গথিক যুদ্ধ (৫৩৫-৫৫৪)
Gothic War | |||||||||
---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|
প্রথম জাস্টিনিয়ানের এর পশ্চিমা যুদ্ধ অংশ | |||||||||
![]() | |||||||||
| |||||||||
বিবাদমান পক্ষ | |||||||||
বাইজেন্টাইন সাম্রাজ্য, হান, হেরালি, স্ক্লাভেনি, লোমবাডর্স |
অস্ট্রোগথ, ফ্রানকস, আলামান্নি, বুর্গানডিয়ান গন | ||||||||
সেনাধিপতি ও নেতৃত্ব প্রদানকারী | |||||||||
পূর্ব রোমান সাম্রাজ্য বেলিসারিয়াস, মুন্ডাস †, জন, নারসেস, বেস্সাস, জারমানুস, লাইবেরিয়াস, ব্লেসকামেস, আর্তাবাজেস |
থেওডাহাড, ভিটিজেস, ইডিবাড, টোটিলা †, টেইয়া † |
গোথিক যুদ্ধ সম্রাট প্রথম জাস্টিনিয়ান এর রাজত্বের সময় বাইজেন্টাইন সাম্রাজ্য এবং ইতালির অস্ট্রোগোথিক রাজ্যের মধ্যে ঘটে। এটি ইতালীয় উপদ্বীপ, ডালমাটিয়া, সার্ডিনিয়া, সিসিলি এবং কর্সিকাতে ৫৩৫ থেকে ৫৫৪ সাল পর্যন্ত ঘটে।যুদ্ধের মূল কারণ ছিল পূর্ব পশ্চিমা রোমান সাম্রাজ্যের প্রদেশগুলি পুনরুদ্ধারের জন্য পূর্ব রোমান সম্রাট জাস্টিনিয়ান ১ এর উচ্চাকাঙ্ক্ষা, যা রোমানরা পূর্ববর্তী শতাব্দীর (অভিপ্রয়াণ সময়কাল) বর্বর উপজাতিদের আক্রমণের জন্য হারিয়েছিল।
বাইজেন্টাইন সাম্রাজ্য এই যুদ্ধে ভ্যানডাল থেকে আফ্রিকা প্রদেশ পর্যন্ত পুনদখল করে। সাধারণত ইতিহাসবিদরা এই যুদ্ধকে দুটি পর্যায়ে বিভক্ত করে:
- ৫৩৫ থেকে ৫৪০ পর্যন্ত: অস্ট্রোগোথিক রাজধানী রেভেন্নার পতন এবং বাইজেন্টাইনের দ্বারা ইতালির আপাত পুনর্দখল।
- ৫৪০/৫৪১ থেকে ৫৫৩ পর্যন্ত: টোটিলার অধীনে একটি গোথিক পুনর্জাগরণ, যা বাইজেন্টাইন জেনারেল নরসেসের দীর্ঘ সংগ্রামের পরে দমন করেতে পেড়েছিলেন, যিনি ফ্রাঙ্কস ও আলামন্নি কর্তৃক ৫৫৪ সালের আক্রমণও অব্যাহত করে দেন।
৫৫৪ সালে জাস্টিনিয়ান ইতালীয় সরকারের নতুন সরকারকে রাষ্ট্রীয় অনুমোদন প্রদান করেছিলেন। উত্তর ইতালির বেশ কয়েকটি শহর বাইজেন্টাইনের বিরুদ্ধে ৫৬২ পর্যন্ত টিকে থাকতে পেড়েছিল। যুদ্ধের শেষের দিকে ইতালি ধ্বংস ও মানবহীন হয়ে গিয়েছিল। বাইজেন্টাইনরা ৫৬৮ সালে ল্যাম্বার্ডসের আক্রমণের থামাতে অক্ষম ব্যর্থ হয়, যার ফলে কনস্ট্যান্টিনোপল স্থায়ীভাবে ইতালীয় উপদ্বীপের একটি বড় অংশের উপর নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলে।
পটভূমি
[সম্পাদনা]গথদের অধীনে ইতালি
[সম্পাদনা]৪৭৬ সালে ওডেসার সম্রাট রোমুলাস অগাস্টুলাসকে পদচ্যুত করেন এবং নিজেকে ইতালির ইতালির রাজা ঘোষণা করেছিলেন, যার ছিল ইতালিতে পশ্চিমা রোমান সাম্রাজ্যের চূড়ান্ত বিলুপ্তি। যদিও ওডেসার পূবের সম্রাট জেনোয়ের নামমাত্র সার্বভৌম কর্তৃত্বকে স্বীকৃতি দিয়েছিলেন, তার স্বাধীন নীতি এবং ক্রমবর্ধমান শক্তির কারণে সে কনস্ট্যান্টিনোপলের চোখে হুমকি হিসেবে দেখা দেয়। একটি সাময়িক সমাধান প্রদানের জন্য, তাদের নেতা, থিওডোরিক দ্য গ্রেটের নেতৃত্বে অস্ট্রোগোথরা পশ্চিম বালকানসে সাম্রাজ্যের ফোদেরাতি (মিত্র) হিসাবে খিতু হয়, কিন্তু অস্থিরতা অব্যাহত ছিল। জেনো, অড্রাগোথদের ইতালির প্রতিনিধি হিসাবে ওডেসারকে সরিয়ে দেয়ার জন্য পাঠান। থিওডোরিক এবং গথরা ওডেসারকে পরাজিত করে এবং ইতালিকে গোথিক শাসনের অধীনে নিয়ে আনে। থিওডোরিক এবং জেনো ও তার উত্তরাধিকারী আনাস্টাসিয়াসের মধ্যকার বন্দোবস্ত অনুসারে, ভূমি এবং তার জনগণকে সাম্রাজ্যের অংশ হিসাবে গণ্য করা হয়, সাথে থিওডোরিককে ভাইসরয় এবং সেনাবাহিনীর প্রধান হিসেবে নিযুক্ত করা হয় (ম্যাজিস্টার মিলিতাম)। [১] থিওডোরিক এই পুরো ব্যবস্থাটি কঠোরভাবে পর্যবেক্ষণ করে; সিভিল প্রশাসনের মধ্যে ধারাবাহিকতা ছিল, যা বিশেষভাবে রোমান কর্মচারী দ্বারা চলতো এবং আইন দ্বারা সম্রাটকে বজায় রাখা অব্যাহত ছিল। [২] অন্যদিকে, সেনাবাহিনী ছিল শুধু গোথিক যারা তাদের নেতা ও আদালত কর্তৃপক্ষের অধীনে কাজ করতো। [৩] জনগণও ধর্মের দ্বারা বিভক্ত ছিল: রোমানরা ছিলেন চ্যালসডোনীয় খ্রিস্টান, আর গোথরা ছিল আরিয়ান খ্রিস্টান। গোথদের মধ্যে ধর্মীয় সহনশীলতা ছিল, যা ভান্ডাল বা প্রাথমিক ভিসিগথের মধ্যে ছিলনা। [৪] দ্বৈত ব্যবস্থা থিওডোরিকের সক্ষম নেতৃত্বের অধীনে ঠিকভাবে কাজ করেছিল, যিনি রোমান অভিজাতদের শান্ত করে রেখেছিলেন, কিন্তু পরবর্তীকালে এই ব্যবস্থাটি ভেঙে পড়তে শুরু করে এবং তার উত্তরাধিকারীদের অধীনে তা পুরোপুরি পতিত হয়। [৫]
