পায়োরিয়া

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
পায়োরিয়া রোগ
প্রতিশব্দগাম রোগ, পেরিয়োন্ডনটিটিস
একটি দাঁতের (কালো এলাকা) দুটি গোড়ার মাঝে হাঁড় ক্ষয়ের রেডিয়োগ্রাফ। দাঁতের নিচে সংক্রমণের কারণে নমনীয় হাঁড়টি ক্ষয় পাচ্ছে, যা দাঁতকে দুর্বল করে দিচ্ছে।
উচ্চারণ
বিশেষত্বদন্ত্যচিকিৎসা
লক্ষণলাল, দাঁত নড়ভড়ে হয়ে যাওয়া, ব্যাথা করা, নিঃশ্বাসে দুর্গন্ধ[১]
জটিলতাদাঁত পড়ে যাওয়া[১][২]
কারণব্যাকটেরিয়া[১]
ঝুঁকির কারণধূমপান, বহুমূত্ররোগ, এইডস[১]
রোগনির্ণয়ের পদ্ধতিদন্ত্যপরীক্ষা, এক্সরে[১]
চিকিৎসামুখের ভালো যত্ন নেয়া, নিয়মিত পরীষ্কার করা[৩]
সংঘটনের হার৫৩৮ মিলিয়ন (২০১৫)[৪]

পায়োরিয়া (মাড়ি রোগ হিসেবেও পরিচিত) হলো দাঁতের একধরনের রোগ যা দাঁতের আশেপাশের কোষকলাকে আক্রান্ত করে।[৩] এটির প্রথম স্তরে, এটিকে গিঙ্গিভিটিস বলা হয়, যখন মাড়ি ফুলে যায়, লাল হয় এমনকি রক্তও পড়তে পারে।[৩] এটির গুরুতর অবস্থাকে বলা হয় "পেরিয়োডোন্টিটিস", এসময় মাড়ি দাঁত থেকে সরে যেতে পারে, হাঁড় ক্ষয় হয় এবং দাঁতও পড়ে যায়।[৩] মাঝে মাঝে মুখের শ্বাসে দুর্গন্ধও থাকতে পারে[১]

পায়োরিয়া সাধারণত দাঁতের চারপাশের কোষে ব্যাকটেরিয়ার আক্রমণে হয়।[৩] এ অবস্থায় ঝুঁকি হলো ধূমপান করা, যাদের বহুমূত্ররোগ রয়েছে, এইডস আক্রান্তদের এবং কিছু ওষুধে।[১][৫]

চিকিৎসার মাঝে রয়েছে মুখ ভালো পরিষ্কার রাখা এবং নিয়মিত দাঁত পরিষ্কার রাখা।[৩] মুখ পরিষ্কারের নিয়ম অনুসারে নিয়মিত দাঁত মাঝতে হবে।[৩] কিছু ক্ষেত্রে এন্টিবায়োটিক এবং দাঁতের অপারেশন করতেও বলা হয়।[৬] ২০১৫ সালে বৈশ্বিকভাবে ৫৩৮ মিলিয়ন লোক আক্রান্ত হয়েছিল।[৪] যুক্তরাজ্যে, ৩০ বছরের উপরে অর্ধেক লোক এটি দ্বারা হালকা আক্রান্ত এবং ৬৫ বছরের উপরে ৭০% লোকের গুরুতর অবস্থা রয়েছে।[৩] নারীদের থেকে পুরুষরা বেশি আক্রান্ত হয়।

লক্ষণ ও চিহ্ন[সম্পাদনা]

: সম্পূর্ণ ক্ষয় : মাড়ির সরে যাওয়া, and : গভীরতা

প্রথম স্তরে, পায়োরিয়ার খুব অল্প সংখ্যক লক্ষণ থাকে, এবং দেখা যায় চিকিৎসা করার পূর্বে রোগটি ব্যাপক মাত্রায় পৌঁছে যায়। তবে ভুলের কারনে চিকিৎসা না নিলে ইনফেকশন হয়ে যায়।

লক্ষণগুলোর মাঝে রয়েছে:

