টাইটানাইট
টাইটানাইট (স্ফেন) | |
---|---|
![]() এম্ফিবলে টাইটানাইটের স্ফটিক | |
সাধারণ তথ্য | |
শ্রেণী | খনিজ |
রাসায়নিক সূত্র | CaTiSiO5 |
স্ত্রুনজ শ্রেণীবিভাগ | 9.AG.15 |
স্ফটিক ভারসাম্য | P21/a |
একক কোষ | a = 7.057 Å, b = 8.707 Å c = 6.555 Å; β = 113.81°; Z = 4 |
সনাক্তকরণ | |
বর্ণ | লালচে বাদামী, বাদামী, কৃষ্ণ, হলদে, সবুজ, বর্ণহীন |
স্ফটিক রীতি | Flattened wedge-shaped crystals, also massive |
স্ফটিক পদ্ধতি | Monoclinic |
যমজ | Contact and penetration on {100}, lamellar on {221} |
বিদারণ | Distinct on [110], parting on {221} |
ফাটল | Sub-conchoidal |
কাঠিন্য মাত্রা | 5 to 5.5 |
ঔজ্জ্বল্য | Subadamantine tending to slightly resinous |
ডোরা বা বর্ণচ্ছটা | লালচে সাদা |
স্বচ্ছতা | স্বচ্ছ অথবা অর্ধ-স্বচ্ছ |
আপেক্ষিক গুরুত্ব | 3.48 to 3.60 |
আলোকিক বৈশিষ্ট্য | Biaxial (+) |
প্রতিসরাঙ্ক | nα = 1.843 – 1.950 nβ = 1.870 – 2.034 nγ = 1.943 – 2.110 |
বায়ারফ্রিঞ্জেন্স | δ = 0.100 – 0.160 |
Pleochroism | Strong: X = nearly colorless; Y = yellow to green; Z = red to yellow-orange |
২ভি কোণ | ১৭ থেকে ৪০° (পরীক্ষীত) |
বিচ্ছুরণ | r > v strong |
অন্যান্য বৈশিষ্ট্য | ![]() |
তথ্যসূত্র | [১][২][৩][৪] |
টাইটানাইট বা স্ফেন (গ্রীক শব্দ sphenos (σφηνώ) থেকে আগত, এর অর্থ খীল[৪]), একটি ক্যালসিয়াম টাইটানিয়ামের নেসসিলিকেট খনিজ। এর রাসায়নিক সংকেত CaTiSiO5। তবে এর পাশাপাশি এতে থাকে লোহা এবং অ্যলুমিনিয়াম। কিছু বিরল পদার্থও এর সাথে পাওয়া যায়। যেমন সেরিয়াম এবং ইট্রিয়াম। মাঝে মাঝে ইট্রিয়ামের বদলে থাকে থোরিয়াম।[৫]
নামকরণ
[সম্পাদনা]আগে এর নাম ছিল টাইটানাইট। ১৯৮২ সালে আন্তর্জাতিক খনিজ সংস্থা স্ফেন নামটি বাদ দিয়ে দেয়। এর পরিবর্তে তারা নাম দেয় টাইটানাইট।[৬][৭] তবে বর্তমানে অনেক জার্নাল এবং বই-এ দুটো নামই ব্যবহৃত হয়।[৮][৯] কারণ আইএমএ এর সিদ্ধান্তের আগ পর্যন্ত স্ফেন নামটিই সারা পৃথিবীতে সুপরিচিত ছিল।[৪] অনেক বিজ্ঞানী মনে করেন, টাইটানাইট নামটিই এর জন্য যথাযথ। কারণ এর সাথে সম্পৃক্ত টাইটানিয়ামের যৌগগুলো রয়েছে। কিন্তু স্ফেন নামটি দিয়ে সহজে তা বোঝা যায় নয়া।[১০][১০][১১][১২] বর্তমানে যেকোন ক্ষেত্রেই টাইটানাইট লেখার সাথে স্ফেনও লেখা হয়। তবে তা শুধুই সৌজন্যের খাতিরে।
ভৌত বৈশিষ্ট্য
[সম্পাদনা]