সম্রাট প্রথম জাস্টিনের উত্থানের সাথে পূর্ব ও পশ্চিম গির্জার মধ্যকার আকিয়াশিয়ান দ্বন্দ্বের অবসান এবং পূর্বে ধর্মীয় ঐক্য ফিরে যাওয়ার সাথে সাথে ইতালীর সেনেটরীয় অভিজাতদের বেশ কয়েকজন সদস্য গোথিক শক্তির সাথে ভারসাম্য বজায় রাখার জন্য কনস্ট্যান্টিনোপলের সাথে ঘনিষ্ঠ বন্ধন রাখতে শুরু করে। ৫২৪ সালে বিশিষ্ট ম্যাজিস্টার অফিসিয়রাম বোথিয়াস এবং তার শ্বশুরের পদচ্যুতি ও মৃত্যুদণ্ড গোথিক শাসন থেকে তাদের জাতির ধীরে ধীরে বিচ্ছেদের একটা অংশ ছিল। ৫২৬ সালের আগস্ট মাসে থিওডোরিকের উত্তরসূরী তাঁর শিশুপৌত্র আঠালারিক হয় এবং তাঁর মাতা আমলসুন্থাকে রাজপ্রতিনিধি পদে অধিষ্ঠিত হন; তিনি একটি রোমান শিক্ষা পেয়েছিলেন এবং সেনেট এবং সাম্রাজ্যের সঙ্গে পুনর্মিলনের ব্যবস্থা শুরু করেন। এই সমঝোতা এবং অথালারিকের রোমান শিক্ষার জন্য গথিক নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিরা অসন্তুষ্ট ছিলেন, তারা ষড়যন্ত্র করেন। আমালাসুন্থার তিনজন ষড়যন্ত্রকারীকে হত্যা করেন এবং নতুন সম্রাট প্রথম জাস্টিনিয়ানকে চিঠি লিখেছিলেন, তিনি যদি পদচ্যুত হন তবে তিনি যেন সম্রাটের কাছে আশ্রয় পান। আমালাসুন্ঠ ইতালিতে রয়ে যান। [৬]
বেলিসারিয়াস
[সম্পাদনা]
একটি রাজবংশীয় বিরোধ মিটানোর অজুহাতে, ৫৩৩ খ্রিস্টাব্দে ভ্যানডালদের অধীনে থাকা উত্তর আফ্রিকান প্রদেশগুলি পুনরুদ্ধার করার জন্য জাস্টিনিয়ান তার সবচেয়ে প্রতিভাবান জেনারেল বেলিসিয়াসেসকে পাঠিয়েছিলেন। এই ভ্যান্ডালিক যুদ্ধে রোমান সাম্রাজ্যের অপ্রত্যাশিত দ্রুত এবং চূড়ান্ত জয়, হারিয়ে যাওয়া পশ্চিম প্রদেশগুলির বাকি অংশের পুনরুদ্ধারের জন্য জাস্টিনিয়ানকে উত্সাহিত করে। রাজপ্রতিনিধি হিসাবে, অমলসুন্থা রোমান নৌবাহিনীকে অস্ট্রোগোথিক রাজ্যের অন্তর্গত থাকা সিসিলির বন্দরগুলি ব্যবহার করার অনুমতি দেয়। ৫৩৪ খ্রিস্টাব্দে তাঁর পুত্রের মৃত্যুর পর আমালাসুন্থ তাঁর চাচাতো ভাই থিওডাহাদকে রাজত্ব দান করে দেন; থিওডাহাদ তা গৃহন করে নেয়, কিন্তু সে আমালাসুন্থকে গ্রেপ্তার করায় এবং ৫৩৫ সালের শুরুর দিকে তাকে হত্যা করে। [৬] তার প্রতিনিধিদের মাধ্যমে, জাস্টিনিয়ান আমলসুন্থার জীবন বাঁচানোর চেষ্টায় ব্যর্থ হন কিন্তু তার মৃত্যু জাস্টিনিয়ানকে গোথের সাথে যুদ্ধ করার একটি কারণ (ক্যাসাস বেলি) দেয়। প্রসপিওয়াস লিখেছিলেন যে "যখনই তিনি জানতে পারেন, আমালাসুন্থার সাথে কি ঘটেছে, তিনি তাঁর রাজত্বের নবম বছরে যুদ্ধে প্রবেশ করেন"। [৭][৮]
প্রথম বাইজেন্টাইন অভিযান, ৫৩৫-৫৪০
[সম্পাদনা]সিসিলি এবং ডালমাটিয়া জয়
[সম্পাদনা]
বেলিসারিয়াস রোমান আফ্রিকা ও ইতালির মধ্যে সিসিলিতে অবতরণ করেন, যার জনসংখ্যা সাম্রাজ্যের প্রতি নিয়োজিত ছিল। দ্বীপটি দ্রুত দখল হয়ে যায়, একমাত্র শক্ত প্রতিরোধ করে পানোরমাস (Palermo), যা ডিসেম্বরের শেষের দিকে পরাস্ত হয়। বেলিয়াসিয়াস ইতালিতে পার হতে প্রস্তুত হন এবং থিওডাহাদ জাস্টিনিয়কে দূত পাঠান, প্রথমে সিডিলির সমর্পণ করার প্রস্তাব করেন এবং তার সার্বভৌমত্বকে স্বীকৃতি দিতে রাজি হন কিন্তু পরবর্তীতে পুরো ইতালি সমর্পণ করতে রাজি হন। [৯][১০]
৫৩৬ সালের মার্চে, মুন্দাস ডালমাটিয়া অতিক্রম করেন এবং তার রাজধানী, সালোনা দখল করেন, কিন্তু একটি বড় গোথিক সেনা আবির্ভূত হয় এবং মুন্ডাসের পুত্র মরিসিয়াস একটি সংঘর্ষে মারা যান। মুন্দাস গোথদের একটি ভারী পরাজয়ের প্রদান করেন কিন্তু তিনি নিজেই মারাত্মকভাবে আহত হন। রোমান সেনাবাহিনী প্রত্যাহার করে নেয় এবং, সালোনা বাদে, ডালমাটিয়া গোথদের কাছে চলে যায়। এতে অনুপ্রাণিত হয়ে, থিওডাহাদ বাইজেন্টাইন দূতকে কারাগারে বন্দী করেন। ডালমাটিয়া পুনরুদ্ধারের জন্য জাস্টিনিয়ান, একজন নতুন ম্যাজিস্ট্রেট, কনস্ট্যান্টিয়ানাসকে পাঠান এবং বেলিসারিয়াসকে ইতালিতে ঢুকতে আদেশ দেন। কনস্ট্যান্টিয়ানাস দ্রুত তার কাজ সম্পন্ন। গোথিক জেনারেল, গ্রিপাস, সলোনাকে ত্যাগ করে উত্তরে চলে যান, যা তিনি সম্প্রতি দখল করেছিলেন, কারণ এটির দুর্গগুলি ছিল ধ্বংসপ্রাপ্ত এবং এর নাগরিকদের রোমান মনোভাব ছিল। কনস্ট্যান্টিয়ানাস শহর দখল করেন এবং দেয়াল পুনর্নির্মাণ করেন। সাত দিন পর গোথিক সেনারা ইতালির উদ্দেশ্যে চলে যায় এবং জুনের শেষের দিকে সমগ্র ডালমাটিয়া রোমানদের হাতে চলে আসে।[১১][১২]
রোমের প্রথম অবরোধ