  • দাঁত মাজার সময় বা শক্ত খাবারে কামড় দেওয়ার সময় মাড়ি লাল হয়ে যাওয়া বা রক্ত পড়া।
  • মাড়ি ফুলে যাওয়া।
  • দাঁতের নিচে মাড়িতে গা হয়ে ফেটে যায়। মাঝে মাঝে রক্ত ঝড়া।
  • দাঁত মাজার পর থুতুর সাথে রক্ত ঝড়া।
  • দুর্গন্ধযুক্ত নিঃশ্বাস এবং মুখের মাঝে দাতব স্বাদ পাওয়া।
  • মাড়ি নেমে যাওয়া ও দাঁতকে বড় মনে হওয়া (জোড়ে-জোড়ে দাঁত মাজার কারণেও এরকম হতে পারে)।
  • দাঁত দুর্বল হয়ে যাওয়া (যদিও অন্যান্য দন্ত্য সমস্যাতেও এরকম হতে পারে)।

মানুষকে বুঝতে হবে যে, মাড়ি ফোলা ও দাঁতের হাঁড় ক্ষয় হওয়া বেশিরভাগ সময়ই ব্যাথাহীন হয়। যদিও দাঁত পরিষ্কারের পর রক্ত পড়া পায়োরিয়ার লক্ষণ তবুও মানুষ এগুলোকে তেমন গুরুত্বসহ নেয়না।

সম্পৃক্ত অবস্থা[সম্পাদনা]

পায়োরিয়ার সাথে শরীরে প্রদাহ দেখা দিতে পারে, সি-প্রতিক্রিয়াকারী প্রোটিণ এবং ইন্টারলিউকিন-৬ এর মাত্রা বৃদ্ধির কারণে।[৭][৮][৯][১০] উচ্চমাত্রার স্ট্রোক ঝুঁকির সাথে এটির সম্পর্ক রয়েছে[১১][১২][১৩][১৪][১৫][১৬][১৭][১৮][১৯][২০] এবং অধিক চিন্তার সাথে।[২১] ষাটোর্ধ ব্যক্তিদের স্মৃতিশক্তি ও গণনা ক্ষনতা হ্রাসের সাথেও এটির সম্পর্ক রয়েছে।[২২][২৩] যেসকল ব্যক্তির বহুমূত্ররোগ রয়েছে তাদের পায়োরিয়া প্রদাহ বেশি দেখা যায় এবং বেশিরভাগ সময় তাদের শরীরে পায়োরিয়া প্রদাহের কারণে তারা রক্তের গ্লুকোজের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে অক্ষম হন।[২৪][২৫][২৬] যদিও প্রমাণ নেই তবুও হৃদরোগ,[২৭] এবং প্যানক্রিয়াটিক ক্যান্সারের সাথে পায়োরিয়ার সম্পর্ক লক্ষ্য করা যায়।[২৮]

কারণ[সম্পাদনা]

পায়োরিয়া হলো পেরিয়োডোনশিয়ামের প্রদাহ, যেসকল কোষকলা দাঁতকে শক্তি দেয়। পেরিয়োডোনশিয়াম চারটি কোষকলা নির্মিত:

  • মাড়ির কোষকলা,
  • সিমেন্টাম, বা দাঁতের গোড়ার বাইরের স্তর,
  • অ্যালভিয়োলার বোন, বা যে হাঁড়ের মতো অংশে দাঁত সংযুক্ত থাকে এবং
  • পেরিয়োডোন্টাল লিগামেন্ট (পিডিএল), যেগুলো সিমেন্টাম এবং অ্যালভিয়োলার বোনের মাঝে থাকে।
এই এক্সরেতে মানব দাঁত প্রদর্শন করা হচ্ছে

গিঙ্গিভিটিস হওয়ার প্রধান কারণ হলো মুখের যত্ন না নেয়া,[২৯] যার কারণে মুখে মাইসোসিস[৩০][৩১][৩২][৩৩] এবং ব্যাক্টেরিয়া মাড়ির ফাঁকে জমা হয়, যেটাকে "ডেন্টাল প্লাক" বলা হয়। অন্যান্য কারণের মাঝে হলো পুষ্টির অভাব এবং নানা শারীরিক সমস্যা যেমন বহুমূত্ররোগ।[৩৪][৩৫]

কিছু লোকের ক্ষেত্রে, গিঙ্গিভাল ফাইবার ধ্বংস হয়ে গেলে গিঙ্গিভিটিস থেকে পেরিয়োডোন্টিটিস হয়, এসময় মাড়ির কোষকলা দাঁত থেকে আলাদা হয়ে যায়।

কার্যক্রম[সম্পাদনা]

