গুহ্য খ্রিস্টধর্ম

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
টিওফিলাস শোয়েইগার্ট কনস্ট্যান্টিয়েন্স এর আঁকা দ্য টেম্পল অফ দ্য রোস ক্রস
জর্জিয়ার স্‌ভেটিটস্কোভেই ক্যাথেড্রালের ১৭শ শতকের ফ্রেসকোয় যিশুকে রাশিচক্রে দেখানো হয়েছে

গুহ্য খ্রিস্টধর্ম (Esoteric Christianity) হ'ল খ্রিস্টান ধর্মতত্ত্বের একটি অঙ্গ যা এই প্রস্তাব দেয় যে খ্রিস্টধর্মের কিছু আধ্যাত্মিক মতবাদগুলি কেবলমাত্র তারাই বুঝতে পারবেন যারা ধর্মের মধ্যে কিছু নির্দিষ্ট আচার (যেমন অভিসিঞ্চন ) গ্রহণ করেছেন।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন] Esoteric শব্দটি ১৭শ শতকে গ্রহণ করা হয়েছে যার গ্রিক শব্দ ἐσωτερικός থেকে এসেছে, যার অর্থ "অভ্যন্তরীন" (esôterikos, "ভেতরের")। [১]

বিভিন্ন হেটেরোডক্স বা মতবিরোধী খ্রিস্টীয় ধর্মতত্ত্ব, ক্যাননিকাল বা যাজকীয় গসপেলসমূহ, বিভিন্ন অ্যাপোক্যালিপ্টিক লিটারেচার বা রহস্য-উন্মোচক সাহিত্য, এবং কিছু নবপুস্তকীয় অপ্রামাণিক রচনাবলি বা নিউ টেস্টামেন্ট অ্যাপোক্রিফার সাথে গুহ্য খ্রিস্টধর্ম সম্পর্কিত।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন] সেই সাথে ডিসিপ্লিনা আরকানি এর সাথেও এর সম্পর্ক আছে, যা হচ্ছে দ্বাদশ প্রচারক বা অ্যাপস্টল থেকে আসা মৌখিক ঐতিহ্য যেখনে যিশুখ্রিস্ট সম্পর্কে গুহ্য শিক্ষা দেয়া হয়।[২]

প্রাচীন ভিত্তি[সম্পাদনা]

গ্রীক রহস্যবাদ অনেক খ্রিস্টীয় ধর্মতাত্ত্বিক যেমন আলেকজান্দ্রিয়ার ক্লিমেন্ট এবং ওরিজেনকে প্রভাবিত করেছিল।

কতিপয় আধুনিক পণ্ডিত বিশ্বাস করেন যে প্রত্ন-সনাতন খিস্টধর্ম বা প্রোটো-অর্থোডক্স খ্রিস্টধর্মের প্রাথমিক পর্যায়ে, ফিলিস্তিনি এবং হেলেনবাদী ইহুদী ধর্ম থেকে মৌখিক শিক্ষার একটি ধারা খ্রিস্টধর্মে প্রবেশ করে।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন] মনে করা হয় খ্রিস্টীয় চতুর্থ শতাব্দীতে, এখান থেকেই ডিসিপ্লিনা আরকানি নামে একটি গুপ্ত মৌখিক ঐতিহ্যের ভিত্তি প্রতিষ্ঠিত হয়।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন] মূলধারার ধর্মতত্ত্ববিদরা অবশ্য মনে করেন যে, এখানে কেবল চার্চ সংক্রান্ত রীতি-নীতির বিস্তারিত বিবরণই ছিল যা এখন মূলধারার খ্রিস্টধর্মের কিছু শাখারই অংশ।[২][৩][৪] গুহ্য খ্রিস্টধর্মে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব রেখেছেন খ্রিস্টীয় ধর্মতাত্ত্বিক ক্লিমেন্ট অফ আলেকজান্দ্রিয়া এবং ওরিজেন, যারা ছিলেন আলেকজান্দ্রিয়ার ক্যাটেকেটিকাল সম্প্রদায়ের শীর্ষস্থানীয় ব্যক্তিত্ব।[৫]  

বেশিরভাগ গূঢ়তাত্ত্বিক খ্রিস্টীয় সম্প্রদায় যেমন ভ্যালেন্টিনিয়ানবাদব্যাসিলিডিয়ানবাদ পুনর্জন্মকে স্বীকার করে, কিন্তু প্রত্ন-সনাতন খ্রিস্টধর্ম পুনর্জন্মকে অস্বীকার করে।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন] ওরিজেন তার গ্রন্থ অন দ্য ফার্স্ট প্রিন্সিপলস -এ অনুকল্প হিসেবে একটি জটিল বহুজাগতিক পুনর্জন্মের পরিকল্পনার কথা বললেও তার কন্ট্রা সেলসাম গ্রন্থে তিনি পুনর্জন্মকে অস্বীকার করেন। [৬]

এই আপাত দ্বন্দ্ব সত্ত্বেও, এই চিন্তাধারাকে খ্রিস্টীয় ৩য় শতকে মতবিরোধী বা ধর্মবিরোধী হিসেবে বিবেচিত হওয়া গূঢ়তত্ত্ববাদ বা নস্টিসিজমের বাইরের গুহ্য খ্রিস্টীয় ঐতিহ্যের অংশ হিসেবে প্রমাণিত করার জন্য বেশিরভাগ আধুনিক গুহ্য খ্রিস্টধর্মীয় আন্দোলনগুলো অন্যান্য চার্চ ফাদার এবং বাইবেলীয় অনুচ্ছেদের সাথে সাথে[৭] ওরিজেনের রচনাগুলোরও উল্লেখ করে।

পণ্ডিত জ্যান শিপস এর মতে দ্য চার্চ অফ জেসাস ক্রাইস্ট অফ লেটার ডে সেইন্টস-এ গুহ্য খ্রিস্টধর্মীয় উপাদান রয়েছে।[৮]

আরো দেখুন[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. Oxford English Dictionary Compact Edition, Volume 1, Oxford University Press, 1971, p. 894.)
  2. G.G. Stroumsa, Hidden Wisdom: Esoteric Traditions and the Roots of Christian Mysticism, 2005.
  3. Frommann, De Disciplina Arcani in vetere Ecclesia christiana obticuisse fertur, Jena 1833.
  4. Edwin Hatch, The Influence of Greek Ideas and Usages upon the Christian Church, London: Williams and Norgate, 1907, Lecture X.
  5. Jean Daniélou, Origen, translated by Walter Mitchell, 1955.
  6. John S. Uebersax, Early Christianity and Reincarnation: Modern Misrepresentation of Quotes by Origen, 2006.
  7. See Reincarnation and Christianity
  8. Shipps, Jan. The Mormons: Looking Forward and Outward. Christian Century, August 16-23, 1978, pp. 761-766.

আরও পড়া[সম্পাদনা]

বহিঃস্থ সূত্র[সম্পাদনা]