[সম্পাদনা]৫৩৬ সালের বসন্তের শেষে বেলিসারিয়াস ইতালিতে ঢুকেন যেখানে তিনি রেজিউম দখল করে উত্তর দিকে যাত্রা করেন। নিয়াপলিসকে (আধুনিক ইংরেজিতে: নেপলস) নভেম্বর মাসে তিন সপ্তাহ অবরোধ করে রাখার পর সাম্রাটের সৈন্যরা ভেঙ্গে ভেতরে ঢুকতে পারে। বেশিরভাগ বর্বর নিয়ে গঠিত রোমান সেনাবাহিণী পুরো শহর ধ্বংসসাধন ও লুণ্ঠন করে। বেলিসিয়াস উত্তরে রোমে চলে যান, যা নিয়াপলিসের ভাগ্য দেখে, কোন প্রতিরোধ গড়ে তোলে নি; ডিসেম্বরে বেলিসারিয়াস বাধাহীনভাবে প্রবেশ করতে পারেন। বাইজ্যান্টাইন অগ্রগতির ক্ষিপ্রতা গোথদেরকে অবাক করে দেয় এবং থিওডাহাদের নিষ্ক্রিয়তা তাদের ক্রুদ্ধ করে। নিয়াপলিসের পতনের পর তারা তাকে পদচ্যুত করে ভিটিজেসকে বসায়। ভিটিজেস রোম ছেড়ে রাভেন্না যান, যেখানে তিনি অমলসুন্থার মেয়ে মাতাসুন্থাকে বিয়ে করেছিলেন এবং আক্রমণের বিরুদ্ধে তার বাহিনীকে জড়ো করতে শুরু করেন। ভিটিজেস রোমের বিরুদ্ধে একটি বড় শক্তি পরিচালনা করেছিলেন, যেখানে বেলিসারিয়াস রয়েছিলেন, তার কাছে খোলা মাঠে গোথের মুখোমুখি হওয়ার জন্য পর্যাপ্ত সৈন্য ছিল না। রোমের পরবর্তী অবরোধ, গোথিক যুদ্ধে তিনটির মধ্যে প্রথমটি, ৫৩৭ সালের মার্চ থেকে ৫৩৮ সাল পর্যন্ত স্থায়ী হয়। সেখানে ধাওয়া দেয়া, ছোটখাটো বিবাদ এবং বেশ কয়েকটি বড় যুদ্ধ হয়েছিল, কিন্তু এর পরে ৫৩৭ সালে কনস্ট্যান্টিনোপল থেকে এপ্রিল মাসে ১,৬০০ স্ল্যাভ ও হান এবং নভেম্বর মাসে ৫০০০ জন আসলে, বাইজেন্টাইনরা আক্রমণ শুরু করে এবং তাদের অশ্বারোহী বাহিনী গোথদের পিছন দিকের বেশ কয়েকটি শহর দখলে নেয়। সাম্রাটের নৌবাহিনী গথদের সমুদ্রপথে আসা সরবরাহ থেকে যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়, ফলে তাদের মালামাল সরবরাহের সমস্যাগুলি বেড়ে যায় এবং তারা গোথিক নাগরিকদের হুমকি দেয়। রেভান্নার নিকটবর্তী আর্মিনামের (বর্তমানে রিমিনি) পতন, ভিটিজেসকে অবরোধ ত্যাগ ও প্রত্যাহারে বাধ্য করে।[১৪][১৫][১৬]
আর্মিনামের অবরোধ
[সম্পাদনা]ভিটিজেস যখন উত্তর-পূর্ব দিকে যাত্রা করেন, তিনি তার পিছনের দিকটি নিরাপদ করার জন্য তার পথের সকল শহর ও দুর্গগুলির সৈন্য সরবরাহ শক্তিশালী করেন এবং তারপর আর্মিনামের দিকে যাত্রা করেন। এটা দখলরত ২,০০০ অশ্বারোহীর রোমান বাহিনী ছিল বেলিসারিয়াসের শ্রেষ্ঠ অশ্বারোহী বাহিনী; বেলিসারিয়াসের একটি পদাতিক বাহিনী দিয়ে তাদের প্রতিস্থাপন করার সিদ্ধান্ত নেন। [১৭] তাদের অধিনায়ক, জন,এ আদেশ মানতে অস্বীকার করেন এবং আর্মিনামে রয়ে যান। গথদের আগমনের অল্পসময় পরে, একটি হামলা ব্যর্থ হয়, কিন্তু শহরটিতে অবরোধে টিকে থাকার মত মজুদ ছিল না। [১৮][১৯] আর্মেনিয়ান অধ্যক্ষ নরসেসের অধীনে ২,০০০ হেরুল ফয়েডারটির একটি নতুন বাহিনী পিসেনামে এসে পৌছায়। [২০] বেলিসারিয়াস নরসেসের সাথে সাক্ষাৎ করেন, যিনি আর্মিনামে একটি ত্রাণ অভিযান চালাতে চান, কিন্তুু বেলিসারিয়াস আরো সতর্ক ভাবে আগানোর পক্ষপাতী ছিলেন। জনের কাছ থেকে শহরটির আশুপতনের সম্ভাবনার কথা বলে একটি চিঠির আগমনে, সিদ্ধান্ত নরসসের মতের পক্ষে যায়। [২১] বেলিসারিয়াস তার সেনাবাহিনীকে তিনটি ভাগে বিভক্ত করেন, তার সক্ষম এবং বিশ্বাসযোগ্য লেফটেন্যান্ট ইলডিগারের অধীনে একটি নৌবাহিনী, আরেকটি বাহিনী একইরকম অভিজ্ঞ মার্টিনের অধীনে, যা দক্ষিণ থেকে আগমন করবে এবং নরসেস ও তার অধীনে প্রধান শক্তি যা উত্তর পশ্চিম থেকে আসবে। ভিটিজেস তাদের পদ্ধতির জেনে যায় এবং তাদের থেকে শক্তিশালী বাহিনী দ্বারা ঘিরে যাবার সম্ভাবনা থাকায়, তাড়াতাড়ি রাভেন্না থেকে সরে পড়েন। [২২]

আর্মিনামের রক্তপাতহীন বিজয় বেলিসারিয়াসের বিরুদ্ধে নরসেসেকে শক্তিশালী করে দেয়, জন সহ অনেক রোমান জেনারেল তাঁর প্রতি অনুগত হয়ে পড়ে। আর্মিনাম বাচানোর পরে কাউন্সিলে, বেলিসারিয়াস তাদের পিছনের দিকের অক্সিমামের, বর্তমানে ওসিমো, শক্তিশালী গথিক সেনাবাহিনীকে হ্রাস করার এবং মেডিয়ালানামকে অবরোধ করার পক্ষে ছিল; নরসেস একটু কম নিবিষ্ট প্রচেষ্টা চেয়েছিলেন এবং এমিলিয়াতে একটি অভিযান চালাতে চেয়েছিলেন। [২৩] বেলিসারিয়াস বিষয়গুলিকে বাড়তে না দিয়ে এবং নরসেস এবং জনকে নিয়ে উরবিনামের বিরুদ্ধে যাত্রা করে। দুই বাহিনী আলাদাভাবে শিবির স্থাপন করে এবং খুব শীঘ্রই পরে, নরসেস, বুঝতে পারেন যে শহরটি অনাক্রম্য এবং ভালভাবে মালামাল মজুদকৃত ছিল, শিবির গুটিয়ে নেন এবং আর্মিনামে চলে যান। সেখান থেকে তিনি জনকে এমিলেয়ায় পাঠালেন, যা দ্রুত পদানত হয়। সৌভাগ্যক্রমে, উরবিনামের একমাত্র পানির প্রস্রবণ শুকিয়ে যাওয়ায় এই শহরটি শীঘ্রই বেলিসিয়াসের হাতে পড়ে যায়। [২৪]
মেডিওলানাম
[সম্পাদনা]৫৩৮ সালের এপ্রিলে বেলিসারিয়াস, রোমের পর ইতালির দ্বিতীয় বৃহত্তম জনবহুল ও ধনী শহর মেডিয়ালানাম (মিলান) শহরের প্রতিনিধিদের আবেদনে, তিনি মুন্ডিলাসের অধীনে ১০০০ জন সৈন্য়কে শহরে পাঠিয়েছিলেন। এই বাহিনী, শহরটিকে এবং লিগুরিয়ার বেশিরভাগ, টিসিনুম (পাভিয়া) ছাড়া, সহজে দখল করে। ভিটিজেস সাহায্যের জন্য ফ্রাঙ্কসদেরকে আহ্বান জানান এবং ১০,০০০ বর্গুন্দিয়ানের একটি বাহিনী অপ্রত্যাশিতভাবে আল্পস অতিক্রম করে আসে। উরাইয়াসের অধীনে তারা গথদের সাথে একত্রিত হয়ে শহর অবরোধ করে। মেডিয়ালানামে সেনাবাহিনী অল্প এবং প্রস্তুুতিও কম ছিল; ইতোমধ্যে রোমান বাহিনীর সংখ্য়া কম ছিল যা প্রতিবেশী শহর ও দুর্গগুলিতে ছড়িয়ে ছিটিয়ে ছিল। [২৫] বেলিসারিয়াস একটি উদ্ধার বাহিনী পাঠান কিন্তু এর অধিনায়ক মার্টিন ও উলিয়ারিস, অবরোধকারী শহরটিকে সাহায্য করার জন্য কোনও চেষ্টা করেননি। পরিবর্তে, তারা জন এবং ম্যাজিস্ট্রার মিলিটাম ইলিরিমিক জাস্টিনের প্রতি অতিরিক্ত শক্তি সৈন্য পাঠানোর জন্য অনুরোধ জানায়, যা নিকটবর্তী এমিিলিয়া প্রদেশে কার্যরত ছিল। [২৬]