সাধারণত দাঁতের কাছে এবং মাড়ির নিচে দন্ত প্লাক জমা হয় যা হলো কিছু অণুজীব।[৩৬] ২০১৭ সাল অনু্যায়ী কোন প্রজাতি ক্ষতির জন্য সবচেয়ে বেশি দায়ী সেটি নিশ্চিত হওয়া যায়নি, কিন্তু এনারোবিক ব্যাকটেরিয়া, স্পাইরোচেটস এবং ভাইরাসকে এর জন্য দায়ী ধরা হয়; এটা পরিষ্কার যে কোন নির্দিষ্ট ব্যক্তির ক্ষেত্রে এক বা একাধিক প্রজাতি এই রোগ সৃষ্টি করে।[৩৬]

প্লাক নরম থাকতে পারে ও ক্যালসিয়ামহীন হতে পারে, শক্ত ও ক্যালসিয়ামযুক্তও হতে পারে, আবার উভয়টিই হতে পারে। দাঁতের সাথে যুক্ত প্লাকে ক্যালসুয়াম আসে স্যালাইভা থেকে; মাড়ির নিচের প্লাকে ক্যালসিয়াম আসে রক্ত থেকে।[৩৬]

শ্রেণিবিন্যাস[সম্পাদনা]

পায়োরিয়ায় আক্রান্ত লোক

পায়োরিয়ার জন্য কয়েকবার নানা পদ্ধতিতে শ্রেণিবিন্যাস করা হয়ে: ১৯৮৯, ১৯৯৩, ১৯৯৯, এবং ২০১৭ সালে।

১৯৯৯ সালের শ্রেণিবিন্যাস[সম্পাদনা]

১৯৯৯সালের শ্রেণিবিন্যাস ব্যবস্থায় পায়োরিয়ার সাতটি প্রধান অবস্থাকে উল্লেখ করা হয়েছে, যেগুলোর মাঝে ২-৬ হলো ধ্বংসাত্মক পায়োরিয়া রোগ, কারণ এটির ক্ষতিকে পূরণ করা যায় না। এই সাতটি শ্রেণি হলো:

  • গিঙ্গিভিটিস
  • ক্রণিক পায়োরিয়া
  • এগ্রেসিভ পায়োরিয়া
  • সারা দেহের রোগের বিকাশ হিসেবে পায়োরিয়া
  • ক্ষত সৃষ্টিকারী পায়োরিয়া
  • পেরিয়োডনশিয়ামের ব্রণ
  • পেরিয়োডন্টিক-এন্ডোডন্টিক মিলিত ক্ষত

২০১৭ সালের শ্রেণিবিভাগ[সম্পাদনা]

পায়োরিয়া রোগের জন্য ২০১৭ সালের শ্রেণিবিভাগ নিম্নরূপ:[৩৭][৩৮]

পায়োরিয়া স্বাস্থ্য, মাড়ির রোগ ও অবস্থা

  • পায়োরিয়া স্বাস্থ্য। দুটি প্রকারভেদে বিভক্ত: ক. সঠিক পেরিয়োডনশিয়াম

খ. ক্ষয়প্রাপ্ত পেরিয়োডনশিয়াম

ক্রম[সম্পাদনা]

২০১৭ সালের শ্রেণিবিন্যাস অনুসারে, পায়োরিয়া রোগের অবস্থাকে তিনটি ক্রমে বিভক্ত করা হয়েছে:[৩৯]

  • ক্রম এ: রোগের ধীর অগ্রগতি; পাঁচ বছরে কোন ধরনের হাঁড় ক্ষয়ের লক্ষণ দেখা যায়না
  • ক্রম বি: রোগের মধ্যপন্থী অগ্রগতি; পাঁচ বছরে <২মিমি হাঁড় ক্ষয়
  • ক্রম সি: রোগের দ্রুত অগ্রগতি; পাঁচ বছরে >_ ২মিমি হাঁড় ক্ষয়

ঝুঁকিমান নির্ণয়ে কোন ব্যক্তিকে নিম্নের কারণ দ্বারা শ্রেণিবিভক্ত করা হয়:[৩৯]

  • ধূমপান
  • বহুমূত্র রোগ

প্রতিরোধ[সম্পাদনা]

পায়োরিয়া এড়াতে দৈনিক যেসকল নিয়ম বজায় রাখতে হবে:

