কেনচিন-জিরু
ধরন | স্যুপ বা ঝোল |
---|---|
উৎপত্তিস্থল | জাপান |
প্রধান উপকরণ | গাছগাছড়ার শিকড় ও টোফু। |
সাধারণত ব্যবহৃত উপকরণ | বারডক মূল, ডাইকন মূলা, শিতাকে মাশরুম, কন্যাকু, তারো রুট, মিষ্টি আলু বা আলু, গাজর, দাশি স্টক, তিলের তেল এবং মশলা |
কেনচিন জিরু (けんちん汁, 巻繊汁কেনচিনজিরু ), বা কেনচিন-জিরু অথবা কেনচিন হিসাবে উল্লিখিত এই খাবারটি উদ্ভিজ্জ খাদ্য উপাদান দিয়ে নির্মিত একটি জাপানি স্যুপ বা ঝোল। এই স্যুপ গাছগাছড়ার শিকড় এবং টোফু (সয়াবিনের দুধ থেকে তৈরি একধরনের পনির জাতীয় খাদ্য) ব্যবহার করে তৈরি করা হয়।[১][২] এটি জাপানের একটি জনপ্রিয় খাবার। অগণিত খাদ্য উপাদান ব্যবহার করে বিভিন্ন পদ্ধতিতে এটি প্রস্তুত করা হয়। প্রচলিত লোককথা ও তথ্য অনুযায়ী জানা যায় যে খাবারটি কয়েক শতাব্দী আগে কেনচো-জি নামক একটি স্থানীয় মন্দির থেকে উদ্ভূত হয়েছিল। তথ্য অনুযায়ী আরও জানা যায় যে সম্ভবত শিপোকু রন্ধনশৈলীতে এই খাবারটির উদ্ভব হয়েছে।
কেনচিন জিরু হল একটি জাপানি উদ্ভিজ্জ স্যুপ যা উদ্ভিদের মূল এবং টোফু (সয়াবিনের দুধ থেকে তৈরি একধরনের পনির জাতীয় খাদ্য) ব্যবহার করে তৈরি করা হয়।[১][২] এই খাবারটির সাধারণ উপাদানের মধ্যে রয়েছে টোফু, বারডক গাছের শিকড়, ডাইকন মূলা, শিতাকে মাশরুম, কন্যাকু, তারো মূল, মিষ্টি আলু বা আলু, গাজর, দাশি স্টক, তিলের তেল এবং বিভিন্ন ধরনের মশলা।[১][৩][৪][৫] কোনো কোনো রন্ধন প্রনালীতে প্রথমে শাকসবজি এবং শিকড়গুলিকে অল্প তেলে নাড়াচাড়া করে ভাজা করা হয় যার ফলে তাদের আর্দ্রতা হ্রাস পায় এবং স্বাদ আরও বেড়ে যায়। এরপর জল যোগ করে তাকে স্যুপের আকার দেওয়া হয়।[৬] কখনও কখনও এতে উপাদান হিসাবে শুয়োরের মাংস এবং মুরগির মাংস ব্যবহৃত হয়।[৬]
এটি জাপানের একটি জনপ্রিয় খাবার। সেই দেশে এটি বিভিন্ন উপাদান ব্যবহার করে বিভিন্ন উপায়ে প্রস্তুত করা হয়।[১][৩]
প্রচলিত তথ্য অনুযায়ী কেনচিন জিরু জাপানের কানাগাওয়া অঞ্চলের কামাকুরা নামক স্থানে অবস্থিত কেনচো-জি মন্দির থেকে উদ্ভূত হয়েছে।[১][৪] এটি ছিল জাপানের প্রথম বৌদ্ধ মন্দির। এই পদের উৎস সম্পর্কে একটি প্রচলিত গল্প আছে। বলা হয় যে কয়েক শতাব্দী আগে, একজন তরুণ সন্ন্যাসী ঘটনাক্রমে মন্দিরের রান্নাঘরের মেঝেতে একটি তাজা টোফুর খন্ড ফেলে দিয়েছিলেন।[১] রান্নাঘরের মেঝেটি সবসময়ই খুব পরিষ্কার অবস্থায় রাখা হত। তাই রাঁধুনি সন্ধ্যার খাবারের জন্য একটি স্যুপে সেই টোফু ব্যবহার করেছিলেন।[১] এই ঘটনার পরে স্যুপ তৈরি করার সময় তাতে নিয়মিতভাবে টোফুর ব্যবহার শুরু হয়। জেন বিশ্বাসের উপর ভিত্তি করে টোফু চূর্ণ বা ছোট ছোট টুকরো টুকরো করে স্যুপে মেশানো হয় যাতে মন্দিরের বাসিন্দাদের মধ্যে খাবার সমানভাবে ভাগ করা যায়।[১][৪]
