কৃষ্ণা হাতিসিং

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
কৃষ্ণা হাতিসিং
ব্যক্তিগত বিবরণ
জন্ম(১৯০৭-১১-০২)২ নভেম্বর ১৯০৭
মীর্জাগঞ্জ, এলাহবাদ, ব্রিটিশ ভারত
মৃত্যু৯ অক্টোবর ১৯৬৭(1967-10-09) (বয়স ৫৯)
ওয়াশিংটন ডি.সি., মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র
জাতীয়তাভারতীয় মার্কিনী
দাম্পত্য সঙ্গী
সন্তান
পেশালেখিকা

কৃষ্ণা নেহ্‌রু হাতিসিং (জন্ম: ২ নভেম্বর, ১৯০৭ - মৃত্যু: ৯ অক্টোবর, ১৯৬৭) তৎকালীন ব্রিটিশ ভারতের এলাহবাদের মীর্জাগঞ্জে জন্মগ্রহণকারী বিশিষ্ট ভারতীয় লেখিকা ছিলেন। তার অন্য পরিচয় হচ্ছে - ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের অন্যতম প্রধান নেতা ও স্বাধীন ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহ্‌রু[১] এবং বিশিষ্ট ভারতীয় কূটনীতিবিদ ও রাজনীতিবিদ বিজয়লক্ষ্মী পণ্ডিতের ছোট বোন; ইন্দিরা গান্ধীর পিসি ও রাজীব গান্ধীর পিসি-ঠাকুরমা। এছাড়াও, নেহ্‌রু-গান্ধী পরিবারের অন্যতম সদস্যা ছিলেন কৃষ্ণা হাতিসিং

শৈশবকাল[সম্পাদনা]

গঙ্গা নদীর তীরে এলাহাবাদ শহরের মীর্জাগঞ্জে কৃষ্ণা হাতিসিং জন্মগ্রহণ করেন। ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনকারী ও ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের নেতা মতিলাল নেহ্‌রু ও তদ্বীয় সহধর্মীনি স্বরূপরাণী থুস্‌সু দম্পতির তৃতীয় ও সর্বকনিষ্ঠ সন্তান ছিলেন। কৃষ্ণা হাতিসিংয়ের বাবা মতিলাল নেহ্‌রু কাশ্মীরী পণ্ডিত সম্প্রদায়ভুক্ত এক ধনী ব্যারিস্টার ছিলেন। আইন ব্যবসার কারণে মতিলাল নেহ্‌রু এলাহবাদে বসবাস করতে শুরু করেন এবং সেখানে একজন আইনজ্ঞ হিসেবে প্রতিষ্ঠা লাভ করেন। এই সময়েই মতিলাল নেহ্‌রু কংগ্রেসের রাজনীতিতে সক্রিয় হয়ে উঠেন। তিনি ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলন চলাকালীন দুইবার ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের সভাপতি হন। তার মা স্বরূপরাণী থুস্‌সু লাহোরে বসবাসকারী এক বিখ্যাত কাশ্মীরী ব্রাহ্মণ পরিবারের মেয়ে ছিলেন।

স্বরূপরাণী থুস্‌সু, মতিলাল নেহ্‌রুর দ্বিতীয়া পত্নী ছিলেন। তার প্রথমা স্ত্রী সন্তানের জন্ম দিতে গিয়ে মারা যান। কৃষ্ণা হাতিসিং, জওহরলাল নেহ্‌রুর আঠারো বছরের ও বড়বোন বিজয়লক্ষ্মী পণ্ডিতের চেয়ে সাত বছরের ছোট। তারা সকলেই "আনন্দ ভবন" নামক বিশাল বাড়িতে পাশ্চাত্য সাংস্কৃতিক পরিমণ্ডলে গড়ে উঠেন। ইংরেজির সাথে সাথে তাদের হিন্দী ও সংস্কৃত শিক্ষা দেওয়া হতো।

সংসার ধর্ম পালন[সম্পাদনা]

আহমেদাবাদের বিখ্যাত জৈন পরিবারের সন্তান গুণোত্তম (রাজা) হাতিসিংয়ের সাথে পরিণয়সূত্রে আবদ্ধ হন। এ পরিবার হাতিসিং জৈন মন্দির প্রতিষ্ঠা করেছিল।[২] গুণোত্তম হাতিসিং ভারতের অভিজাত পরিবারগুলোর কাছে সুপরিচিত ছিলেন ও বিংশ শতাব্দীর অধিকাংশ সময়েই ভারতের স্বনামধন্য পরিবারগুলোর একটিরূপে পরিচিতি পেয়ে আসছিল।

১৯৫০-এর দশকের শেষদিকে গুণোত্তম হাতিসিং নেহ্‌রু’র কট্টর সমালোচকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছিলেন। ১৯৫৯ সালে সাবেক গভর্নর জেনারেল সি. রাজাগোপালাচারীকে সহায়তার হাত প্রশস্ত করেন। তাকে সাথে নিয়ে রক্ষণশীল বাজার উদার রাজনৈতিক দল যা স্বতন্ত্র পার্টি গঠন করেন।[৩]

কৃষ্ণা হাতিসিং ও তার স্বামী ভারতের স্বাধীনতার লক্ষ্যে লড়াই করেন। বেশ ক্ষাণিকটা সময় তারা কারাগারে অবস্থান করেন। এ অবস্থাতেই এ দম্পতির কিশোর সন্তান - হর্ষ হাতিসিংঅজিত হাতিসিং বড় হতে থাকে।

বিদেশ গমন[সম্পাদনা]

ইসরাইল-ভারত বন্ধুত্বপূর্ণ সংঘ প্রতিষ্ঠাকারী ইগাল অ্যালনের আমন্ত্রণে মে, ১৯৫৮ সালে তিনদিনের সফরে ইসরাইল গমন করেন। নিজের জীবনসংগ্রাম কাহিনীসহ ভাই জওহরলাল নেহ্‌রু ও ভ্রাতুষ্পুত্রী ইন্দিরা গান্ধীকে নিয়ে গ্রন্থাকারে বেশকিছু পুস্তক রচনা করে গেছেন। তন্মধ্যে, উই নেহ্‌রুস, উইদ নো রিগ্রেটস (কোন খেঁদ নাই), নেহ্‌রুস লেটার্স টু হিজ সিস্টার, ডিয়ার টু বিবোল্ড অন্যতম।

তার স্বামী রাজা হাতিসিংও বেশ কয়েকটি গ্রন্থ রচনা করেন। সেগুলো হলো:- দ্য গ্রেট পিস: অ্যান এশিয়ান্স ক্যানডিড রিপোর্ট অব রেড চায়না (১৯৫৩), উইন্ডো অন চায়না (১৯৫৩), তিব্বত ফাইটস ফর ফ্রিডম: দ্য স্টোরি অব দ্য মার্চ ১৯৫৯ আপরাইজিং (১৯৬০) অন্যতম।

ভয়েস অব আমেরিকার সাথে সম্পৃক্ত ছিলেন কৃষ্ণা হাতিসিং। বেশ কয়েকবার আনুষ্ঠানিক আলাপচারিতায় অংশ নেন তিনি। ৯ অক্টোবর, ১৯৬৭ তারিখে ওয়াশিংটন ডি.সিতে ৫৯ বছর বয়সে দেহাবসান ঘটে কৃষ্ণা হাতিসিংয়ের।

রচনাসমগ্র[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]