জামির উদ্দিন শাহ

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
জামির উদ্দিন শাহ
পিভিএসএম, এসএম, ভিএসএম
আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য
কাজের মেয়াদ
১৭ মে ২০১২ – ১৭ মে ২০১৭
চ্যান্সেলরমোহাম্মদ বুরহানউদ্দিন
পূর্বসূরীপিকে আব্দুল আজিজ
উত্তরসূরীতারিক মনসুর
ভারতের সেনাবাহিনীর উপপ্রধান
কাজের মেয়াদ
১ অক্টোবর ২০০৬ – ৩১ আগস্ট ২০০৮
রাষ্ট্রপতিএ. পি. জে. আবদুল কালাম
পূর্বসূরীগুরদিতার সিং
উত্তরসূরীমনবীর সিং দাদওয়াল
ব্যক্তিগত বিবরণ
জন্ম (1948-08-15) ১৫ আগস্ট ১৯৪৮ (বয়স ৭৫)
বাহরাইচ, যুক্তপ্রদেশ, ভারত
সম্পর্কনাসিরুদ্দিন শাহ্, (ভাই)
ভিভান শাহ, (ভাতিজা)
ইমাদ শাহ (ভাতিজা)
সন্তানমোহাম্মদ আলী শাহ (ছেলে)
প্রাক্তন শিক্ষার্থীজাতীয় প্রতিরক্ষা একাডেমি,
ইন্ডিয়ান মিলিটারি একাডেমি,
মাদ্রাজ বিশ্ববিদ্যালয়
পুরস্কার পরম বিশিষ্ট সেবা পদক
সেনা পদক
বিশিষ্ট সেবা পদক
সামরিক পরিষেবা
আনুগত্য ভারত
শাখা ভারতীয় সেনাবাহিনী
কাজের মেয়াদ১৯৬৮–২০০৮
পদ লেফটেন্যান্ট জেনারেল
ইউনিটরেজিমেন্ট অফ আর্টিলারি
কমান্ডIII কর্পস
বেঙ্গল এরিয়া
৫৪ পদাতিক ডিভিশন
১৭০ মিডিয়াম রেজিমেন্ট
যুদ্ধভারত–পাকিস্তান যুদ্ধ ১৯৭১

লেফটেন্যান্ট জেনারেল জামির উদ্দিন শাহ (১৫ অগাস্ট, ১৯৪৮, বহরাইচ জেলা, উত্তরপ্রদেশ, ভারত), পিভিএসএম, এসএম, ভিএসএম হলেন ভারতীয় সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত জ্যেষ্ঠ জেনারেল। তিনি সর্বশেষ ভারতীয় সেনাবাহিনী স্টাফ (কর্মী ও ব্যবস্থা) এর ডেপুটি চিফ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। অবসর গ্রহণের পর তিনি কিছুকাল সশস্ত্র বাহিনী ট্রাইব্যুনালের বিচারপীঠে প্রশাসনিক সদস্য হিসেবে কাজ করেন। তিনি আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যও ছিলেন।[১]

প্রাথমিক জীবন ও শিক্ষা[সম্পাদনা]

জামির উদ্দিন শাহ সেন্ট জোসেফ'স কলেজের প্রাক্তন ছাত্র। তিনি বিখ্যাত ভারতীয় অভিনেতা নাসিরুদ্দিন শাহের ভাই। শাহ মাদ্রাজ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রতিরক্ষা বিজ্ঞানে মাস্টার অফ সায়েন্স ডিগ্রি এবং ইন্দোরে অবস্থিত রাজ্য বিশ্ববিদ্যালয় দেবী আহিল্যা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মাস্টার অফ ফিলোসফি ডিগ্রি লাভ করেন।[২]

সামরিক জীবন[সম্পাদনা]

শাহ খাড়কওয়ালা, পুনে ন্যাশনাল ডিফেন্স একাডেমীতে পড়াশুনা করেন। ৯ জুন ১৯৬৮ সালে তিনি ১৮৫তম লাইট রেজিমেন্টের (ক্যামেল প্যাক) সাথে কমিশন লাভ করেন। তিনি ১৭০তম মিডিয়াম রেজিমেন্টের (বীর রাজপুত) অধিনায়কও ছিলেন। পরে শাহ রেজিমেন্ট অফ আর্টিলারির কর্নেল কমান্ড্যান্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি সৌদি আরবে ভারতীয় সামরিক দলের সাথে সংযুক্ত ছিলেন।[৩] তিনি ২০০২ সালের গুজরাট দাঙ্গায় সেনাবাহিনীর নেতৃত্ব দেন।[৪]

আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য[সম্পাদনা]

জামির উদ্দিন শাহ ২০১২ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।[৫] কিন্তু ২০১০ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসেবে তার নিয়োগ বিষয়ে এলাহাবাদ হাইকোর্টে একটি মামলা (আবেদন) করা হয়। কারণ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুর কমিশনের বিধি অনুসারে, কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হওয়ার আগে কমপক্ষে ১০ বছর কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপক অথবা কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সমমানের পদে কর্মরত থাকা বাধ্যতামূলক। হাইকোর্ট তাদের আবেদন খারিজ করে দেয় এবং তাকে তার পদে থাকার অনুমতি দেয়, তবে পরে আবেদনকারীরা সুপ্রিম কোর্টে আপিল করে।[৬]

