ছোস-ক্যি-স্গ্রোন-মে

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
ছোস-ক্যি-স্গ্রোন-মে

ছোস-ক্যি-স্গ্রোন-মে (তিব্বতি: ཆོས་ཀྱི་སྒྲོན་མེ་ওয়াইলি: chos kyi sgron ma) (১৪২২-১৪৫৫) তিব্বতী বৌদ্ধধর্মের দ্গে-লুগ্স ধর্মসম্প্রদায়ের প্রথম ব্সাম-স্দিংস-র্দো-র্জে-ফাগ-মো (ওয়াইলি: bsam sdings rdo rje phag mo) উপাধিধারী বৌদ্ধ ভিক্ষুণী ছিলেন।

জন্ম ও পরিবার[সম্পাদনা]

ছোস-ক্যি-স্গ্রোন-মে ১৪২২ খ্রিষ্টাব্দে তিব্বতের মাং-য়ুল গুং-থাং অঞ্চলে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা খ্রি-ল্হা-দ্বাং-র্গ্যাল-ম্ত্শান (ওয়াইলি: khri lha dbang rgyal mtshan) এই অঞ্চলের শাসক ছিলেন। তার মাতার নাম ছিল ম্দো-সদে (ওয়াইলি: mdo sde) এবং ভ্রাতার নাম ছিল খ্রি-র্নাম-র্গ্যাল-ল্দে (ওয়াইলি: khri rnam rgyal lde)। তার জন্মের পরে রাজসভার পুরোহিত তার নাম রাখেন দ্কোন-ম্ছোগ-র্গ্যাল-মো (ওয়াইলি: dkon mchog rgyal mo)।[১]

বৈবাহিক জীবন[সম্পাদনা]

১৪৩৮ খ্রিষ্টাব্দে রাজ্যের কৌশলগত সুবিধার্থে রাজ-অমাত্যদের উপদেশে লা-স্তোদ-ল্হো (ওয়াইলি: la stod lho) রাজ্যের শাসকের সঙ্গে দ্কোন-ম্ছোগ-র্গ্যাল-মোর বিবাহ স্থির করা হয়। ১৪৪০ খ্রিষ্টাব্দে তিনি একজন কন্যাসন্তানের জন্ম দেন। এক বছর পরে গুং-থাং রাজ্যে একটি বিবাদের মীমাংসা করতে পিতাকে সাহায্য করতে যাওয়ার পরে তার কন্যার মৃত্যু হয়। এই কারণে তিনি পিতা ও শ্বশুরের ইচ্ছার বিরুদ্ধে গিয়ে বৌদ্ধ ভিক্ষুণী হিসেবে ধর্মীয় জীবনযাপন করার সিদ্ধান্ত নেন।[১]

সংঘ জীবন[সম্পাদনা]

এই সময় দ্কোন-ম্ছোগ-র্গ্যাল-মো লা-স্তোদ-ল্হো রাজ্যের রাজধানী শেল-দ্কার (ওয়াইলি: shel dkar) শহরে অবস্থিত স্পো-রোং-দ্পাল-মো-ছোস-স্দিংস (ওয়াইলি: dspo rong dpal mo chos sdings) বৌদ্ধবিহারে যাতায়াত শুরু করেন এবং এই বিহারের প্রধান বো-দোং-ফ্যোগ্স-লাস-র্নাম-র্গ্যাল (ওয়াইলি: bo dong phyogs las rnam rgyal) নামক লামার সান্নিধ্যে আসেন। পরে আত্মীয় স্বজনদের রাজী করিয়ে তিনি তার নিকট শ্রমণের শপথ গ্রহণ করেন এবং তার নতুন নাম রাখা হয় ছোস-ক্যি-স্গ্রোন-মে। নারী হিসেবে সংঘজীবনে প্রবেশে তাকে সমালোচিত হতে হলেও তিনি সেইসব সমালোচনা উপেক্ষা করেন। ব্দে-লেগ্স-ছোস-'দ্রেন (ওয়াইলি: bde legs chos 'dren) নামে অপর এক ভিক্ষুণী তার বিশ্বস্ত সহচরী ছিলেন। পরবর্তীকালে তাকে ভিক্ষুণীর শপথ প্রদান করা হয়। তিনি সংঘে নারীদের এনে তাদের মধ্যে বৌদ্ধ ধর্ম ও শিক্ষার প্রসার করেন। বো-দোং-ফ্যোগ্স-লাস-র্নাম-র্গ্যালের অনুপ্রেরণায় তিনি প্রচলিত ঐতিহ্যের বিরুদ্ধে গিয়ে নারীদের তান্ত্রিক আচার নৃত্যে অংশগ্রহণের উদ্যোগ নেন। বো-দোং-ফ্যোগ্স-লাস-র্নাম-র্গ্যালের মৃত্যুর পর তিনি ১৪৫২ খ্রিষ্টাব্দে তার সম্পূর্ণ রচনা প্রকাশের ব্যবস্থা করেন। এছাড়া তিনি বৌদ্ধ ধর্মশিক্ষাকেন্দ্রের খাদ্য সরবরাহের উদ্দেশ্যে পার্শ্ববর্তী জমিগুলির সেচের ব্যবস্থা করেন। এই বছরে লা-স্তোদ-ব্যাং (ওয়াইলি: la stod byang) অঞ্চলে তিনি বিখ্যাত তিব্বতী সাধক থাং-স্তোং-র্গ্যাল-পোর (ওয়াইলি: thang stong rgyal po) সঙ্গে দুই বছর বসবাস করে শিক্ষাগ্রহণ করেন। ১৪৫৪ খ্রিষ্টাব্দে তিনি মধ্য তিব্বত যাত্রা করে বিভিন্ন তীর্থস্থান দর্শন করেন।[১]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. Diemberger, Hildegard (এপ্রিল ২০১৪)। "The First Samding Dorje Pakmo, Chokyi Dronma"The Treasury of Lives: Biographies of Himalayan Religious Masters। সংগ্রহের তারিখ ২০১৪-১২-০৯ 

আরো পড়ুন[সম্পাদনা]

  • Diemberger, Hildegard. 2007. When a Woman becomes a Religious Dynasty: the Samding Dorje Phagmo of Tibet. New York: Columbia University Press.
  • Everding, K. H. 2000. Das Koenigreich Mang yul Gung thang, vols. 1 and 2. Bonn: VGH Wissenschaftsverlag. (জার্মান)
  • Stearns, Cyrus. 2007. Tangtong Gyalpo: King of the Empty Plain. Ithaca: Snow Lion.
পূর্বসূরী
--
ছোস-ক্যি-স্গ্রোন-মে
প্রথম ব্সাম-স্দিংস-র্দো-র্জে-ফাগ-মো
উত্তরসূরী
কুন-দ্গা'-ব্জাং-মো