পদ্মাবতী অনন্তগোপালন

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
পদ্মাবতী অনন্তগোপালন
জন্ম (1934-07-12) ১২ জুলাই ১৯৩৪ (বয়স ৮৯)
ভারত
উদ্ভবচেন্নাই তামিলনাড়ু, ভারত
ধরনকর্ণাটকী সঙ্গীত
পেশাবীণাশিল্পী, যন্ত্রশিল্পী, বীণা
বাদ্যযন্ত্রবীণা
ওয়েবসাইটwww.padmavathyananthagopalan.com

পদ্মাবতী অনন্তগোপালন (জন্ম ১২ই জুলাই, ১৯৩৪) কর্ণাটকী সঙ্গীতধারার ভারত একজন শাস্ত্রীয় সঙ্গীতজ্ঞ এবং বীণা বাদক। তিনি মৃদঙ্গ এবং নাগস্বরম যন্ত্র বাজানোতেও দক্ষ[১]। বীণা বাজানোর ক্ষেত্রে তাঁর সাত দশকের বেশি অভিজ্ঞতা রয়েছে[২]। তাঁর জন্ম একটি সঙ্গীত পরিবারে, সঙ্গীতজ্ঞ লালগুড়ি জয়রামন তাঁর আত্মীয়; এছাড়াও তাঁর পূর্বপুরুষেরা সন্ত ত্যাগরাজের প্রত্যক্ষ শিষ্য।

তিনি তাঁর নিজস্ব অনন্য গায়কীশৈলীর জন্য পরিচিত। তিনি গুরু-শিষ্য (গুরুকুল) পরম্পরার সমর্থক। তিনি জয়ন্তী কুমারেশ (বীণা) এবং ঊষা রাজগোপালন (বেহালা) এর মতো অসংখ্য শিল্পীর গুরু। তিনি শ্রী সতগুরু সঙ্গীত বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা এবং এই প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে ২৫ বছরেরও বেশি সক্রিয় প্রশিক্ষণ প্রদানে যুক্ত রয়েছেন।

শৈশব ও ব্যক্তিগত জীবন[সম্পাদনা]

পদ্মাবতীর সঙ্গীতে হাতেখড়ি মাত্র পাঁচ বছর বয়সে তাঁর বাবা লালগুড়ি গোপাল আইয়ারের অধীনে[৩]। তিনি তাঁর কাছ থেকে বীণা বাজানোর সংক্ষিপ্তসারগুলি শিখেছিলেন। তাঁর প্রথম মঞ্চে অনুষ্ঠান পরিবেশন বারো বছর বয়সে[৪]। তাঁর পূর্বপুরুষরা হলেন কর্ণাটকী সঙ্গীতের অন্যতম সেরা সুরকার, সন্ত ত্যাগরাজের প্রত্যক্ষ শিষ্য।

পদ্মাবতীর স্বামী অনন্তগোপালনও বীণা এবং বেহালা যন্ত্রশিল্পী। অনন্তগোপালন একজন পরিচিত যন্ত্রশিল্পীগুরু। তাঁর বড় ভাই ছিলেন প্রয়াত বেহালা বাদক, কণ্ঠশিল্পী এবং সুরকার পদ্মভূষণ লালগুড়ি জি জয়রামন। তাঁর দুই বোন লালগুড়ি রাজলক্ষ্মী এবং লালগুড়ি শ্রীমতী ব্রহ্মানন্দমও বেহালাবাদক[১]

কর্মজীবন[সম্পাদনা]

পদ্মাবতী "গায়কী" শৈলীতে বীণা পরিবেশন করেন অর্থাৎ তিনি কণ্ঠের উপস্থাপনার মতো করে বাদ্যযন্ত্রে সুরারোপণ করেন। বিদ্বান এস বালাচন্দ্র তাঁর উপর বিরাট প্রভাব ফেলেছিলেন এবং পদ্মাবতী তাঁকে তাঁর "মানসিক" গুরু (যার অর্থ শ্রদ্ধার সাথে একজনের মনের মধ্যে গুরু হিসেবে বরণ করা) হিসাবে বিবেচনা করেছিলেন। তিনি সমস্ত মহান বীণাশিল্পীদের পর্যবেক্ষণ করে শেষ পর্যন্ত তার নিজস্ব অনন্য শৈলী নিয়ে এসেছিলেন যেখানে প্রতিটি স্বরকে একটি রাগের মধ্যে উপযুক্ত গুরুত্ব দেওয়া হয়।[২]

তিনি একজন প্রথম শ্রেণীর ('এ' গ্রেড) শিল্পী এবং সর্বভারতীয় রেডিও এবং জনপ্রিয় টেলিভিশন নেটওয়ার্কগুলিতে নিয়মিত অনুষ্ঠান পরিবেশন করেন। তিনি তাঁর ছাত্রদের সুবিধার্থে ললিতা সহস্রনাম, সৌন্দর্যলহরী, মূক পঞ্চসতীর মতো সংস্কৃত রচনা ও সুর তৈরি করেছেন[৫]