রোমান আদেশের পালাক্রমে মতদ্বৈধ থাকায় পরিস্থিতি আরও খারাপ করে তোলে, কারণ জন এবং জাস্টিন নরসসের আদেশ ছাড়া সরে যেতে রাজি ছিলেন না। জন অসুস্থ হয়ে পড়ে এবং প্রস্তুতি থেমে যায়। এই বিলম্ব জন্য শহরটির জন্য মারাত্মক প্রমাণিত হয়, যা বহু মাস অবরোধের পর, অনাহারের কাছাকাছি ছিল। গথরা মুন্ডিলাসকে প্রতিশ্রুতি দেয় যে, যদি তিনি শহরটি আত্মসমর্পণ করেন তবে তার সৈন্যদের জীবন রক্ষা করা হবে কিন্তু নাগরিকদের ব্যাপারে কোন প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়না তাই তিনি এই সুযোগ অস্বীকার করেন। ৫৩৯ সালের মার্চ মাসের শেষ নাগাদ, তার ক্ষুধার্ত সৈন্যরা তাকে এই শর্ত গ্রহণ করতে বাধ্য করে। রোমান সৈন্যদেরকে রক্ষা করা হয় কিন্তু বাসিন্দাদের গণহত্যা করা হয় এবং শহরটি ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল। [২৭][Note ১]
ফ্র্যাঙ্কদের আক্রমণ
[সম্পাদনা]এই ভরাডুবির পর নরসেসকে ফিরিয়ে নেয়া হয় এবং বেলিসারিয়াস সারা ইতালি জুড়ে কর্তৃত্বের সাথে সর্বোচ্চ অধিনায়ক হিসাবে নিযুক্ত হন। ভিটিজেস ফার্সি দরবারে দূত পাঠিয়েছিলেন, এই আশায় করেছিলেন যে, প্রথম খস্রু বাইজেন্টাইনের বিপক্ষ পুনরায় যুদ্ধ শুরু করবে যাতে জাস্টিনিয়ান বেলিসারিয়াস সহ তার বাহিনীর অধিকাংশ পূর্বে নিয়ে যায় এবং গোথদের পুনরায় শক্তিশালী হতে সুযোগ করে দেয়। [২৮] বেলিসারিয়াস যুদ্ধ শেষ করার জন্য রাভেন্নাকে দখল করার সিদ্ধান্ত নেন কিন্তু অ্যাক্সিউম ও ফেসুলে(ফিওসোল) তে গোথদের সুরক্ষিত আশ্রয়ের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার দরকার ছিল। [২৯] মার্টিন এবং জন, উরিয়াসের অধীনে গোথিক সেনাবাহিনীকে বাধা দিয়েছিল, যা পো নদী অতিক্রম করার চেষ্টা করছিল, জাস্টিনের অধীনে সেনাবাহিনীর একটি অংশ ফেসুয়েল অবরোধ করে এবং বেলিসিয়াসকে নিজে আক্সিয়াম অবরোধ করেন। অবরোধের সময় রাজা খেওডেবার্টের নেতৃত্বে একটি বড় ফ্র্যাঙ্কিশ সেনাবাহিনী আল্পস অতিক্রম করে এবং পৌ নদীর দুকূলে অবস্থানরত গথ এবং বাইজেন্টাইন সেনদের আক্রমণ করে। তারা প্রখমে গথদের আক্রমণ করে, যারা মনে করেছিল ফ্র্যাঙ্করা বন্ধু হিসাবে এসেছে, দ্রুতগতিতে পালায়ে যায়। বাইজেন্টাইনরাও একই রকম অবাক হয়ে যুদ্ধ শুরু করে পরাজিত হয় এবং দক্ষিণ দিকে তাসকানিতে বাহিনী প্রত্যাহার করে নেয়। ফ্র্যাঙ্কিশ আক্রমণ আমাশয়-রোগের প্রকোপে পরাজিত হয়, যা তাদের প্রচুর ক্ষতি করে এবং ফ্র্যাঙ্কদের বাহিনী প্রত্যাহারের জন্য বাধ্য করে। বেলিয়াসিয়াস অবরোধ করা শহরগুলির উপর মনোনিবেশ করেন, এবং উভয় সেনাবাহিনী ৫৩৯ সালের অক্টোবরে বা নভেম্বর অনাহারের জন্য আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য হয়েছিল। [৩০]
রাভেন্না নিয়ন্ত্রণে আনা
[সম্পাদনা]
ডালমাটিয়া থেকে আানা সৈন্য দিয়ে বেলিসারিয়াস পুনরায় শক্তি বাড়ান এবং তিনি রাভেন্না দখলের জন্য যান। বিচ্ছিন্ন বাহিনী পো এর উত্তরে পাঠানো হয় এবং সাম্রাটের নৌবহর অ্যাড্রিটিক সাগর পাহাড়া দিত, সকল সরবরাহ থেকে শহরটিকে বিচ্ছিন্ন করে দেয়। গোথিক রাজধানীতে ভিটিজেস একজন ফ্রাঙ্কদের রাষ্ট্রদূত পান, যারা একটি মিত্রতার সন্ধানে ছিল কিন্তু গত গ্রীষ্মের ঘটনার পরে ফ্রাঙ্কদের কোনও প্রস্তাব বিশ্বাস করা হয়না। শীঘ্রই পরে কনস্ট্যান্টিনোপল থেকে একজন রাষ্ট্রদূত এসেছিলেন, যা জাস্টিনিয়ানের কাছ থেকে বিস্ময়করভাবে ক্ষমাশীল শর্ত বহন করে। যুদ্ধ শেষ করার এবং আসন্ন ফারসি যুদ্ধের বিরুদ্ধে মনোযোগ দেওয়ার জন্য, সম্রাট ইতালির একটি অংশীদারত্বের প্রস্তাব দেন, পো নদীর দক্ষিণের জায়গা সাম্রাজ্যের থাকবে এবং উত্তরের জায়গা লি গোথদের হবে। গথরা সহজেই শর্তাবলী গ্রহণ করে কিন্তু বেলিসারিয়াস মনে করেন এটা তার কঠোর পরিশ্রম করে পাওয়া জয়ের বিরুদ্ধে বিশ্বাসঘাতকতা, তাই তিনি সই করতে প্রত্যাখ্যান করেন যদিও তার সব জেনারেলরা, তার সাথে অসম্মতি প্রকাশ করে। [৩১]