  • নিয়মিত দাঁত মাজা (দৈনিক কমপক্ষে দুইবার), মাড়ির আনাচে-কানাচে ব্রাশকে নিয়ে গেলে ব্যাকটেরিয়া-জীবাণু এবং প্লাক তৈরি হতে পারবেনা।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন]
  • নিয়মিত ফ্লস করা এবং আন্তঃদন্ত মাজনী ব্যবহার করা (যদি দাঁতের মাঝে যথেষ্ট ফাঁকা স্থান থাকে)।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন]
  • জীবাণুনাশক মাউথওয়াশ ব্যবহার করা: ক্লোরোহেক্সিডিন গ্লুকোনেট ভিত্তিক মাউথওয়াশ মুখের জন্য ভালো এবং গিঙ্গিভিটিস ভালো করতে পারে, যদিও পায়োরিয়ার কারণে ক্ষয় হওয়া দাঁতের অংশ এটি ফিরিয়ে আনতে পারবেনা।
  • নিয়মিত দন্ত্য-পরীক্ষা এবং দাঁত পরিষ্কার করা প্রয়োজনীয়: নিয়মিত দাঁতের পরীক্ষা করলে মানুষের মুখের ভেতরের অবস্থা জানা যায় এবং পায়োরিয়ার পূর্ব লক্ষণ শনাক্ত করা যায় ও ব্যবস্থা নেয়া যায়।

পূর্বাভাস[সম্পাদনা]

দন্তচিকিৎসকরা পায়োরিয়া রোগ পরিমাপ করে একটি যন্ত্রের সাহায্যে যেটির নাম 'পেরিয়োডন্টাল প্রোব'। এই পাতলা "পরিমাপক কাঠি"কে হালকাভাবে দাঁত ও মাড়ির মাঝের ফাঁকা স্থানে বসানো হয়, এবং মাড়ি রেখার নিচে রাখা হয়। যদি যন্ত্রটি মাড়ি রেখা থেকে ৩মিমি (০.১২ ই.) নিচে নেমে আসে তাহলে ধরে নেয়া হয় লোকটির গিঙ্গিবাল গহ্বর রয়েছে। এই গহ্বরগুলো সাধারণত নিজেই পরিষ্কার করা যায় (টুথব্রাশ ব্যবহার করে ঘরে) যদি এগুলো ৩ মিমি বা তার কম গভীর হয়। এটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ যদি কোন গহ্বর ৩ মিমি থেকে বেশি গভীর হয় তাহলে শুধু বাড়িতে পরিষ্কার করাই যথেষ্ট হবে না, এবং কোন পেশাদারকে এটি দেখাতে হবে। যখন গহ্বরের গভীরতা ৬ থেকে ৭ মিমি (০.২৪ থেকে ০.২৮ ইঞ্চি) হয় তখন দন্ত চিকিৎসকের হাতের যন্ত্রপাতি গহ্বরের গভীরে পৌঁছাতে পারেনা, যার কারণে গভীরে পরিষ্কার করা সম্ভব হয়না এবং মাড়ি ফুলে যায়। এই অবস্থায়, দাঁতের পাশের মাড়ি বা হাঁড়কে সার্জারী করে পরিবর্তন করতে হবে না হয় সবসময় এটি ফুলে থাকবে এবং ঐ দাঁতের পাশের হাঁড় আরও ক্ষয় হবে।

যদি কোন ব্যক্তির দাঁতের আশেপাশে ৭ মিমি বা তার বেশি গভীরের গহ্বর থাকে তাহলে তাদের দাঁত হারানোর ঝুঁকি রয়েছে। যদি এই পায়োরিয়া অবস্থা চিহ্নিত করা না হয় তাহলে কিছু বছর পরে, আক্রান্ত ব্যক্তির কিছু দাঁত ঢিলে হয়ে যাবে এবং সেগুলো তুলে ফেলার প্রয়োজন হবে, অনেক সময় নানা সংক্রমণ ও ব্যাথাও হতে পারে।

পায়োরিয়া ও বহুমূত্ররোগ[সম্পাদনা]

সাধারণত যাদের বহুমূত্ররোগ থাকে তাদের পায়োরিয়া হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। বহুমূত্ররোগে শরীরে শক্তি প্রদান করে থাকে ব্লাড সুগার, যার কারণে শরীরে ইনসুলিনের ঘাটতি দেখা দেয়। ইনসুলিনের ঘাটতির কারণে শরীরের গ্লুকোজের মাত্রা বৃদ্ধি পায়, যা শরীরের রক্ত শিরা ও ধমনীকে নষ্ট করে দেয়। এমনকি এগুলো মাড়ির শিরাকেও বিনষ্ট করে দেয়, তখন মাড়িতে সঠিক পরিমাণে রক্ত পৌঁছায়না ও নানা রকমের মাড়ির রোগ দেখা দেয়। আর মাড়ির রোগগুলোকে চিকিৎসা করা না হলে পায়োরিয়া রোগ দেখা দেয়।

