প্যারেডোলিয়া
প্যারেডোলিয়া (/pær[অসমর্থিত ইনপুট: 'ɨ']ˈdoʊliə/ parr-i-DOH-lee-ə) হল আশেপাশের পরিবেশে কোনো কিছু দেখে এর মাঝে মানুষের মুখাকৃতি মনে হওয়া।
প্যারেডোলিয়াকে অ্যাফোফেনিয়ার দৃশ্যায়িত রূপ হিসেবে ধরা হয়ে থাকে, যা হল একাধিক ডাটার মধ্য থেকে কোন নির্দিষ্ট ধরনের ডাটার মধ্যে মিল খুঁজে পাওয়া। সম্ভবত প্রাচীন সভ্যতায় এর বিশেষ প্রভাব ছিল।[১][২]
ব্যুৎপত্তি[সম্পাদনা]
প্যারেডোলিয়া শব্দটি para (παρά, "পাশে, পাশাপাশি, পরিবর্তে", ত্রুটিপূর্ণ বা ভুল কিছু অর্থ এই প্রেক্ষাপটে) এবং বিশেষ্য eidōlon (εἴδωλον, "চিত্র, গড়ন, আকৃতি" ) এ দুটি গ্রীক শব্দ থেকে এসেছে।
ব্যাখ্যা[সম্পাদনা]
আলো, ছায়া আর বিভিন্ন নকশাকে মুখাবয়বের মত ব্যাখ্যা করাই প্যারেডোলিয়া। নিউরোইমেজিং প্রক্রিয়ার (এর আসল নামটি ম্যাগনেটোএনসেফালজি) মাধ্যমে মস্তিশকের ক্রিয়া বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে মুখাবয়বের মত মনে হওয়া বস্তুগুলো ১৬৫ মিলিসেকেন্ডের স্থায়ী বিভ্রম তৈরী করে। এটুকু সময়ের পর বস্তুটিকে ভ্রম হিসেবে দেখার ব্যাপার টের পায় মস্তিষ্ক। আরেকটি তথ্য উঠে এসেছে গবেষণায়, অন্যান্য সচরাচর বস্তু এতক্ষণ স্থায়ি বিভ্রম তৈরী করে না। মুখাবয়বকে খুব সহজে খুঁজে পায় আমাদের মস্তিষ্ক। মস্তিষ্কের চেতনা ও মনের আবেগীয় প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার আগেই এটি ঘটে যায়। একারণে স্টিকফিগারের এত সরলতা সত্ত্বেও আমরা খুব সহজে এর থেকে এর ভাব(mood) চিহ্নিত করে ফেলি। মন খারাপ নাকি হাসিখুশি ভাব এটা আঁকার জন্য কখনোই শিল্পীর পর্যায়ের অঙ্কন দরকার হয় না। এটা মস্তিষ্কের অনেকগুলো ক্ষমতার একটি ছোট সুবিধা।
শিল্পকর্ম[সম্পাদনা]

লিওনার্দো দ্য ভিঞ্চির মতে, প্যারেডোলিয়া হচ্ছে রঙশিল্পীদের কাছে একটি উপকরণের মত। "যদি অনেক দাগওয়ালা কোনো দেয়ালের দিকে তাকাও যেখানে আছে বিভিন্ন পাথরের মিশেল, যদি কোনো দৃশ্য আবিষ্কার করতে যাও পাহাড়, নদী, পাথর, গাছ, সমভূমি, প্রশস্ত উপত্যকা আর পাহাড়ে ছাওয়া প্রতিচ্ছবিতে পাবে সেই দৃশ্য।"[৩]
ধর্মীয়[সম্পাদনা]
ধর্মীয় অনুভূতির সাথে জড়িত অনেকগুলো ঘটনা রয়েছে ধর্মীয় চিত্র ও দৃশ্যপট কল্পনায়। বেশি ঘটে ধর্মীয় মুখচিত্রগুলিকে কল্পনা করতে দেখা। অনেক বেশি কমন যেগুলোঃ যিশুখ্রিস্ট[৪], কুমারী মাতা মেরীর ছবি[৫], 'আল্লাহ' শব্দটি[৬]।
কম্পিউটার দর্শন[সম্পাদনা]
কম্পিউটার ভিশনেও প্যারেডোলিয়া পৌঁছে গেছে, বিশেষত 'চিত্র চিহ্নিতকরণ' (Image Recognition) প্রোগ্রামগুলোয়, যার মাধ্যমে কম্পিউটার দিয়ে কৃত্রিমভাবে বৈশিষ্ট্যগুলো চিহ্নিত করা যায়। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার নেটওয়ার্ক গঠনে এই প্রোগ্রামটি কম্পিউটারকে দেখতে সাহায্য করে। একই সাথে আরেকটি কাজ হয়ে যায়, আমরা আমাদের চারপাশটা কেমন দেখি আর কম্পিউটার আত্র একটি দৃষ্টিক্ষমতা অর্জনের মাধ্যমে কীভাবে দেখে তা ধরে ফেলা। এমন একটি কম্পিউটার ভিশন প্রোগ্রামের নাম ডিপড্রিম(DeepDream)। গুগলের তৈরী। ডিপড্রিম এর লিংকে গিয়ে আপনি যেকোনো ছবি আপলোড দিলেই আপনাকে ১৫ সেকেন্ডের মধ্যে দেখিয়ে দিবে যন্ত্র সেটা কীভাবে দেখে।