টাইটানাইট খনিজটির নাম রাখা হয়েছে এর মধ্যে টাইটানিয়াম থাকার কারণে। টাইটানাইটের রঙ বিভিন্ন রকম হতে পারে। এটি অর্ধ-স্বচ্ছ, স্বচ্ছও হতে পারে। তবে সাধারণত লালচে বাদামী, বাদামী, সবুজ এবং লাল রঙ এর হয়ে থাকে। এর আপেক্ষিক ঘনত্ব ৩.৫২ থেকে ৩.৫৪। আর প্রতিসারণাঙ্ক ১.৮৮৫-১.৯৯০ থেকে ১.৯১৫-২.০৫০। এই খনিজের স্ফটিক স্ফেনয়েড ধরনের এবং স্ফটিকগুলো দেখতে প্রায় একইরকম হয়। লোহার কুয়েন্সিং প্রতিক্রিয়ার মতো, টাইটানাইটও অতি-বেগুণী রশ্নিতে কোন প্রতিপ্রভা সৃষ্টি করে নয়া। কিছু কিছু টাইটানিকের আকরিক আবার ক্ষয় হয় এবং তেজস্ক্রিয়তা প্রদর্শন করে। এর কারণ হিসেবে থোরিয়ামের উপস্থিতিকে উল্লেখ করা যায়। কারণ থোরিয়াম একটি তেজস্ক্রিয় পদার্থ। পেট্রোগ্রাফিক অণুবীক্ষণ যন্ত্রে দেখলে, টাইটানাইট স্ফটিকের আশপাশে প্লিউক্রনিক গর্ত খুঁজে পাওয়া যাবে।
উৎস
[সম্পাদনা]অগ্নেয় শিলাতে প্রায়শই টাইটানাইটের উপস্থিতি টের পাওয়া যায়। এর সাথে পেগমাটাইটও পাওয়া যায়। এছাড়াও পরিবর্তিত শিলা যেমন নেইস, সিস্ট এবং স্ক্রার্ন্স ধরনের পাথরে টাইটানাইট পাওয়া যায়।[১] পাকিস্তান, ইতালি, রাশিয়া, চিন, ব্রাজিল, তুজশেখ, সেইন্ট গোথার্ড, সুইজারল্যান্ড, মাদাগাস্কার, টাইরল, অস্ট্রিয়া, অন্টারিও, কানাডা, মেইন, গৌভের্নর, ডায়ানা, রোসি, ফাইন, পিটকেইম, ব্রিউস্টার, নিউ ইয়র্ক এবং ক্যালিফোর্নিয়ায় এই আকরিক খনিজ পদার্থটি পাওয়া যায়।[৪] বিভিন্ন জায়গায় টাইটানাইটের বিভিন্ন রকম আকরিক পাওয়া যায়। যেমন রাশিয়াতে ক্রোম টাইটানাইট পাওয়া যায়। এটি দেখতে গাঢ় কৃষ্ণ বর্ণের হয় এবং একটু বাদামীও হয়। আফ্রিকাতে পাওয়া টাইটানাইট সবুজ বাদামী রঙ এর হয়। আবার ব্রাজিলে পাওয়া টাইটানাইট আকারে মোটামুটি বড় হয়। এটির রঙ হয় অলিজ-সবুজ। যুক্তরাষ্ট্রে সবুজ-বাদামী টাইটানাইট পাওয়া যায়। এগুলো ক্লোরাইট দ্বারা আবৃত থাকে।[১৩]
ব্যবহার
[সম্পাদনা]টাইটানাইট, টাইটানিয়াম অক্সাইডের উৎস। এটি রঙ এর শিল্পে ব্যবহৃত হয়।
টাইটানিয়াম মূল্যবান পাথর হিসেবেও ব্যবহৃত হয়। গির্জার দেয়ালেও এর ব্যবহার লক্ষ্য করা যায়। দেখতে এটি বাদামী বা কিছুটা কৃষ্ণ বর্ণের। তবে লোহার উপস্থিতির ওপর ভিত্তি করে এর রঙ নির্ভর করে। বেশি পরিমাণে লোহা থাকলে এর রঙ হয় হলদে, আর কম থাকলে হয় সবুজ। এর বিকিরণ ক্ষমতা এতো বেশি যে এর দাম ডায়ামন্ড থেকেও অনেক বেশি।[১৪] তবে অলংকার তৈরিতে টাইটানিয়াম খুব একটা ব্যবহৃত হয় না। কারণ এটি অন্যান্য অলংকার তৈরির পদার্থের মতো শক্ত নয়।
চিত্র প্রদর্শনী
[সম্পাদনা]-
ফ্রাংফ্রুটের একটি খনি থেকে পাওয়া টাইটানাইট
-
একটী স্বচ্ছ টাইটানাইটের স্ফটিক, এটিকে দামী পাথরও বলা যায়
-
একটি উজ্জ্বল সবুজ রঙ এর টাইটানাইট
-
পাকিস্তানে পাওয়া টাইটনাইট
তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ ক খ Handbook of Mineralogy
- ↑ Webmineral data
- ↑ Mindat
