তর্জা (লোকজ কবিতা প্রতিযোগিতা)

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে

তর্জা এক ধরনের দীর্ঘ ঐতিহ্যবাহী বাংলার অনুষ্ঠান। এটি লোকজ কবিতার একটি প্রতিযোগিতা। ঐতিহাসিকভাবে এটি পরিবেশন করা হয়ে থাকে গ্রাম্য আসরে কোনো চণ্ডীমণ্ডপে অথবা গ্রামদেবতার পূজাবেদি, মেলা অথবা অন্যান্য সামাজিক অনুষ্ঠানে। সাধারণত রাস্তাঘাটে, বাজারের কোনো স্থানে, বা মঞ্চ সাজিয়েও বিবিধ ধর্মীয় অনুষ্ঠানে এর পরিবেশনা করা হয়ে থাকে। প্রতিযোগিতার বিষয় নির্ধারণ করা হয় সাধারণত রামায়ণ, মহাভারত বা পুরাণ থেকে। কবিরা তাদের নিজ অংশটি ছড়া আকারে গায় এবং অন্য অংশগ্রহণকারীকে এর অর্থ অনুমান করতে হয়। বাংলার নবজাগরণের সময়ে আধুনিকায়নের জোয়ারে ঝুমুর ক্লাবসহ এমন অনেক ক্লাব ধ্বংশ করা হয়েছিল এদের অশালীন বিষয়বস্তু আছে বলে।[১]

একটি তর্জা শ্লোকের উদাহরণ:

মাগী মিনশেকে চিৎ করে ফেলে দিয়ে বুকে দিয়েছে পা আর চোখটা করে ঝুলুর ঝুলুর, মুখে নাইকো রা।[১]

এর আক্ষরিক অনুবাদ: "কোনো বেহায়া মেয়ে পুরুষকে মাটিতে উপুড় করে ফেলে দিয়ে তার বুকে পা দিয়েছে, আর রাগে চোখ আগুন ঝরাচ্ছে মুখে কোনো আওয়াজ না করে।" [১] এই ধাঁধার উত্তর হল দেবী কালী এবং তাঁর সাথে যুক্ত কিংবদন্তি। এর উত্তরদাতারা সেই মুহূর্তে তৈরি একটি কবিতায় তার উত্তরও গাইবে।

একটি শিল্প মাধ্যম[সম্পাদনা]

এই কবিতা প্রতিযোগিতায় জেগে ওঠা সংগীতের একটি বিশেষ রূপ আছে। এছাড়া এটি অন্যান্য অনুরূপ লোকজ সংস্কৃতি ঝুমুর, টপ্পার সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। বঙ্গের সংগীত জগতে এটি যোগ করছে এক অনন্য মাত্রা।

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. Recasting Women:Essays in Colonial History, Kumkum Sangari et al., page 157