বিষয়বস্তুতে চলুন

ফা-হিয়েন

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
ফা-হিয়েন
মেরিটাইম এক্সপেরিয়েনশিয়াল মিউজিয়াম ও অ্যাকুয়ারিয়ামে সংরক্ষিত ফা-হিয়েন এবং মার্কো পোলোর ভাস্কর্য
ব্যক্তিগত তথ্য
জন্ম৩৩৭ খ্রিষ্টাব্দ
চীন
মৃত্যু৪২২ খ্রিষ্টাব্দ
ধর্মবৌদ্ধধর্ম
উল্লেখযোগ্য কাজFoguoji (A Record of Buddhistic Kingdoms)
দাইশো-ইন মন্দিরে ফা-হিয়েন

ফা-হিয়েন (ইংরেজি: Fa Xian; প্রথাগত চীনা: 法顯; সরলীকৃত চীনা: 法显; ফিনিন: Fǎxiǎn; also romanized as Fa-Hien or Fa-hsien) (৩৩৭ - ৪২২ খ্রিষ্টাব্দ) প্রথম চৈনিক বৌদ্ধ তীর্থযাত্রী, যিনি মধ্য এশিয়া, ভারত ও শ্রীলঙ্কা ভ্রমণ করে সে সম্পর্কে বর্ণনা লিপিবদ্ধ করে যান। এ যাজকের নামের সঠিক উচ্চারণ সম্ভবত ফাজিয়ান এবং তা ফা-সিয়েন হিসেবেও লেখা হয়। শানশি-র অধিবাসী ফা-হিয়েন মাত্র তিন বছর বয়সে বৌদ্ধ সংঘে যোগ দেন। নবব্রতিত্ব লাভ করার পর ফা-হিয়েনের মনে বৌদ্ধ ধর্মের মঠতান্ত্রিক নীতি সংকলিত গ্রন্থ ‘বিনয় পিটক’-এর সন্ধানে ভারতে আসার ইচ্ছা জাগ্রত হয়। ৩৯৯ খ্রিষ্টাব্দে তিনি যখন ভারতের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করেন তখন তার বয়স সম্ভবত ৬৪ বছর।

মধ্য এশিয়া ও উত্তর-পশ্চিম ভারতে পরিভ্রমণ করে ফা-হিয়েন উত্তর ভারতে উপস্থিত হন। এরপর তিনি একে একে গঙ্গা উপত্যকায় বৌদ্ধ সংস্কৃতির বিভিন্ন পবিত্র স্থান দর্শন করেন। এগুলি হলো: বুদ্ধের জন্মভূমি কপিলাবস্তু; বুদ্ধগয়া, যেখানে তিনি দিব্যজ্ঞান লাভ করেন; সারনাথ, যেখানে বুদ্ধ তার প্রথম ধর্মোপদেশ প্রদান করেন এবং কুশীনগর, যেখানে তিনি নির্বাণ লাভ করেন। তিনি তার ভ্রমণের অধিকাংশ সময়ই মধ্য ভারত বা মগধ পরিভ্রমণ ও তার বর্ণনায় অতিবাহিত করেন। ফা-হিয়েন দক্ষিণ ভারতের অঞ্চলসমূহ ভ্রমণ করেন নি, তিনি সমুদ্রপথেই ভারত ত্যাগ করে শ্রীলঙ্কা পরিভ্রমণের পর চীনে প্রত্যাবর্তন করেন। ফা হিয়েনের বর্ণনাই দ্বীপটি সম্পর্কে কোন চৈনিক বৌদ্ধ তীর্থযাত্রী কর্তৃক প্রদত্ত একমাত্র প্রত্যক্ষ বিবরণ। সমুদ্রে অনেক কষ্টকর পরিস্থিতি মোকাবিলা করে ৪১৪ খ্রিষ্টাব্দে ফা-হিয়েন চীনে প্রত্যাবর্তন করেন।

চেংয়ান (তৎকালীন চৈনিক রাজধানী) থেকে মধ্য ভারতে পৌঁছতে ফা-হিয়েনের ছয় বছর সময় লেগেছিল এবং সেখানে তিনি ছয় বছর পরিভ্রমণে অতিবাহিত করেন এবং প্রত্যাবর্তনের পথে বর্তমান চীনের পূর্বউপকূলীয় প্রদেশ শানডং-এর চিংচৌ এ পৌঁছতে তার তিন বৎসর সময় লেগেছিল।

ফা-হিয়েনের তীর্থযাত্রা চীনের পরবর্তী প্রজন্মের যাজকদের অনুপ্রাণিত করেছে। চরমসত্য (ধম্ম) অনুসন্ধানে বুদ্ধের পবিত্র ভূমি পরিভ্রমণে জলপথ অথবা স্থলপথের সমস্ত কষ্টই তারা অগ্রাহ্য করেছেন।

ভারত ভ্রমণের শেষ পর্যায়ে তিনি সীমান্ত রাজ্য চম্পার মধ্য দিয়ে বাংলায় প্রবেশ করেন। তার গন্তব্যস্থল ছিল সে সময়ের বিখ্যাত আন্তর্জাতিক বন্দর তাম্রলিপ্ত (তমলুক)। সেখান থেকেই সমুদ্রপথে তিনি অপর বৌদ্ধপ্রধান অঞ্চল শ্রীলঙ্কায় যেতে চেয়েছিলেন। শ্রীলঙ্কা যাওয়ার পূর্বে ফা-হিয়েন দীর্ঘ দুবছর তাম্রলিপ্ততে বৌদ্ধ ধর্মগ্রন্থের অনুলিপি তৈরি ও বৌদ্ধ মূর্তির ছবি আঁকেন। তার বিবরণী থেকে জানা যায়, এ সময় তাম্রলিপ্ততে চব্বিশটি বৌদ্ধ মঠ ও অনেক বৌদ্ধ সন্ন্যাসী ছিলেন। অবশ্য তিনি এদের বিস্তারিত বিবরণ দেননি।

তথ্যসূত্র

[সম্পাদনা]

বহিঃসংযোগ

[সম্পাদনা]