হতাশ হয়ে গথরা বেলিসারিয়াসকে, যাকে তারা সম্মান করত, পশ্চিমের সম্রাট করার প্রস্তাব দেয়। বেলিসারিয়াসের এই ভূমিকা গ্রহণের কোনও ইচ্ছা ছিল না কিন্তু তিনি দেথেন যে এই পরিস্থিতিকে তার উপকারে ব্যবহার করতে পারবেন এবং তিনি রাজি হবার ভান করেন। ৫৪০ সালের মে মাসে বেলিসারিয়াসের ও তার সেনাবাহিনী রাভেন্নাতে প্রবেশ করেন; শহরে কোন লুটপাট করা হয় নি, গথেদের সাথে ভাল আচরণ করা হয় এবং তাদের সম্পত্তি বজায় রাখার অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। রাভেন্নার আত্মসমর্পণের পর, পো এর উত্তরে কয়েকটি গোথিক সেনাবাহিনী আত্মসমর্পণ করে। অন্য এলাকা গথদের নিয়ন্ত্রণে রয়ে যায়, যাদের মধ্যে তিসিনূম ছিল, যেখানে উরিয়াস ছিলেন এবং ইল্ডিবাদ কর্তৃক দথলকৃত ভেরোনা। এর পরপরই, বেলিসারিয়াস কনস্ট্যান্টিনোপলের উদ্দেশ্যে যাত্রা করেন, যেখানে তিনি বিজয়ীর সম্মান প্রত্যাখ্যান করেন। ভিটিজেস পাট্রিসিযান উপাধি দেয়া হয় এবং আরামদায়ক অবসর পাঠানো হয়, এরসাথে বন্দি গথদের পূর্বাঞ্চলীয় সৈন্যবাহিনী শক্তিশালী করার জন্য পাঠানো হয়। [৩২]
গথিক পুনরুজ্জীবন, ৫৪১-৫৫১
[সম্পাদনা]ইল্ডিবাদ এবং এরায়িকের রাজত্ব
[সম্পাদনা]যদি বেলিসারিয়াসকে ডাকা না হত, তবে সম্ভবত তিনি কয়েক মাসের মধ্যে উপদ্বীপ জয় করে ফেলতেন। এটাই সর্বোত্তম সমাধান ছিল যা জাস্টিনিয়ান এর ঈর্ষা কারণে নষ্ট হয়; এবং সম্রাটের দ্বারা প্রস্তাবিত শান্তি প্রস্তাব, যা দ্বিতীয় সর্বোত্তম সমাধান ছিল, তা তার জেনারেলদের অবাধ্যতার কারণে ব্যর্থ হয়। তারা ইতালিতে আরো বারো বছর যুদ্ধের দায়ভার বহন করে। |
জন ব্যাগনেল বিউরি পরবর্তী রোমান সাম্রাজ্যের ইতিহাস, ভলিউম ২, চ্যাপ্টার ১৯ |
বেলিসারিয়াস চলে যাবার পর রোমানদের হাতে ইতালির বেশিরভাগ অংশ থেকে যায়, তবে পোর উত্তর পাশ, তিসিনাম ও ভেরোনা অজিত ছিল। বেলিসারিয়াস আর তাদের বিশ্বাস করতোনা সেটা বুঝা যাচ্ছিল, উয়ারিয়াসের পরামর্শে গথরা তাদের নতুন রাজা হিসেবে ইল্ডিবাদকে মনোনীত করে এবং তিনি ভেনিসিয়া ও লিগুরিয়াতে গোথিক নিয়ন্ত্রণ পুনরায় প্রতিষ্ঠিত করেন। ইটালিয়ান কমান্ডার-ইন-চীফ নিয়োগে জাস্টিনিয়ান ব্যর্থ হন। রোমান সেনাবাহিনী সামরিক শৃঙ্খলা উপেক্ষিত এবং লুটপাট কাজ মগ্ন হয়ে পরে। অতিরিক্ত রাজস্ব দাবির ফলে অবিলম্বে নতুন সাম্রাজ্যের আমলাতন্ত্র জনসাধারণের বিরাগভাজন হয়ে ওঠে। [৩৩] ইল্ডিবাদ রোমান জেনারেল ভিটালিয়াসকে ট্র্যাভিসোতে পরাজিত করেন কিন্তু উয়ারিয়াস ও তার স্ত্রীদের মধ্যে ঝগড়ার কারণে উয়ারিয়াসকে খুন করার পর বদলা নিতে ৫৪১ সালের মে মাসে তাকে হত্যা করা হয়। ওডেসার অবশিষ্ট সেনাবাহিনী রাগিয়ানরা ইতালিতে রয়ে গিয়েছিল এবং গথদের পাশে ঐক্যবদ্ধ্য হয়, তাদের নতুন এরারিককে নতুন রাজা হিসেবে ঘোষণা কর হয়, যার প্রতি গথদের অপ্রত্যাশিতভাবে সমর্থন ছিল। [৩৪] এরারিক জাস্টিনিয়ানের সঙ্গে আলোচনা শুরু করার জন্য গথদেরকে প্ররোচিত করেছিলেন, গোপনভাবে সাম্রাজ্যর কাছে তার রাজত্ব হস্তান্তরের ইচ্ছা করেছিলেন। গথরা নিষ্ক্রিয়তার কারণ বুঝতে পারে এবং ইল্ডিবাদের ভাগ্নে টটিলা (বা বাদিউলা) এর কাছে যায় এবং তাঁকে রাজা করার প্রস্তাব দেয়। টটিলা ইতোমধ্যে বাইজেন্টাইনের সাথে আলোচনা শুরু করেছিল কিন্তু ষড়যন্ত্রকারীর সাথে যোগাযোগ করার পর তিনি সম্মতি দেন। ৫৪১ সালের প্রথম শরৎকালে এরারিক খুন হন এবং টটিলাকে রাজা ঘোষণা করেন। [৩৫]
প্রাথমিকভাবে গথদের সাফল্য
[সম্পাদনা]
টোটিলা অনেক সুবিধা উপভোগ করেছিলেন: জাস্টিনিয়ান প্লেগের প্রাদুর্ভাব ৫৪২ খ্রিস্টাব্দে রোমান সাম্রাজ্যকে জনশূণ্য এবং ধ্বংস করে দেয়; একটি নতুন রোমান-ফার্সি যুদ্ধ শুরু হওয়াতে জাস্টিনিয়ান তার বেশিরভাগ সেনা পূর্বে পাঠাতে বাধ্য হয়; এবং ইতালিতে বিভিন্ন রোমান জেনারেলদের অযোগ্যতা ও অনৈক্য সামরিক কার্যক্ষমতা এবং শৃঙ্খলা কমিয়ে দেয়। এই সর্বশেষ কারণটি টোটিলা প্রথম সাফল্য এনে দেয়। জাস্টিনিয়নের অনেক অনুরোধের পর জেনারেল কনস্টান্টিয়ান ও আলেকজান্ডার তাদের বাহিনীকে একত্রিত করে ভেরোনার দিকে যাত্রা করেন। প্রতারণার মাধ্যমে তারা শহরের দেয়ালের একটি গেট দথলে আনে; কিন্তু আক্রমণ চালিয়ে যাবার পরিবর্তে তারা সম্ভাব্য লুটের মালের ভাগ করা নিয়ে ঝগড়া করতে বিলম্ব করে, গথরা ততক্ষনে গেটটিকে পুনরুদ্ধার করে এবং বাইজেন্টাইন সেনাদের প্রত্যাহার করাতে বাধ্য করে। টোটিলা ফাভেন্টিয়ার (ফেনজা) কাছাকাছি ৫,০০০ সৈন্যে নিয়ে তাদের রোমান শিবির আক্রমণ করে এবং ফাভেন্টিয়ার যুদ্ধে রোমান সেনাবাহিনীকে ধ্বংস করে দেন। টোটিলা টাস্ক্যানিতে ঢুকে, যেখানে তিনি ফ্লোরেন্স অবরোধ করেন। রোমান জেনারেলগণ, জন, বেসাস এবং সাইপ্রিয়িয়ান, তার উদ্ধারে গিয়েছিলেন, কিন্তু মুসেলিয়ামের যুদ্ধে তাদের সংখ্যাসূচকভাবে উচ্চতর বাহিনী পরাজিত হয়। [৩৬]
