গম্ভরী দেবী

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
গম্ভরী দেবী
জন্ম১৯২২
উদ্ভববিলাসপুর, (পরে তাঁর নামে জায়গাটির নামকরণ করা হয় গম্ভের পুল) হিমাচল প্রদেশ, ভারত
মৃত্যু৮ জানুয়ারি ২০১৩(2013-01-08) (বয়স ৯১–৯২)
পেশালোক সংগীতশিল্পী, লোক নৃত্যশিল্পী এবং লোক বিনোদনকারী

গম্ভরী দেবী (১৯২২ - ৮ই জানুয়ারি ২০১৩) হলেন হিমাচল প্রদেশের বিলাসপুর জেলার একজন প্রবীণ ভারতীয় লোকশিল্পী, লোককলাবিদ ও নৃত্যশিল্পী,[১] হিমাচল প্রদেশের লোকসংস্কৃতিতে তাঁর অবদানের জন্য তিনি খ্যাতিমান ।[২]

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের দেড়শতম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে ২০১১ সালে সংগীত, নৃত্য ও নাট্যকলার জাতীয় একাডেমী সংগীত নাটক একাদেমি তাঁর নিজস্ব ক্ষেত্রে পরিবেশনা কলার জন্য তাঁকে ঠাকুর একাদেমি অ্যাওয়ার্ড (ঠাকুর একাদেমি পুরস্কার) প্রদান করে। এই উপলক্ষে সারা ভারতব্যাপী ১০০ শিল্পীকে তাঁদের স্ব স্ব কর্মক্ষেত্রে অবদানের জন্য পুরস্কার প্রদান করা হয়।[৩][৪] ২০০১ সালে তিনি হিমাচল একাডেমি অব আর্টস থেকে পুরস্কার লাভ করেছিলেন। তিনি ২০১৩ সালের ৮ই জানুয়ারী ৯১ বছর বয়সে মারা যান।[৫]

জীবনের অভিজ্ঞতা[সম্পাদনা]

তিনি ১৯২২ সালে হিমাচল প্রদেশের বিলাসপুর জেলার বান্দলা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ৮ বছর বয়সে অভিনয় শুরু করেন। গ্রামের অন্যান্য মেয়েদের মতো অল্প বয়সেই তাঁঁর বিয়ে হয়েছিল যার ফলে গ্রামের প্রথানুযায়ী নৃত্য ও গীত তাঁর জন্য নিষিদ্ধ হয়ে যায়।। যাইহোক, বাধা নিষেধ সত্ত্বেও তিনি লোকাভিনয়ে অবিচল ছিলেন।

তার জীবন[সম্পাদনা]

তাঁর প্রতিভা এতোটাই ছিল যে সমাজ আস্তে আস্তে তাঁর সামাজিক বিদ্রোহ ভুলে যায় এবং বিভিন্ন অনুষ্ঠানে তাঁকে পরিবেশনার জন্য আমন্ত্রণ জানাতে শুরু করে। শেষ পর্যন্ত তিনি এতোই জনপ্রিয় হয়ে উঠেন যে তাঁর পরিবেশনা ছাড়া কোন অনুষ্ঠানই সম্পূর্ণ হতে পারতো না। এমনই তাঁর প্রভাব ছিল যে তাঁকে প্রেমের প্রতিমা হিসাবে দেখা হতে থাকল। লোকজন তাঁর পরিবেশনা দেখার জন্য দূর দূরান্ত থেকে সমবেত হতে শুরু করত এবং তাঁর অঞ্চলের লোকেরা তাঁর পরিবেশনা এবং উপস্থিতি ছাড়া বিয়ের অনুষ্ঠানগুলিকে অনাড়ম্বর বলে মনে করতো। তিনি তাঁর সময়ের একজন আদর্শ অভিনেতা হিসাবে বিবেচিত হতেন। তাঁর সাথে থাকতো একজন ড্রামবাদক এবং একজন পালোয়ান (পিস্তু উরফে বসন্ত পালোয়ান), তিনিও দেবীর সাথে কিংবদন্তি হয়ে ওঠেন। এই দম্পতি আইনিভাবে বিবাহিত ছিলেন না, তাঁদের রক্ষণশীল সমাজ থেকে প্রচুর বৈরিতার মুখোমুখি হতে হয়েছে। তারা তাঁর পরিবেশনা উপভোগ করতে পারতো কিন্তু তাঁর উদার আচরণটি গ্রহণ করতে পারেনি। পরে দেবী তাঁর প্রেমকে ত্যাগ করেছিলেন এবং দেবীর অনুরোধে বসন্ত পালোয়ান পরে অন্য এক মহিলাকে বিয়ে করেছিলেন।

তিনি তাঁর অধিক বয়স অবধি পরিবেশনা চালিয়ে যেতে থাকেন। যদিও তিনি স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করছিলেন না। তিনি জীবনের শেষ কয়েকমাস স্বাস্থ্য সমস্যার কারণে পরিবেশনা করা বন্ধ করে দিয়েছিলেন।

পুরস্কার[সম্পাদনা]

তিনি তাঁর অসাধারণ সাহস, গীত এবং নাচের বৈশিষ্ট্যের মাধ্যমে বেশ কিছু পুরস্কার জিতেছেন।

  • তিনি ২০১১ সালে সংগীত নাটক একাদেমি থেকে ঠাকুর একাদেমি অ্যাওয়ার্ড (ঠাকুর একাদেমি পুরস্কার) লাভ করেন।
  • ২০০১ সালে হিমাচল একাডেমি অর আর্টস থেকে কৃতিত্ব পুরস্কার লাভ করেন।

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "London Olympics silver medallist Vijay Kumar conferred Rs 1 crore and Himachal Gaurav Award"। Economic Times। ১৫ আগস্ট ২০১২। সংগ্রহের তারিখ ২০১৪-০৮-০২ 
  2. Ashoka Jerath (১৯৯৫)। The Splendour of Himalayan Art and Culture। Indus Publishing। পৃষ্ঠা 151–। আইএসবিএন 978-81-7387-034-7 
  3. "Sangeet Natak Akademi Ratna and Akademi Puraskar"। Sangeet Natak Akademi। ২০১১। ৭ জুলাই ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২ আগস্ট ২০১৪.. a one-time honour of Tagore Samman to be awarded to 100 persons of the age of 75 years and above who have made significant contribution in the field of performing arts. 
  4. "List of recipients of Tagore Akademi Puraskar" (পিডিএফ)Press Information Bureau, Government of India। সংগ্রহের তারিখ ২০১৪-০৮-০২ 
  5. "Folk singer Gambhari Devi passes away , लोक गायिका गंभरी देवी का निधन" (Hindi ভাষায়)। Amar Ujala। ৯ জানুয়ারি ২০১৩। সংগ্রহের তারিখ ২০১৪-০৮-০২ 
  • হিমালয়ের শিল্প ও সংস্কৃতির ঐশ্বর্য, লেখক - অশোকা জেরাথ [১]
  1. Jeratha, A. (১৯৯৫)। The Splendour of Himalayan Art and Culture। Indus Publishing Company। পৃষ্ঠা 151। আইএসবিএন 9788173870347। সংগ্রহের তারিখ ২০১৪-১০-০৫