ইতিহাস[সম্পাদনা]

৩০লক্ষ বছর পূর্বে একটি প্রাচীন মানবের মাড়ির রোগ ছিল। চীন ও মধ্যপ্রাচ্যের ইতিহাস এবং প্রত্নতাত্ত্বিক গবেষণায় দেখা যায়, মানব সভ্যতা প্রায় কয়েক হাজার বছর ধরে মাড়ির রোগ সহ্য করে আসছে। ইউরোপ এবং মধ্যপ্রাচ্যের পুরোনো মাড়ির ডিএনএ থেকে দেখা যায়, প্রাচীন শিকারীদের জীবনযাত্রায় কম মাড়ির রোগ ছল, কিন্তু অতিরিক্ত শস্যদানা খাওয়ার পর থেকে মাড়ির রোগ বেড়ে যায়। অটজি আইস মানবদের বিভিন্ন মাড়ির রোগ ছিল। আবার, গবেষণায় দেখা যায়, যুক্তরাজ্যের রোমান যুগে আধুনিক সময়ের থেকে কম পায়োরিয়া ছিল। গবেষকরা মনে করেন এটির মূল কারণ ধূমপান।

সমাজ এবং সংস্কৃতি[সম্পাদনা]

ব্যুৎপত্তি[সম্পাদনা]

"পেরিয়োডোন্টিটিস" (গ্রীক: περιοδοντίτις) শব্দটি এসেছে গ্রীক শব্দ পেরি, "চারদিক", অডাস, " দাঁত" এবং শেষাংশ ইটিস থেকে, "প্রদাহ"। 'পায়োরিয়া' গ্রীক শব্দ (πυόρροια), " পদার্থের নির্গমন", থেকে এসেছে, প্রথমাংশ পায়োর, "কোন কিছু থেকে নির্গমন", রো, " প্রবাহ", এবং শেষাংশ ইয়া।

অর্থনীতি[সম্পাদনা]

গণনা করে দেখা হয়েছে যে পায়োরিয়া রোগের নানা খরচের কারণে প্রতি বছর সারা বিশ্বে ৫৪ বিলিয়ন ডলার খরচ হয়।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন]

অন্যান্য প্রাণী[সম্পাদনা]

পায়োরিয়া কুকুরদের জন্য একটি সাধারণ রোগ এবং তিন বা তার বেশি বয়সী কুকুরের ৮০% এটি দ্বারা আক্রান্ত হয়। কিন্তু শরীরের ওজন বৃদ্ধির সাথে এটির পরিমাণ হ্রাস পেতে থাকে। 'ওয়ালথাম সেন্টার ফর পেট নিউট্রিশন' গবেষণা করে পায় যে কুকুরের মাড়ি রোগের জন্য দায়ী ব্যাকটেরিয়াগুলো মানুষের ব্যাকটেরিয়ার মতো নয়। সমগ্র দেহে রোগ হতে পারে কারণ মাড়ি খুবই সংবহনতান্ত্রিক (রক্তের ভালো পরিবহন রয়েছে)। রক্তনালী এই ক্ষুদ্র জীবগুলো বহন করে যা কিডনি এবং যকৃত ছেঁকে ফেলে। কিডনি বা যকৃতে তারা স্থান করে নিতে পারে এবং সেখানে ক্ষুদ্র ব্রণের সৃষ্টি করতে পারে। পায়োরিয়ার কারণে যেসকল রোগ হতে পারে তাদের মাঝে রয়েছে ক্রণিক ব্রঙ্কাইটিস এবং পালমোনারি ফাইব্রোসিস।