তিনি বিভিন্ন আন্তর্জাতিক অনুষ্ঠানে ভ্রমণ এবং বাদ্যপরিবেশন করেছেন। ১৯৯০ সাল থেকে তিনি যুক্তরাজ্য, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, মালয়েশিয়া এবং সিঙ্গাপুর ভ্রমণ করেছেন। এর মধ্যে কয়েকটি ভ্রমণে তাঁর সাথে ছিলেন জয়ন্তী কুমারেশ

তিনি বর্তমানে আরও মেধাবী বীণা শিল্পী তৈরিতে এবং সভায় (পারফরম্যান্স হলগুলি) অন্যান্য বাদ্যযন্ত্রগুলি যেভাবে কন্ঠসঙ্গীতের সাথে সঙ্গত করে, বীণা বাদনও যাতে সে একই গ্রহণযোগ্যতা পায় সেই দিকে মনোনিবেশ করছেন।

বই[সম্পাদনা]

তিনি সঙ্গীত শিক্ষার্থীদের জন্য সিঙ্গাপুর ইন্ডিয়ান ফাইন আর্টস সোসাইটির সহযোগিতায় 'ষড়জম' ও 'ঋষভম' নামে দুটি বই রচনা ও প্রকাশ করেছিলেন। এছাড়া, 'অভ্যাস মঞ্জরি' শিরোনামে কর্ণাটকী সঙ্গীতের নবীন শিক্ষার্থীদের জন্য একটি বইও তিনি লিখেছেন।[৪]

গুরুকুল[সম্পাদনা]

পদ্মাবতী একজন অত্যন্ত সম্মানিত শিক্ষক। তাঁর ছাত্ররা বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে আছেন এবং বীণাবাদক, বেহালাবাদক ও কন্ঠশিল্পী হিসেবে নিয়মিত কর্ণাটকী মার্গসঙ্গীতের প্রসারে নিয়োজিত রয়েছেন। তিনি অসংখ্য শিক্ষার্থীর কাছে শিক্ষক ছিলেন যারা অনেকেই গুরুকুল পদ্ধতিতে আবাসিক প্রশিক্ষণের মাধ্যমে উপকৃত হয়েছেন। তাঁর দীর্ঘ বাইশ বছরের শিষ্যা এবং ভাইঝি জয়ন্তী কুমারেশ একজন সুপরিচিত বীণাবাদক।[১]। বেহালাবাদক উষা গোপালন [৬] এবং নবীন শাস্ত্রীয় সঙ্গীতশিল্পী মালবিকা সুন্দর তাঁর দীর্ঘদিনের শিষ্যা।

নকশা ও রক্ষণাবেক্ষণ[সম্পাদনা]

পদ্মাবতীর কাছে ৩০টিরও বেশি বীণা রয়েছে। তিনি যন্ত্রগুলি নির্মাণের প্রযুক্তিগত সূক্ষ্মতার সাথে খুবই পরিচিত এবং সেগুলি নিজেই দেখাশোনা করেন।[১]

পুরস্কার ও সম্মাননা[সম্পাদনা]

  • মুদ্রা বীণোৎসব ২০১৪-তে "বৈণিকা মুদ্রা" পুরস্কার[৭]
  • বীণা ফাউন্ডেশন (নয়াদিল্লি) কর্তৃক "বীণা তত্ত্বজ্ঞ" পুরস্কার
  • ২০০৬ সালে চেন্নাইয়ের সঙ্গীত একাডেমি কর্তৃক টিটিকে পুরস্কার[৮]
  • শ্রী জগদগুরু বেদ পরায়ণ ট্রাস্ট কর্তৃক "গানা নিধি" পুরস্কার
  • "আচার্য দেবো ভব" - আশিতম জন্মদিনের সংবর্ধনা

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. V, Balasubramanian (জুলাই ১০, ২০১৪)। "Her life with the Veena"। Chennai। The Hindu। সংগ্রহের তারিখ ১৪ মার্চ ২০১৫ 
  2. S, Subhakeerthana (১ সেপ্টেম্বর ২০১৪)। "Seven Decades of Playing the Veena"। Chennai। The New Indian Express। ১১ অক্টোবর ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৪ মার্চ ২০১৫ 
  3. V, Balasubramanian (২৪ জুলাই ২০১৪)। "A life with chords..."। Chennai। The Hindu। সংগ্রহের তারিখ ১৫ মার্চ ২০১৫ 
  4. "Lalgudi Padmavathy"। SPICMACAY। সংগ্রহের তারিখ ১৫ মার্চ ২০১৫ 
  5. Kumaresh, Jayanthi (অক্টোবর ২০১০)। "My Guru" (পিডিএফ): 41, 42। 
  6. Krishnan, Lalithaa (১০ নভেম্বর ২০০৯)। "There's no substitute for gurukulam"। সংগ্রহের তারিখ ১৫ মার্চ ২০১৫ 
  7. "Non-stop musical treat"। Chennai। The Hindu। ২৪ আগস্ট ২০১৪। সংগ্রহের তারিখ ১৫ মার্চ ২০১৫ 
  8. "Recipients of TTK Award"। Music Academy, Chennai। ১ অক্টোবর ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৫ মার্চ ২০১৫