দক্ষিণ ইতালি
[সম্পাদনা]
টোটিলা রোমকে পিছনে ফেলে দক্ষিণে যাত্রা করেন, যেখানে রোমান সেনা কম এবং দুর্বল ছিল। দক্ষিণ ইতালির প্রদেশগুলি তার কর্তৃত্বকে স্বীকৃতি দিতে বাধ্য হয়েছিল। এই অভিযানটি প্রত্যন্ত এলাকা দ্রুত নিয়ন্ত্রণ গ্রহণের জন্য ছিল, বাইজেন্টাইনরা বিচ্ছিন্নভাবে কিছু দুর্গের নিয়ন্ত্রণ রেখেছিল, যার বেশিরভাগ উপকূলে এলাকায়, যা পরে দখল করা যাবে। যখন একটি দুর্গ দথল করা হত তখন এর দেয়ালগুলি সাধারণত ভেঙে দেওয়া হত যাতে এটির আর কোনও সামরিক মূল্য না থাকে। টোটিলা তার বন্দীদের সাথে ভাল আচরণ করার নীতি অনুসরণ করেছিলেন এবং প্রতিপক্ষকে মৃত্যুর আগ র্পযন্ত প্রতিরোধ করার চেয়ে আত্মসমর্পণ করতে প্ররোচিত করতেন। তিনি নেপলস অবরোধের সময় টোটিলার আচরণের উদাহরণ দিয়ে ইতালীয় জনগণের মন জয়ের চেষ্টাও করেছিলেন, যেখানে তিনি এই শহরটিকে ৫৪৩ সালে শর্তসাপেক্ষে আত্মসমর্পণ করার অনুমতি দিয়েছিলেন এবং জে.বি. বিউরির ভাষায়, প্রতিবাদীদের প্রতি "যথেষ্ট মানবতা" দেখিয়েছিলেন। বাইজেন্টাইন সেনা বাহিনীকে নিরাপদে প্রস্থান করার অনুমতি দেওয়ার পরে তিনি দুর্ভিক্ষ পিরিত নাগরিকদের সেবা করে পুনরায় সবল করেন। নেপলস দথল করার পরে টোটিলা জাস্টিনিয়ানের সাথে শান্তি প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করেছিল। যখন এটি প্রত্যাখ্যান করা হল তখন তিনি তার আবেদন পত্রের অনুলিপি পুরো রোমে ছেড়ে দেন; বাইজেন্টাইনরা যে বৈষম্য করেছিল তা সত্ত্বেও টোটিলার পক্ষে কোনও বিদ্রোহ হয়নি, যা তাকে বিতৃষ্ণ করে তুলে। তিনি উত্তরে অগ্রসর হয়ে শহরটি ঘেরাও করেন। [৩৭][৩৮]
পূর্বে পাঁচ বছরের যুদ্ধবিরতির সুযোগে বেলিসারিয়াসকে ৫৪৪ সালে ২০০ টি জাহাজ দিয়ে ইতালিতে ফেরত পাঠানো হয়। [৩৯] তিনি দক্ষিণে ইতালির বেশিরভাগ জায়গায় সফলভাবে পুনরায় বিচ্ছিন্ন হয়েছিলেন, তবে প্রোকোপিয়াসের মতে, জাস্টিনিয়ান ঈর্ষান্বিত হওযায় তাকে কম রসদ সরবরাহ করেন এবং তাই তিনি রোমের উদ্ধারে যেতে অক্ষম বোধ করেন। প্রোকোপিয়াস অবরোধের সময় দুর্ভিক্ষের বর্ণনা দিয়েছিলেন, যেখানে সাধারণ রোমানরা, যারা সামরিক বাহিনীর কাছ থেকে শস্য কিনতে যথেষ্ট ধনী ছিল না, তারা তুষ, বিছুটি, কুকুর, ইঁদুর এবং শেষ পর্যন্ত "একে অপরের মল" খেতে শুরু করে। [৪০] পোপ ভিজিলিয়াস, যিনি সিরাকিউজে সুরক্ষার জন্য পালিয়ে এসেছিলেন, শস্যে ভর্তি জাহাজের একটি বহর পাঠিয়েছিলেন, তবে টোটিলার নৌবাহিনী সেগুলিকে টাইবারের মুখের কাছে বাধা দেয় ও ধরে নিয়ে যায়। রোমকে মুক্তি করার জন্য বেলিসারিয়াস এক মরিয়া প্রচেষ্টা করেন যা সফলতার কাছাকাছি আসে তবে শেষ পর্যন্ত ব্যর্থ হয়।[৪১] এক বছরেরও বেশি সময় পরে ১৭ ডিসেম্বর ৫৪৬ সালে অবশেষে টোটিলা রোমে প্রবেশ করেন, [৪৩] যখন তার লোকরা রাতে দেয়াল টপকে অ্যাসিনেরিয়ান দরজা খুলে দের। প্রোকোপিয়াস বলেন যে টোটিলা সাম্রাটের বাহিনীর কিছু ইশুরিয়ান সেনার সহায়তায় পেয়েছিলেন যারা গোথদের সাথে একটি গোপন চুক্তি করেছিলেন। রোমকে লুণ্ঠন করা হয় এবং টোটিলা, যিনি শহরকে পুরোপুরি ভেঙে ফেলতে চেয়েছিলেন, তিনি দেওয়ালের প্রায় এক তৃতীয়াংশ ভেঙে ফেলে সন্তুষ্ট হন। এরপরে তিনি অপুলিয়ায় বাইজেন্টাইন বাহিনীর মোকাবেলা করতে চলে যান। [৪২]
চার মাস পরে ৫৪৭ সালের বসন্তে বেলিসারিয়াস রোমকে সফলভাবে পুনরায় দখল করে ফেলেন এবং তাড়াহুড়ো করে কোন নির্দিষ্ট নিয়ম না মেনে একটির উপর আরেকটি পাথর বসিয়ে দেয়ালের ভাঙা অংশগুলি পুনর্নির্মাণ করেন। [৪৩] টোটিলা ফিরে আসেন, কিন্তু প্রতিরোধকারিদের পরাস্ত করতে পারেননা [৪৪] বেলিসারিয়াস এই ভাল অবস্থার সুযোগ নেননি। পেরুগিয়াসহ বেশ কয়েকটি শহর গথরা দখল করে নেয় এবং বেলিসারিয়াস নিষ্ক্রিয় হয়ে ছিল এবং পরে তাকে ইতালিতে ডেকে নেয়া হয়।
৫৪৯ সালে, টোটিলা আবার রোমের দিকে এগিয়ে যাযন। তিনি অসম্পূর্ণ দেয়ালগুলি দ্রুত দখল করতে চান এবং ৩,০০০ সেনার ছোট বাহিনীকে পরাভূত করার চেষ্টা করেছিলেন, কিন্তু তিনি হেরে যান। তারপরে তিনি শহর অবরোধ করে তাদের অনাহারে রাথার জন্য প্রস্তুত ছিলেন, যদিও বাইজেন্টাইন কমান্ডার ডায়োজিনেস এর আগে বড় বড় খাবারের মজুদ প্রস্তুত করেছিলেন এবং শহরের দেয়ালের মধ্যে জমিতে গম বপন করেছিলেন। যাইহোক, টোটিলা সেনাবাহিনীর কিছু অংশ নিজের পক্ষে নিতে সক্ষম হয়েছিলেন, যারা তাঁর জন্য পোর্টা অস্টিয়ানসিস গেট খুলে দেয়। টোটিলার লোকেরা শহরজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে, টোটিলার নির্দেশে নারীদের বাদ দিয়ে সবাইকে খুন করে ও ধন-সম্পদ লুট করে নেয়। টোটিলা আসা করেছিলেন প্রাচীর দখলের সাথে সাথে অভিজাত এবং সেনাবাহিনীর বাকী অংশ পালিয়ে যাবে, তাই তিনি পাশের শহরগুলিতে যাবার রাস্তায় ফাদ পাতেন যেগুলি এখনও তার নিয়ন্ত্রণে ছিল না এবং রোম থেকে পালিয়ে যাওয়ার সময় অনেকে মারা যায়। [৪৫]