- ↑ ক খ গ ঘ Dana, James Dwight; Ford, William Ebenezer (১৯১৫)। Dana's Manual of Mineralogy for the Student of Elementary Mineralogy, the Mining Engineer, the Geologist, the Prospector, the Collector, Etc. (13 সংস্করণ)। John Wiley & Sons, Inc.। পৃষ্ঠা 299–300। সংগ্রহের তারিখ ২০০৯-০৭-০৬।
- ↑ Deer, W. A.; Howie, R. A.; Zussman, J. (১৯৬৬)। Introduction to the Rock-Forming Minerals। পৃষ্ঠা 17–20। আইএসবিএন 0-582-44210-9।
- ↑ Nickel, Ernest H.; Nichols, Monte C. (২০০৮-১০-১৭)। "IMA/CNMNC List of Mineral Names" (পিডিএফ)। Material Data, Inc.। পৃষ্ঠা 280। ২০১১-০২-২২ তারিখে মূল (PDF) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৯-০৩-১৪।
- ↑ Hey, M. H. (ডিসেম্বর ১৯৮২)। "International Mineralogical Association: Commission on New Minerals and Mineral Names"। Mineralogical Magazine। 46 (341): 513–514। ডিওআই:10.1180/minmag.1982.046.341.25। বিবকোড:1982MinM...46..513H।
- ↑ Wenk, Hans-Rudolf; Bulakh, Andrei (মে ২০০৪)। Minerals: Their Constitution and Origin। New York, NY: Cambridge University Press। আইএসবিএন 978-0-521-52958-7।
- ↑ Nesse, William D. (আগস্ট ২০০৩)। Introduction to Optical Mineralogy। New York, NY: Oxford University Press, USA। আইএসবিএন 978-0-19-514910-4।
- ↑ ক খ Hayden, L. A.; Watson, E. B.; Wark, D. A. (২০০৮)। "A thermobarometer for sphene (titanite)"। Contributions to Mineralogy and Petrology। 155 (4): 529–540। ডিওআই:10.1007/s00410-007-0256-y। বিবকোড:2008CoMP..155..529H।
- ↑ Helean, K. B.; Ushakov, S. V.; Brown, C. E.; Navrotsky, A.; Lian, J.; Ewing, R. C.; Farmer, J. M.; Boatner, L. A. (জুন ২০০৪)। "Formation enthalpies of rare earth titanate pyrochlores"। Journal of Solid State Chemistry। 177 (6): 1858–1866। ডিওআই:10.1016/j.jssc.2004.01.009। বিবকোড:2004JSSCh.177.1858H।
- ↑ Freitas, G. F. G.; Nasar, R. S.; Cerqueira, M.; Melo, D. M. A.; Longo, E.; Varela, J. A. (অক্টোবর ২০০৬)। "Luminescence in semi-crystalline zirconium titanate doped with lanthanum"। Materials Science and Engineering: A। 434 (1–2): 19–22। ডিওআই:10.1016/j.msea.2006.07.023।
- ↑ "THE MINERAL TITANITE"। মিনারেল ডট নেট। সংগ্রহের তারিখ ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২০।
- ↑ "Sphene (Titanite) Value, Price, and Jewelry Information"। International Gem Society।
বহিঃসংযোগ
[সম্পাদনা]