভারতের ঐক্য ও সংহতির পীঠস্থান। ১৯০৫ খ্রিস্টাব্দে বঙ্গভঙ্গ আন্দোলনের সময় বাংলার 'অচ্ছেদ্য মিলনের প্রতীক' হিসাবে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর পরিকল্পিত মিলনকেন্দ্র। বর্তমানে এটি 'বঙ্গভঙ্গ বিরোধ গ্রন্থাগার'-সহ একটি সাংস্কৃতিক কেন্দ্র হিসাবে পরিচিত। [২][৩] ২০২২ খ্রিস্টাব্দে 'ফেডারেশন হল' তথা মিলন মন্দির ঐতিহ্যবাহী ভবনের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়। [৪]

ইতিহাস[সম্পাদনা]

পরিকল্পনাকারী-
অখণ্ড বঙ্গভবন তথা ফেডারেশন হলের পরিকল্পনাকারী - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন-
ফেডারেশন হলের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন - আনন্দমোহন বসু

১৯০৫ খ্রিস্টাব্দের ৬ জুলাই বৃটিশ শাসকের 'ভাগ করো এবং শাসন করো' নীতিতে বঙ্গভঙ্গের প্রস্তাব প্রকাশিত হলে হিন্দু-মুসলমান নির্বিশেষে বাংলার সমস্ত মানুষ ক্ষোভ আর প্রতিবাদে ফেটে পড়ে। টাউন হলে তিনটি বিক্ষোভ সভায় বিদেশি শাসন বর্জনে বিদেশি পণ্য, বিচারালয়, স্কুল কলেজ প্রস্তাব নেওয়া হল। এদিকে ব্রিটিশ শাসকের ধংসাত্মক পরিকল্পনার বিরুদ্ধে বিভিন্ন বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ কার্যসূচির সঙ্গে বিক্ষোভকারী ও আন্দোলনকারীদের জন্য এক মিলনকেন্দ্রের প্রয়োজনীতা অনুভব করেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতো বিশিষ্ট জনেরা। [১] ২২ সেপ্টেম্বর টাউন হলের সভায় কলকাতার ২৯৪ আপার সারকুলার রোডে জমি পাওয়া গেল। [৫] রবীন্দ্রনাথ "অখণ্ড বঙ্গ ভবন" (ইউনাইটেড বেঙ্গল বিল্ডিং) প্রতিষ্ঠার প্রস্তাব দিয়েছিলেন। ভগিনী নিবেদিতা, জগদীশচন্দ্র বসু, তারকনাথ পালিত সহ অন্যান্য বিদ্বজনেরা এই প্রস্তাবটিকে উৎসাহের সঙ্গে সমর্থন জানান। পরে অবশ্য ভগিনী নিবেদিতা "মিলন মন্দির" নাম প্রস্তাব করলে বাংলার 'অচ্ছেদ্য মিলনের প্রতীক' টির নাম ‘ফেডারেশন হল’ এর সঙ্গে 'মিলন মন্দির' রাখা হয়।

১৯০৫ খ্রিস্টাব্দের ১৬ অক্টোবর (১৯১২ বঙ্গাব্দের ৩০ আশ্বিন) বিখ্যাত সেই রাখী বন্ধনের দিন সমগ্র কলকাতা অরন্ধন রেখে প্রত্যক্ষ করে সামগ্রিক হরতাল গলি থেকে রাজপথ, গঙ্গার ঘাটে বাঙালির মিলনমেলা, হাতে রাখি আর কণ্ঠে বন্দে মাতরম্‌। গুরুতর অসুস্থ হয়েও আনন্দমোহন বসু বিকাল তিনটায় পঞ্চাশ হাজারের বেশি বাঙালির সমাবেশে মিলন মন্দিরের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। তার লিখিত ভাষণ পাঠ করেন সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়। এই সভায় আরো যারা উপস্থিত ছিলেন, তারা হলেন- গুরুদাস বন্দ্যোপাধ্যায়, অম্বিকাচরণ মজুমদার, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, রাসবিহারী ঘোষ, মতিলাল ঘোষ, ব্রহ্মবান্ধব উপাধ্যায়, মহারাজা মণীন্দ্র চন্দ্র নন্দী, ভূপেন্দ্রনাথ বসু, অশ্বিনীকুমার দত্ত, আচার্য জগদীশচন্দ্র বসু, ঢাকার নবাব আত্তিকুল্লা, লিয়াকত হোসেন, শেখ মুজিবুর রহমান, আবদুল হালিম গজনবী, নাটোরের মহারাজা জগদিন্দ্রনাথ রায়, ডাঃ নীলরতন সরকার, প্রাণকৃষ্ণ আচার্য, সাংবাদিক কৃষ্ণকুমার মিত্র, আচার্য প্রফুল্লচন্দ্র রায়, বিপিনচন্দ্র পাল, শিখ সন্ত কুঁয়ার সিং প্রমুখেরা। অনুষ্ঠান শেষে বাগবাজারে পশুপতি বসুর বাড়িতে সিদ্ধান্ত হয় দেশীয় শিল্পের লক্ষ্যে জাতীয় অর্থভান্ডার গড়া হবে। সেদিনই সত্তর হাজার টাকা সংগৃহীত হয় যার বেশির ভাগটাই ছিল মধ্যবিত্ত ও সাধারণ মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত দান।

১৯৫৩ খ্রিস্টাব্দে ড. প্রমথনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে ফেডারেশন হল সোসাইটি, গ্রন্থাগার ও সভাকক্ষ প্রতিষ্ঠিত হয়। ভারতের ঐক্য ও সংহতির এই পীঠস্থান কলকাতা পৌরসংস্থা ২০০৩ খ্রিস্টাব্দে হেরিটেজ স্বীকৃতি দেয়। পশ্চিমবঙ্গ হেরিটেজ কমিশন ২০২২ খ্রিস্টাব্দের ৮ অক্টোবর ঐতিহ্যবাহী ভবনের মর্যাদা প্রদান করে এবং ১৬ অক্টোবর একটি ফলক স্থাপন করে।[৪]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "Federation Hall, Kolkata"। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০৫-০৮ 
  2. "Federation Hall, Kolkata"। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০৫-০৮ 
  3. "West Bengal: Heritage plaque for Banga Bhanga protest library"। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০৫-০৮ 
  4. "Heritage Plaque Inauguration The Federation Hall Society on 16 10.2022"। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০৫-০৮ 
  5. "কলকাতার কড়চা: অখণ্ড বাংলার প্রতীক"। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০৫-০৮