বাইজানটাইন পুনর্বিজয়, ৫৫১-৫৫৪
[সম্পাদনা]
৫৫০-৫১ সালে বাইজেন্টাইনরা অ্যাড্রিয়াটিকের সালোনায় ২০,০০০ বা ২৫,০০০ লোকের একটি বিশাল যুদ্ধযাত্রার বাহিনীকে একত্রিত করে, সাধারণ বাইজেন্টাইনের সদস্য এবং বিদেশী মিত্রদের একটি বিশাল দল যাদের মধ্যে লোম্বার্ডস, হেরালস এবং বুলগাররা উল্লেখযোগ্য। ৫৫১ সালের মাঝামাঝি সময়ে নারসেস, সাম্রাটের গৃহাধ্যক্ষ (কিউবিকুলারিয়াস) নেতৃত্বের জন্য নিযুক্ত হয়। পরের বসন্তে, নারসেস এই বাইজেন্টাইন সেনাবাহিনীকে অ্যাড্রিয়াটিক সাগরের উপকূলের পাশ দিয়ে আনকোনাতে নিয়ে যেতে চেয়েছিলেন এবং তারপরে অভ্যন্তরীণ পথে যাত্রা করবেন, এবং তারপর ভায়া ফ্ল্যামিনিয়া থেকে রোমে যাত্রা করার ইচ্ছা ছিল। তাগিনি গ্রামের কাছে বাইজেন্টাইনরা অস্ট্রোগোথিক সেনাবাহিনীর মুখোমুখি হয়, যার নেতৃত্বে টোটিলা ছিলেন, যিনি নারসেসকে থামাতে অগ্রসর হচ্ছিলেন। সেনা সংখ্যায় কম থাকায়, টোটিলা আপাতদৃষ্টিতে আলোচনায় নেমেছিল, সাথে অপ্রত্যাশিত আক্রমণের পরিকল্পনা করেন কিন্তু নারসেস এই আচরণের দ্বারা বোকা হননি এবং তার সেনাবাহিনীকে একটি শক্তিশালী প্রতিরক্ষামূলক অবস্থানে স্থাপন করেছিলেন। আরো সেনা এসে পৌঁছালে, টোটিলা হঠাৎ আক্রমণের মাধ্যমে তাগিনার যুদ্ধ শুরু করে এবং বাইজেন্টাইন কেন্দ্রে আক্রমণ করে। আক্রমণ ব্যর্থ হয় এবং সন্ধ্যা নাগাদ অস্ট্রোগথরে দল ভেঙে পালিয়ে যায়; টোটিলা পথে মারা যায়। রোমকে ধরে রাখা গোথরা ৫৫৩ সালের অক্টোবরে মনস ল্যাক্টেরিয়াসের যুদ্ধে নারসেস, তিয়াসকে এবং ইতালির গোথিক সেনাবাহিনীর শেষ অংশকে পরাজিত করে। [৪৬]

যদিও অস্ট্রোগোথরা পরাজিত হয়েছিল, খুব শীঘ্রই নারসেসকে অন্যান্য বর্বরদের মুখোমুখি হতে হয়েছিল যারা বাইজেন্টাইন উত্তর ইতালি এবং দক্ষিণ গল আক্রমণ করে। ৫৫৩ সালের গোড়ার দিকে, প্রায় ত্রিশ হাজার ফ্রাঙ্ক এবং আলেমানির একটি বাহিনী আল্পস অতিক্রম করে পারমা শহর দখল করে। তারা হেরুলি কমান্ডার ফুলকারিসের অধীনে একটি বাহিনীকে পরাজিত করে এবং শীঘ্রই উত্তর ইতালি থেকে বহু গোথ তাদের বাহিনীতে যোগ দেয়। নরসেস তাঁর সৈন্যবাহিনী পুরো মধ্য ইতালি জুড়ে সেনা ছড়িয়ে দিয়েছিলেন এবং রোমে শীত কাটান। পুরো ইতালি জুড়ে মারাত্মক অবনতির পরে, ভল্টারনাস নদীর তীরে নারসেসের দ্বারা বর্বরদের সাথে যুদ্ধ শুরু হয়। ভল্টারনাসের যুদ্ধে, রোমান সৈন্যরা একটি উগ্র ফ্রাঙ্কদের আক্রমণ সহ্য করে, এরমাঝে বাইজেন্টাইন অশ্বারোহীরা তাদের ঘিরে ফেলে। ফ্রাঙ্কস এবং আলেমানি সমস্তই ধ্বংস হয়ে যায়। [৪৭] ৫৫৫ সালের বসন্তে আত্মসমর্পণ করার অবধি নেপলসের নিকটবর্তী ক্যাম্পসা শহরে সাত হাজার গথ আটকানো হয়। পো নদীর ওপারে জমি ও শহরগুলি এখনও ফ্রাঙ্কস, আলমানি ও গথদের দখলে ছিল এবং ৫৬২ সালে তাদের ভেরোনা ও ব্রিক্সিয়া শহরের শেষ দুর্গগুলি দখল হয়।রোমান ঐতিহাসিক প্রোকোপিয়াসের মতে, তখন বর্বর জনগণকে রোম সার্বভৌমত্বের অধীনে ইতালিতে শান্তিপূর্ণভাবে বসবাস করার অনুমতি দেওয়া হয়। [৪৮]
ফলাফল
[সম্পাদনা]
গোথিক যুদ্ধের বিজয় প্রায়শই একটি হারের সমতূল্য হিসাবে দেখা হয়, যা বাইজেন্টাইন সাম্রাজ্যের সম্পদ নিকাশ করে দিয়েছিল যা পশ্চিম এশিয়া এবং বালকানদের আরও মারাত্মক হুমকির বিরুদ্ধে ব্যবহার করা যেতে পারতো। পূর্বে, পৌত্তলিক স্লাভস এবং কুটরিগাররা ৫১৭ সাল থেকে দানিউবের দক্ষিণে বাইজেন্টাইন প্রদেশগুলিতে আক্রমণ ও ধ্বংসযজ্ঞ চালাতো। এক শতাব্দী পরে ডালমাটিয়া, ম্যাসেডোনিয়া, থ্রেস এবং গ্রীসের বেশিরভাগ অংশই স্লাভস এবং তুর্কিক আভারের কাছে হেরে তাদের অধীনে চলে গিয়েছিল। [৪৯] কিছু সাম্প্রতিক ঐতিহাসিক জাস্টিনিয়ানের পশ্চিমা অভিযানগুলি সম্পর্কে আলাদা দৃষ্টিভঙ্গি নিয়েছেন। ওয়ারেন ট্রেডগোল্ড ৬ষ্ঠ শতাব্দীর শেষদিকে সাম্রাজ্যের দুর্বলতার জন্য ৫৪০-৫৪১ সালের জাস্টিনিয়ান প্লেগের উপরে বেশি দোষারোপ করেছিলেন, যার ফলে গথিক যুদ্ধের চরম পর্যায়ে তাদের জনসংখ্যার এক-চতুর্থাংশ পর্যন্ত মারা গিয়েছিল এবং এতে জনবল এবং করের আয় কমে যায় যা আরও দ্রুততার সাথে অভিযানটি সম্পন্ন করার জন্য প্রয়োজনীয় ছিল। তিনি যুক্তি দেখান যে, কোনও শাসক, যতই জ্ঞানীই হোক না কেন, ওই মহামারীটির পূর্বাভাস দিতে পারতেন না, যা সাম্রাজ্য ও ইতালির পক্ষে বিপদজনক হয়ে উঠত, ইতালিকে পুনরায় দখলের প্রয়াস নির্বিশেষে। [৫০]
