তিলপী ধোসা

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
তিলপী ধোসা
অবস্থানতিলপী ও ধোসা, পশ্চিমবঙ্গ, ভারত
ধরনবসতি
স্থান নোটসমূহ
অবস্থাধ্বংসাবশেষ
জনসাধারণের প্রবেশাধিকারহ্যাঁ

তিলপী-ধোসা পশ্চিমবঙ্গের প্রত্নস্থল। প্রত্নস্থলটি পিয়ালী নদীর ডান তীরে অবিস্থত, যা তিলপী ও ধোসা গ্রাম দু’টি জুড়ে বিস্তৃত রয়েছে। এই গ্রাম দু’টিতেই অনুসন্ধান ও সীমিত প্রত্নতাত্ত্বিক খননে আবিষ্কৃত হয়েছে ২২০০ বছরের প্রাচীন প্রত্নসামগ্রী ও গুপ্ত সময়ের বৌদ্ধ স্তূপ।

প্রত্নস্থলে বিভিন্ন সময়ে খননকার্জ পরিচালিত হয়েছে। খননকার্জে প্রাপ্ত প্রত্নসামগ্রী তিলপী-ধোসার প্রাচীনত্ব ও প্রত্নতাত্ত্বিক গুরুত্ব প্রমাণ করে। এখানকার নিদর্শনাবলির প্রধান অংশ কলকাতার আশুতোষ সংগ্রহশালা ও প্রত্নতাত্ত্বিক জাদুঘরে সংরক্ষিত রয়েছে। বিখ্যাত চীনা বৌদ্ধ সন্ন্যাসী ফা-হিয়েন তিলপী-ধোসার আশেপাশে একটি বৃহৎ স্তুপ পরিদর্শন করার কথা উল্লেখ করেছিলেন, যা মোটামুটিভাবে ধোসা গ্রামের অবস্থানের সঙ্গে মিলে যায় এবং এখানে প্রচুর পরিমাণে পোড়ামাটির ইট যা একটি বড় সুনির্মিত কাঠামোর উপস্থিতির প্রমাণ পাওয়া গিয়েছে।[১]

প্রত্নতত্ত্ব[সম্পাদনা]

তিলপী ও ধোসা গ্রামের অধিবাসীরা বিভিন্ন সময়ে প্রাচীন পোড়ামাটির ইট ও মূর্তি উদ্ধার করেছে, যে কারণে তারা প্রাচীন জনবসতি সম্পর্কে অবগত ছিল। তবে গ্রাম দু’টিতে কোন সুউচ্চ ঢিবির উপস্থিতি নেই, যা মূলত বেশীরভাগ প্রাচীন জনবসতির ধ্বংসাবশেষ থেকে গঠিত হয়। গ্রাম দু’টিতে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ কর্তৃক জরিপ অন্বেষণ ও খননের ফলে প্রাচীন জনবসতি সম্পর্কিত প্রমাণ পাওয়া গিয়েছিল।[১] ২০০৫ খ্রিস্টাব্দ থেকে ২০০৭ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে খনন করা হয়েছিল, যা গ্রাম দু’টিতে মানবসতির উপস্থিতিকে ২০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দ পর্যন্ত প্রসারিত করেছিল।[১] ঐতিহাসিকগণের অনুমান আনুসারে, এই স্থানটি পিয়ালিবিদ্যাধরী নদী মাধ্যমে চন্দ্রকেতুগড়ের সঙ্গে জলপথে সংযুক্ত ছিল।[১]

প্রত্নতাত্ত্বিকরা দাবি করেন যে প্রত্নস্থলের প্রথম সংস্কৃতি পর্যায়টি খ্রিষ্টপূর্ব ২য় শতাব্দী থেকে ১ম শতাব্দী পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল। তবে প্রত্নস্থল থেকে গুপ্ত যুগের নমুনা সবচেয়ে বেশি পাওয়া গিয়েছে। গ্রাম দু’টিতে কোন প্রকার নগর বৈশিষ্ট্য অথবা দুর্গের উপস্থিতি পাওয়া যায়নি, যা প্রত্নস্থলে গ্রামীণ ও কৃষিভিত্তিক মানববসতির ইঙ্গিত বহন করে। তিলপী গ্রাম থেকে প্রাপ্ত নমুনা অনুযায়ী, ৩য় শতাব্দীতে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছিল, এবং পরবর্তী সময়ে গ্রামটিতে কোন মানববসতির উপস্থিতি পাওয়া যায়না, তবে ১৬তম–১৭তম শতাব্দীতে পুনরায় মানববসতি গড়ে উঠেছিল। ধোসা গ্রামে একটি প্রাচীন ভবন-কাঠামো সনাক্ত করা হয়েছে, প্রত্নতাত্ত্বিকরা যেটিকে বৌদ্ধ স্তূপ হিসাবে উল্লেখ করেছেন এবং ফা-হিয়েনের বর্ণনায় উল্লেখিত বৌদ্ধ স্তূপ হিসাবে চিহ্নিত করেছেন।[১]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "Exploring the forgotten Buddhist archaeological sites of Tilpi and Dhosa"। সংগ্রহের তারিখ ৭ এপ্রিল ২০২৪