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "Gum Disease"National Institute of Dental and Craniofacial Research। ফেব্রুয়ারি ২০১৮। সংগ্রহের তারিখ ১৩ মার্চ ২০১৮ 
  2. "Gum Disease Complications"nhs.uk। সংগ্রহের তারিখ ১৩ মার্চ ২০১৮ 
  3. "Periodontal Disease"CDC। ১০ মার্চ ২০১৫। সংগ্রহের তারিখ ১৩ মার্চ ২০১৮ 
  4. GBD 2015 Disease and Injury Incidence and Prevalence Collaborators (অক্টোবর ২০১৬)। "Global, regional, and national incidence, prevalence, and years lived with disability for 310 diseases and injuries, 1990-2015: a systematic analysis for the Global Burden of Disease Study 2015"Lancet388 (10053): 1545–1602। ডিওআই:10.1016/S0140-6736(16)31678-6পিএমআইডি 27733282পিএমসি 5055577অবাধে প্রবেশযোগ্য 
  5. Savage A, Eaton KA, Moles DR, Needleman I (জুন ২০০৯)। "A systematic review of definitions of periodontitis and methods that have been used to identify this disease"। Journal of Clinical Periodontology36 (6): 458–67। ডিওআই:10.1111/j.1600-051X.2009.01408.xপিএমআইডি 19508246 
  6. "Gum Disease Treatment"nhs.uk। সংগ্রহের তারিখ ১৩ মার্চ ২০১৮ 
  7. D'Aiuto F, Parkar M, Andreou G, Suvan J, Brett PM, Ready D, Tonetti MS (ফেব্রুয়ারি ২০০৪)। "Periodontitis and systemic inflammation: control of the local infection is associated with a reduction in serum inflammatory markers"Journal of Dental Research83 (2): 156–60। ডিওআই:10.1177/154405910408300214পিএমআইডি 14742655 
  8. Nibali L, D'Aiuto F, Griffiths G, Patel K, Suvan J, Tonetti MS (নভেম্বর ২০০৭)। "Severe periodontitis is associated with systemic inflammation and a dysmetabolic status: a case-control study"। Journal of Clinical Periodontology34 (11): 931–7। ডিওআই:10.1111/j.1600-051X.2007.01133.xপিএমআইডি 17877746 
  9. Paraskevas S, Huizinga JD, Loos BG (এপ্রিল ২০০৮)। "A systematic review and meta-analyses on C-reactive protein in relation to periodontitis"। Journal of Clinical Periodontology35 (4): 277–90। ডিওআই:10.1111/j.1600-051X.2007.01173.xপিএমআইডি 18294231 
  10. D'Aiuto F, Ready D, Tonetti MS (আগস্ট ২০০৪)। "Periodontal disease and C-reactive protein-associated cardiovascular risk"। Journal of Periodontal Research39 (4): 236–41। ডিওআই:10.1111/j.1600-0765.2004.00731.xপিএমআইডি 15206916 
  11. Pussinen PJ, Alfthan G, Jousilahti P, Paju S, Tuomilehto J (জুলাই ২০০৭)। "Systemic exposure to Porphyromonas gingivalis predicts incident stroke"। Atherosclerosis193 (1): 222–8। ডিওআই:10.1016/j.atherosclerosis.2006.06.027পিএমআইডি 16872615 
  12. Pussinen PJ, Alfthan G, Rissanen H, Reunanen A, Asikainen S, Knekt P (সেপ্টেম্বর ২০০৪)। "Antibodies to periodontal pathogens and stroke risk"Stroke35 (9): 2020–3। ডিওআই:10.1161/01.STR.0000136148.29490.feপিএমআইডি 15232116 
  13. Pussinen PJ, Alfthan G, Tuomilehto J, Asikainen S, Jousilahti P (অক্টোবর ২০০৪)। "High serum antibody levels to Porphyromonas gingivalis predict myocardial infarction"। European Journal of Cardiovascular Prevention and Rehabilitation11 (5): 408–11। ডিওআই:10.1097/01.hjr.0000129745.38217.39পিএমআইডি 15616414 
  14. Ford PJ, Gemmell E, Timms P, Chan A, Preston FM, Seymour GJ (জানুয়ারি ২০০৭)। "Anti-P. gingivalis response correlates with atherosclerosis"Journal of Dental Research86 (1): 35–40। ডিওআই:10.1177/154405910708600105পিএমআইডি 17189460 
  15. Beck JD, Eke P, Heiss G, Madianos P, Couper D, Lin D, Moss K, Elter J, Offenbacher S (জুলাই ২০০৫)। "Periodontal disease and coronary heart disease: a reappraisal of the exposure"। Circulation112 (1): 19–24। ডিওআই:10.1161/CIRCULATIONAHA.104.511998পিএমআইডি 15983248 