ইটালিতে যুদ্ধটি নগর সমাজকে ধ্বংস করে দেয় যাকে একটি স্থায়ী জনবসতির পশ্চাদ্ভূমি অঞ্চল সাহায্য করতো। ইতালি দীর্ঘমেয়াদি পতনের ফলে বিশাল শহরগুলি পরিত্যক্ত হয়ে যায়। ইতালির দারিদ্র্য এবং সাম্রাজ্যের সম্পদের নিকাশের ফলে বাইজেন্টাইনদের পক্ষে লাভ অর্জন করা অসম্ভব হয়ে গিয়েছিল। জাস্টিনিয়ার মৃত্যুর মাত্র তিন বছর পরে, ৫৬৫ সালে, ইতালীয় মূল ভূখণ্ডের অঞ্চল জার্মানির লম্বার্ডদের হাতে পড়ে। রাভেন্নার এক্সারচেট ছিল একমাত্র সাম্রাজ্যের এলাকা, যা ছিল এক টুকরো অঞ্চল যেটি মধ্য ইতালি থেকে টাইরহেনিয়ান সাগর এবং দক্ষিণে নেপলস পর্যন্ত ও দক্ষিণ ইতালির কিছু অংশ মিলে বিস্তৃত ছিল। গথিক যুদ্ধের পরে সাম্রাজ্য পশ্চিমে আর কোনও গুরুতর উচ্চাকাঙ্ক্ষা দেখায় না। অবশেষে ৭৫১ সালে লম্বার্ডদের দ্বারা রাভেনার এক্সারচেট বিজিত হয, তার আগে রোম সাম্রাজ্যের নিয়ন্ত্রণে থাকে। দক্ষিণ ইতালির কিছু উপকূলীয় অঞ্চল পূর্ব রোমানের অধীনে থাকে, একাদশ শতাব্দীর শেষের দিকের আগ পর্যন্ত, এবং অভ্যন্তর এলাকাটি বেনিভেন্তো এবং পরবর্তীকালে স্যালার্নো এবং কপুয়ার লম্বার্ড ডিউকদের উপর ভিত্তি করে শাসিত হয়। [৫১]
চূড়ান্ত ফলাফল ছিল যে ইতালি - তাদের সাম্রাজ্য সম্প্রসারণের প্রথম শতাব্দীতে রোমানদের দ্বারা একটি রাজনৈতিক এককে একত্রিত হয়েছিল যা পুরো রোমান শাসনকাল জুড়ে একই থাকে এবং গথেদের অধীনেও একই থাকে - ভেঙে যায়, উত্তরসূরি রাষ্ট্রগুলি ১৯ শতকে ইতালির একীকরণ আগ পর্যন্ত প্রায়শই একে অন্যের সাথে যুদ্ধে লিপ্ত হয়। [৫২]
টীকা
[সম্পাদনা]- ↑ প্রসপিয়াস নিহত প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষের সংখ্যা ৩০০,০০০ হিসাবে করেন কিন্তু এই ধারণা অসম্ভব বেশি। হাজার হাজার মানুষ নিহত হয়, বাকিদের ক্রীতদাস করা হয় এবং শহর ধ্বংস করা হয়. (Bury (1923), Vol. II, Ch. XVIII, p. 205)
তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ Bury (1923), Vol. II, Ch. XIII, pp. 453–454
- ↑ Bury (1923), Vol. II, Ch. XIII, pp. 454–455
- ↑ Bury (1923), Vol. II, Ch. XIII, pp. 456–457
- ↑ Bury (1923), Vol. II, Ch. XIII, p. 459
- ↑ Bury, pp. 157–161
- ↑ ক খ Bury (1923), Vol. II, Ch. XVIII, pp. 159–165
- ↑ Bury (1923), Vol. II, Ch. XVIII, p. 164
- ↑ Procopius, De Bello Gothico I.V.1
- ↑ Procopius, De Bello Gothico I.VI
- ↑ Bury (1923), Vol. II, Ch. XVIII, pp. 172–173
- ↑ Bury (1923), Vol. II, Ch. XVIII, p. 174
- ↑ Procopius, De Bello Gothico I.VII
- ↑ Norwich, p. 217
- ↑ Bury (1923), Vol. II, Ch. XVIII, p. 194
- ↑ Norwich 1988, পৃ. 218।
- ↑ Procopius BG II.VII
- ↑ J. Norwich, Byzantium: The Early Centuries, p. 219
- ↑ Procopius, De Bello Gothico I.XI
- ↑ Norwich, pp. 119–220
- ↑ Procopius, De Bello Gothico I.XIII
- ↑ Bury (1923), Vol. II, Ch. XVIII, p. 198
- ↑ Bury (1923), Vol. II, Ch. XVIII, pp. 198–199
- ↑ Bury (1923), Vol. II, Ch. XVIII, p. 200
- ↑ Bury (1923), Vol. II, Ch. XVIII, p. 201
- ↑ Procopius, De Bello Gothico I.XII
- ↑ Norwich, pg. 223
- ↑ Bury (1923), Vol. II, Ch. XVIII, pp. 203–205
- ↑ Bury (1923), Vol. II, Ch. XVIII, pp. 205–206
- ↑ Bury (1923), Vol. II, Ch. XVIII, p. 207
- ↑ Bury (1923), Vol. II, Ch. XVIII, p. 209
- ↑ Bury (1923), Vol. II, Ch. XVIII, p. 211
- ↑ Norwich, pp. 224–27
- ↑ Bury (1923), Vol. II, Ch. XIX, p. 227
- ↑ Bury (1923), Vol. II, Ch. XIX, p. 228
- ↑ Bury (1923), Vol. II, Ch. XIX, p. 229
- ↑ Bury, p. 230
- ↑ Bury pp. 231–233
- ↑ Norwich, pp. 238–39
- ↑ J. Norwich, A Short History of Byzantium, 77
- ↑ Procopius, translation by Dewing, H B (1914) History of the Wars: Book VI (continued) and Book VII, William Heinemann Limited, London (pp. 299–301)
- ↑ Barker, John W (1966) Justinian and the Later Roman Empire ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ১০ মে ২০১৬ তারিখে, University of Wisconsin Press (p. 160)
- ↑ Procopius (pp. 345–349)
- ↑ Procopius p. 359
- ↑ Barker. p. 161
- ↑ Norwich, pp. 240–44
- ↑ Norwich, pp. 251–53
- ↑ Bury pp. 275–80
- ↑ De Bello Gothico IV 32, pp. 241–45
- ↑ Treadgold, A History of the Byzantine State and Society, p. 216
- ↑ Vlasto, pp. 155–226
- ↑ Norwich, p. 265
- ↑ "risorgimento"। ৩ জুন ২০০২। Archived from the original on ৩ জুন ২০০২। সংগ্রহের তারিখ ৯ জুন ২০১৮।