প্রচলিত তথ্য অনুযায়ী বিশ্বাস করা হয় যে পদটির উৎপত্তি শিপোকু রন্ধনপ্রণালী থেকে যা চীনা রন্ধনপ্রণালী দ্বারা ব্যাপকভাবে প্রভাবিত একটি জাপানি রন্ধনশৈলী। [১][৭] শিপোকু রন্ধনপ্রণালীর উৎপত্তি হয়েছিল চীনা অভিবাসীদের মাধ্যমে যারা জাপানের এডো যুগে নাগাসাকি অঞ্চলে বসবাস শুরু করেছিলেন। চীনা শব্দ কেনচেন থেকে কেনচিন শব্দের উৎপত্তি। কেনচেন শব্দের অর্থ ঘূর্ণন পদ্ধতিতে প্রস্তুত খাবার।[১] কেনচিন জিরুর একটি সুপরিচিত বিকল্প রন্ধন প্রনালীতে রান্না করা শাকসবজি এবং টোফুকে গোল করে পাকিয়ে রোল বানানো হয় এবং তারপর রোলটিকে কড়া ভাজা করে পরিবেশন করা হয়।[১]
তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ ক খ গ ঘ ঙ চ ছ জ ঝ ঞ ট Shurtleff, W.; Aoyagi, A. (১৯৭৫)। The Book of Tofu: Food for Mankind। The Book of Tofu। Autumn Press। পৃষ্ঠা 120। আইএসবিএন 978-0-394-73431-6। সংগ্রহের তারিখ এপ্রিল ১৬, ২০১৭।
- ↑ ক খ Gordinier, Jeff (ডিসেম্বর ১, ২০১৪)। "Soy on the Lower East Side"। The New York Times। সংগ্রহের তারিখ এপ্রিল ১৬, ২০১৭।
- ↑ ক খ Garson, S.; Antonisse, M. (২০১১)। Veggiyana: The Dharma of Cooking: With 108 Deliciously Easy Vegetarian Recipes। Wisdom Publications। পৃষ্ঠা pt247–248। আইএসবিএন 978-0-86171-881-8। সংগ্রহের তারিখ এপ্রিল ১৬, ২০১৭।
- ↑ ক খ গ 藤井まり (২০০৫)। The Enlightened Kitchen: Fresh Vegetable Dishes from the Temples of Japan। Kodansha International। পৃষ্ঠা 15। আইএসবিএন 978-4-7700-2493-0। সংগ্রহের তারিখ এপ্রিল ১৬, ২০১৭।
- ↑ Hosking, R. (২০১৪)। A Dictionary of Japanese Food: Ingredients & Culture। Tuttle Publishing। পৃষ্ঠা 71। আইএসবিএন 978-1-4629-0343-6। সংগ্রহের তারিখ এপ্রিল ১৭, ২০১৭।
- ↑ ক খ Tsuji, S.; Hata, K.; Saeki, Y. (১৯৮৬)। Practical Japanese Cooking: Easy and Elegant। Kodansha International। পৃষ্ঠা 24। আইএসবিএন 978-0-87011-762-6। সংগ্রহের তারিখ এপ্রিল ১৬, ২০১৭।
- ↑ Nishiyama, M.; Groemer, G. (১৯৯৭)। Edo Culture: Daily Life and Diversions in Urban Japan, 1600–1868। THE NIPPON FOUNDATION। University of HawaiÊ»i Press। পৃষ্ঠা 146। আইএসবিএন 978-0-8248-1850-0। সংগ্রহের তারিখ এপ্রিল ১৬, ২০১৭।