  16. Scannapieco FA, Bush RB, Paju S (ডিসেম্বর ২০০৩)। "Associations between periodontal disease and risk for atherosclerosis, cardiovascular disease, and stroke. A systematic review"। Annals of Periodontology8 (1): 38–53। ডিওআই:10.1902/annals.2003.8.1.38পিএমআইডি 14971247 
  17. Wu T, Trevisan M, Genco RJ, Dorn JP, Falkner KL, Sempos CT (অক্টোবর ২০০০)। "Periodontal disease and risk of cerebrovascular disease: the first national health and nutrition examination survey and its follow-up study"। Archives of Internal Medicine160 (18): 2749–55। ডিওআই:10.1001/archinte.160.18.2749পিএমআইডি 11025784 
  18. Beck JD, Elter JR, Heiss G, Couper D, Mauriello SM, Offenbacher S (নভেম্বর ২০০১)। "Relationship of periodontal disease to carotid artery intima-media wall thickness: the atherosclerosis risk in communities (ARIC) study"Arteriosclerosis, Thrombosis, and Vascular Biology21 (11): 1816–22। ডিওআই:10.1161/hq1101.097803পিএমআইডি 11701471 
  19. Elter JR, Champagne CM, Offenbacher S, Beck JD (জুন ২০০৪)। "Relationship of periodontal disease and tooth loss to prevalence of coronary heart disease"Journal of Periodontology75 (6): 782–90। ডিওআই:10.1902/jop.2004.75.6.782পিএমআইডি 15295942 
  20. Humphrey LL, Fu R, Buckley DI, Freeman M, Helfand M (ডিসেম্বর ২০০৮)। "Periodontal disease and coronary heart disease incidence: a systematic review and meta-analysis"Journal of General Internal Medicine23 (12): 2079–86। ডিওআই:10.1007/s11606-008-0787-6পিএমআইডি 18807098পিএমসি 2596495অবাধে প্রবেশযোগ্য 
  21. Martin-Cabezas R, Seelam N, Petit C, Agossa K, Gaertner S, Tenenbaum H, Davideau JL, Huck O (অক্টোবর ২০১৬)। "Association between periodontitis and arterial hypertension: A systematic review and meta-analysis"। American Heart Journal180: 98–112। ডিওআই:10.1016/j.ahj.2016.07.018পিএমআইডি 27659888 
  22. Noble JM, Borrell LN, Papapanou PN, Elkind MS, Scarmeas N, Wright CB (নভেম্বর ২০০৯)। "Periodontitis is associated with cognitive impairment among older adults: analysis of NHANES-III"Journal of Neurology, Neurosurgery, and Psychiatry80 (11): 1206–11। ডিওআই:10.1136/jnnp.2009.174029পিএমআইডি 19419981পিএমসি 3073380অবাধে প্রবেশযোগ্য 
  23. Kaye EK, Valencia A, Baba N, Spiro A, Dietrich T, Garcia RI (এপ্রিল ২০১০)। "Tooth loss and periodontal disease predict poor cognitive function in older men"Journal of the American Geriatrics Society58 (4): 713–8। ডিওআই:10.1111/j.1532-5415.2010.02788.xপিএমআইডি 20398152পিএমসি 3649065অবাধে প্রবেশযোগ্য 
  24. Zadik Y, Bechor R, Galor S, Levin L (মে ২০১০)। "Periodontal disease might be associated even with impaired fasting glucose"। British Dental Journal208 (10): E20। ডিওআই:10.1038/sj.bdj.2010.291পিএমআইডি 20339371 
  25. Soskolne WA, Klinger A (ডিসেম্বর ২০০১)। "The relationship between periodontal diseases and diabetes: an overview"। Annals of Periodontology6 (1): 91–8। ডিওআই:10.1902/annals.2001.6.1.91পিএমআইডি 11887477 
  26. Zadik Y, Bechor R, Galor S, Justo D, Heruti RJ (এপ্রিল ২০০৯)। "Erectile dysfunction might be associated with chronic periodontal disease: two ends of the cardiovascular spectrum"। The Journal of Sexual Medicine6 (4): 1111–1116। ডিওআই:10.1111/j.1743-6109.2008.01141.xপিএমআইডি 19170861 
  27. Perk, J.; De Backer, G.; Gohlke, H.; Graham, I.; Reiner, Z.; Verschuren, M. (৩ মে ২০১২)। "European Guidelines on cardiovascular disease prevention in clinical practice (version 2012): The Fifth Joint Task Force of the European Society of Cardiology and Other Societies on Cardiovascular Disease Prevention in Clinical Practice (constituted by representatives of nine societies and by invited experts) * Developed with the special contribution of the European Association for Cardiovascular Prevention & Rehabilitation (EACPR)"। European Heart Journal33 (13): 1635–1701। ডিওআই:10.1093/eurheartj/ehs092পিএমআইডি 22555213 