প্রাসঙ্গিক ঘটনা[সম্পাদনা]
১৯৭১ সালে কন্সটান্টিন রডিভ 'Breakthrough' নামে একটি বই লিখেন। বিষয়বস্তু ছিল বৈদ্যুতিক কণ্ঠের ঘটনা (electronic voice phenomenon বা EVP) সম্পর্কে তার বিশ্বাস। এই EVP কে শ্রাবণ প্যারেডোলিয়া বলা হয়।
উদাহরণ[সম্পাদনা]
Bucegi পর্বতমালার রোমানিয়ান স্পিংক্স
"সম্রাটের শির" নামে পরিচিত Pedra da Gavea ব্রাজিলের রিও ডি জেনেরিওতে।
ওল্ড ম্যান অফ দ্যা মাউনটেইন, ফ্রাঙ্কোনিয়া, নিউ হ্যাম্পশায়ার
লাল কাদার "মুখ ভেঙচানো", পাহাড়ি সিয়্নস নদীর মার্কেন্টুর ন্যাশনাল পার্কে।
বিখ্যাত প্রোফাইল Stac Levenish দ্বীপ ( সেন্ট কিল্ডা দ্বীপমালা , স্কটল্যান্ড )
বাবা ইয়াগা, বায়ানুল ন্যাশনাল পার্ক, কাজাখস্তান
মঙ্গলে আগ্নেয়গিরির হাস্যোজ্জ্বল মুখ
আরো দেখুন[সম্পাদনা]
তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]
- ↑ Bustamante, Patricio; Yao, Daniela; Bustamante (২০১০), The Worship to the Mountains: A Study of the Creation Myths of the Chinese Culture, Rupestre Web .
- ↑ Bustamante, Patricio; Yao, Fay; Bustamante, Daniela (২০১০)। "Pleistocene Art: the archeological material and its anthropological meanings" (পিডিএফ)। From Pleistocene Art to the Worship of the Mountains in China. Methodological tools for Mimesis in Paleoart, Congress IFRAO 2010 – 'Pleistocene Art of the World'. Symposium. Signs, Symbols, Myth, Ideology। ১৬ অক্টোবর ২০১১ তারিখে মূল (PDF) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১২ জুন ২০১৫।
- ↑ Da Vinci, Leonardo (১৯২৩)। John, R; Don Read, J, সম্পাদকগণ। "Note-Books Arranged And Rendered Into English"। Empire State Book Co।
- ↑ Zusne, Leonard; Jones, Warren H (১৯৮৯)। Anomalistic Psychology: A Study of Magical Thinking। Lawrence Erlbaum Associates। পৃষ্ঠা 77–79। আইএসবিএন 0-8058-0508-7। সংগ্রহের তারিখ ২০০৭-০৪-০৬।
- ↑ "In New Jersey, a Knot in a Tree Trunk Draws the Faithful and the Skeptical", The New York Times, জুলাই ২৩, ২০১২ .
- ↑ Ibrahim, Yahaya (২০১১-০১-০২)। "In Maiduguri, a tree with engraved name of God turns spot to a Mecca of sorts"। Sunday Trust। Media Trust Limited, Abuja। ২০১২-১১-০৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১২-০৩-২১।