২০১৬ সালের সেপ্টেম্বরে সুপ্রিম কোর্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসেবে শাহের নিয়োগের বিষয়ে প্রশ্ন করে[৭] এবং জানায় যে দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয়কে মঞ্জুর কমিশন কর্তৃক নির্ধারিত নিয়মাবলী অনুসরণ করতে হবে।[৮] যাইহোক, ২০১৭ সালের মে মাসে তার মেয়াদ শেষ হওয়ার আগ পর্যন্ত শাহকে তার পদে থাকতে দেওয়া হয়।[৮]

বিতর্ক[সম্পাদনা]

২০১৪ সালে, শাহ বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক মেয়েদের লাইব্রেরিতে ঢোকার অনুমতি দেওয়া হলে "চারগুণ বেশি ছেলে" থাকবে এবং লাইব্রেরিটি ইতোমধ্যে "জায়গা সংকুল" হয়ে যাবে বলে মন্তব্য করে মেয়েদের মাওলানা আজাদ লাইব্রেরিতে প্রবেশাধিকার নিষিদ্ধ করেন। তার এই মন্তব্যটি ব্যাপকভাবে সমালোচিত হয় এবং শিক্ষামন্ত্রী স্মৃতি ইরানি এ বিষয়ে বলেছিলেন, "এএমইউ'র ভিসি'র করা মন্তব্যটি শুধু একজন নারী হিসেবেই আমার আঘাত করে না, বরং উত্তেজিত করে।" ইরানি এই মন্তব্যকে "মেয়েদের অপমান" বলে অভিহিত করেন। শিক্ষা মন্ত্রক এ বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছ থেকেও একটি প্রতিক্রিয়া চেয়েছিল।[৯] এলাহাবাদ হাইকোর্ট শাহকে তলব করে, আদালত এই নিষেধাজ্ঞাকে "লিঙ্গ-ভিত্তিক পক্ষপাতের ক্ষেত্র" বলে অভিহিত করে। আদালত তাকে লাইব্রেরিতে আসা মহিলাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেয়।[১০] শাহ পরে দাবি করেন যে তার মন্তব্য অতিরিক্ত প্রসারিত করা হয়েছিল।[১১]

পরে তিনি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে প্রবেশে লাইব্রেরি নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি প্রথমে প্রকাশকারী 'দ্য টাইমস অফ ইন্ডিয়া'র সাংবাদিকদের নিষিদ্ধ করেন।[১২][১৩]

২০১৫ সালে, শাহ বলেন যে মুসলমানরা উন্নয়নের ক্ষেত্রে পিছিয়ে পড়েছে কারণ তারা রমজানে তাদের মেয়েদেরকে "দাসত্বে" রেখে এবং কাজে না লাগিয়ে।[১৪]

গ্রন্থপঞ্জি[সম্পাদনা]

  • শাহ, জামির উদ্দিন (২০১৮)। দ্য সরকারি মুসালমান। কোনার্ক পাবলিশার্স প্রাইভেট লিমিটেড। 

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "Aligarh Muslim University – Our Founder"www.amu.ac.in 
  2. "Archived copy" (পিডিএফ)। ১৩ ডিসেম্বর ২০১০ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৬ ফেব্রুয়ারি ২০১১ 
  3. "Archived copy"। ৩ নভেম্বর ২০১০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৫ মার্চ ২০১১ 
  4. "Modi's rule had riots — but entrusted with nation, people change: Lt General Zameeruddin Shah - Times of India"The Times of India 
  5. "Archived copy"। ৪ জুলাই ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৮ জানুয়ারি ২০১৪ 
  6. "VC's appointment row: Supreme Court notice to Aligarh Muslim University"The Indian Express। ২০১৫-১২-০১। সংগ্রহের তারিখ ২০১৫-১২-১৪ 
  7. "SC questions appointment of former army officer as AMU Vice Chancellor | ummid.com"www.ummid.com। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০৭-২৪ 
  8. "Will AMU vice chancellor be allowed to continue?"Financialexpress (ইংরেজি ভাষায়)। ২০১৬-০৯-২২। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০৭-২৪ 
  9. "AMU VC Zameer Uddin Shah denies girls access to varsity library; HRD Minister Smriti Irani seeks explanation"। ১১ নভেম্বর ২০১৪। 
  10. "AMU library row: Allahabad High Court sends notice to V-C"India Today 
  11. "AMU vice-chancellor Zameeruddin Shah says he is not sexist"India Today 
  12. "AMU shoots messenger, bans TOI over library issue - Times of India ►"The Times of India 
  13. Rai, Piyush। "On a banning spree: AMU VC bansThe Times of India for 'negative reporting'"। Archived from the original on ২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৫। সংগ্রহের তারিখ ৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ 
  14. "Muslims lagged behind because they kept women enslaved, says AMU V-C Zameer Uddin Shah"। ৫ অক্টোবর ২০১৫।