বিষয়বস্তুতে চলুন

পল্লী নিকেতন

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে

পল্লী নিকেতন কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের শ্রীনিকেতনের আদলে গড়া এক সামাজিক এবং সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান। বর্তমানে এটি পশ্চিমবঙ্গ সরকারের স্বীকৃতি প্রাপ্ত এবং জনশিক্ষা প্রসার দপ্তরের অধীনস্থ একটি সংস্থা।

ইতিকথা

[সম্পাদনা]

১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দে ভারতের স্বাধীনতা লাভের পর অবিভক্ত বাংলার স্বদেশ মন্ত্রে দীক্ষা নিয়েছিলেন যাঁরা, তাঁদের অনেকেই পশ্চিমবঙ্গের অবিভক্ত চব্বিশ পরগনা জেলার (বর্তমানে উত্তর চব্বিশ পরগনা জেলার) বাগু, সপ্তগ্রাম সন্নিহিত অঞ্চলে অবস্থান করছিলেন। তাঁদের অন্যতম হলেন - মুক্তি সংঘের প্রতিষ্ঠাতা হেমচন্দ্র ঘোষ, ভূপেন্দ্রকিশোর রক্ষিত রায়,নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বসুর বেঙ্গল ভলেন্টিয়ার্সের মেজর সত্য গুপ্ত,কলকাতার রাইটার্স বিল্ডিং বর্তমানে মহাকরণের অলিন্দযুদ্ধের বিনয়-বাদল-দীনেশ এর পরামর্শদাতা রসময় শূর ও বাদলের শিক্ষক নিকুঞ্জ সেন, উজ্জ্বলা মজুমদার প্রমুখেরা।[১] 'অসি' ছেড়ে 'মসী' হাতে নেওয়া বিপ্লবীরা দৃষ্টি দিলেন গ্রামোন্নয়নের কাজে। বাগু এবং পার্শ্ববর্তী গ্রামের মানুষদের আর্থিক স্বনির্ভরতা দিতে প্রয়োজন বোধ করলেন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক মানোন্নয়নের।[২] কপর্দকশূন্য বিপ্লবীরা শরণাপন্ন হন এলাকার বিত্তশালী জমিদার সর্বেশ্বর মণ্ডলের কাছে। তিনি নির্দ্বিধায় নয় বিঘা জমি ও বেশ কয়েক গোলা ধান দিয়ে দেন তাঁদের। ধান বিক্রির অর্থে সেই জমিতে গড়ে তোলেন স্কুলের কাঠামো। সংগৃহীত অর্থে কিছু আসবাবপত্র। এমন প্রচেষ্টায় স্বাধীনতার দীর্ঘ সাত বৎসর পর ১৯৫৪ খ্রিস্টাব্দে পূর্ণরূপে আত্মপ্রকাশ করে পল্লী নিকেতন সপ্তগ্রাম স্কুল।[৩]

প্রাথমিক কার্যকলাপ

[সম্পাদনা]

শ্রীনিকেতনের আদলে প্রথমে "সপ্তগ্রাম উন্নয়ন পঞ্চায়েত" ও পরে "পল্লী নিকেতন" নামে প্রতিষ্ঠিত হয় এই প্রতিষ্ঠান। পল্লীর সামগ্রিক উন্নয়নের লক্ষ্যে বিপ্লবীরা যে যে পদক্ষেপ নিয়েছিলেন সেগুলির মধ্যে ছিল -

  • বিদ্যালয়ের সুপরিচালনার সাথে ছাত্রদের সামাজিক ও সাংস্কৃতিক কাজকর্মে উদ্বুদ্ধ করা ও গ্রামবাসীদের মূল স্রোতে নিয়ে আসা
  • 'বয়স্ক শিক্ষা কেন্দ্র স্থাপন' - বাগু, আড়বেলিয়া, শিখরপুর, উত্তর ও দক্ষিণ নয়াবাদে পাঁচটি বয়স্ক শিক্ষা কেন্দ্র প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল।
  • 'লাইব্রেরী প্রতিষ্ঠা'
  • 'বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণ ও উৎপাদন ব্যবস্থা'
  • 'দুগ্ধ সরবরাহ কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা' - রেড ক্রশ সোসাইটি ও ইউনাইটেড কাউন্সিল অফ রিলিফ অ্যান্ড ওয়েলফেয়ার' এর সহযোগিতায় বিনামূল্যে গুঁড়ো দুধ বণ্টন
  • 'চিকিৎসা ব্যবস্থা' - দাতব্য হোমিও চিকিৎসার সুযোগ প্রদান
  • 'ডাকঘর প্রতিষ্ঠা'
  • 'ভবন নির্মাণ' - ছাত্রদের জন্য 'রবীন্দ্র ভবন',পল্লী নিকেতনে 'নেতাজী ভবন', রিফ্রেশার কোর্সের জন্য 'বিবেকানন্দ ভবন', বিজ্ঞান গবেষণার জন্য আচার্য জগদীশ ভবন, নিম্ন শিক্ষা বুনিয়াদি বিদ্যালয়ের জন্য 'শ্রী নিবেদিতা ভবন'ইত্যাদি।

তথ্যসূত্র

[সম্পাদনা]
  1. "বাদল গুপ্তকে সশস্ত্র সংগ্রামে উদ্বুদ্ধ করেছিলেন,অলিন্দ যুদ্ধের পরিকল্পনাতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল নিকুঞ্জ সেনের | Bangla Amar Pran - The glorious hub for the Bengal"banglaamarpran.in (ইংরেজি ভাষায়)। ২০২০-১০-০১। ২০২১-০৮-০১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৮-০১ 
  2. 'বিপ্লবী-তীর্থ পল্লী নিকেতন' সংকলন ও সম্পাদনা শেখ আলী আহসান - অলিন্দ যুদ্ধের ৭৫ বৎসর পূর্তি উৎসব কমিটি রাজারহাট কলকাতা প্রকাশিত
  3. "'অনাদরে মলিন হয়ে যাচ্ছে বিপ্লবীদের স্কুল ....'"। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৯-৩০