  28. Michaud, Dominique S.; Izard, Jacques (২০১৪)। "Microbiota, Oral Microbiome, and Pancreatic Cancer"The Cancer Journal (ইংরেজি ভাষায়)। 20 (3): 203–206। আইএসএসএন 1528-9117ডিওআই:10.1097/PPO.0000000000000046পিএমআইডি 24855008পিএমসি 4160879অবাধে প্রবেশযোগ্য 
  29. "Gingivitis"Mayo Clinic। Rochester, Minnesota: MFMER। ২০১৭-০৮-০৪। সংগ্রহের তারিখ ১০ মে ২০১৮ 
  30. Crich A (জুন ১৯৩২)। "Blastomycosis of the Gingiva and Jaw"Canadian Medical Association Journal26 (6): 662–5। পিএমআইডি 20318753পিএমসি 402380অবাধে প্রবেশযোগ্য 
  31. Urzúa B, Hermosilla G, Gamonal J, Morales-Bozo I, Canals M, Barahona S, Cóccola C, Cifuentes V (ডিসেম্বর ২০০৮)। "Yeast diversity in the oral microbiota of subjects with periodontitis: Candida albicans and Candida dubliniensis colonize the periodontal pockets"। Medical Mycology46 (8): 783–93। ডিওআই:10.1080/13693780802060899পিএমআইডি 18608938 
  32. Matsuo T, Nakagawa H, Matsuo N (১৯৯৫)। "Endogenous Aspergillus endophthalmitis associated with periodontitis"। Ophthalmologica. Journal International d'Ophtalmologie. International Journal of Ophthalmology. Zeitschrift Fur Augenheilkunde209 (2): 109–11। ডিওআই:10.1159/000310592পিএমআইডি 7746643 
  33. Migliari DA, Sugaya NN, Mimura MA, Cucé LC (১৯৯৮)। "Periodontal aspects of the juvenile form of paracoccidioidomycosis"। Revista do Instituto de Medicina Tropical de Sao Paulo40 (1): 15–8। ডিওআই:10.1590/S0036-46651998000100004পিএমআইডি 9713132 
  34. Lalla E, Cheng B, Lal S, Kaplan S, Softness B, Greenberg E, Goland RS, Lamster IB (এপ্রিল ২০০৭)। "Diabetes mellitus promotes periodontal destruction in children"। Journal of Clinical Periodontology34 (4): 294–8। ডিওআই:10.1111/j.1600-051X.2007.01054.xপিএমআইডি 17378885 
  35. "Diabetes and Periodontal Disease"WebMD 
  36. Kinane DF, Stathopoulou PG, Papapanou PN (জুন ২০১৭)। "Periodontal diseases"। Nature Reviews. Disease Primers3: 17038। ডিওআই:10.1038/nrdp.2017.38পিএমআইডি 28805207 
  37. Jepsen S, Caton JG, Albandar JM, Bissada NF, Bouchard P, Cortellini P, Demirel K, de Sanctis M, Ercoli C, Fan J, Geurs NC, Hughes FJ, Jin L, Kantarci A, Lalla E, Madianos PN, Matthews D, McGuire MK, Mills MP, Preshaw PM, Reynolds MA, Sculean A, Susin C, West NX, Yamazaki K (জুন ২০১৮)। "Periodontal manifestations of systemic diseases and developmental and acquired conditions: Consensus report of workgroup 3 of the 2017 World Workshop on the Classification of Periodontal and Peri-Implant Diseases and Conditions" (পিডিএফ)Journal of Clinical Periodontology। 45 Suppl 20: S219–S229। ডিওআই:10.1111/jcpe.12951পিএমআইডি 29926500 
  38. Berglundh T, Armitage G, Araujo MG, Avila-Ortiz G, Blanco J, Camargo PM, Chen S, Cochran D, Derks J, Figuero E, Hämmerle CH, Heitz-Mayfield LJ, Huynh-Ba G, Iacono V, Koo KT, Lambert F, McCauley L, Quirynen M, Renvert S, Salvi GE, Schwarz F, Tarnow D, Tomasi C, Wang HL, Zitzmann N (জুন ২০১৮)। "Peri-implant diseases and conditions: Consensus report of workgroup 4 of the 2017 World Workshop on the Classification of Periodontal and Peri-Implant Diseases and Conditions"। Journal of Clinical Periodontology। 45 Suppl 20: S286–S291। ডিওআই:10.1111/jcpe.12957অবাধে প্রবেশযোগ্যপিএমআইডি 29926491 
  39. "Staging and Grading Periodontitis" (পিডিএফ)। ১৬ নভেম্বর ২০১৮ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩ জুন ২০২০