ডিইডব্লিউ এলসিটি-শ্রেণীর ল্যান্ডিং ক্রাফট ট্যাংক

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
শ্রেণি'র সারাংশ
নাম: ডিইডব্লিউ এলসিটি
নির্মাতা:
ব্যবহারকারী:  বাংলাদেশ নৌবাহিনী
নির্মিত: ২০১৩-২০১৪
পরিষেবাতে: ২০১৫-বর্তমান
অনুমোদন লাভ: ২০১৫-বর্তমান
সম্পন্ন: ২টি
সক্রিয়: ২টি
সাধারণ বৈশিষ্ট্য
প্রকার: ল্যান্ডিং ক্রাফট ট্যাংক
ওজন: ১৩০ টন
দৈর্ঘ্য: ২৫.৬০ মিটার (৮৪.০ ফু)
প্রস্থ: ৫.৪০ মিটার (১৭.৭ ফু)
গভীরতা: ১.২০ মিটার (৩.৯ ফু)
প্রচালনশক্তি:
  • ২ × ভলবো পেন্টা ডি৯ এমএইচ ৪২০ অশ্বশক্তি (৩১০ কিওয়াট) ডিজেল ইঞ্জিন (২২০০ আরপিএম);
  • ২ × পারকিন্স সাব্রে ৪.৪ জিএম জেনারেটর ৩৫ কিলোওয়াট (১৫০০ আরপিএম);
  • ২ × ফিক্সড পিটচ প্রোপেলার;
  • টুইন ডিস্ক গিয়ারবক্স
গতিবেগ: ১০ নট (১৯ কিমি/ঘ; ১২ মা/ঘ)
সীমা: ১,৫০০ নটিক্যাল মাইল (১,৭০০ মা; ২,৮০০ কিমি)
সহনশীলতা: ১০ দিন
লোকবল: ১১ জন
সেন্সর এবং
কার্যপদ্ধতি:
১ × ফুরুনো এফএআর২১১৭ এক্সএন-২৪এএফ নেভিগেশন র‍্যাডার (জাপান)
রণসজ্জা: ২ × এসটিকে-৫০এমজি ১২.৭ মিমি বিমান-বিধ্বংসী মেশিনগান

ডিইডব্লিউ এলসিটি-শ্রেণী হলো বাংলাদেশে নির্মিত ল্যান্ডিং ক্রাফট ট্যাংক (এলসিটি) জাহাজের শ্রেণী যা বাংলাদেশ নৌবাহিনী কর্তৃক ব্যবহৃত হয়। এই জাহাজসমূহকে সি কোয়েস্ট টেকনোলজি পিটিই লিমিটেড, সিঙ্গাপুর এর প্রযুক্তিগত সহায়তায় ডকইয়ার্ড অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কস লিমিটেড কর্তৃক নির্মাণ করা হয়। প্রতিটি জাহাজ সামুদ্রিক এবং উপকূলীয় অঞ্চলে উভচর অভিযান পরিচালনার পাশাপাশি ৩০ জন সেনাসদস্য, রসদ, অস্ত্র ও গোলাবারুদ, ১টি এমবিটি-২০০০ ট্যাংক, ১টি মিডিয়াম আর্টিলারি কামান, ১টি বুলডোজার, ছোট ও মাঝারি আকারের সামরিক যানবাহন এবং বিভিন্ন প্রকার সামরিক সরঞ্জাম পরিবহনে সক্ষম। এছাড়াও জাহাজটি দুর্যোগ কালীন সময়ে উদ্ধার অভিযান পরিচালনা ও দুর্যোগ পরবর্তী ত্রাণ তৎপরতা কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করে।[১][২][৩][৪][৫][৬][৭][৮][৯]

ইতিহাস[সম্পাদনা]

সশস্ত্র বাহিনীর জন্য গৃহীত দীর্ঘমেয়াদী আধুনিকায়ন পরিকল্পনার অংশ হিসেবে বাংলাদেশ সরকার দেশীয় ও বৈদেশিক উৎস থেকে সমরাস্ত্র সংগ্রহ বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। এছাড়াও উপকূলবর্তী নৌঘাঁটিতে চলাচল করার জন্য এসব উভচর জাহাজের প্রয়োজন ছিলো। যুদ্ধ ও শান্তি কালীন সময়ে চট্টগ্রাম, মোংলা, সেন্ট মার্টিন দ্বীপ এবং তৎসংলগ্ন উপকূলীয় এলাকায় উভচর অভিযান পরিচালনার পাশাপাশি ল্যান্ডিং ফোর্স, ট্যাংক, অস্ত্র, গোলাবারুদ ও রসদ সরবরাহের জন্য এসব জাহাজের প্রয়োজনীয়তা বিশেষভাবে পরিলক্ষিত হয়। এরই ধারাবাহিকতায়, ২৩ আগস্ট, ২০১৩ সালে বাংলাদেশ নৌবাহিনী এবং ডকইয়ার্ড অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কস লিমিটেড এর মধ্যে ২টি ল্যান্ডিং ক্রাফট ট্যাংক জাহাজ নির্মাণের চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। জাহাজ নির্মাণে প্রয়োজনীয় নকশা এবং প্রযুক্তি সরবরাহ করে সি কোয়েস্ট টেকনোলজি পিটিই লিমিটেড, সিঙ্গাপুর। নির্মাণ কাজ শেষে ১৪ নভেম্বর, ২০১৪ সালে তৎকালীন নৌবাহিনী প্রধান ভাইস এডমিরাল এম ফরিদ হাবিব-এনডি, এনবিপি, ওএসপি, বিসিজিএম, এনডিসি, পিএসসি মহোদয়ের নিকট বানৌজা এলসিটি ১০৩বানৌজা এলসিটি ১০৫ জাহাজ দুটি হস্তান্তর করা হয়। আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন যুক্তরাজ্য ভিত্তিক ক্লাসিফিকেশন সোসাইটি লয়েডস রেজিস্ট্রার এর নীতিমালা অনুসরণ করে এসব জাহাজ নির্মিত হয়। অবশেষে ৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৫ সালে জাহাজ দুটি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কর্তৃক নৌবাহিনীর বহরে কমিশনিং ও সংযুক্ত হয়।

বৈশিষ্ট্য ও যান্ত্রিক কাঠামো[সম্পাদনা]

প্রতিটি জাহাজের দৈর্ঘ্য ২৫.৬০ মিটার (৮৪.০ ফু), প্রস্থ ৫.৪০ মিটার (১৭.৭ ফু) এবং গভীরতা ১.২০ মিটার (৩.৯ ফু) এবং ওজন ১৩০ টন। প্রতিটি জাহাজে রয়েছে ২টি ভলবো পেন্টা ডি৯ এমএইচ ৪২০ অশ্বশক্তি (৩১০ কিওয়াট) ডিজেল ইঞ্জিন (২২০০ আরপিএম), ২টি পারকিন্স সাব্রে ৪.৪ জিএম জেনারেটর ৩৫ কিলোওয়াট (১৫০০ আরপিএম)। যার ফলে জাহাজগুলোর সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ১০ নট (১৯ কিমি/ঘ; ১২ মা/ঘ)। জাহাজগুলো ১১ জন জনবল নিয়ে একনাগাড়ে ১০ দিন অভিযান পরিচালনা করতে সক্ষম। বাংলাদেশ নৌবাহিনীকে প্রায়শই অবাঞ্ছিত বাহিনী দ্বারা উভচর অবতরণ প্রতিরোধের জন্য সামরিক ভূমিকা পালন এবং উপকূলীয় অঞ্চলে মানবিক সহায়তা ও দুর্যোগ ত্রাণ (এইচএডিআর) অপারেশন পরিচালনা করতে হয়। দেশীয় প্রযুক্তিতে নির্মিত এলসিটি সমূহ এসকল প্রয়োজনীয়তা পূরণের জন্য উপযুক্ত। উভচর সামরিক অভিযান পরিচালনাকালে নিজস্ব আক্রমণ দলকে তীরে অবতরণ করানোর পাশাপাশি প্রতিটি এলসিটি কিছু সময়ের জন্য একটি সৈন্যদল এবং সরঞ্জাম বহন করতে সক্ষম। এছাড়াও এসকল জাহাজ জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনেও মোতায়েন করার উপযোগী।

রণসজ্জা[সম্পাদনা]

দুর্যোগ ও শান্তিকালীন সময়ে সহায়ক ভূমিকায় নিয়োজিত এই জাহাজ দুটিতে রয়েছে:

  • ২টি এসটিকে-৫০এমজি ১২.৭ মিমি বিমান-বিধ্বংসী মেশিনগান;
  • এছাড়াও যুদ্ধকালীন বিশেষ পরিস্থিতিতে জাহাজটিতে ২টি ভূমি থেকে আকাশে উৎক্ষেপণযোগ্য বিমান বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র কিউডব্লিউ-২ ম্যানপ্যাড মোতায়েন করা যায়।

জাহাজসমূহ[সম্পাদনা]

 বাংলাদেশ নৌবাহিনী
 পরিচিতি সংখ্যা   নাম   নির্মাতা   নির্মাণ শুরু   হস্তান্তর   কমিশন   অবস্থা 
এ৫৮৬ বানৌজা এলসিটি ১০৩ ডকইয়ার্ড অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কস লিমিটেড ২৩ আগস্ট, ২০১৩ ১৮ নভেম্বর, ২০১৪ ৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৫ সক্রিয়
এ৫৮৮ বানৌজা এলসিটি ১০৫

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "Dockyard and Engineering Works Limited Bangladesh - Landing Craft Tank (LCT)"dewbn.gov.bd। ২০২২-১০-১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-১০-১৮ 
  2. "02 in nos Landing Craft Tank Tank (LCT) have been built by DEW and delivered it to BN within 10 months.Those are first warship built by DEW for Bangladesh Navy . Honorable Chief of Naval Staff was the Chief guest of the programme. Besides high officials from Bangladesh Navy, Bangladesh Coast Guard, BIWTA attained that program."www.facebook.com। ২০২৩-০৭-১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০৬-১৭ 
  3. "বাংলাদেশ নৌবাহিনীতে বানৌজা কে জে আলী, বানৌজা সন্দীপ ও বানৌজা হাতিয়া এর কমিশনিং, নবনির্মিত এলসিটি-১০৩ ও এলসিটি-১০৫ সংযুক্তিকরণ অনুষ্ঠান"। ২০২১-১২-৩০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-১২-৩০ 
  4. "গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের ০৭ (সাত) বছরের অগ্রগতির তথ্য প্রচারের ব্যবস্থাকরণ সম্পর্কিত" (পিডিএফ)। ২০২২-১০-১৮ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৬-০৪-০৭ 
  5. সোলায়মান, মোহাম্মদ (২০১৫-০৯-০৬)। "কারও সঙ্গে যুদ্ধ নয়,শান্তি চাই: প্রধানমন্ত্রী"দৈনিকবার্তা (ইংরেজি ভাষায়)। ২০২২-১০-১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-১০-১৮ 
  6. "গত সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রের নৌবাহিনী... - U.S. Embassy Dhaka"www.facebook.com। ২০২৩-০৭-১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-১১-২০ 
  7. "আশার আলো ভাসান চর | Bhashan Char | Beacon of Hope | Mohsin ul Hakim"। ৩০ মে ২০২৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৭ জুন ২০২৩ 
  8. "ঘূর্ণিঝড় "ফণী" পরবর্তী জরুরী উদ্ধার, ত্রাণ ও চিকিৎসা সহায়তায় প্রস্তুত রয়েছে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর ৩২টি জাহাজ ও নৌ কন্টিনজেন্ট"আইএসপিআর। ২০২২-১০-১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-১০-১৮ 
  9. "ঘূর্ণিঝড় 'মোখা' মোকাবেলায় উপকূলীয় এলাকার বসবাসকারীদের আশ্রয় কেন্দ্রে যাওয়ার জন্য সতর্ক করছে নৌবাহিনী দুর্যোগ পরবর্তী জরুরি উদ্ধার ও ত্রাণ কার্যক্রমের জন্য প্রস্তুত নৌবাহিনীর ২১ জাহাজ, হেলিকপ্টার ও এমপিএ"আইএসপিআর। ২০২৩-০৫-১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০৫-১৭