ডোক্কা সীতাম্মা

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
ডোক্কা সীতাম্মা
ভারতের অন্ধ্রপ্রদেশ রাজ্যের কাকিনাড়ার বিবেকানন্দ পার্কে ডোক্কা সীতাম্মার মূর্তি
জন্মঅক্টোবর ১৮৪১
মৃত্যু২৮শে এপ্রিল ১৯০৯
জাতীয়তাভারতীয়
অন্যান্য নামঅন্ধ্রুলা অন্নপূর্ণা
অপরা অন্নপূর্ণা
পেশাসমাজকর্মী, শিক্ষাবিদ,
দাম্পত্য সঙ্গীডোক্কা জগান্না

ডোক্কা সীতাম্মা (শুধু সীতাম্মাও বলা হয়; ১৮৪১ – ১৯০৯) হলেন একজন ভারতীয় মহিলা যিনি দরিদ্র মানুষ এবং পথিকদের জন্য খাবার পরিবেশন করে তাঁর জীবনের বেশিরভাগ সময় ব্যয় করে স্বীকৃতি অর্জন করেছিলেন, এবং নিজের নাম অন্নদানম এর সমার্থক করে তুলেছিলেন। যে দিনগুলিতে কোনও গণমাধ্যম ছিল না, এমনকি খবরের কাগজ পড়ার সংস্কৃতিও বিকশিত হয়নি, দাতব্য ও আতিথেয়তায় তাঁর নাম কেবল ভারতের রাজ্য নয়, মহাদেশের সীমানা অতিক্রম করেছিল। ১৯০৩ সালের ১লা জানুয়ারি তারিখে তৎকালীন শাসক রাজা এডওয়ার্ড সপ্তম লন্ডনের রয়্যাল প্যালেসের মূল হলে তাঁর ছবির উদ্বোধন করেছিলেন।[১]

সীতাম্মা ১৮৪১ সালের অক্টোবরে অন্ধ্রপ্রদেশ রাজ্যের রাজমুন্দ্রি জেলার তৎকালীন মন্ডপেটা গ্রামে (বর্তমানে ভারতের অন্ধ্রপ্রদেশ রাজ্যের পূর্ব গোদাবরী জেলা) জন্মগ্রহণ করেন।[২] তাঁর পিতার নাম ছিল পণ্ডিত ভবানী শঙ্কর। সীতাম্মা শৈশবকালেই তাঁর মাকে হারিয়েছিলেন।[৩]

প্রারম্ভিক জীবন[সম্পাদনা]

সীতাম্মা পূর্ব গোদাবরী জেলার মন্ডাপেটাতে একটি সচ্ছল সনাতনী ব্রাহ্মণ পরিবারে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। তাঁর পিতা, পণ্ডিত ভবানী শঙ্কর, দরিদ্রদের খাওয়ানোর জন্য "বুভান্না শাস্ত্রী" উপাধি অর্জন করেছিলেন। সীতাম্মা এই মহৎ বৈশিষ্ট্য উত্তরাধিকার সূত্রে পেয়েছিলেন এবং শেষ নিঃশ্বাস পর্যন্ত তাঁর বাবার দেখানো পথে অটলভাবে হেঁটেছিলেন। তাঁর বিবাহ হয়েছিল ধনী কৃষক ডোক্কা ভেঙ্কটা জোগান্নার সাথে। তিনি তাঁর স্ত্রীকে এই কাজে অদম্য সমর্থন জুগিয়েছিলেন। এই কারণে তিনি বিবাহের পরেও এই দাতব্য কর্ম চালিয়ে যেতে পেরেছিলেন।[৪] তিনি ৪০ বছরেরও বেশি সময় ধরে এই কাজ করেছিলেন, যার অনেকটাই তাঁর স্বামীর মৃত্যুর পরে।[৫]

স্বীকৃতি[সম্পাদনা]

ব্রিটিশ সরকার তাঁর দাতব্য কর্মকে স্বীকৃতি দিয়েছিল এবং রাজা এডওয়ার্ড সপ্তম, নিজের বার্ষিকী উদযাপনে, তাঁকে ভারতের অন্যান্য অতিথিদের সাথে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন। তিনি মাদ্রাজের মুখ্য সচিবকে নির্দেশ দিয়েছিলেন তাঁকে সসম্মানে দিল্লিতে নিয়ে আসতে, কিন্তু সীতাম্মা বিনয়ের সাথে আমন্ত্রণ প্রত্যাখ্যান করেছিলেন। তিনি বলেছিলেন যে তিনি প্রচারের জন্য তাঁর পরিষেবা প্রদান করছেন না। মাদ্রাজের মুখ্য সচিব রাজা এডওয়ার্ডকে তাঁর একটি ছবি দিয়েছিলেন। তিনি সেটি বড় করে, উদযাপনের সময়, একটি চেয়ারে বসিয়ে রেখেছিলেন।[৫]

সম্মান[সম্পাদনা]

সীতাম্মাকে একজন হিন্দু সাধক হিসাবে সম্মানিত করা হয়েছিল এবং দেবী অন্নপূর্ণার পুনর্জন্ম "অপরা অন্নপূর্ণা" নামে অভিহিত করা হয়েছিল।[৬] স্বাধীনতার আগে, গোদাবরী নদীর উপর বদ্বীপ গান্নাভারম এবং লঙ্কালা গান্নাভারমের মধ্যে একটি জলাশয় তৈরি করা হয়েছিল। ২০০০ সালে অন্ধ্র প্রদেশ রাজ্য সরকার পুরানোটির পাশে একটি নতুন জলাশয় নির্মাণ করে। অন্ধ্রপ্রদেশের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী এন. চন্দ্রবাবু নাইডু এর নামকরণ করেছিলেন ডোক্কা সীতাম্মা জলাশয় এবং তাঁর একটি ব্রোঞ্জ মূর্তিও স্থাপন করা হয়েছিল।[২][৫][৭][১]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "Dokka Seethamma Aqueduct"। সংগ্রহের তারিখ ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২২ 
  2. టీవీయస్. శాస్త్రి। "ఆంధ్రుల అన్నపూర్ణ శ్రీమతి డొక్కా సీతమ్మ గారు"gotelugu.com (with photograph) (Telugu ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২৩ আগস্ট ২০১৬ 
  3. Subrahmanyam, Velcheti (২০১৬-১২-১৫)। "Play Dokka Seethamma: On a life well lived"The Hindu (ইংরেজি ভাষায়)। আইএসএসএন 0971-751X। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৮-৩১ 
  4. "Play Dokka Seethamma: On a life well lived"। সংগ্রহের তারিখ ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২২ 
  5. Jai Hind (২৯ নভেম্বর ২০১৫)। "Smt. Dokka Seethamma, A women served for Hunger and Needy"My Nation Pride। সংগ্রহের তারিখ ২৩ আগস্ট ২০১৬ [স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
  6. Doug Glener; Sarat Komaragiri (২০০২)। 'The Guest Is God': The Hospitality of a Hindu SaintWisdom's Blossoms: Tales of the Saints of India। Boston, Massachusetts: Shambhala। আইএসবিএন 9781570628849। সংগ্রহের তারিখ ২৩ আগস্ট ২০১৬ – Beliefnet-এর মাধ্যমে। 
  7. B. V. S. Bhaskar (২৮ আগস্ট ২০১০)। "Aqueduct cries for attention"The Hindu। সংগ্রহের তারিখ ২৩ আগস্ট ২০১৬