চিটাগাং স্টিল মিলস

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে

চিটাগাং স্টিল মিলস (ইংরেজি: Chittagong Steel Mills - CSM) চট্রগ্রাম জেলার পতেঙ্গা থানায় অবস্থিত ছিল।[১] এটি ছিল বাংলাদেশের প্রথম সরকারি ইস্পাতের কারখানা। ১৯৯৯ সালে একটি সরকারি প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে এটিকে বন্ধ ঘোষণা করা হয়।

ইতিহাস[সম্পাদনা]

পূর্ব-পাকিস্তানের সামুগ্রিক ইস্পাতের চাহিদার কথা মাথায় রেখে তৎকালীন পাকিস্তান সরকার ১৯৬০ সালের দিকে চট্রগ্রামে এই ইস্পাত কারখানাটি স্থাপনের পরিকল্পনা হাতে নেয়।[২] কারখানাটি স্থাপনের উদ্দেশ্যে কর্ণফুলী নদীর পাড়ে প্রায় ২২২.৪২ একর জমি অধিগ্রহণ করা হয় ১৯৬০ সালের শেষের দিকে। কারখানাটি স্থাপনের প্রকল্প ব্যয় নির্ধারণ করা হয় তৎকালীন ৫৬.৭০ কোটি রুপী যা মাঝে ১৬.৬৭ কোটি রুপী ছিল বৈদেশিক সহায়তা।[৩][৪] কারখানাটি স্থাপনের দ্বায়িক্ত দেয়া হয় ইস্ট পাকিস্তান ইন্ডাস্ট্রিয়াল ডেভলপমেন্ট কর্পোরেশন (EPIDC) নামে সরকারি সংস্থাকে।[৫] জাপানের কোবে স্টিল লিঃ (Kobe Steel Ltd.) মাধ্যমে ১৯৬৭ সাল নাগাদ কারখানাটির স্থাপন কাজ সম্পন্ন শেষ করা হয়।[৪][৫] কারখানটি বাণিজ্যিক উৎপাদনে যায় ১৯৬৭ সালের আগস্ট মাসে।[৩]

বাংলাদেশ স্বাধীনতা অর্জনের পর ১৯৭২ সালে এটিকে একটি পৃথক কোম্পানিতে পরিণত করা হয়। কর্ণফুলি নদীর তীরে কারখানাটির অবস্থান হওয়ায় ১৯৯১ সালের ঘূর্ণিঝড়ের সময় কারখানাটির ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। ১৯৯৯ সালের জুলাই মাসে কারখানাটি বন্ধ ঘোষণা করা হয়।[৫]

উৎপাদিত পণ্য সমূহ[সম্পাদনা]

ইস্পাত কারখানাটির উৎপাদন ক্ষমতা ছিল প্রায় ১,৫০,০০০ টন প্রতি বছর।[৪][৬] ইস্পাত কারখানাটির উৎপাদিত পণ্যসমূহের মধ্যে অন্যতম পণ্যগুলো হল:[২]

  • স্টিল ইংগোট (Steel ingots)
  • বিলেট (billets)
  • বুম (blooms)
  • রিইনফোর্সড বার (reinforced bars)
  • স্ট্রাকচারাল সেকশন (structural sections)
  • প্লেট (plates)
  • কোরুগেটেড আয়রন শিট (corrugated iron sheets) ইত্যাদি

উৎপাদন[সম্পাদনা]

কারখানাটির উৎপাদনের হিসাবের তালিকা (১৯৬৭ সালে থাকে ১৯৯৯ সাল পর্যন্ত) নিম্নে দেয়া হলঃ[৪]

ক্রমিক নং উৎপাদনের সাল উৎপাদন

(টন/বছর)

ক্রমিক নং উৎপাদনের সাল উৎপাদন

(টন/বছর)

১৯৬৭-৬৮ ৬৮,০০০ ১৭ ১৯৮৩-৮৪ ৭৮,০০০
১৯৬৮-৬৯ ৬১,০০০ ১৮ ১৯৮৪-৮৫ ৯৫,০০০
১৯৬৯-৭০ ৫৪,০০০ ১৯ ১৯৮৫-৮৬ ৯৫,৫১৪
১৯৭০-৭১ ৪০,০০০ ২০ ১৯৮৬-৮৭ ৮২,০৮১
১৯৭১-৭২ ৪১,০০০ ২১ ১৯৮৭-৮৮ ৭০,০৩৬
১৯৭২-৭৩ ৬৮,০০০ ২২ ১৯৮৮-৮৯ ৮৬,২৭৪
১৯৭৩-৭৪ ৭৪,০০০ ২৩ ১৯৮৯-৯০ ৭৫,০২৬
১৯৭৪-৭৫ ৭৬,০০০ ২৪ ১৯৯০-৯১ ৫৭,৬১৫
১৯৭৫-৭৬ ৯০,০০০ ২৫ ১৯৯১-৯২ ৩৬,৩৮৪
১০ ১৯৭৬-৭৭ ১০২,০০০ ২৬ ১৯৯২-৯৩ ৭,০৪৫
১১ ১৯৭৭-৭৮ ১১০,০০০ ২৭ ১৯৯৩-৯৪ ৬,০৮৫
১২ ১৯৭৮-৭৯ ১২১,০০০ ২৮ ১৯৯৪-৯৫ ৫,৩৬৪
১৩ ১৯৭৯-৮০ ১৩৩,০০০ ২৯ ১৯৯৫-৯৬ ২১,৮৯৮
১৪ ১৯৮০-৮১ ১৩৫,০০০ ৩০ ১৯৯৬-৯৭ -
১৫ ১৯৮১-৮২ ১০৭,০০০ ৩১ ১৯৯৭-৯৮ -
১৬ ১৯৮২-৮৩ ৪৭,০০০ ৩২ ১৯৯৮-৯৯ -

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "বাংলাদেশে ইস্পাত শিল্পে প্রভাব পড়বে কি? | বাণিজ্য | The Daily Ittefaq"। সংগ্রহের তারিখ ২০১৭-০৮-২৯ 
  2. Independent, The। "Reinforced steel bars and safety"Reinforced steel bars and safety | theindependentbd.com। সংগ্রহের তারিখ ২০১৭-০৮-২৯ 
  3. "The Daily Star Web Edition Vol. 5 Num 299"। সংগ্রহের তারিখ ২০১৭-০৮-২৯ [স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
  4. Islam, Nazrul; Mujtahid, A.F. (December, 1999)। MAKING BETTER USE OF BANGLADEH’S PRODUCTIVE CAPACITIES (পিডিএফ)। House No 40/C, Road No 11, Dhanmondi R/A, GPO Box 2129, Dhaka-1209, Bangladesh: Centre for Policy Dialogue। পৃষ্ঠা ৩০।  এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |তারিখ= (সাহায্য)
  5. "The Daily Star Web Edition Vol. 4 Num 263"। ২০১৩-১১-১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৭-০৮-২৯ 
  6. Developments in Steelmaking Capacity of Non-OECD Economies 2005। OECD Publishing। ২০০৫। পৃষ্ঠা ৩৮২। আইএসবিএন 9264025715