চন্দ্রগুপ্ত (নাটক)

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
চন্দ্রগুপ্ত
রচয়িতাদ্বিজেন্দ্রলাল রায়
চরিত্রনন্দ
চন্দ্রগুপ্ত মৌর্য্য
চাণক্য
চন্দ্রকেতু
কাত্যায়ন
সেকেন্দর শাহ
সেলুকাস
আন্তিগোনাস
হেলেনা
ছায়া
মুরা
মূল ভাষাবাংলা
বর্গঐতিহাসিক

চন্দ্রগুপ্ত ১৯১১ খ্রিষ্টাব্দে[১] দ্বিজেন্দ্রলাল রায় দ্বারা রচিত শেষ ঐতিহাসিক নাটক।[২] প্রাচীন মগধে কীভাবে চন্দ্রগুপ্ত মৌর্য্য তার কূটকৌশলী মন্ত্রী চাণক্যের সহায়তায় ধননন্দকে পরাজিত করে সিংহাসনে আরোহণ করেছিলেন, তা এই নাটকের মূল উপজীব্য। এটি দ্বিজেন্দ্রলাল রচিত অন্যতম জনপ্রিয় একটি নাটক। হিন্দু দের ইতিহাস এর অবলম্বন করে এই চন্দ্রগুপ্ত নাটক ও মবার পতন লেখা ।

উৎস[সম্পাদনা]

দ্বিজেন্দ্রলাল রায় হিন্দু পুরাণ ও গ্রিক ঐতিহাসিক সূত্র থেকে এই নাটকের মূল কাহিনী রচনা করেন।[৩] সংস্কৃত নাটক মুদ্রারাক্ষস থেকে মুরা ও চন্দ্রগুপ্ত মৌর্য্যের কাহিনী গ্রহণ করা হয়েছে।[৩] এই নাটকে চন্দ্রগুপ্ত মৌর্য্য ও ছায়ার প্রেম কাহিনী ও আন্তিগোনাসের ভূমিকা সম্পূর্ণ রূপে দ্বিজেন্দ্রলালের নিজস্ব চিন্তাভাবনার ফসল।[৩]

চরিত্র[সম্পাদনা]

কাহিনী[সম্পাদনা]

সৎভাই নন্দ দ্বারা রাজ্য হতে নির্বাসিত হলে, মগধের রাজকুমার চন্দ্রগুপ্ত মৌর্য্য সেকেন্দার শাহের সেনাবাহিনীতে যোগদান করেন, যেখানে সেলুকাস তাকে রণকৌশল শেখান। পরবর্তীকালে মলয়ের রাজা চন্দ্রকেতু, মগধের প্রাক্তন রাজপুরোহিত চাণক্য ও প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী কাত্যায়নের সহায়তায় চন্দ্রগুপ্ত নন্দকে পরাজিত করে মগধের সিংহাসন অধিকার করেন। চাণক্যনন্দকে হত্যা করেন। চন্দ্রকেতুর বোন ছায়া চন্দ্রগুপ্তের প্রেমে পড়েন।

সেকেন্দার শাহের মৃত্যুর পর সেলুকাস এশিয়ার সম্রাট হন। তিনি একজন নির্বাসিত গ্রিক সেনানায়ক আন্তিগোনাসকে তার সেনাবাহিনীর সেনাপতি হিসেবে নিযুক্ত করেন। আন্তিগোনাস সেলুকাসের কন্যা হেলেনার প্রেমে পড়েন, কিন্তু সেলুকাস ও হেলেনা উভয়েই তাকে অবৈধ সন্তান রূপে গণ্য করে। আন্তিগোনাস গ্রিসে ফিরে গিয়ে তার মাতাকে প্রশ্ন করে সেলুকাসকে নিজের পিতা রূপে জানতে পারেন।

পরে, সেলুকাস মগধ আক্রমণ করে পরাজত হন। মগধের প্রধানমন্ত্রী চাণক্যসেলুকাসের মধ্যকার একটি শান্তিচুক্তির ফলশ্রুতিতে চন্দ্রগুপ্ত হেলেনাকে বিবাহ করেন। চন্দ্রগুপ্তের প্রতি ছায়ার অনুরাগের কথা জানতে পেরে হেলেনা তার সঙ্গেও চন্দ্রগুপ্তের বিবাহের ব্যবস্থা করেন। ইতিমধ্যে আন্তিগোনাস গ্রিস থেকে ফিরে এসে নিজেকে সেলুকাসের বৈধ পুত্র হিসেবে ঘোষণা করেন। এবং পরে আন্টিগনস হেলেন কে নিজের ভগিনী বলে গ্রহণ করে ,এবং নিজের ভুলের ক্ষমা চাইলেন।

গান[সম্পাদনা]

চন্দ্রগুপ্ত নাটকে দ্বিজেন্দ্রলাল রায় রচিত ও সুরারোপিত আটটি গান রয়েছে।[৪] এগুলি হল:

  1. তুমি হে প্রাণের বঁধু
  2. আয় রে বসন্ত, তোর কিরণমাখা পাখা তুলি
  3. যখন সঘন গগন গরজে বরষে কড়কা ধারা
  4. আর কেন মিছে আশা, মিছে ভালবাসা, মিছে গেন ভাবনা
  5. ঘন তমসাবৃত অম্বর ধরণী
  6. আজি গাও মহাগীত
  7. ওই মহাসিন্ধুর ওপার থেকে কি সংগীত ভেসে আসে
  8. সকল ব্যথার ব্যথী আমি হই, তুমি হও সব সুখের ভাগী"

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. Raha, Kironmoy (২০০১) [1978]। Bengali Theatre (3rd সংস্করণ)। New Delhi: National Book Trust, India। পৃষ্ঠা 81। আইএসবিএন 978-81-237-0649-8 
  2. Ghosh, Ajit Kumar (২০০১)। Dwijendralal Ray। Makers of Indian Literature (1st সংস্করণ)। New Delhi: Sahitye Akademi। পৃষ্ঠা 44–46। আইএসবিএন 81-260-1227-7 
  3. রায়, দ্বিজেন্দ্রলাল (২০০৬–২০০৭) [১৯৬৯]। "ভূমিকা: ঐতিহাসিকতা"। বন্দ্যোপাধ্যায়, সুকুমার। দ্বিজেন্দ্রলালের চন্দ্রগুপ্ত (চতুর্থ সংস্করণ)। কলকাতা: মডার্ণ বুক এজেন্সি প্রাইভেট লিমিটেড। পৃষ্ঠা ভূমিকা ১০–১৪। 
  4. রায়, দ্বিজেন্দ্রলাল (২০০৬–২০০৭) [১৯৬৯]। "ভূমিকা: নাটকের সঙ্গীত"। বন্দ্যোপাধ্যায়, সুকুমার। দ্বিজেন্দ্রলালের চন্দ্রগুপ্ত (চতুর্থ সংস্করণ)। কলকাতা: মডার্ণ বুক এজেন্সি প্রাইভেট লিমিটেড। পৃষ্ঠা ভূমিকা ১০–১৪।