দুকুলা

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে

দুকুলা হল গাছের বাকল থেকে প্রাপ্ত তন্তু দিয়ে তৈরি একটি প্রাচীন ভারতীয় কাপড়।[১] কাপড়টি রেশমের সাথে তুলনীয় ছিল। রেশমের সাথে তুলনীয় অন্যান্য কাপড়ের মধ্যে দুকুলা সহ কিছু সমসাময়িক জাতের ক্ষৌমা, নেত্র এবং তিরিতপাট্টাও উল্লেখযোগ্য ছিল। কিছু উৎস থেকে জানা যায় যে দুকুলা সিল্ক ধরণের কাপড় ছিল। কিন্তু বাকল থেকে প্রাপ্ত তন্তু দিয়ে তৈরি হবার কারণে এটি আসলে একটি সূক্ষ্ম লিনেন কাপড় হিসেবে পরিচিত ছিল। অমরসিংহের মতে "দুকুলা" শব্দটি "ক্ষৌমা" (লিনেন) এর প্রতিশব্দ ছিল।[২](p১১)

উল্লেখ[সম্পাদনা]

দুকুলা (বিশেষত রাজহাঁসের প্যাটার্ন সহ) গুপ্ত যুগের সাহিত্যে তর্কযোগ্যভাবে সেরা কাপড় হিসাবে স্বীকৃত ছিল।(p১৫) বাণভট্ট, সপ্তম শতাব্দীর একজন পণ্ডিত (যিনি রাজা হর্ষ বর্ধনের দরবারে আস্থানা কবি ছিলেন), তার লেখায় "হাঁস দুকুলা" এর কথা উল্লেখ করেছেন। হাঁস দুকুলাতে হংস (হাঁস বা হংস) এর মতো আকৃতির প্যাটার্ন ব্যবহার করা হত। দেবতা ও রাজারা এ কাপড়টি পরিধান করতেন। হর্ষচরিত (কনৌজের জীবনীর রাজা হর্ষ বর্ধন) বিভিন্ন ধরনের বস্ত্রের তালিকা তৈরি করেন। বাণভট্ট হর্ষের বোনের (রাজ্যশ্রীর) বিয়েতে একটি প্রদর্শনীর সময় প্রদর্শিত বিভিন্ন বস্ত্র সম্পর্কে বর্ণনা করেন। তিনি বস্ত্রের তালিকায় "দুকুলা," "আমশুকা," "ক্ষৌমা," "বাদরা," এবং "নেত্র" নামগুলো উল্লেখ করেছেন।[৩](p২৭৬)

কালিদাসের কুমারসম্ভব কবিতায় দেবতা শিব এবং হিন্দু দেবী পার্বতীর পোশাক নিয়ে বর্ণনা করার সময় তিনি "দুকুলা" এর কথাও উল্লেখ করেন।[৪](p১৫) কালিদাস বিক্রমোর্বাশিয়ম এবং ঋতুসংহারেও দুকুলার উল্লেখ করেছেন। তিনি দুকুলাকে রেশম কাপড় বলে উল্লেখ করেছেন।(p১৫)

উৎপাদন[সম্পাদনা]

বাংলা এই ধরনের কাপড়ের জন্য একটি সুপরিচিত উৎপাদন কেন্দ্র ছিল। অর্থশাস্ত্রে কৌটিল্য বাংলাকে দুকুলার প্রযোজক হিসেবে উল্লেখ করেছেন।[৫]

আরও দেখুন[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. Prakash, Om (২০০৫)। Cultural History of India (ইংরেজি ভাষায়)। New Age International। পৃষ্ঠা 382। আইএসবিএন 978-81-224-1587-2 
  2. Journal Of The Indian Society Of Oriental Art Vol.12। ১৯৪৪। 
  3. Das, Santosh Kumar (১৯২৫)। Economic history of ancient India। Santosh Kumar Das, Howrah। পৃষ্ঠা 146। 
  4. Agrawal, Yashodhara (২০০৩)। Silk brocades। Internet Archive। New Delhi : Roli Books। পৃষ্ঠা 10। আইএসবিএন 978-81-7436-258-2 
  5. Journal of the Bihar and Orissa research society। ১৯১৯। পৃষ্ঠা 320।